Premature baby বলতে কোন সময়ে জন্মগ্রহণকারী শিশু বলা হয়?
A
৯-১০ মাস
B
২৮ সপ্তাহ-৩৭ সপ্তাহ
C
৩৭ সপ্তাহের পরবর্তী সময়
D
৪০ সপ্তাহের বেশি
উত্তরের বিবরণ
Premature baby বা অকালজাত শিশু বলতে সেই নবজাতককে বোঝানো হয় যে গর্ভধারণের ২৮ সপ্তাহ থেকে ৩৭ সপ্তাহের মধ্যে জন্মগ্রহণ করে। স্বাভাবিকভাবে একটি শিশুর জন্ম হয় প্রায় ৪০ সপ্তাহে, অর্থাৎ সম্পূর্ণ গর্ভকাল শেষ হওয়ার পর। কিন্তু গর্ভের সময়কাল ৩৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগেই জন্ম নিলে সেই শিশুকে Premature baby বলা হয়।
বিষয়টি ভালোভাবে বোঝার জন্য নিচের দিকগুলো লক্ষ্য করা যায়
-
স্বাভাবিক গর্ভকাল সাধারণত ৪০ সপ্তাহ বা প্রায় ৯ মাস ১০ দিন, যা সম্পূর্ণ মেয়াদ (Full term) হিসেবে বিবেচিত।
-
যদি কোনো শিশুর জন্ম ৩৭ সপ্তাহের আগেই হয়, তখন তাকে Preterm বা Premature বলা হয়।
-
আবার যদি জন্ম ২৮ সপ্তাহের আগেই হয়, তখন তাকে Extremely preterm, আর ৩২-৩৭ সপ্তাহের মধ্যে জন্ম হলে Moderate to late preterm বলা হয়।
-
Premature শিশুদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সম্পূর্ণরূপে বিকশিত না থাকায় তারা অনেক সময় শ্বাসকষ্ট, দেহের তাপমাত্রা ধরে রাখতে অক্ষমতা, রক্তে শর্করার ঘাটতি, সংক্রমণ, ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যায় ভোগে।
-
এদের জন্মের সময় সাধারণত ওজন ২.৫ কেজির নিচে থাকে এবং তাদের Low Birth Weight (LBW) শ্রেণিতে ফেলা হয়।
-
অকাল জন্মের অন্যতম কারণ হতে পারে মায়ের উচ্চ রক্তচাপ, সংক্রমণ, একাধিক ভ্রূণ থাকা, মানসিক চাপ, ধূমপান, অপুষ্টি, বা জরায়ুর কোনো জটিলতা।
-
Premature শিশুদের যত্নে বিশেষ চিকিৎসা প্রয়োজন, যেমন ইনকিউবেটরে রাখা, দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ, এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর সঠিক পদ্ধতি।
-
ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার (KMC) পদ্ধতিও এই শিশুদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর, কারণ এতে শিশুর তাপমাত্রা বজায় থাকে এবং মায়ের বুকের দুধ সহজে পাওয়া যায়।
-
চিকিৎসা ও যত্নের মাধ্যমে অনেক Premature baby-ই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ওজন এবং বিকাশে পৌঁছাতে পারে।
-
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুসারে, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ১৫ মিলিয়ন শিশু অকাল জন্মগ্রহণ করে, যার মধ্যে অনেকেই সঠিক যত্ন পেলে সম্পূর্ণ সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে।
সুতরাং, ২৮ সপ্তাহ থেকে ৩৭ সপ্তাহের মধ্যে জন্মগ্রহণকারী শিশুকে Premature baby বলা হয়, কারণ এ সময়ের আগে জন্ম নেওয়া মানে শিশুর শারীরিক বিকাশ সম্পূর্ণ হয়নি এবং তাকে বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়।
0
Updated: 4 days ago
বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যুর কোন কারণটি বেশি?
