গর্ভকালীন প্রসূতিবস্থা (ANC) এর সময় কোন ল্যাবরেটরী পরীক্ষা জরুরি নয়?
A
হিমোগ্লোবিন
B
Urine R/M/E
C
VDRL
D
Cholesterol level
উত্তরের বিবরণ
গর্ভকালীন প্রসূতিবস্থা (ANC) হলো গর্ভবতী মহিলার যত্ন নেওয়ার প্রক্রিয়া, যেখানে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে মা ও শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করা হয়। গর্ভাবস্থায় কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে গর্ভধারণের সময়ে যে স্বাস্থ্যগত সমস্যা হতে পারে তা আগেই সনাক্ত করা যায়। তবে সব ধরনের পরীক্ষা গর্ভাবস্থার জন্য জরুরি নয়।
এখানে উল্লেখিত পরীক্ষাগুলোর মধ্যে Cholesterol level বা কোলেস্টেরলের স্তরের পরীক্ষা গর্ভকালীন সময়ে জরুরি নয়, তাই সঠিক উত্তর হলো ঘ) Cholesterol level।
এখন বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো—
-
হিমোগ্লোবিন (Hemoglobin) পরীক্ষা গর্ভবতী নারীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া সাধারণ সমস্যা, যা মা ও শিশুর জন্য বিপদজনক হতে পারে। হিমোগ্লোবিনের স্তর পরীক্ষা করা হয় যাতে রক্তাল্পতা সনাক্ত করা যায় এবং দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা যায়।
-
Urine R/M/E (Urine Routine Microscopy and Examination) পরীক্ষা গর্ভাবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি মূত্রনালীর সংক্রমণ বা প্রোটিনুরিয়া (যা প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া বা অন্যান্য জটিলতা নির্দেশ করতে পারে) সনাক্ত করতে সাহায্য করে।
-
VDRL (Venereal Disease Research Laboratory) পরীক্ষা গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সিফিলিস শনাক্ত করতে সাহায্য করে। সিফিলিস untreated থাকলে গর্ভপাত, গর্ভকালীন জটিলতা এবং নবজাতকের জন্য মারাত্মক হতে পারে।
-
Cholesterol level পরীক্ষার প্রয়োজন গর্ভকালীন সময়ে সাধারণত নেই, কারণ সাধারণত গর্ভাবস্থায় কোলেস্টেরলের স্তর স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা পরিবর্তন হলেও এটি কোনো গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করে না। গর্ভাবস্থায় কোলেস্টেরলের মাত্রা উচ্চ হওয়া খুবই বিরল এবং সাধারণত এই ধরনের পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না।
-
কেবলমাত্র উচ্চ ঝুঁকির গর্ভবতী মহিলাদের (যেমন, আগে থেকে হৃদরোগের ইতিহাস বা অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সমস্যা) কিছু বিশেষ পরীক্ষার দরকার হতে পারে, তবে সাধারণভাবে কোলেস্টেরলের স্তরের পরীক্ষা গর্ভকালীন সময়ে করার প্রয়োজন নেই।
সবশেষে, বলা যায়, Cholesterol level পরীক্ষা গর্ভাবস্থায় জরুরি নয়, এবং সাধারণভাবে অন্যান্য পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে গর্ভাবস্থার সঠিক যত্ন নেওয়া সম্ভব।
0
Updated: 4 days ago
গর্ভকালীন প্রসূতিসেবায় প্রথম তিন মাসে (First trimester) মাকে কি দিয়ে থাকি?
Created: 4 days ago
A
ফলিক এসিড
B
ক্যালসিয়াম
C
আয়োডিন
D
মেগনেশিয়াম
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস বা ফার্স্ট ট্রাইমেস্টার হলো ভ্রূণের গঠন ও বিকাশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময় মায়ের শরীরে নানা হরমোনগত পরিবর্তন ঘটে এবং শিশুর প্রধান অঙ্গগুলোর বিকাশ শুরু হয়। তাই এই পর্যায়ে প্রয়োজন হয় বিশেষ পুষ্টি উপাদান, যা মা ও ভ্রূণ উভয়ের সুস্থতার জন্য অপরিহার্য।
-
ফলিক এসিড গর্ভধারণের প্রাথমিক পর্যায়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভিটামিন, যা ভিটামিন বি–গ্রুপের অন্তর্গত। এটি ভ্রূণের স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক বিকাশে সাহায্য করে এবং জন্মগত ত্রুটি, বিশেষ করে নিউরাল টিউব ডিফেক্ট (NTD) প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
-
সাধারণত গর্ভধারণের আগে থেকেই নারীদের ফলিক এসিড খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, কারণ গর্ভাবস্থার প্রথম কয়েক সপ্তাহে শিশুর মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ড গঠিত হয়। এই সময় যথেষ্ট ফলিক এসিড না পেলে শিশুর মস্তিষ্ক বা স্পাইনাল কর্ডে স্থায়ী ত্রুটি দেখা দিতে পারে।
-
এই ভিটামিন রক্তের লোহিত কণিকা (RBC) তৈরিতেও সাহায্য করে, যা মা ও শিশুর অক্সিজেন সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয়। ফলিক এসিডের ঘাটতি থাকলে অ্যানিমিয়া দেখা দিতে পারে, যা গর্ভাবস্থায় জটিলতা বাড়ায়।
-
