রক্তে হিমোগ্লোবিনের কাজ-
A
কার্বন পরিবহন
B
অক্সিজেন পরিবহন
C
কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ
D
পুষ্টি বর্ধন
উত্তরের বিবরণ
রক্তে হিমোগ্লোবিন হলো এক ধরনের প্রোটিন যা লোহিত রক্তকণিকার (RBC) ভেতরে থাকে এবং এটি শরীরের কোষে অক্সিজেন পরিবহনের মূল কাজটি সম্পন্ন করে। এটি শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গে অক্সিজেন পৌঁছে দিয়ে শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে এবং একই সঙ্গে কোষের বর্জ্য গ্যাস কার্বন-ডাই-অক্সাইড ফুসফুসে ফিরিয়ে নিয়ে আসে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে বের করে দেওয়ার জন্য।
-
হিমোগ্লোবিন মূলত লোহা (Iron) যুক্ত একটি জটিল প্রোটিন যা চারটি উপইউনিট নিয়ে গঠিত, প্রতিটি উপইউনিটে থাকে একটি করে হিম গ্রুপ, যা অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হতে সক্ষম।
-
এটি ফুসফুসে অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অক্সিহিমোগ্লোবিন তৈরি করে এবং শরীরের বিভিন্ন কোষে পৌঁছে সেই অক্সিজেন মুক্ত করে দেয়।
-
হিমোগ্লোবিনের উপস্থিতির কারণে রক্তের রং লাল হয়; অক্সিজেনযুক্ত রক্ত উজ্জ্বল লাল এবং অক্সিজেনবিহীন রক্ত অপেক্ষাকৃত গাঢ় রঙের হয়।
-
শরীরের কোষে অক্সিজেন সরবরাহ না হলে শক্তি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়, ফলে ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। তাই পর্যাপ্ত হিমোগ্লোবিন থাকা অত্যন্ত জরুরি।
-
হিমোগ্লোবিন শরীরের অ্যাসিড–বেস ভারসাম্য রক্ষায়ও ভূমিকা রাখে, যা কোষের স্বাভাবিক কাজকর্মের জন্য অপরিহার্য।
-
স্বাভাবিক অবস্থায় পুরুষের রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ প্রায় ১৩–১৭ গ্রাম প্রতি ডেসিলিটার, আর নারীদের ক্ষেত্রে এটি ১২–১৫ গ্রাম প্রতি ডেসিলিটার থাকে।
-
হিমোগ্লোবিনের অভাব হলে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা দেখা দেয়, যার ফলে শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছায় না। এর ফলে দুর্বলতা, অবসাদ ও মনোযোগের ঘাটতি দেখা দেয়।
-
সঠিক খাদ্যাভ্যাস হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। যেমন—লাল মাংস, ডিম, মাছ, কলিজা, শাকসবজি, ডাল, বিট, আপেল, খেজুর ও পালং শাক নিয়মিত খেলে হিমোগ্লোবিন বাড়ে।
-
গর্ভবতী নারী, শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি বেশি দেখা যায়, তাই এই সময়ে আয়রন সাপ্লিমেন্ট ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
-
হিমোগ্লোবিন শরীরের প্রতিটি কোষে জীবনধারার শক্তি সরবরাহ করে, তাই এটি রক্তের “জীবনবাহক অণু” হিসেবেও পরিচিত।
সব মিলিয়ে বলা যায়, রক্তে হিমোগ্লোবিনের মূল কাজ হলো অক্সিজেন পরিবহন, যা শরীরের শক্তি উৎপাদন ও জীবনীশক্তি বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। সুতরাং, সঠিক উত্তর — খ) অক্সিজেন পরিবহন।
0
Updated: 4 days ago
রক্তরসের প্রধান উপাদান কোনটি?
Created: 1 month ago
A
হরমোন
B
প্রোটিন
C
পানি
D
এন্টিবডি
রক্ত হলো একটি অস্বচ্ছ, মৃদু ক্ষারীয় ও লবণাক্ত তরল পদার্থ, যা হৃদয়, শিরা, উপশিরা, ধমনি, শাখা ধমনি এবং কৈশিকনালির মাধ্যমে দেহে সঞ্চালিত হয়। রক্তে থাকা লোহিত রক্তকোষের হিমোগ্লোবিন রঞ্জক পদার্থ রক্তকে লাল রঙ প্রদান করে। হাড়ের লাল অস্থিমজ্জাতেই রক্তকোষের উৎপত্তি হয়।
রক্তের উপাদানসমূহ:
-
রক্ত একটি তরল যোজক কলা, যা রক্তরস এবং বিভিন্ন ধরনের রক্তকোষ নিয়ে গঠিত।
রক্তরস (Plasma):
-
রক্তের বর্ণহীন তরল অংশকে রক্তরস বলা হয়।
-
রক্তের প্রায় ৫৫% অংশ রক্তরস দ্বারা গঠিত।
-
রক্তরসের প্রধান উপাদান পানি।
-
এছাড়া এতে দ্রবীভূত থাকে প্রোটিন (যেমন: অ্যালবুমিন, গ্লোবিউলিন, ফাইব্রিনোজেন), গ্লুকোজ, ক্ষুদ্র চর্বিকণা, খনিজ লবণ, ভিটামিন, হরমোন, এন্টিবডি, এবং বর্জ্য পদার্থ (যেমন: কার্বন ডাই-অক্সাইড, ইউরিয়া, ইউরিক এসিড)।
-
সামান্য পরিমাণে এতে সোডিয়াম ক্লোরাইড, সোডিয়াম বাইকার্বোনেট এবং অ্যামিনো এসিডও থাকে।
-
খাদ্য হজমের পরে রক্তরসে মিশে দেহের সমস্ত কোষে পৌঁছায়, যা কোষকে পুষ্টি সরবরাহ করে এবং ক্ষয়পূরণে সহায়তা করে।
0
Updated: 1 month ago
কোন রক্তকোষ জীবাণু ধ্বংস করে দেহের প্রকৃতিগত আত্মরক্ষায় অংশ নেয়?
