রক্তে তরল অংশের নাম-
A
কোলেস্টেরল
B
প্রোটিন
C
লোহিত কনিকা
D
প্লাজমা
উত্তরের বিবরণ
রক্তের তরল অংশকে বলা হয় প্লাজমা (Plasma)। এটি হালকা হলুদ বর্ণের একপ্রকার তরল পদার্থ যা রক্তের মোট আয়তনের প্রায় ৫৫% অংশ দখল করে। প্লাজমা রক্তের বিভিন্ন উপাদান—যেমন লোহিত কণিকা, শ্বেত কণিকা ও প্লেটলেট—কে ভাসমান অবস্থায় রাখে এবং সেগুলোকে শরীরের এক অংশ থেকে অন্য অংশে পৌঁছে দেয়।
প্লাজমা-এর গঠন ও কার্যাবলি মানবদেহের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
– প্লাজমার প্রায় ৯০-৯২% পানি, যা শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও কোষে পুষ্টি পরিবহনে সহায়তা করে।
– এতে প্রোটিন থাকে প্রায় ৭-৮%, যার মধ্যে প্রধান হলো অ্যালবুমিন, গ্লোবিউলিন এবং ফাইব্রিনোজেন।
– অ্যালবুমিন রক্তচাপ ও তরল ভারসাম্য বজায় রাখে, গ্লোবিউলিন প্রতিরক্ষা কাজ করে এবং ফাইব্রিনোজেন রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
– বাকি অংশে থাকে গ্লুকোজ, হরমোন, ইউরিয়া, কার্বন ডাই-অক্সাইড, লবণ ও বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান।
– প্লাজমা শরীরের কোষে প্রয়োজনীয় খাদ্য, অক্সিজেন ও হরমোন পৌঁছে দেয় এবং বিপাকীয় বর্জ্য পদার্থ কিডনি ও ফুসফুসে বহন করে বের করে দেয়।
– এটি রক্তের pH নিয়ন্ত্রণ, রোগ প্রতিরোধ, এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
– প্লাজমা রক্তে বিভিন্ন রাসায়নিক ও প্রতিরোধক উপাদান দ্রবীভূত করে রাখে, যা সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
– চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্লাজমা আলাদা করে প্লাজমা থেরাপি বা রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হয়, বিশেষত গুরুতর অসুস্থ বা রক্তহীন রোগীদের ক্ষেত্রে।
অন্যদিকে, লোহিত কণিকা (RBC) অক্সিজেন বহন করে, শ্বেত কণিকা (WBC) রোগ প্রতিরোধে কাজ করে এবং প্লেটলেট রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে—কিন্তু এরা কেউই রক্তের তরল অংশ নয়।
সুতরাং, রক্তের তরল অংশের নাম হলো প্লাজমা (Plasma), যা রক্তের প্রধান পরিবহন মাধ্যম হিসেবে কাজ করে এবং মানবদেহের জীবনধারার জন্য অপরিহার্য।
0
Updated: 4 days ago
লোহিত কণিকা কোথায় উৎপন্ন হয়?
Created: 3 weeks ago
A
অস্থিমজ্জায়
B
লিভারে
C
প্লীহায়
D
হৃৎপিণ্ডে
রক্ত কণিকা তিন ধরনের হয়, যা রক্তের বিভিন্ন কার্যাবলীর সঙ্গে জড়িত।
ক. লোহিত কণিকা:
-
রক্তে লোহিত কণিকার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি থাকে।
-
এক ঘন মিলিলিটার রক্তে পুরুষদের জন্য প্রায় ৫০ লক্ষ, এবং মহিলাদের জন্য প্রায় ৪৫ লক্ষ লোহিত কণিকা থাকে।
-
এটি অস্থিমজ্জায় উৎপন্ন হয় এবং ১২০ দিন পর প্লীহায় বিনষ্ট হয়।
-
ব্যায়াম করলে লোহিত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং এগুলো দীর্ঘদিন বাঁচে।
-
লোহিত কণিকা হিমোগ্লোবিনের সহায়তায় দেহের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
খ. শ্বেত কণিকা:
-
শরীরে রক্তে শ্বেত কণিকার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম থাকে।
-
এক মিলিলিটার রক্তে প্রায় ৬–৮ হাজার শ্বেত কণিকা থাকে।
-
এরা বর্ণহীন এবং নিউক্লিয়াসযুক্ত।
-
সাধারণত এরা ১২–১৩ দিন বাঁচে।
-
ব্যায়াম করলে এদের বেঁচে থাকার সময় ও সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
-
শ্বেত কণিকা রক্তে প্রবেশকারী জীবাণুকে ঘিরে ধরে বিনষ্ট করে এবং দেহকে রক্ষা করে, ফলে শরীরের ক্ষমতা ও শক্তিশালীতা বৃদ্ধি পায়।
গ. অণুচক্রিকা:
-
অণুচক্রিকা দেখতে ডিম্বাকার বা ডিস্কের মতো।
-
দেহের বৃহদাকার কোষ ভেঙ্গে অণুচক্রিকা সৃষ্টি হয়।
-
দেহের কোনো স্থানে ক্ষত হলে সেখানে ৩ মিনিটের মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
0
Updated: 3 weeks ago
কোন রক্তকোষ জীবাণু ধ্বংস করে দেহের প্রকৃতিগত আত্মরক্ষায় অংশ নেয়?
