কোনটি উপন্যাস?
A
নীললোহিত
B
এইসব দিন রাত্রি
C
শবনম
D
নাম রেখেছি কোমল গান্ধার
উত্তরের বিবরণ
উত্তর: গ) শবনম
‘শবনম’ একটি বিখ্যাত উপন্যাস, যার রচয়িতা হলেন হুমায়ূন আহমেদ। এটি তাঁর সাহিত্যজীবনের অন্যতম প্রথম দিকের কাজ এবং বাংলা উপন্যাসে এক নতুন ধারার সূচনা ঘটিয়েছে। এই উপন্যাসে প্রেম, অনুভূতি ও সামাজিক বাস্তবতার এক মেলবন্ধন দেখা যায়, যা পাঠকের মনে গভীর প্রভাব ফেলে।
উপন্যাসটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো মানুষের মনের গভীরতম অনুভূতি, বিশেষত ভালোবাসা, হারানো ও প্রত্যাশার সংঘাত। হুমায়ূন আহমেদ এখানে সহজ, স্বচ্ছ ভাষায় জটিল মনস্তাত্ত্বিক আবেগকে তুলে ধরেছেন।
‘শবনম’ উপন্যাসটির বৈশিষ্ট্যগুলো হলো—
-
এতে প্রেম ও মানবিক সম্পর্কের বাস্তব চিত্র পাওয়া যায়। লেখক অতিরিক্ত নাটকীয়তা পরিহার করে জীবনের সাধারণ কিন্তু গভীর অনুভূতিগুলো প্রকাশ করেছেন।
-
ভাষা ও সংলাপ স্বাভাবিক ও কথ্যভঙ্গির, যা পাঠকের সঙ্গে তাত্ক্ষণিক সংযোগ সৃষ্টি করে।
-
লেখক চরিত্র নির্মাণে বিশেষ যত্ন নিয়েছেন। প্রতিটি চরিত্র জীবন্ত ও বাস্তব, যেন পাঠক তাদের চিনতে পারে নিজের জীবনে।
-
উপন্যাসে আধুনিক নগরজীবনের আবহ, একাকিত্ব ও মানসিক টানাপোড়েন নিপুণভাবে ফুটে উঠেছে।
-
হুমায়ূন আহমেদ এই রচনায় দেখিয়েছেন যে সাহিত্য হতে পারে সরল অথচ গভীর; এতে জীবনের রঙ, হাসি-কান্না, স্বপ্ন ও বাস্তবতা মিলেমিশে গেছে।
-
‘শবনম’ মূলত একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রেমকাহিনি, তবে এর মধ্যে লুকিয়ে আছে সামাজিক বার্তা ও মানবিক উপলব্ধি।
অন্যদিকে প্রশ্নে উল্লেখিত ‘নীললোহিত’, ‘এইসব দিন রাত্রি’ এবং ‘নাম রেখেছি কোমল গান্ধার’ উপন্যাস নয়। ‘নীললোহিত’ ছিল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের এক ছদ্মনাম; তিনি এই নামে গল্প লিখতেন। ‘এইসব দিন রাত্রি’ মূলত একটি টেলিভিশন নাটক, আর ‘নাম রেখেছি কোমল গান্ধার’ একটি চলচ্চিত্র যা নির্মাণ করেছিলেন ঋত্বিক ঘটক।
তাই স্পষ্টভাবে বলা যায়, এখানে একমাত্র ‘শবনম’ই উপন্যাস, যা হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্ট সাহিত্যজগতে এক বিশেষ অবস্থান দখল করে আছে। এটি বাংলা সাহিত্যে প্রেমের নতুন ভাষা ও ভাবের প্রকাশ ঘটিয়েছে, যা এখনো পাঠকের হৃদয়ে অম্লান।
0
Updated: 3 days ago
জেলে জীবন কেন্দ্রিক উপন্যাস কোনটি?
