শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কোন বইটি লিখেছেন?
A
পদ্মাবতী
B
উন্নতজীবন
C
ব্যথারদান
D
চরিত্রহীন
উত্তরের বিবরণ
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের এমন এক জনপ্রিয় সাহিত্যিক, যিনি সাধারণ মানুষের জীবন, সমাজের বৈষম্য, নারীর অবস্থান এবং প্রেমের মর্মস্পর্শী দিকগুলো অসাধারণ দক্ষতায় তুলে ধরেছেন। তাঁর রচনায় সমাজবাস্তবতা যেমন আছে, তেমনি আছে গভীর মানবিক অনুভূতি। তাঁর রচিত বিখ্যাত উপন্যাসগুলোর মধ্যে ‘চরিত্রহীন’ অন্যতম, যা সমাজের নৈতিকতা, কুসংস্কার ও নারীর প্রতি বৈষম্যের তীব্র প্রতিবাদ হিসেবে রচিত।
-
‘চরিত্রহীন’ উপন্যাসটি ১৯১৭ সালে লেখা এবং এটি শরৎচন্দ্রের অন্যতম বিতর্কিত কিন্তু শক্তিশালী সাহিত্যকর্ম। এই কাহিনিতে তিনি সমাজের তথাকথিত নৈতিকতার মুখোশ উন্মোচন করেছেন।
-
গল্পের মূল চরিত্র কিরণময়ী, সতীশ, সুরেন ও সাবিত্রী — এদের জীবনের মাধ্যমে লেখক দেখিয়েছেন কিভাবে সমাজের ভণ্ড নীতি ও কুসংস্কার একজন মানুষকে “চরিত্রহীন” বলে চিহ্নিত করে, অথচ প্রকৃত দোষ অনেক সময় অন্যদের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে।
-
কিরণময়ী চরিত্রের মাধ্যমে লেখক এক অত্যাচারিত, ত্যাজিতা ও সমাজচ্যুত নারীর বেদনাকে প্রকাশ করেছেন। তিনি সামাজিক দৃষ্টিতে চরিত্রহীন হলেও আসলে ছিলেন গভীরভাবে মানবিক ও ত্যাগী।
-
শরৎচন্দ্র এই উপন্যাসে নারীর প্রতি সমাজের অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁর লেখায় বোঝা যায়, একজন নারীর মূল্যায়ন বাহ্যিক আচরণে নয়, বরং তার অন্তরের মানবিকতায়।
-
উপন্যাসে লেখক দেখিয়েছেন যে, সমাজের কুসংস্কার ও পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে নারীকে প্রায়ই অন্যায়ভাবে দোষারোপ করা হয়, অথচ তার কষ্ট, সংগ্রাম ও ত্যাগ উপেক্ষিত থাকে।
-
‘চরিত্রহীন’ শুধু একটি উপন্যাস নয়; এটি এক গভীর সামাজিক দলিল, যেখানে তৎকালীন সমাজের নৈতিক অবক্ষয় ও দ্বিচারিতা ফুটে উঠেছে।
-
এই রচনায় শরৎচন্দ্র মানবমনের সূক্ষ্ম দিকগুলোকে অত্যন্ত সংবেদনশীলভাবে তুলে ধরেছেন। তাঁর ভাষা সহজ, কিন্তু আবেগ ও সত্যের গভীরতা পাঠককে নাড়া দেয়।
-
পরবর্তীকালে এই উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করে একাধিক নাটক, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন সিরিজ নির্মিত হয়েছে, যা আজও পাঠক ও দর্শকের হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলে।
-
এই কাহিনির মাধ্যমে শরৎচন্দ্র দেখিয়েছেন যে, সমাজের আসল চরিত্রহীনতা থাকে তার দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে, মানুষের অন্তরে নয়।
সব মিলিয়ে বলা যায়, ‘চরিত্রহীন’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের এমন এক সৃষ্টি, যা সমাজের ভণ্ড নৈতিকতাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে মানুষ ও মানবতার প্রকৃত মান নির্ধারণে সাহসী ভূমিকা পালন করেছে।
0
Updated: 4 days ago
'অপর্ণা' শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কোন গল্পের চরিত্র?