প্রতিদিন সাধারণত ৪০০ মাইক্রোগ্রাম (mcg) ফলিক এসিড গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়, তবে যেসব নারীর আগে নিউরাল টিউব ডিফেক্টযুক্ত শিশু হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে—যা চিকিৎসকের পরামর্শে নির্ধারিত হয়।
-
ফলিক এসিড শুধু ট্যাবলেটের মাধ্যমে নয়, খাদ্য থেকেও পাওয়া যায়। যেমন—সবুজ পাতা জাতীয় শাকসবজি, কমলা, ডাল, মটরশুঁটি, ব্রোকলি, অ্যাভোকাডো ও গোটা শস্যজাত খাবারে এটি বিদ্যমান।
-
এই পুষ্টি উপাদান মায়ের কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে, ফলে ভ্রূণের বৃদ্ধি সুষ্ঠুভাবে ঘটে।
-
ফলিক এসিড গ্রহণের ফলে গর্ভপাত, অকাল প্রসব বা শিশুর কম ওজনের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
-
কিছু নারী ফলিক এসিড শোষণে সমস্যা অনুভব করতে পারেন; যেমন—যাদের মেগালোব্লাস্টিক অ্যানিমিয়া, ম্যালঅ্যাবসোর্পশন সিন্ড্রোম, বা দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ সেবনের ইতিহাস আছে, তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দিতে হয়।
-
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে ফলিক এসিড ছাড়াও পরবর্তীতে ক্যালসিয়াম ও আয়রন দেওয়া শুরু হয়, তবে ফার্স্ট ট্রাইমেস্টারে শুধুমাত্র ফলিক এসিডকেই সবচেয়ে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
-
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত ফলিক এসিড গ্রহণ করা উচিত নয়, কারণ অতিরিক্ত ডোজ শরীরের অন্যান্য ভিটামিন বি–গ্রুপের ভারসাম্যে প্রভাব ফেলতে পারে।
সবদিক বিবেচনায় দেখা যায়, গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে ফলিক এসিড মায়ের ও শিশুর সুস্থতার ভিত্তি স্থাপন করে। এটি শুধু এক ধরনের ভিটামিন নয়, বরং একটি অপরিহার্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, যা নবজাতকের সুস্থ জন্ম নিশ্চিত করে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
0
Updated: 4 days ago
Exclusive Brest feeding বলতে শিশু জন্মের কয়মাস বুঝায়?
Created: 4 days ago
A
দুই বছর
B
পাঁচ মাস
C
ছয় মাস
D
নয় মাস
শিশুর জন্মের পর প্রথম ছয় মাস শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানোকে Exclusive Breastfeeding বলা হয়। এই সময় শিশুর জন্য মায়ের দুধই সর্বোত্তম ও সম্পূর্ণ খাবার হিসেবে বিবেচিত, কারণ এতে শিশুর প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকে যা তার বৃদ্ধি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
Exclusive Breastfeeding-এর মূল অর্থ হলো, শিশুকে জন্মের পর প্রথম ছয় মাস পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানো হবে—এ সময়ে পানি, মধু, দুধ, ফলের রস বা অন্য কোনো খাবার দেওয়া উচিত নয়।
– মায়ের দুধে শিশুর প্রয়োজনীয় প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিবডি থাকে যা শিশুর দেহকে রোগ থেকে রক্ষা করে।
– প্রথম ছয় মাসে শিশুর হজমপ্রক্রিয়া পুরোপুরি পরিপক্ব হয় না, তাই অন্য কোনো খাবার বা তরল পদার্থ দিলে তা শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
– কোলস্ট্রাম বা জন্মের পর প্রথম দুধ শিশুর জন্য বিশেষ উপকারী, কারণ এতে ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয়।
– শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ালে শিশুর ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, অপুষ্টি ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি কমে যায়।
– এই সময় মায়ের দুধ শিশুর ওজন বৃদ্ধি, মস্তিষ্কের বিকাশ এবং মানসিক বন্ধন তৈরিতে সাহায্য করে।
– শিশুর তৃষ্ণা মেটাতে আলাদা করে পানি দেওয়ার প্রয়োজন নেই, কারণ মায়ের দুধেই পর্যাপ্ত পানি থাকে।
– বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং ইউনিসেফের পরামর্শ অনুযায়ী, শিশুর জন্মের পর প্রথম ছয় মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো উচিত এবং ছয় মাস পর থেকে ধীরে ধীরে সম্পূরক খাবার দেওয়া শুরু করা যায়।
– মায়ের দুধ শুধু শিশুর জন্য নয়, মায়ের শরীরের জন্যও উপকারী, কারণ এটি প্রসব-পরবর্তী রক্তপাত কমায়, গর্ভধারণের ব্যবধান বাড়ায় এবং স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে।
সুতরাং, Exclusive Breastfeeding বলতে শিশুকে জন্মের পর থেকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো বোঝায়, যা শিশুর স্বাস্থ্য ও জীবনের ভিত্তি গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
0
Updated: 4 days ago
একজন স্বাভাবিক সুস্থ মহিলার গর্ভকালীন সময়ে গড়ে কত কেজি ওজন বাড়তে পারে?
Created: 5 days ago
A
২০ কেজি
B
১৫ কেজি
C
১২ কেজি
D
৫ কেজি
0
Updated: 5 days ago