Created: 1 month ago
A
অণুচক্রিকা
B
প্লাজমা
C
শ্বেত রক্তকোষ
D
লোহিত রক্তকোষ
রক্ত:
রক্ত হলো এক ধরনের ক্ষারীয়, ঈষৎ লবণাক্ত এবং লালবর্ণের তরল যোজক টিস্যু।
এটি ধমনি, শিরা ও কৈশিকনালির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দেহের অভ্যন্তরীণ পরিবহনে অংশ নেয়।
উষ্ণ রক্তবাহী প্রাণীর দেহে রক্ত তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করে।
রক্তের প্রধান উপাদান দুটি:
১. রক্তরস (Plasma) – ৫৫%
২. রক্তকোষ (Blood cells) – ৪৫%
রক্তরস (Plasma):
রক্তের তরল অংশ, রঙ ঈষৎ হলুদাভ।
প্রায় ৯১–৯২% পানি এবং ৪–৯% জৈব ও অজৈব পদার্থ থাকে।
এর ভিতরে বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন ও বর্জ্য পদার্থ থাকে।
রক্তকোষ (Blood cells):
রক্তকোষ তিন ধরনের:
১. লোহিত রক্তকোষ (Erythrocyte বা RBC)
হিমোগ্লোবিন নামক লৌহজাত যৌগ থাকে, যার কারণে রক্ত লাল হয়।
হিমোগ্লোবিন অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অক্সিহিমোগ্লোবিন গঠন করে এবং দেহের বিভিন্ন স্থানে অক্সিজেন পরিবহন করে।
২. শ্বেত রক্তকোষ (Leukocyte বা WBC)
জীবাণু ধ্বংস করে দেহের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করে।
মানবদেহে বিভিন্ন ধরনের শ্বেত রক্তকোষ থাকে।
৩. অণুচক্রিকা (Thrombocytes বা Blood platelet)
রক্ত জমাট বাঁধায় অংশ নেয়।
উৎস: জীববিজ্ঞান, নবম-দশম শ্রেণি
0
Updated: 1 month ago
অগভীর পানিতে সুনামির শক্তি কেমন হয়?
Created: 1 month ago
A
বৃদ্ধি পায়
B
কমে যায়
C
অনির্ধারিত
D
অপরিবর্তিত থাকে
সুনামি হলো একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। Tsunami শব্দটি জাপানি; যেখানে ‘সু’ অর্থ বন্দর এবং ‘নামি’ অর্থ ঢেউ, অর্থাৎ সুনামি শব্দের অর্থ হলো বন্দরের ঢেউ।
-
সমুদ্রতলদেশে ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিধস এবং নভোজাগতিক ঘটনা সুনামি সৃষ্টি করতে পারে।
-
সুনামিকে পৃথিবীর তৃতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
-
এই প্রাকৃতিক দুর্যোগটি সাধারণত শুধুমাত্র সাগরে সংঘটিত হয়।
-
সাধারণত সমুদ্রের তলদেশে ভূমিকম্প ঘটলে সুনামি তৈরি হয়।
-
২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর স্বরণকালের ভয়ঙ্কর একটি সুনামি সংঘটিত হয়।
-
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের কাছাকাছি ভারত মহাসাগরের তলদেশে সৃষ্টি হয়েছিল ট্রাক্টনিক ভূমিকম্প।
-
ইউরেশিয়ান প্লেট ও অস্ট্রেলিয়ান প্লেটের সংঘর্ষে তৈরি এই মারাত্মক ভূমিকম্প রিখটার স্কেলে নয় মাত্রার ছিল।
-
এই জলোচ্ছাসে প্রায় তিন লাখ মানুষ নিহত হয়, যার মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রার আচেহ প্রদেশে নিহত হয় এক লাখ মানুষ।
-
অগভীর পানিতে যাওয়ার সময় সুনামি তার শক্তি হারায়, অর্থাৎ কমে যায়।
-
বঙ্গোপসাগরে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত অগভীর পানি বাংলাদেশকে সুনামির প্রভাবে রক্ষা করে।
-
১৭৬২ সালের ২ এপ্রিল বঙ্গোপসাগরের আরাকান অঞ্চলে সংঘটিত ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট সুনামি বাংলাদেশে আঘাত এনেছিল।
0
Updated: 1 month ago