গর্ভকালীন সময়ে কোন টিকা দিতে হয়?
A
টিটেনাস
B
MMR
C
হেপাটাইটিস বি
D
রুবেলা
উত্তরের বিবরণ
গর্ভকালীন সময়ে মায়ের এবং শিশুর সুস্থতা বজায় রাখতে কিছু নির্দিষ্ট টিকা দেওয়া হয়। এসব টিকা গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন সংক্রমণ ও জটিলতা প্রতিরোধে সাহায্য করে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিকাগুলোর মধ্যে টিটেনাস (Tetanus) টিকা রয়েছে, যা গর্ভাবস্থায় দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তাই সঠিক উত্তর হলো ক) টিটেনাস।
এখন বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:
-
টিটেনাস (Tetanus): গর্ভকালীন সময়ে টিটেনাস টিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি টিটেনাস নামক জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধ করে, যা গর্ভাবস্থায় মায়ের জন্য খুবই বিপজ্জনক হতে পারে। টিটেনাস এক ধরনের ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ যা সাধারণত ক্ষতস্থানে সংক্রমণ ঘটায়, এবং এটি গর্ভকালীন সময়ে প্রি-টিটেনাস বা টিটেনাস টক্সয়েড ইনফেকশন (Tetanus Toxoid) রোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
-
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বিশেষভাবে টিটেনাস টক্সইড (TT) টিকা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়, যা সাধারণত প্রথম ট্রাইমিস্টারে এবং দ্বিতীয় ট্রাইমিস্টারে দেওয়া হয়।
-
MMR (Measles, Mumps, Rubella): গর্ভাবস্থায় এই টিকা অন্তত না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, কারণ রুবেলা (Rubella) বিশেষত গর্ভাবস্থায় প্রথম ত্রৈমাসিক সময়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে, যা গর্ভস্থ শিশুর বিভিন্ন জন্মগত ত্রুটির কারণ হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় রুবেলা টিকা প্রদান করা হয় না, কিন্তু গর্ভধারণের পূর্বে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
-
হেপাটাইটিস বি (Hepatitis B): গর্ভবতী মহিলাদের জন্য হেপাটাইটিস বি টিকার প্রয়োজন সাধারণত গর্ভধারণের আগে হয়, যদি তারা হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। তবে গর্ভাবস্থায় এই টিকা প্রয়োজনীয় নয়, কারণ এটি শিশুর প্রতি কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে না, তবে সাধারণত গর্ভধারণের সময় এটির প্রয়োগ তেমন দেখা যায় না।
-
রুবেলা (Rubella): গর্ভকালীন সময়ে রুবেলা টিকা বিরত থাকা উচিত। এটি গর্ভাবস্থায় আক্রান্ত হলে শিশুর উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে, যেমন জন্মগত ত্রুটি বা গর্ভপাত হতে পারে। রুবেলা টিকা সাধারণত গর্ভধারণের পূর্বে দেওয়া হয়।
সবশেষে, বলা যায়, গর্ভকালীন সময়ে টিটেনাস টিকা (Tetanus) দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি সাধারণত গর্ভাবস্থার প্রথম ও দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে দেওয়া হয়।
0
Updated: 4 days ago
গর্ভকালীন প্রসূতি সেবা কমপক্ষে কতবার নেয়া উচিত?
Created: 4 days ago
A
৬ বার
B
৮ বার
C
৪ বার
D
৯ বার
গর্ভকালীন প্রসূতিসেবা বা অ্যান্টেনাটাল কেয়ার (ANC) হলো গর্ভবতী মায়ের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, যা মা ও শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করতে অপরিহার্য। এই সেবার মাধ্যমে গর্ভাবস্থার বিভিন্ন ঝুঁকি আগেভাগেই শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি অনুযায়ী, গর্ভবতী মাকে কমপক্ষে চারবার এই সেবা নিতে হয়।
-
গর্ভকালীন প্রসূতিসেবার মূল লক্ষ্য হলো মায়ের ও ভ্রূণের শারীরিক পরিবর্তনগুলো নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা, যাতে জটিলতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া যায়।
-
প্রথম সেবা নেওয়া উচিত গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসের (১২ সপ্তাহের) মধ্যেই, যাতে মায়ের স্বাস্থ্যের প্রাথমিক মূল্যায়ন ও প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা যায়।
-
দ্বিতীয় সেবা দেওয়া হয় ২৪–২৮ সপ্তাহের মধ্যে, যখন শিশুর বৃদ্ধি দ্রুত হতে থাকে এবং মায়ের শরীরে অতিরিক্ত রক্ত ও পুষ্টির চাহিদা বাড়ে।
-