Created: 1 month ago
A
অণুচক্রিকা
B
প্লাজমা
C
শ্বেত রক্তকোষ
D
লোহিত রক্তকোষ
রক্ত:
রক্ত হলো এক ধরনের ক্ষারীয়, ঈষৎ লবণাক্ত এবং লালবর্ণের তরল যোজক টিস্যু।
এটি ধমনি, শিরা ও কৈশিকনালির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দেহের অভ্যন্তরীণ পরিবহনে অংশ নেয়।
উষ্ণ রক্তবাহী প্রাণীর দেহে রক্ত তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করে।
রক্তের প্রধান উপাদান দুটি:
১. রক্তরস (Plasma) – ৫৫%
২. রক্তকোষ (Blood cells) – ৪৫%
রক্তরস (Plasma):
রক্তের তরল অংশ, রঙ ঈষৎ হলুদাভ।
প্রায় ৯১–৯২% পানি এবং ৪–৯% জৈব ও অজৈব পদার্থ থাকে।
এর ভিতরে বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন ও বর্জ্য পদার্থ থাকে।
রক্তকোষ (Blood cells):
রক্তকোষ তিন ধরনের:
১. লোহিত রক্তকোষ (Erythrocyte বা RBC)
হিমোগ্লোবিন নামক লৌহজাত যৌগ থাকে, যার কারণে রক্ত লাল হয়।
হিমোগ্লোবিন অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অক্সিহিমোগ্লোবিন গঠন করে এবং দেহের বিভিন্ন স্থানে অক্সিজেন পরিবহন করে।
২. শ্বেত রক্তকোষ (Leukocyte বা WBC)
জীবাণু ধ্বংস করে দেহের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করে।
মানবদেহে বিভিন্ন ধরনের শ্বেত রক্তকোষ থাকে।
৩. অণুচক্রিকা (Thrombocytes বা Blood platelet)
রক্ত জমাট বাঁধায় অংশ নেয়।
উৎস: জীববিজ্ঞান, নবম-দশম শ্রেণি
0
Updated: 1 month ago
কোন উপাদানটি রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করে?
Created: 4 days ago
A
ক্যালসিয়াম
B
ম্যাঙ্গানিজ
C
প্রোটিন
D
লৌহ
রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো লৌহ (Iron)। হিমোগ্লোবিন হলো রক্তের একটি প্রোটিন যা অক্সিজেন পরিবহন করতে সাহায্য করে। হিমোগ্লোবিনের গঠন মূলত লৌহ ধারণকারী একটি অংশ থেকে আসে, যা অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন সরবরাহ করে।
লৌহের ভূমিকা:
-
লৌহ হিমোগ্লোবিনের প্রধান উপাদান, যা রক্তের রেড ব্লাড সেল (RBC) গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
-
লৌহের অভাবে হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন কমে যেতে পারে, যার ফলে রক্তস্বল্পতা (Anemia) হতে পারে।
-
যথাযথ পরিমাণ লৌহ শরীরে থাকা সত্ত্বেও রক্তে অক্সিজেনের সঠিক পরিবহণ সম্ভব হয়।
অন্য উপাদানগুলোর ভূমিকা:
-
ক্যালসিয়াম মূলত হাড় ও দাঁত শক্ত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে এটি হিমোগ্লোবিন গঠনে সাহায্য করে না।
-
ম্যাঙ্গানিজ একটি ট্রেস উপাদান, যা মেটাবলিজম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এনজাইমের কার্যক্রমে সহায়ক, তবে এটি হিমোগ্লোবিন গঠনে প্রভাবিত করে না।
-
প্রোটিন শরীরের গঠনমূলক উপাদান, তবে হিমোগ্লোবিন গঠনে সরাসরি প্রভাব ফেললেও এটি প্রধান উপাদান নয়।
সুতরাং, হিমোগ্লোবিন তৈরিতে লৌহ প্রধান উপাদান হিসেবে কাজ করে।
উ. ঘ) লৌহ
0
Updated: 4 days ago