'হাজার বছর ধরে' উপন্যাসখানা কার রচনা?
A
আবদুল্লাহ আল মুতী
B
জহির রায়হান
C
আমজাদ হোসেন
D
মুনীর চৌধুরী
উত্তরের বিবরণ
উ. খ) জহির রায়হা্ন
বাংলা উপন্যাসের ইতিহাসে ‘হাজার বছর ধরে’ একটি কালজয়ী সৃষ্টি হিসেবে পরিচিত। এই উপন্যাসের রচয়িতা জহির রায়হান, যিনি একাধারে ছিলেন সাহিত্যিক, চলচ্চিত্রকার ও মুক্তিযুদ্ধকালীন শহিদ বুদ্ধিজীবী। তাঁর এই উপন্যাসে বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবনের বাস্তব চিত্র এবং সমাজের ভেতরকার অসাম্যকে অত্যন্ত সংবেদনশীলভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
উপন্যাসটি ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হয়। এতে গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা, তাদের প্রেম, বঞ্চনা, ধর্মীয় ভেদাভেদ ও সামাজিক কুসংস্কারের চিত্র অত্যন্ত জীবন্তভাবে ফুটে উঠেছে। লেখক মানবিক অনুভূতির সঙ্গে রাজনৈতিক সচেতনতার এক দুর্দান্ত মিশ্রণ ঘটিয়েছেন, যা উপন্যাসটিকে সময়ের সীমা ছাড়িয়ে এক সার্বজনীন শিল্পকর্মে পরিণত করেছে।
এই উপন্যাসের মূল বিষয় হলো মানবপ্রেম ও সামাজিক বাস্তবতা। জহির রায়হান সমাজে বিদ্যমান শ্রেণি-বৈষম্য, নারী নির্যাতন এবং ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে উপন্যাসটি রচনা করেন। চরিত্রগুলোর জীবনসংগ্রাম, দুঃখ-কষ্ট ও প্রেমের গল্পের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের মাটির গন্ধ ও মানুষের মনের গভীরতা তুলে ধরেছেন।
বিশেষ দিকগুলো হলো:
- 
বাস্তবধর্মী বর্ণনা: গ্রামীণ মানুষের জীবন ও সংগ্রাম অত্যন্ত বাস্তব ও সহানুভূতিপূর্ণভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। 
- 
চরিত্রচিত্রণ: উপন্যাসের প্রতিটি চরিত্র যেমন তহুরা, আয়নাল, মালঞ্চী ইত্যাদি জীবন্ত ও মানবিক রূপে ফুটে উঠেছে। 
- 
ভাষার ব্যবহার: সরল, সাবলীল ও আঞ্চলিক টানযুক্ত ভাষা উপন্যাসটিকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। 
- 
সামাজিক বার্তা: ধর্মীয় ও সামাজিক ভেদাভেদকে অতিক্রম করে মানবিক মূল্যবোধে ঐক্য স্থাপনের আহ্বানই এই উপন্যাসের মূল বার্তা। 
‘হাজার বছর ধরে’ শুধু একটি সাহিত্যকর্ম নয়; এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক চেতনার প্রতীক। জহির রায়হানের এই উপন্যাস পরবর্তীকালে চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয় এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। তাঁর এই সৃষ্টি বাংলা সাহিত্যের আধুনিক ধারায় বাস্তববাদ ও মানবিকতার সংমিশ্রণের এক অনন্য নিদর্শন হিসেবে আজও পাঠকের হৃদয়ে অম্লান।
 
                            
                        
                        
                        
                        
                        0
Updated: 3 days ago
প্রতীকী কাহিনির মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের স্বৈরাচারী শাসনকে চিত্রিত করা হয়েছে জহির রায়হানের কোন চলচ্চিত্রে?
Created: 3 weeks ago
A
লেট দেয়ার বি লাইট
B
বাহানা
C
স্টপ জেনোসাইড
D
জীবন থেকে নেয়া
‘জীবন থেকে নেওয়া’ চলচ্চিত্র
- 
এটি পরিচালনা করেছেন জহির রায়হান এবং মুক্তি পায় ১৯৭০ সালের ১০ এপ্রিল। 
- 
চলচ্চিত্রটি পারিবারিক আবহে নির্মিত হলেও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পটভূমি অন্তর্নিহিত ছিল। 
- 
প্রতীকী কাহিনির মাধ্যমে পাকিস্তানের স্বৈরাচারী শাসনকে চিত্রিত করা হয় এবং জনগণকে প্রতিরোধ গড়তে উদ্বুদ্ধ করা হয়। 
অন্য উল্লেখযোগ্য জহির রায়হান চলচ্চিত্র
- 
‘লেট দেয়ার বি লাইট’ – ইংরেজি ছবি, মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ায় সম্পন্ন করতে পারেননি। 
- 
‘স্টপ জেনোসাইড’ – ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর কলকাতা থেকে নির্মিত, পাকিস্তানি সামরিক জান্তার গণহত্যার চিত্র প্রদর্শন করে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। 
- 
‘বাহানা’ – উর্দু ভাষার সিনেমাস্কোপ চলচ্চিত্র, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে প্রথম সিনেমাস্কোপ; মুক্তি পায় ১৯৬৫ সালের ১৬ এপ্রিল। 
 
