'সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই' উক্তিটি কার?
A
ঈশ্বরচন্দ্র
B
বিবেকানন্দ
C
রবীন্দ্রনাথ
D
চন্ডীদাস
উত্তরের বিবরণ
বাংলা সাহিত্য ও দর্শনের ইতিহাসে “সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই” উক্তিটি মানবতাবাদের এক অমর বার্তা হিসেবে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে আছে। এই গভীর ও অনন্য উক্তির রচয়িতা হলেন চণ্ডীদাস, যিনি মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের এক প্রখ্যাত বৈষ্ণব কবি। চণ্ডীদাস মানবপ্রেম ও ভক্তিভাবের মাধ্যমে ধর্ম, জাতিভেদ ও সামাজিক ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে মানুষের মহত্বকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁর এই উক্তি শুধু একটি বাক্য নয়, বরং এটি ছিল মধ্যযুগের সামাজিক ও ধর্মীয় সংকীর্ণতার বিরুদ্ধে মানবতার এক শক্তিশালী প্রতিবাদ।
চণ্ডীদাস ছিলেন বাংলা বৈষ্ণব পদাবলীর এক গুরুত্বপূর্ণ কবি, যিনি প্রেম, ভক্তি ও মানবতাকে মিলিয়ে এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, মানুষের ভেতরেই ঈশ্বরের প্রকাশ ঘটে, তাই মানুষের সেবা ও ভালোবাসাই প্রকৃত ধর্ম। সেই চিন্তা থেকেই তাঁর বিখ্যাত উক্তি— “সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।” এটি মূলত ঈশ্বরের অস্তিত্ব অস্বীকার নয়, বরং মানুষের মর্যাদাকে সর্বোচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠার ঘোষণা।
চণ্ডীদাসের এই বক্তব্যের মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক দিক রয়েছে।
প্রথমত, তিনি সমাজে প্রচলিত জাতপাত, ধর্মীয় ভেদাভেদ এবং আচার-অনুষ্ঠানের ভণ্ডামির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তাঁর মতে, মানুষ জন্মগতভাবে সমান, তাই কোন জাতি, বর্ণ বা ধর্ম মানুষের মূল সত্তাকে নির্ধারণ করতে পারে না।
দ্বিতীয়ত, তাঁর এই ধারণা মানবিক মূল্যবোধকে সর্বোচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠা করে। চণ্ডীদাস মনে করতেন, মানুষের মধ্যে করুণা, ভালোবাসা ও সততা থাকলেই ঈশ্বরপ্রেম পূর্ণতা পায়।
তৃতীয়ত, তাঁর এই দর্শন মূলত বৈষ্ণব ধর্মের “ভক্তি ও প্রেম”-এর দার্শনিক ভিত্তির ওপর দাঁড়ালেও, তা মানবতাবাদে পরিণত হয়।
চণ্ডীদাসের সময়টা ছিল এমন এক যুগ, যখন সমাজে কঠোর জাতিভেদ, অস্পৃশ্যতা, এবং ধর্মীয় কুসংস্কার প্রচলিত ছিল। সেই সময় দাঁড়িয়ে তিনি মানুষের প্রতি ভালোবাসাকে ঈশ্বরের চেয়েও উঁচু বলে ঘোষণা করেন। তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গি তখনকার সামাজিক নিয়মের জন্য একপ্রকার বিপ্লবী ঘোষণা ছিল। ফলে, তাঁর রচনাগুলো শুধু ভক্তিমূলক কবিতা নয়, বরং মানবপ্রেমের ঘোষণাপত্র হিসেবেও পরিচিত।
এই উক্তিটি পরবর্তীকালে অনেক সাহিত্যিক, দার্শনিক এবং সমাজসংস্কারকের চিন্তায় প্রভাব ফেলেছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও চণ্ডীদাসের এই মানবতাবাদী ভাবধারায় গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তাঁর লেখায় এবং গানে মানবপ্রেম ও মানবমর্যাদার যে বিশুদ্ধ প্রকাশ দেখা যায়, তার উৎস এই চণ্ডীদাসীয় চিন্তাধারার সঙ্গে যুক্ত।
