মহাস্থানগড় কোন জেলায় অবস্থিত?
A
বগুড়া
B
কুমিল্লা
C
নওগা
D
সোনারগাঁও
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর মধ্যে মহাস্থানগড় অন্যতম, যা দেশের প্রাচীন সভ্যতার এক উজ্জ্বল নিদর্শন হিসেবে পরিচিত। এটি অবস্থিত বগুড়া জেলায়, করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে। এই স্থানটি প্রাচীনকালে পুন্ড্রনগর নামে পরিচিত ছিল, যা বাংলার অন্যতম প্রাচীন নগরী হিসেবে ইতিহাসে স্থান পেয়েছে।
-
মহাস্থানগড়ের অবস্থান বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার উত্তরে, শিবগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত।
-
এটি ছিল প্রাচীন পুন্ড্রবর্ধন রাজ্যের রাজধানী, যা পাল, সেন ও গুপ্ত যুগে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে সমৃদ্ধ ছিল।
-
প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে এখানে ইটের তৈরি প্রাচীর, প্রাচীন দুর্গ, রাজপ্রাসাদ, মঠ, শিবমন্দির ও মসজিদের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
-
মহাস্থানগড়ের প্রাচীরের দৈর্ঘ্য প্রায় ১,৫০০ গজ (প্রায় ৫ কিলোমিটার), যা একে মধ্যযুগীয় দুর্গনগরীর আদলে নির্মিত বলে ধারণা করা হয়।
-
এখানে আবিষ্কৃত মহাস্থান ব্রাহ্মী শিলালিপি (৩য় শতাব্দী খ্রিষ্টপূর্বাব্দ) প্রমাণ করে যে, এটি বাংলাদেশের প্রাচীনতম লিখিত নিদর্শন।
-
এই শিলালিপিতে পাল রাজা অশোকের সময়কার এক প্রশাসনিক আদেশ লিপিবদ্ধ আছে, যা প্রাচীন বঙ্গদেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ইতিহাস বোঝায়।
-
মহাস্থানগড়ে পাওয়া প্রত্নবস্তুগুলোর মধ্যে রয়েছে মুদ্রা, মৃৎপাত্র, ব্রোঞ্জ ও লোহার অস্ত্র, পাথরের মূর্তি এবং ভাস্কর্য, যা বর্তমানে বগুড়া জাদুঘর ও জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
-
স্থানটি একসময় ছিল বৌদ্ধ, হিন্দু ও মুসলিম সংস্কৃতির মিলনস্থল, যা বাংলাদেশের ধর্মীয় সহাবস্থানের ঐতিহ্যকে নির্দেশ করে।
-
ইতিহাসবিদদের মতে, মহাস্থানগড় ছিল প্রাচীনকালের শিক্ষা, প্রশাসন ও বাণিজ্যের কেন্দ্র, যা উত্তরবঙ্গের সভ্যতার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
-
প্রতি বছর এখানে হাজারো পর্যটক, ইতিহাসবিদ ও প্রত্নতত্ত্ববিদ আসেন বাংলাদেশের প্রাচীন ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে ও গবেষণা করতে।
সবশেষে বলা যায়, মহাস্থানগড় বগুড়া জেলার এক ঐতিহাসিক সম্পদ, যা বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতা ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে।
0
Updated: 4 days ago
প্রাচীন পুণ্ড্রবর্ধন নগর কোন স্থানে অবস্থিত?
Created: 5 months ago
A
ময়নামতি
B
বিক্রমপুর
C
মহাস্থানগড়
D
পাহাড়পুর
মহাস্থানগড়
মহাস্থানগড় বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ পুরাকীর্তি। প্রাচীনকালে এই স্থানের নাম ছিল পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর। এক সময় এটি ছিল বাংলার রাজধানী, যা তার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গুরুত্বকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।
এখানে মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন সাম্রাজ্যের বহু নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে, যা মহাস্থানগড়কে বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার এক উজ্জ্বল সাক্ষ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
মহাস্থানগড় অবস্থিত বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায়, যা বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার উত্তরে করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত। এর প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব একে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করেছে।
ইতিহাস অনুযায়ী, সেন বংশের শেষ রাজা লক্ষ্মণ সেন (১০৮২–১১২৫) যখন গৌড়ের রাজা ছিলেন, তখন এই গড় ছিল অরক্ষিত অবস্থায়।
সব মিলিয়ে মহাস্থানগড় বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রাচীন পর্যটন কেন্দ্র ও ঐতিহাসিক নিদর্শন, যা ইতিহাসপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসু মানুষের কাছে এক বিশেষ আকর্ষণ।
উৎস: জাতীয় তথ্য বাতায়ন
0
Updated: 5 months ago