ফলাহার > ফলার হয়েছে, তাকে বলে-
A
অন্তর্হতি
B
ব্যঞ্জনচ্যুতি
C
ব্যঞ্জন বিকৃতি
D
বিষমীভবন
উত্তরের বিবরণ
উ. ক) অন্তর্হতি
বাংলা ব্যাকরণে ধ্বনিগত পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেখানে শব্দের গঠন বা উচ্চারণে বিভিন্ন রূপান্তর ঘটে। “ফলাহার > ফলার” এমনই একটি উদাহরণ, যা অন্তর্হতি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটেছে। এখানে কোনো ধ্বনি বা বর্ণ উচ্চারণের সময় লোপ পেয়েছে বা অন্তর্হিত হয়েছে, ফলে শব্দটি সংক্ষিপ্ত ও সহজ উচ্চারণযোগ্য হয়েছে।
অন্তর্হতি বলতে বোঝায় শব্দের মধ্যে কোনো বর্ণ, ধ্বনি বা অক্ষরের অপসারণ বা হারিয়ে যাওয়া। সাধারণত এটি উচ্চারণ সহজ করার জন্য ঘটে এবং ভাষার স্বাভাবিক পরিবর্তন প্রক্রিয়ার অংশ। “ফলাহার” শব্দটি সংস্কৃত উৎসজাত, যেখানে “ফল” অর্থাৎ ফল এবং “আহার” অর্থাৎ ভোজন বা আহার মিলে অর্থ হয় “ফলভোজন”। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উচ্চারণ সহজ করতে “আহা” অংশের একটি অক্ষর অপসারিত হয়, ফলে গঠিত হয় “ফলার”।
এই পরিবর্তনকে অন্তর্হতি বলা হয়, কারণ এখানে ধ্বনির একটি অংশ হারিয়ে গেছে কিন্তু অর্থে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি।
বাংলা ভাষায় এই ধরনের রূপান্তরের অনেক উদাহরণ পাওয়া যায়—
-
গজাহা > গজা (অর্থাৎ হাতি)
-
দরজা > দজা (উচ্চারণে সংক্ষিপ্ত রূপ)
-
করুণা > কনা (প্রাচীন ব্যবহার থেকে উদাহরণ)
এই উদাহরণগুলো প্রমাণ করে যে ভাষা সময়ের সঙ্গে সহজ উচ্চারণের দিকে ধাবিত হয়, যা অন্তর্হতির স্বাভাবিক ফল।
অন্য বিকল্পগুলো এখানে প্রযোজ্য নয়।
ব্যঞ্জনচ্যুতি বলতে বোঝায় ব্যঞ্জনধ্বনির পরিবর্তন বা সরে যাওয়া, যেমন “পণ্ডিত > পন্ডিত”।
ব্যঞ্জন বিকৃতি ঘটে যখন কোনো ব্যঞ্জনধ্বনি বিকৃত হয়ে যায় বা রূপান্তরিত হয়, যেমন “সপ্তাহ > সপ্তা”।
বিষমীভবন হল দুটি ধ্বনির মিলনে তৃতীয় একটি নতুন ধ্বনির উদ্ভব, যেমন “তৎ + বৎ > তদ্বৎ”।
তাই “ফলাহার > ফলার” ক্ষেত্রে কোনো ব্যঞ্জন পরিবর্তন, বিকৃতি বা নতুন ধ্বনি সৃষ্টির ঘটনা ঘটেনি; কেবল একটি অংশ বাদ পড়েছে। এই ধ্বনিলুপ্তির ঘটনাই অন্তর্হতি নামে পরিচিত।
বাংলা ভাষার ধ্বনিতত্ত্বে অন্তর্হতি একটি প্রাকৃতিক ও নিয়মিত রূপান্তর, যা ভাষার বিবর্তনকে সহজ, গতিশীল ও বোধগম্য করে তোলে। এর ফলে শব্দগুলো উচ্চারণে স্বাভাবিক, সংক্ষিপ্ত এবং সহজবোধ্য হয়ে ওঠে, যা ভাষার প্রাণশক্তি বৃদ্ধি করে।
অতএব, প্রদত্ত প্রশ্নের সঠিক উত্তর হলো ক) অন্তর্হতি।
0
Updated: 3 days ago
ধ্বনিতত্ত্ব ভেদে নিম্নের কোন শব্দটি অন্যগুলো থেকে আলাদা?
Created: 6 days ago
A
জিহ্বা
B
হাত
C
তালু
D
ঠোট
0
Updated: 6 days ago
'সন্ধি' ব্যাকরণের কোন তত্ত্বে আলোচিত হয়?
Created: 2 months ago
A
ধ্বনিতত্ত্ব
B
রূপতত্ত্ব
C
বাক্যতত্ত্ব
D
অর্থতত্ত্ব
ধ্বনিতত্ত্ব
ধ্বনিতত্ত্বের আলোচ্য বিষয় হলো ধ্বনি। লিখিত ভাষায় ধ্বনি প্রকাশ পায় বর্ণের মাধ্যমে। তাই বর্ণমালা সম্পর্কিত আলোচনা ধ্বনিতত্ত্বের অন্তর্ভুক্ত। ধ্বনিতত্ত্ব মূলত আলোচনা করে বাগ্যন্ত্র, উচ্চারণ প্রক্রিয়া, ধ্বনির বিন্যাস, স্বর ও ব্যঞ্জনধ্বনির বৈশিষ্ট্য এবং ধ্বনিদল নিয়ে।
ধ্বনিতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়সমূহ
১. ধ্বনি
২. বর্ণ
৩. ধ্বনির উচ্চারণ প্রণালি
৪. উচ্চারণের স্থান
৫. ধ্বনি পরিবর্তন ও লোপ
৬. ষ-ত্ব বিধান
৭. ণ-ত্ব বিধান
৮. সন্ধি
0
Updated: 2 months ago
ধ্বনি উৎপন্ন হয় মূলত—
Created: 3 weeks ago
A
B
C
D
মানুষের মুখে ধ্বনি উৎপাদনের জন্য যেসব অঙ্গ একসঙ্গে কাজ করে, সেগুলোকে বলা হয় বাগ্যন্ত্র। এই অঙ্গগুলোর সাহায্যে ফুসফুস থেকে নির্গত বায়ু বিভিন্নভাবে রূপান্তরিত হয়ে ধ্বনিতে পরিণত হয়।
বাগ্যন্ত্র:
-
ধ্বনি উচ্চারণে ব্যবহৃত প্রত্যঙ্গসমূহকে একত্রে বাগ্যন্ত্র বলা হয়।
-
এগুলোর মাধ্যমে ফুসফুস থেকে নির্গত বায়ু ঠোঁট পর্যন্ত পৌঁছে বিভিন্ন ধ্বনি তৈরি করে।
-
ফুসফুস থেকে ঠোঁট পর্যন্ত ধ্বনি উৎপাদনে যুক্ত প্রতিটি অঙ্গই বাগ্যন্ত্রের অংশ।
ফুসফুস:
-
ধ্বনি সৃষ্টির মূল উৎস হলো ফুসফুস, কারণ এখান থেকেই বায়ুপ্রবাহ উৎপন্ন হয়।
-
এটি শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজ করে, অর্থাৎ বায়ু গ্রহণ ও ত্যাগের মাধ্যমে ধ্বনির জন্য প্রয়োজনীয় চাপ তৈরি করে।
-
মূলত শ্বাস ত্যাগের সময় ধ্বনি উৎপন্ন হয়, যা পরবর্তীতে বাগ্যন্ত্রের সাহায্যে রূপ পায়।
0
Updated: 3 weeks ago