Created: 4 days ago
A
Unsafe abortion
B
Eclampsia
C
Severe bleeding (PPH)
D
Infection
বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় গুরুতর রক্তক্ষরণ (Severe bleeding বা Postpartum Hemorrhage – PPH)। এটি সাধারণত সন্তান জন্মের পরপরই ঘটে এবং সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না পেলে মায়ের মৃত্যু ঘটাতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট মাতৃমৃত্যুর প্রায় এক-তৃতীয়াংশই ঘটে প্রসব-পরবর্তী অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে।
Severe bleeding (PPH) অর্থাৎ Postpartum Hemorrhage হলো সন্তান প্রসবের পর মায়ের শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, যা সাধারণত ৫০০ মিলিলিটারের বেশি হলে তা বিপজ্জনক হিসেবে গণ্য হয়। এটি ঘটতে পারে শিশুজন্মের পর জরায়ুর সংকোচন না হওয়া, প্লাসেন্টা পুরোপুরি বের না হওয়া বা জরায়ু ফেটে যাওয়ার কারণে।
– প্রসব-পরবর্তী রক্তক্ষরণ বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলিতে মাতৃমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ।
– প্রসবকালীন বা পরবর্তী সময়ে রক্তক্ষরণ দ্রুত বন্ধ না করলে রক্তচাপ হঠাৎ কমে যায়, ফলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসমূহ অকেজো হয়ে পড়ে।
– অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা, দক্ষ ধাত্রী বা স্বাস্থ্যকর্মীর অভাব, বিলম্বিত হাসপাতালে ভর্তি এবং জরুরি চিকিৎসা না পাওয়া — এসব কারণ মাতৃমৃত্যুর ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।
– অনেক সময় মা অপুষ্টিতে ভোগেন, ফলে তার শরীরে পর্যাপ্ত রক্ত না থাকায় সামান্য রক্তক্ষরণেও বিপদ সৃষ্টি হয়।
– আয়রনের অভাব ও রক্তস্বল্পতা থাকলে শরীর রক্তক্ষরণ সামলাতে পারে না, যা মাতৃমৃত্যুর সম্ভাবনা বাড়ায়।
– হাসপাতাল বা ক্লিনিকে নিরাপদ প্রসবের ব্যবস্থা, দক্ষ ধাত্রী দ্বারা প্রসব সম্পন্ন করা, ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে জরায়ু সংকোচন নিশ্চিত করা ইত্যাদি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে PPH অনেকাংশে প্রতিরোধ করা যায়।
– বর্তমানে সরকার ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা মাতৃস্বাস্থ্য উন্নয়নে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে, যাতে প্রতিটি প্রসব নিরাপদভাবে সম্পন্ন হয়।
অন্যদিকে, Eclampsia (প্রসূতি খিঁচুনি), Unsafe abortion (অবৈধ গর্ভপাত) এবং Infection (সংক্রমণ) — এ সবও মাতৃমৃত্যুর গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলেও তুলনামূলকভাবে Severe bleeding (PPH) সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটায়।
তাই সঠিক উত্তর হলো — Severe bleeding (PPH), কারণ এটি বাংলাদেশের মাতৃমৃত্যুর সবচেয়ে বড় একক কারণ হিসেবে স্বীকৃত।
0
Updated: 4 days ago
গর্ভকালীন সময়ে বিপদসংকেত (Warning signs) কোনটি নয়?
Created: 4 days ago
A
পাফুলা
B
ওজন বৃদ্ধি
C
রক্তপাত
D
জ্বর
গর্ভকালীন সময়ে কিছু শারীরিক পরিবর্তন স্বাভাবিক হলেও কিছু লক্ষণকে বিপদসংকেত বা Warning Signs হিসেবে গণ্য করা হয়। এসব লক্ষণ দেখা দিলে মা ও শিশুর উভয়ের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। তাই গর্ভবতী নারীর প্রতিটি পরিবর্তন সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। তবে সব পরিবর্তনই বিপদের ইঙ্গিত নয়।
গর্ভকালীন বিপদসংকেত হিসেবে বিবেচিত লক্ষণগুলো হলো:
গর্ভাবস্থায় রক্তপাত অন্যতম বিপদসংকেত, যা গর্ভপাত, প্লাসেন্টা প্রিভিয়া বা গর্ভফুলের বিচ্যুতি নির্দেশ করতে পারে। এটি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়।
জ্বর গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে বিপদজনক হতে পারে, কারণ এটি সংক্রমণের ইঙ্গিত দেয়, যা ভ্রূণের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। উচ্চ জ্বর গর্ভের শিশুর বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
পাফুলা বা হাত-পা, মুখ বা শরীর ফুলে যাওয়া প্রি-এক্লাম্পসিয়া বা উচ্চ রক্তচাপজনিত জটিলতার লক্ষণ হতে পারে। এই অবস্থা সময়মতো চিকিৎসা না করলে মা ও শিশুর উভয়ের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
অন্যদিকে ওজন বৃদ্ধি গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক একটি বিষয়। এটি সাধারণত ভ্রূণের বৃদ্ধি, অ্যামনিওটিক তরল, রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং শরীরে চর্বি জমার কারণে ঘটে। এটি কোনো বিপদসংকেত নয়, বরং একটি স্বাভাবিক জৈবিক পরিবর্তন।
তবে হঠাৎ অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি হলে তা পাফুলার সঙ্গে যুক্ত হয়ে উচ্চ রক্তচাপ বা গর্ভকালীন বিষক্রিয়ার লক্ষণ নির্দেশ করতে পারে— কিন্তু সাধারণভাবে নিয়ন্ত্রিত ওজন বৃদ্ধি বিপদের ইঙ্গিত নয়।
সুতরাং, গর্ভাবস্থায় রক্তপাত, জ্বর ও পাফুলা বিপদসংকেত হিসেবে বিবেচিত হলেও ওজন বৃদ্ধি স্বাভাবিক বিষয়, এটি বিপদের চিহ্ন নয়।
উ. খ) ওজন বৃদ্ধি
0
Updated: 4 days ago
বাংলাদেশে ১০০০ জন শিশুর জন্ম দিতে কতজন মা প্রতিবছর মৃত্যুবরণ করে?