Created: 1 month ago
A
গঙ্গা
B
পুতুলনাচের ইতিকথা
C
হাঁসুলী বাঁকের উপকথা
D
গৃহদাহ
গঙ্গা উপন্যাস
-
সমরেশ বসুর বিখ্যাত রচনা ‘গঙ্গা’ প্রকাশিত হয় ১৯৫৭ সালে।
-
উপন্যাসটির মূল পটভূমি হলো জেলে সম্প্রদায়ের জীবন—বিশেষত অবিভক্ত ২৪ পরগনার মাছধরা মানুষদের জীবনসংগ্রাম।
-
এখানে মূল কেন্দ্রবিন্দু চরিত্র নয়, বরং জেলেদের জীবন। তাদের দৈনন্দিন কষ্ট, লড়াই ও অভ্যাস—সবই লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন।
-
চরিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে: সাইদার নিবারণ, নিবারণের ভাই পাঁচু, ছেলে বিলাস, বশীর, সয়ারাম, পাচী (ছায়া), রসিক, দুলাল, দামিনী, হিমি, আতর, মহাজন ব্রজেন ঠাকুর প্রমুখ।
-
প্রথমে মনে হয় বিলাস ও হিমিই নায়ক-নায়িকা, কিন্তু আসলে সব চরিত্রকে ঘিরে আছেন নিবারণ—তাই নিবারণকেই কেন্দ্রীয় চরিত্র ধরা হয়।
পুতুলনাচের ইতিকথা
-
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত এই উপন্যাস প্রকাশিত হয় ১৯৩৬ সালে।
-
লেখকের মতে, সাহিত্যেও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন। এ উপন্যাসে সেই দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ দেখা যায়।
-
ব্রিটিশ আমলে বাঙালি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানসিক দ্বন্দ্ব ও অস্তিত্ব সংকট শশী চরিত্রের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
-
এখানে ‘পুতুল’ বলতে বোঝানো হয়েছে—যারা নিজের দৃঢ় অবস্থান রাখতে পারে না, বরং অন্যের সামান্য প্রভাবেই দোদুল্যমান হয়ে যায়।
-
প্রধান চরিত্র: শশী, কুসুম, হারু ঘোষ প্রমুখ।
হাঁসুলী বাঁকের উপকথা
-
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত এই উপন্যাসটি মূলত আঞ্চলিক কাহিনি।
-
কাহিনি আবর্তিত হয়েছে বাঁশবাড়ি গ্রামের কাহার জাতিকে ঘিরে।
-
পুরোনো বিশ্বাস, কুসংস্কার আর সময়ের পরিবর্তনে তাদের জীবনে যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়, তাই এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
গৃহদাহ
-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ‘গৃহদাহ’, যা প্রকাশিত হয় ১৯২০ সালে, মাসিক ভারতবর্ষ পত্রিকায়।
-
এর মূল বিষয় হলো ত্রিভুজ প্রেম।
-
নায়িকা অচলা—যার প্রতি মহিম ও সুরেশ দুই পুরুষের আকর্ষণ-বিকর্ষণ এই কাহিনির মূল কেন্দ্র।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 1 month ago
মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক কাব্যনাট্য কোনটি?
Created: 1 day ago
A
পলাশী ব্যারাক ও অন্যান্য
B
স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা
C
পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়
D
জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন
মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সাহিত্য বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে, কারণ এটি দেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম, বীরত্ব ও ত্যাগের গল্পকে প্রকাশ করে। কাব্যনাট্য এই ধারা তুলে ধরে মানবিক অনুভূতি, যাত্রা ও সংগ্রামের গভীরতা। “পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়” কাব্যনাট্যটি মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে রচিত এবং এতে জাতির মুক্তির লড়াই, শহীদদের ত্যাগ ও সাধারণ মানুষের কষ্টের প্রতিফলন পাওয়া যায়।
এই কাব্যনাট্যের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
-
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও নান্দনিকতা: কাব্যনাট্যে যুদ্ধের দৃশ্য এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনচিত্র কাব্যিকভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এটি পাঠক বা দর্শককে সরাসরি সেই সময়ের সংগ্রামের চেতনা অনুভব করায়।