                                    
                                
                                
                                
                                0
Updated: 3 weeks ago
'টুনি' চরিত্রটি কোন উপন্যাসের অন্তর্গত?
Created: 1 month ago
A
হাজার বছর ধরে
B
আরেক ফাল্গুন
C
লালসালু
D
পদ্মা নদীর মাঝি
‘হাজার বছর ধরে’ (১৯৬৪) উপন্যাসে আবহমান বাংলার জীবন ও জনপদকে কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা হয়েছে। এই কাহিনীতে ‘টুনি’ চরিত্রটি মূল কেন্দ্রীয় চরিত্র, যিনি একমাত্র জীবন্ত ব্যক্তিত্ব হিসেবে উপস্থিত, বাকিরা মৃত ও বিবর্ণ।
জহির রায়হান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য—
- 
জন্ম ১৯৩৫ সালে ফেনী জেলার মজুপুর গ্রামে। 
- 
প্রকৃত নাম জহিরুল্লাহ, পরে তিনি জহির রায়হান নামে পরিচিত হন। 
- 
তিনি ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। 
উৎস:
 
                                    
                                
                                
                                
                                0
Updated: 1 month ago
জহির রায়হানের প্রকৃত নাম কী?
Created: 2 weeks ago
A
মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর
B
মোহাম্মদ রাফিকুল
C
মোহাম্মদ হুমায়ূন
D
মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ
জহির রায়হান ছিলেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ও সাহিত্য ইতিহাসের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, যিনি একাধারে কথাশিল্পী, ঔপন্যাসিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তাঁর প্রকৃত নাম মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ। মানবতা, দেশপ্রেম ও সামাজিক বাস্তবতাকে কেন্দ্র করে তিনি সাহিত্য ও চলচ্চিত্র উভয় ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব ফেলেছিলেন।
- 
জন্ম: ১৯৩৫ সালে, ফেনী জেলার মজিপুর গ্রামে। 
- 
প্রকৃত নাম: মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ। 
- 
তিনি ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশি কথাশিল্পী ও চলচ্চিত্র পরিচালক, যিনি সাহিত্যে ও চলচ্চিত্রে বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। 
- 
সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও মানবিক সংগ্রামকে শক্তিশালীভাবে তুলে ধরেন। 
- 
তাঁর লেখায় স্বাধীনতা, প্রেম, সংগ্রাম ও বঞ্চিত মানুষের কণ্ঠস্বরের প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়। 
চলচ্চিত্রে অবদান:
- 
প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র: ‘কখনো আসে নি’ 
- 
বাংলা চলচ্চিত্রের প্রথম রঙিন ছবি: ‘সঙ্গম’ 
- 
প্রথম সিনেমাস্কোপ চলচ্চিত্র: ‘বাহানা’ 
- 
তাঁর পরিচালিত ‘কাঁচের দেয়াল’ চলচ্চিত্রটি নিগার পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়। 
- 
তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে বাস্তবধর্মী ও সমাজসচেতন কাহিনি উপস্থাপনের নতুন ধারা সূচনা করেন। 
সাহিত্য ও পুরস্কার:
- 
১৯৭২ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। 
- 
তাঁর সাহিত্যকর্মে সমাজ, প্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত। 
- 
তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে আছে: 
 ১. হাজার বছর ধরে
 ২. আর কতদিন
 ৩. শেষ বিকেলের মেয়ে
 ৪. তৃষ্ণা
 ৫. আরেক ফাল্গুন
 ৬. বরফ গলা নদী
 ৭. কয়েকটি মৃত্যু
মৃত্যু:
- 
স্বাধীনতার পরবর্তী অস্থির সময়ে, ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি, তিনি মিরপুরে নিখোঁজ হন এবং আর ফিরে আসেননি। 
জহির রায়হান তাঁর শিল্পচেতনা, সাহিত্য ও চলচ্চিত্রে দেশপ্রেমের গভীর প্রকাশের মাধ্যমে বাংলা সংস্কৃতিতে এক অমর অবস্থান তৈরি করেছেন।
 
                                    
                                
                                
                                
                                0
Updated: 2 weeks ago