তৃতীয় সেবা নেওয়া উচিত ৩০–৩৪ সপ্তাহের মধ্যে, এ সময় উচ্চ রক্তচাপ, রক্তশূন্যতা বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা আগেভাগে শনাক্ত করা প্রয়োজন।
-
চতুর্থ সেবা দেওয়া হয় ৩৬ সপ্তাহের পর, অর্থাৎ শিশুর জন্মের আগে শেষ পর্যায়ে। এতে প্রসবের প্রস্তুতি, সম্ভাব্য তারিখ, ও ডেলিভারির পরিকল্পনা নিয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়।
-
প্রতিবার সেবার সময় মায়ের ওজন, রক্তচাপ, রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ, প্রস্রাবে প্রোটিন, এবং শিশুর অবস্থান ও হার্টবিট পরীক্ষা করা হয়।
-
এই সেবা নেওয়ার ফলে গর্ভকালীন জটিলতা যেমন প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া, অ্যানিমিয়া, বা অকাল প্রসবের ঝুঁকি কমে যায়।
-
অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসক অতিরিক্ত পরিদর্শনের পরামর্শ দিতে পারেন যদি মায়ের পূর্বে জটিল প্রসব, রক্তচাপজনিত সমস্যা বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকে।
-
নিয়মিত ANC সেবা গ্রহণ করলে মা সঠিক সময়ে আয়রন, ফলিক এসিড, টিটেনাস টিকা, ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট ইত্যাদি পান, যা শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে সাহায্য করে।
-
গর্ভবতী মাকে এই সময় মানসিকভাবে শান্ত রাখা ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিতে হয়, কারণ মানসিক চাপ ভ্রূণের বিকাশে প্রভাব ফেলে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, গর্ভকালীন প্রসূতি সেবা কমপক্ষে চারবার নেওয়া জরুরি, যা মায়ের ও শিশুর নিরাপদ প্রসব এবং সুস্থ জীবন নিশ্চিত করে। নিয়মিত এই সেবা গ্রহণের মাধ্যমেই গর্ভাবস্থা থেকে প্রসব পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ নিরাপদভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব।
0
Updated: 4 days ago
একজন স্বাভাবিক সুস্থ মহিলার গর্ভকালীন সময়ে গড়ে কত কেজি ওজন বাড়তে পারে?
Created: 5 days ago
A
২০ কেজি
B
১৫ কেজি
C
১২ কেজি
D
৫ কেজি
0
Updated: 5 days ago
কোন পরীক্ষা গর্ভবতী মা’র জন্য ঝুঁকিপূর্ণ?
Created: 4 days ago
A
ECG
B
X-ray
C
Ultrasonography
D
Blood Sugar
গর্ভবতী মায়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ পরীক্ষা হলো X-ray। গর্ভাবস্থায় রেডিয়েশন বা এক্স-রে তীব্রতার মাধ্যমে গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক বিকাশে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, যার ফলে জন্মগত ত্রুটি বা শারীরিক সমস্যা হতে পারে। অতএব, গর্ভাবস্থায় এক্স-রে ব্যবহার করা উচিত নয়, বিশেষত যদি এটি জরুরি না হয়।
এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:
– X-ray একটি রেডিয়েশন ব্যবহারকারী পরীক্ষা যা শরীরের ভিতরের অবস্থা দেখতে সাহায্য করে। তবে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, কারণ রেডিয়েশন গর্ভস্থ শিশুর বিকাশে ক্ষতি করতে পারে, বিশেষত প্রথম তিন মাসে যখন শিশুর অঙ্গ-প্রতঙ্গ গঠন হচ্ছে।
– গর্ভবতী অবস্থায় এক্স-রে করার প্রয়োজন হলে, বিশেষ সতর্কতা গ্রহণ করা হয়, এবং শুধুমাত্র জরুরি পরিস্থিতিতে এর প্রয়োগ করা হয়।
– এক্স-রে’র পরিবর্তে গর্ভবতী মায়ের জন্য এলট্রাসনোগ্রাফি (Ultrasonography) বা Blood Sugar পরীক্ষা, এমনকি ECG (Electrocardiogram) নিরাপদভাবে করা যেতে পারে, কারণ এগুলোর কোনো রেডিয়েশন ঝুঁকি নেই এবং এগুলি মায়ের বা শিশুর জন্য নিরাপদ।
– Ultrasonography হলো একটি অ-ইনভেসিভ এবং রেডিয়েশন মুক্ত পরীক্ষা, যা গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্য এবং অঙ্গ-প্রতঙ্গের অবস্থান নির্ধারণে ব্যবহৃত হয়। এটি পুরোপুরি নিরাপদ এবং গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
– ECG এবং Blood Sugar পরীক্ষা গর্ভবতী মা’র জন্য সাধারণত নিরাপদ এবং এগুলি মায়ের শারীরিক অবস্থা যাচাই করার জন্য করা হয়।
– Blood Sugar পরীক্ষা গর্ভাবস্থায় গর্ভকালীন ডায়াবেটিস শনাক্ত করতে সাহায্য করে, যা মায়ের এবং শিশুর সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সুতরাং, X-ray পরীক্ষা গর্ভবতী মায়ের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ এটি রেডিয়েশন সৃষ্টি করে যা গর্ভস্থ শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
Answer: খ) X-ray
0
Updated: 4 days ago