-
মানবিক দিকনির্দেশনা: শুধু যুদ্ধের দৃশ্য নয়, চরিত্রগুলোর মানসিক অবস্থা, পরিবার, আশা-ভরসা ও বেদনা—এগুলোকে কাব্যিক ভাষায় প্রকাশ করা হয়েছে। এটি পাঠককে শুধু ইতিহাস জানায় না, বরং মানবিক সম্পর্ক ও আবেগের গভীরতা বোঝায়।
-
সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: উপস্থাপিত দৃশ্যগুলো মুক্তিযুদ্ধের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে। কাব্যনাট্যটি দেশপ্রেম, স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা এবং ন্যায়বিচারের জন্য সংগ্রামকে প্রধান থিম হিসেবে গ্রহণ করেছে।
-
ভাষার রূপ ও ছন্দ: লেখক শব্দচয়ন ও ছন্দের মাধ্যমে পাঠক বা দর্শকের মনে আবেগপ্রবণ প্রতিক্রিয়া জাগানোর চেষ্টা করেছেন। এতে যুদ্ধের করুণ বাস্তবতা এবং সংগ্রামের তীব্রতা স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।
-
সামাজিক প্রভাব: এটি কেবল বিনোদন নয়, পাঠক বা দর্শককে ইতিহাসের সঙ্গে সংযুক্ত করে এবং জাতীয় চেতনার উদ্দীপনা জাগায়। বিশেষভাবে নতুন প্রজন্মের কাছে এটি মুক্তিযুদ্ধের নৈতিক ও সাংস্কৃতিক শিক্ষা পৌঁছে দেয়।
সারসংক্ষেপে, “পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়” কাব্যনাট্যটি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক এবং এটি শুধুমাত্র যুদ্ধের গল্প নয়, বরং মানুষের জীবনের আবেগ, সংগ্রাম ও ত্যাগের প্রতিফলন। এটি পাঠককে ঐতিহাসিক সত্য এবং জাতির মুক্তির জন্য লড়াই করা মানুষের দায়িত্ব ও সাহস সম্পর্কে গভীরভাবে সচেতন করে তোলে। কাব্যনাট্যটি দর্শক বা পাঠককে ইতিহাসের সঙ্গে সংযুক্ত করে এবং মানবিক, নৈতিক ও রাজনৈতিক শিক্ষা প্রদান করে, যা মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে।
0
Updated: 1 day ago
'নীল দর্পণ' নাটকটি 'The Indigo Planting Mirror' নামে ইংরেজি অনুবাদ করেন কে?
Created: 3 weeks ago
A
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
B
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
C
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
D
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
'নীল-দর্পণ' (১৮৬০) দীনবন্ধু মিত্র রচিত একটি শ্রেষ্ঠ নাটক, যা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে। নাটকটি সমকালের নীলচাষ ও নীলকরদের প্রজাপীড়ন এবং শাসকশ্রেণীর পক্ষপাতমূলক আচরণের প্রতিফলন ঘটায়।
-
প্রকাশ ও রচনাকাল: ১৮৬০ সালে ঢাকা থেকে প্রথম প্রকাশিত; 'কস্যচিৎ পথিকস্য' ছদ্মনামে প্রথম প্রকাশিত। ১৮৭২ সালের ৭ ডিসেম্বর নাটকটি সাধারণ রঙ্গালয়ের অভিনয়ের সূচনা করে।
-
বিষয়বস্তু ও প্রভাব: নাটকটি সমকালের নীলচাষ প্রথা ও শোষণের বিরুদ্ধে আলোকপাত করে এবং কৃষকদের নীলবিদ্রোহে উদ্দীপনা যোগায়।
-
ইংরেজি অনুবাদ: মাইকেল মধুসূদন দত্ত 'A Native' ছদ্মনামে নাটকটির ইংরেজি অনুবাদ করেন, নামকরণ করেন 'Nil Darpan or The Indigo Planting Mirror' (১৮৬১); পাদ্রি জেমস লং এর প্রকাশের ফলে আদালত তাঁকে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন।
-
সাহিত্যিক মূল্যায়ন: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় নাটকটিকে 'আঙ্কল টমস কেবিন'-এর সঙ্গে তুলনা করেন। এটি রচনাকাল থেকে আজ পর্যন্ত জাতীয় চেতনার পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচিত।
-
ভাষা ও অনুবাদ: এটি বিদেশি ভাষায় অনূদিত প্রথম বাংলা নাটক।
দীনবন্ধু মিত্র রচিত অন্যান্য নাটক:
-
নবীন তপস্বিনী
-
লীলাবতী
-
কমলে কামিনী
0
Updated: 3 weeks ago