Created: 4 days ago
A
২.৭৬
B
৩.৯০
C
১.৭৬
D
৩.৫০
বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যুর হার এখনো একটি গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য সূচক হিসেবে বিবেচিত হয়। এই হার দ্বারা বোঝা যায়, গর্ভধারণ, প্রসব বা প্রসব-পরবর্তী জটিলতার কারণে কতজন মা মৃত্যুবরণ করেন। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে প্রতি ১০০০টি জীবিত শিশুর জন্মে প্রায় ১.৭৬ জন মা মৃত্যুবরণ করেন। এটি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে উন্নতির একটি প্রতিফলন, কারণ গত কয়েক দশকে এই হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
-
মাতৃমৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, এক্ল্যাম্পসিয়া (গর্ভকালীন খিঁচুনি), সংক্রমণ, ও প্রসবজনিত জটিলতা। এসব জটিলতা যথাযথ চিকিৎসা ও সময়মতো সেবা না পেলে প্রাণঘাতী হতে পারে।
-
আগে প্রতি ১০০০টি জন্মে মাতৃমৃত্যুর সংখ্যা ছিল অনেক বেশি; তবে স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ, প্রশিক্ষিত ধাত্রী (Midwife) নিয়োগ, ও গর্ভকালীন সেবা বৃদ্ধির ফলে এ হার ক্রমে কমছে।
-
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) মাতৃমৃত্যু হার নির্ণয়ের জন্য সাধারণত ১ লাখ জীবিত জন্মে মৃত্যুর সংখ্যা হিসাব করে, তবে এখানে প্রতি ১০০০ শিশুর জন্মে মৃত্যুর অনুপাত বোঝানো হয়েছে।
-
বাংলাদেশে সরকারের “সবার জন্য নিরাপদ মাতৃত্ব কর্মসূচি” এই হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এতে মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবা, জরুরি প্রসূতিসেবা, এবং পরিবার পরিকল্পনা সেবা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
-
গ্রামীণ অঞ্চলে মাতৃমৃত্যুর হার শহরের তুলনায় কিছুটা বেশি, কারণ অনেক মা এখনো স্বাস্থ্যকেন্দ্রে না গিয়ে ঘরোয়া পরিবেশে প্রসব করেন, যেখানে ঝুঁকি অনেক।
-
গর্ভকালীন চারটি বাধ্যতামূলক সেবা গ্রহণ, প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর তত্ত্বাবধানে প্রসব, এবং প্রসব-পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পর্যবেক্ষণ মাতৃমৃত্যু হ্রাসে সবচেয়ে কার্যকর।
-
ফলিক এসিড, আয়রন ও ক্যালসিয়াম গ্রহণ, টিটেনাস টিকা, সুষম খাদ্য এবং বিশ্রাম মায়ের শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে, যা প্রসবের সময় ঝুঁকি কমায়।
-
তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মাতৃমৃত্যু হার দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় দ্রুত হ্রাস পেয়েছে, যা স্বাস্থ্যসেবার ইতিবাচক অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়।
-
যদিও এই হার কমেছে, তবুও সম্পূর্ণ শূন্যে নামিয়ে আনতে হলে গ্রামীণ স্বাস্থ্যব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং জরুরি পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত করা প্রয়োজন।
-
সরকার ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টায় “মাতৃমৃত্যুহীন বাংলাদেশ” গঠনের লক্ষ্য ধীরে ধীরে বাস্তবায়িত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে নারী ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্থায়ী প্রভাব ফেলবে।
সব মিলিয়ে, বাংলাদেশে প্রতি ১০০০টি শিশুর জন্মে প্রায় ১.৭৬ জন মা মৃত্যুবরণ করেন, যা একদিকে উদ্বেগজনক হলেও অন্যদিকে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার ধারাবাহিক উন্নতির প্রতিফলন হিসেবে আশাব্যঞ্জক একটি সূচক।
0
Updated: 4 days ago