সুতরাং, “সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই” শুধুমাত্র একটি উক্তি নয়; এটি বাংলা সাহিত্য ও মানবসভ্যতার এক চিরন্তন দিকনির্দেশনা। এই কথাটি আমাদের শেখায়, মানবতার চেয়ে বড় কিছু নেই—ধর্ম, জাতি, কিংবা বর্ণ নয়; মানুষই সত্যের প্রতীক, কারণ মানুষের মধ্যেই ঈশ্বরের প্রতিফলন নিহিত।
0
Updated: 4 days ago
বিনয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম -
Created: 2 months ago
A
দাদাভাই
B
যাযাবর
C
জাবালি
D
বীরবল
বাংলা সাহিত্যে ছদ্মনাম ও প্রকৃত লেখক
| ছদ্মনাম | লেখক |
|---|---|
| যাযাবর | বিনয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় |
| বীরবল | প্রমথ চৌধুরী |
| জাবালি | বিমল মিত্র |
| দাদাভাই | রোকনুজ্জামান খান |
0
Updated: 2 months ago
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন প্রতিবেদন- ২০২৫ এ বাংলাদেশের অবস্থান কততম? [আগস্ট, ২০২৫]
Created: 2 months ago
A
১০৪তম
B
১১৪তম
C
১২৪তম
D
১৩৪তম
টেকসই উন্নয়ন প্রতিবেদন ২০২৫
-
প্রতিবেদনের শিরোনাম: Sustainable Development Report 2025
-
প্রকাশকাল: জুলাই, ২০২৫
-
প্রকাশক: জাতিসংঘের Sustainable Development Solutions Network (SDSN)
-
অন্তর্ভুক্ত দেশ: ১৬৭টি
শীর্ষ ৩ দেশ:
১. ফিনল্যান্ড
২. সুইডেন
৩. ডেনমার্ক
সর্বনিম্ন ৩ দেশ:
১৬৫. শাদ
১৬৬. মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র
১৬৭. দক্ষিণ সুদান
0
Updated: 2 months ago
হুমায়ুন আজাদের প্রথম কাব্যগ্রন্থ কোনটি?
Created: 1 month ago
A
জ্বলো চিতাবাঘ
B
অলৌকিক ইস্টিমার
C
বিমুখ প্রান্তর
D
আগুনপাখি
হুমায়ুন আজাদ
-
তিনি ছিলেন কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, গবেষক ও ভাষাবিজ্ঞানী।
-
জন্ম: ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল, বিক্রমপুরের রাড়িখাল।
-
সাহিত্য জীবনের সূচনা: ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অলৌকিক ইস্টিমার’।
-
দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ: ১৯৮৩ সালে প্রকাশিত ‘জ্বলো চিতাবাঘ’।
কাব্যগ্রন্থসমূহ
-
অলৌকিক ইস্টিমার (প্রথম কাব্যগ্রন্থ)
-
জ্বলো চিতাবাঘ (দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ)
-
যতোই গভীরে যায় মধু, যতোই ওপরে যাই নীল
-
কাফনে মোড়া অশ্রুবিন্দু
-
সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে
উপন্যাসসমূহ
-
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল
-
সবকিছু ভেঙে পড়ে
-
মানুষ হিসেবে আমার অপরাধসমূহ
-
রাজনীতিবিদগণ
-
পাক সার জমিন সাদ বাদ
অন্যদিকে
-
‘বিমুখ প্রান্তর’ হচ্ছে হাসান হাফিজুর রহমানের প্রথম কাব্যগ্রন্থ।
-
‘আগুনপাখি’ হচ্ছে হাসান আজিজুল হকের একটি উপন্যাস।
0
Updated: 1 month ago