'বিষাদ সিন্ধু' উপন্যাস কে লিখেছেন?
A
মুনীর চৌধুরী
B
মীর মশাররফ হোসেন
C
সৈয়দ শামছুল হক
D
আসাদ চৌধুরী
উত্তরের বিবরণ
বাংলা সাহিত্য জগতে ‘বিষাদ সিন্ধু’ একটি অমর উপন্যাস, যার রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেন। এটি উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে রচিত একটি ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় উপন্যাস, যেখানে কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায়। এই রচনাটি বাংলা গদ্যসাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত।
এই উপন্যাস সম্পর্কিত মূল দিকগুলো হলো
-
মীর মশাররফ হোসেন (১৮৪৭–১৯১২) ছিলেন বাংলা মুসলিম সাহিত্যজগতের প্রথমদিকের অন্যতম প্রধান কথাসাহিত্যিক। তাঁর রচনায় ধর্মীয় আবেগ, মানবিক বেদনা এবং নৈতিক বোধ গভীরভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
-
‘বিষাদ সিন্ধু’ উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৮৫ থেকে ১৮৯১ সালের মধ্যে তিন খণ্ডে। এটি মূলত ইসলাম ধর্মের ইতিহাসভিত্তিক এক আবেগঘন উপাখ্যান।
-
কাহিনিটি আবর্তিত হয়েছে ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেন (রাঃ)-এর শহীদ হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে, যা ইসলামের ইতিহাসে কারবালা যুদ্ধ নামে পরিচিত।
-
উপন্যাসটির ভাষা সংস্কৃতপ্রভাবিত প্রাঞ্জল বাংলা, যা সে সময়ের সাহিত্যিক রীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলেও এর ভেতরে এক ধরনের কাব্যিক বেদনা ও ধর্মীয় শ্রদ্ধা প্রকাশ পেয়েছে।
-
লেখক এখানে শুধু ইতিহাস তুলে ধরেননি, বরং মানবতার চূড়ান্ত ত্যাগ ও ন্যায়ের সংগ্রামকে এক গভীর দার্শনিক ভাবনায় উপস্থাপন করেছেন।
-
‘বিষাদ সিন্ধু’ বাংলা সাহিত্যে মুসলিম লেখকের হাতে সৃষ্ট প্রথম পূর্ণাঙ্গ ঐতিহাসিক উপন্যাস, যা ধর্মীয় বেদনা ও সাহিত্যিক রূপের চমৎকার সংমিশ্রণ।
-
এই রচনায় লেখক আধ্যাত্মিকতা ও মানবতার সংঘর্ষ, সত্য-মিথ্যার লড়াই এবং আত্মত্যাগের মহান শিক্ষা তুলে ধরেছেন।
-
ভাষা ও শৈলীর দিক থেকে উপন্যাসটি তৎকালীন বাংলা সাহিত্যে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে, যা পরবর্তী মুসলিম লেখকদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়।
-
‘বিষাদ সিন্ধু’-র সাহিত্যিক মূল্য এতটাই গভীর যে এটি আজও বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধর্মীয়-ঐতিহাসিক উপন্যাস হিসেবে বিবেচিত।
-
পরবর্তীকালে এই উপন্যাসটি ধর্মীয় পাঠের গণ্ডি পেরিয়ে মানবতার সার্বজনীন মূল্যবোধ প্রকাশের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে বিশেষ মর্যাদা লাভ করে।
অতএব স্পষ্টভাবে বলা যায়, ‘বিষাদ সিন্ধু’ উপন্যাসের লেখক মীর মশাররফ হোসেন, যিনি তাঁর অনন্য ভাষাশৈলী ও গভীর মানবিক বোধের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন।
0
Updated: 4 days ago
মীর মশাররফ হোসেন রচিত প্রথম গ্রন্থের নাম কী?
Created: 1 month ago
A
রত্নবতী
B
বসন্তকুমারী
C
বিষাদ-সিন্ধু
D
জমীদার দর্পণ
রত্নবতী
-
গ্রন্থ: ‘রত্নবতী’ মীর মশাররফ হোসেন রচিত প্রথম গ্রন্থ।
-
প্রকাশ: ১৮৬৯ সালে প্রকাশিত।
-
ধরণ: রূপকথা জাতীয় শিক্ষামূলক দীর্ঘ গল্প।
-
বিষয়বস্তু: রাজপুত্র সুকুমার ও মন্ত্রীপুত্র সুমন্তের মধ্যে ‘ধন বড় না বিদ্যা বড়’ বিতর্ক ও তার সমাধান।
-
গুরুত্ব: মুসলিম সাহিত্যিকদের মধ্যে প্রথম ঐতিহাসিকভাবে মূল্যবান গ্রন্থ।
মীর মশাররফ হোসেন
-
জন্ম: ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর, কুষ্টিয়া জেলার লাহিনীপাড়া।
-
পেশা: ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক।
-
অ্যাক্টিভিটি: ছাত্রাবস্থায় সংবাদ প্রভাকর ও গ্রামবার্তার মফঃস্বল সংবাদদাতা; ‘আজিজননেহার’ ও ‘হিতকরী’ পত্রিকা সম্পাদনা।
-
গুরুত্ব: বঙ্কিমযুগের প্রধান গদ্যশিল্পী; উনিশ শতকের বাঙালি মুসলমান সাহিত্যিকদের পথিকৃৎ।
