কোনটি কাব্যনাট্য?
A
প্রায়শ্চিত্ত
B
নকশী কাঁথার মাঠ
C
পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়
D
চিত্রাঙ্গদা
উত্তরের বিবরণ
কাব্যনাট্য এমন একটি সাহিত্যরূপ, যেখানে নাটকের কাঠামোর মধ্যে কাব্যের ভাষা ও ছন্দ ব্যবহৃত হয়। এতে সংলাপ, গান ও কাব্যময় বর্ণনা একত্রে মিলিত হয়ে এক বিশেষ নাট্যরূপ সৃষ্টি করে। “পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়” এই ধরনের বৈশিষ্ট্য বহন করে, তাই একে কাব্যনাট্য বলা হয়।
এই নাটকটির মূল বৈশিষ্ট্যগুলো হলো—
-
এতে কাব্যিক ভাষা ও ছন্দের মাধ্যমে নাট্যরস সৃষ্টি করা হয়েছে, যা সাধারণ নাটক থেকে একে আলাদা করেছে। সংলাপগুলো শুধু বক্তব্য নয়, বরং কবিতার মতোই আবেগময় ও ছন্দোময়।
-
সৈয়দ শামসুল হক রচিত এই কাব্যনাট্যে মানুষের সংগ্রাম, স্বাধীনতা, ভয় ও প্রতিবাদের চেতনা গভীরভাবে ফুটে উঠেছে। লেখক কাব্যের ভাষায় নাটকের আবেগ প্রকাশ করেছেন, যা পাঠকের হৃদয়ে কাব্যরস সৃষ্টি করে।
-
এতে দৃশ্য বিন্যাস বা নাট্যকৌশল সীমিত হলেও শব্দ, ধ্বনি ও প্রতীকের ব্যবহার নাটকটিকে কাব্যময় করে তুলেছে। যেমন— “পায়ের আওয়াজ” স্বাধীনতার সংগ্রাম, ভয় ও অজানার প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
-
কাহিনির ধারাবাহিকতা না থাকলেও চরিত্রগুলোর অন্তর্দ্বন্দ্ব, ভয়, দেশপ্রেম ও মুক্তির আকাঙ্ক্ষা কাব্যের মতো গভীরভাবে প্রকাশ পেয়েছে। এ কারণে নাটকটি পাঠ বা মঞ্চায়ন— দুই ক্ষেত্রেই এক অনন্য অভিজ্ঞতা দেয়।
-
এখানে সংলাপের পাশাপাশি গীতিময়তা ও ধ্বনির পুনরাবৃত্তি নাট্যরসকে তীব্র করেছে। লেখক ভাষার সঙ্গীতধর্মিতা ব্যবহার করে শ্রোতার মনে এক ধরনের ছন্দময় স্পন্দন জাগিয়েছেন।
-
“পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়” মূলত স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন মানসিক অবস্থার প্রতিফলন, যেখানে যুদ্ধের আতঙ্ক, মৃত্যু, তবুও জীবনের প্রতি অনিবার্য টান কাব্যের রূপে প্রকাশ পেয়েছে।
-
নাটকটির ভাষা যেমন কাব্যময়, তেমনি এর রূপকধর্মী গঠনও কাব্যনাট্যের বৈশিষ্ট্য বহন করে। বাস্তব দৃশ্যের বদলে প্রতীকের মাধ্যমে ঘটনাবলী বোঝানো হয়েছে।
-
লেখক এখানে নাট্যকবিতার রীতি অনুসরণ করেছেন, অর্থাৎ কাব্যের সৌন্দর্য ও নাটকের কাহিনি— উভয়ই সমন্বিত হয়েছে। এতে গদ্যনাট্যের মতো সরলতা নয়, বরং কাব্যের রূপ ও ভাবগম্ভীরতা বজায় রাখা হয়েছে।
-
বাংলাদেশের আধুনিক নাট্যসাহিত্যে এই কাব্যনাট্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন, যা নতুন এক ধারা সৃষ্টি করেছে এবং সমসাময়িক নাট্যরীতিকে গভীরতা দিয়েছে।
সবশেষে বলা যায়, “পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়” এমন একটি কাব্যনাট্য যা কাব্যের ছন্দ, ধ্বনি ও ভাষার শিল্পগুণে নাট্যরসকে উজ্জ্বল করেছে। তাই প্রদত্ত বিকল্পগুলোর মধ্যে এটি-ই কাব্যনাট্য হিসেবে সঠিক উত্তর।
0
Updated: 3 days ago
"হে দারিদ্র্য তুমি মোরে করেছো মহান
তুমি মোরে দানিয়াছ খ্রিস্টের সম্মান" - পঙ্ক্তিটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?