রচিত নাটক:
-
বসন্তকুমারী
-
জমীদার দর্পণ
-
বেহুলা গীতাভিনয়
-
টালা অভিনয়
রচিত উপন্যাস:
-
বিষাদ-সিন্ধু
রচিত অন্যান্য গ্রন্থ:
-
উদাসীন পথিকের মনের কথা
-
গাজী মিয়াঁর বস্তানী
আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ:
-
আমার জীবনী
-
কুলসুম জীবনী
0
Updated: 1 month ago
'বসন্তকুমারী' মীর মশাররফ হোসেন রচিত-
Created: 1 month ago
A
উপন্যাস
B
প্রহসন
C
নাটক
D
আত্মজীবনী
‘বসন্তকুমারী’ মীর মশাররফ হোসেনের অন্যতম উল্লেখযোগ্য নাটক, যা ১৮৭৩ সালে রচিত এবং মুসলমান নাট্যকার দ্বারা রচিত প্রথম নাটক হিসেবে বিবেচিত। নাটকের কাহিনি ইন্দ্রপুরের বিপত্নীক রাজার বৃদ্ধ বয়সে যুবতী স্ত্রী গ্রহণ, রাজার যুবক পুত্রের প্রতি বিমাতার আকর্ষণ ও প্রেম নিবেদন, পুত্রের প্রত্যাখ্যান এবং বিমাতার ষড়যন্ত্রের পর রাজপরিবারের সকলের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচিত। নাটকটির অপর নাম হলো ‘বৃদ্ধস্য তরূণী ভার্যা’।
-
নাটকসমূহ:
-
বসন্তকুমারী
-
জমীদার দর্পণ
-
বেহুলা গীতাভিনয়
-
-
উপন্যাসসমূহ:
-
বিষাদ-সিন্ধু
-
-
গ্রন্থসমূহ:
-
উদাসীন পথিকের মনের কথা
-
গাজী মিয়াঁর বস্তানী
-
-
আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ:
-
আমার জীবনী
-
কুলসুম জীবনী
-
0
Updated: 1 month ago
মীর মশাররফ হোসেন রচিত 'বিষাদ সিন্ধু' উপন্যাসের চরিত্র নয় কোনটি?
Created: 3 days ago
A
ইয়াজিদ
B
মাওয়ান
C
ইমাম হোসেন
D
ইব্রাহিক কার্দি
মীর মশাররফ হোসেনের অমর কীর্তি ‘বিষাদ সিন্ধু’ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক উপন্যাস। এটি মূলত কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার ওপর ভিত্তি করে রচিত, যেখানে সত্য ও অন্যায়ের সংঘাত, ধর্মীয় নীতি, ত্যাগ ও আত্মোৎসর্গের চিত্র ফুটে উঠেছে। উপন্যাসে যে সব চরিত্র পাওয়া যায়, তারা ঐতিহাসিক ঘটনাকে ধারণ করে, কিন্তু প্রদত্ত বিকল্পগুলোর মধ্যে ‘ইব্রাহিক কার্দি’ নামে কোনো চরিত্র নেই।
‘বিষাদ সিন্ধু’-র উল্লেখযোগ্য চরিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছেন—
-
ইমাম হোসেন (রা.), যিনি উপন্যাসের মূল চরিত্র। তিনি ছিলেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র এবং ন্যায়ের প্রতীক। তিনি ইয়াজিদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেন ও কারবালার প্রান্তরে শাহাদাত বরণ করেন।
-
ইয়াজিদ, যিনি উমাইয়া বংশীয় খলিফা। তার লোভ, ক্ষমতার আসক্তি ও ধর্মবিরোধী আচরণই ইমাম হোসেনের সঙ্গে সংঘর্ষের কারণ হয়ে ওঠে।
-
মাওয়ান, ইয়াজিদের উপদেষ্টা ও রাজনীতির এক কূট চরিত্র, যিনি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অন্যায়ের শক্তিকে প্রাধান্য দেন।
-
জয়নাব, ইমাম হোসেনের বোন, যিনি কারবালার ঘটনার পর ইসলামের পক্ষে সাহসিকতার সঙ্গে কণ্ঠ তুলে ধরেন।
-
আলী আ্কবর, কাসিম, হাবিব ইবনে মাযাহির প্রমুখ চরিত্ররাও উপন্যাসে ন্যায় ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে স্থান পেয়েছেন।
এই উপন্যাসের বিশেষত্ব হলো লেখকের গভীর আবেগ, ধর্মীয় অনুভূতি এবং সাহিত্যিক বর্ণনার দক্ষতা। এতে ইতিহাস, ধর্ম ও মানবিক বেদনাকে এমনভাবে একত্র করা হয়েছে যে পাঠক একদিকে ঐতিহাসিক সত্য জানতে পারে, অন্যদিকে মানবতার গভীর মূল্যবোধ অনুভব করে।
‘বিষাদ সিন্ধু’-তে লেখক যেভাবে চরিত্রগুলিকে গঠন করেছেন, তা শুধু ঐতিহাসিক নয়, বরং নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও তা গভীর তাৎপর্যপূর্ণ। প্রতিটি চরিত্র এক একটি আদর্শের প্রতীক—কেউ ন্যায়, কেউ ত্যাগ, কেউবা অন্যায়ের প্রতিফলন। কিন্তু ‘ইব্রাহিক কার্দি’ নামের কোনো চরিত্র এই কাহিনিতে নেই; এটি উপন্যাসের কল্পিত বা সম্পর্কহীন নাম।
অতএব, প্রদত্ত বিকল্পগুলোর মধ্যে সঠিক উত্তর হলো ঘ) ইব্রাহিক কার্দি, কারণ এটি ‘বিষাদ সিন্ধু’ উপন্যাসের কোনো চরিত্র নয়।
0
Updated: 3 days ago