Created: 1 month ago
A
সাম্যবাদী
B
সর্বহারা
C
অগ্নি-বীণা
D
সিন্ধু হিন্দোল
‘দারিদ্র্য’ কবিতার পঙ্ক্তি –
"হে দারিদ্র্য তুমি মোরে করেছো মহান, তুমি মোরে দানিয়াছ খ্রিস্টের সম্মান" – কাজী নজরুল ইসলামের ‘সিন্ধু হিন্দোল’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।
‘সিন্ধু হিন্দোল’ কাব্যগ্রন্থ:
-
এটি কাজী নজরুল ইসলামের প্রেমের কাব্যগ্রন্থ।
-
উল্লেখযোগ্য কিছু কবিতা:
-
গোপন প্রিয়া
-
অনামিকা
-
বিদায়-স্মরণে
-
পথের স্মৃতি
-
উন্মনা
-
দারিদ্র্য
-
বাসন্তী
-
ফাল্গুনী
-
বধূ-বরণ
-
রাখী-বন্ধন
-
চাঁদনী রাতে
-
মাধবী-প্রলাপ
-
0
Updated: 1 month ago
'তোহফা' কাব্যটি কে রচনা করেন?
Created: 2 months ago
A
দৌলত কাজী
B
মাগন ঠাকুর
C
সাবিরিদ খান
D
আলাওল
আলাওল ও তাঁর কাব্যগ্রন্থসমূহ
তোহফা কাব্যগ্রন্থের রচয়িতা ছিলেন আলাওল।
আলাওল:
-
১৭শ শতক/মধ্যযুগের একজন প্রধান মুসলিম কবি।
-
আরাকান রাজসভার শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে পরিচিত।
-
তাঁর প্রথম ও বিখ্যাত মহাকাব্য হলো ‘পদ্মাবতী’, যা তিনি মাগন ঠাকুরের উৎসাহে রচনা করেছিলেন। এটি মূলত মালিক মুহম্মদ জায়সির হিন্দি কাব্য ‘পদুমাবৎ’ অবলম্বনে রচিত।
-
আলাওল ছিলেন আরাকান-রাজা উমাদারের রাজদেহরক্ষী হিসেবে নিযুক্ত, যিনি অশ্বারোহীর পদে কর্মরত ছিলেন।
আলাওলের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রচনা:
-
সিকান্দার নামা
-
তোহফা
-
সপ্তপয়কর
-
সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জামান
-
রগতালনামা
-
সতীময়ান-লোর-চন্দ্রাণী
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 2 months ago
ফররুখ আহমদের শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থের নাম কী?
Created: 3 months ago
A
সাত সাগরের মাঝি
B
পাখির বাসা
C
হাতেমতাই
D
নৌফেল ও হাতেম
● ‘সাত সাগরের মাঝি’ কাব্যগ্রন্থ
-
‘সাত সাগরের মাঝি’ হলো ফররুখ আহমদের লেখা প্রথম ও সবচেয়ে জনপ্রিয় কাব্যগ্রন্থ। এটি ১৯৪৪ সালে প্রকাশিত হয়।
-
এই বইটিতে মোট ১৯টি কবিতা রয়েছে।
-
বইটির শেষ কবিতার নাম ‘সাত সাগরের মাঝি’, যেটি বইয়ের নামের সঙ্গে মিল রেখে লেখা।
-
এই গ্রন্থের গুরুত্বপূর্ণ কিছু কবিতা হলো: সিন্দাবাদ, পাঞ্জেরি, লাশ, আউলাদ, দরিয়ার শেষরাত্রি ইত্যাদি।
● ফররুখ আহমদ
-
তিনি ১৯১৮ সালের ১০ জুন মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার মাঝাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
-
তিনি ছিলেন একজন মুসলিম জাগরণের কবি, যিনি ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ইসলামী আদর্শকে কবিতায় তুলে ধরেছেন।
-
১৯৪৪ সালে কলকাতায় দুর্ভিক্ষের প্রেক্ষাপটে লেখা তাঁর ‘লাশ’ কবিতাটি তাঁকে প্রথমবারের মতো সাহিত্যিক খ্যাতি এনে দেয়।
-
তাঁর জনপ্রিয় কাহিনিভিত্তিক কাব্য ‘হাতেমতায়ী’ এর জন্য তিনি ১৯৬৬ সালে আদমজী পুরস্কার পান।
-
ওই একই বছরে তিনি ‘পাখির বাসা’ নামক শিশুতোষ রচনার জন্য ইউনেস্কো পুরস্কার লাভ করেন।
● ফররুখ আহমদের কাব্যগ্রন্থসমূহ:
-
সাত সাগরের মাঝি
-
সিরাজাম মুনীরা
-
নৌফেল ও হাতেম
-
মুহূর্তের কবিতা
-
সিন্দাবাদ
-
হাতেমতায়ী
-
নতুন লেখা
-
হাবেদা মরুর কাহিনী
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর), বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 3 months ago