Created: 1 month ago
A
মহেশ
B
মামলার ফল
C
মন্দির
D
মেজদিদি
‘মন্দির’ গল্প
-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম প্রকাশিত গল্পের নাম মন্দির।
-
এই গল্পের জন্য তিনি ১৯০৩ সালে কুন্তলীন সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
-
"বসুমতী" পত্রিকার সম্পাদক দেড়শ’টি গল্পের মধ্যে “মন্দির” গল্পটিকে শ্রেষ্ঠ বলে বিবেচনা করেছিলেন।
গল্পের বিষয়বস্তু:
-
অমরনাথ অপর্ণাকে বিবাহ করলেও দাম্পত্য জীবনে শান্তি পায়নি।
-
অপর্ণা পিতৃগৃহে স্থাপিত রাধাকৃষ্ণের চরণে নিজেকে উৎসর্গীকৃত করেছিলেন অনেক আগে।
উল্লেখযোগ্য চরিত্র:
-
অমরনাথ
-
অপর্ণা
অন্যান্য গল্পের চরিত্রসমূহ:
-
‘মহেশ’ গল্প: গফুর, আমেনা, মহেশ (একটি ষাঁড়ের নাম), তর্করত্ন, জমিদার শিববাবু
-
‘মামলার ফল’ গল্প: দুই ভাই—শিবু ও শম্ভু
-
‘মেজদিদি’ গল্প: কেষ্টা, কাদম্বিনী, নবীন, বিপিন, হেমাঙ্গিনী
উৎস:
-
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা
-
বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 1 month ago
কত খ্রিস্টাব্দে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'জগত্তারিণী' পদক লাভ করেন?
Created: 3 months ago
A
১৯১৬
B
১৯২৩
C
১৯৩৩
D
১৯০৩
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যে এমন একজন সাহিত্যিক যিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বিত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। ১৯০৩ সালে ভাগ্যের খোঁজে তিনি বার্মার রেঙ্গুন শহরে গিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট্যান্ট অফিসে কেরানি হিসেবে চাকরি গ্রহণ করেন।
প্রবাস জীবনেই তার সাহিত্য চর্চা শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে তিনি খ্যাতির শিখরে পৌঁছান। ১৯১৬ সালে কলকাতায় ফিরে এসে নিয়মিত সাহিত্য সৃষ্টি শুরু করেন।
১৯২৩ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগত্তারিণী পদক লাভ করেন এবং পরবর্তীতে ১৯৩৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অফ লিটারেচার (ডি.লিট) উপাধি পান। ১৬ জানুয়ারি ১৯৩৮ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
শরৎচন্দ্রর উল্লেখযোগ্য রচনাসমূহের মধ্যে রয়েছে:
-
বড়দিদি,
-
বিরাজ বৌ,
-
গৃহদাহ,
-
পল্লিসমাজ,
-
চরিত্রহীন,
-
পথের দাবী,
-
দেনা পাওনা।
যদিও বিভিন্ন প্রামাণিক উৎস যেমন বাংলাপিডিয়া, ড. সৌমিত্র শেখরের ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা’, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা পাঠ্যপুস্তক এবং বাংলা একাডেমি চরিতাবিধানে জগত্তারিণী পদক লাভের সঠিক সাল ১৯২৩ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে, তথাপি কিছু নবম ও দশম শ্রেণির বাংলা সাহিত্য বইয়ে ভুলক্রমে ১৯২০ সাল উল্লেখ করা হয়েছে।
সূত্র: বাংলাপিডিয়া, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর), উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা বই, বাংলা একাডেমি চরিতাবিধান, নবম-দশম শ্রেণির বাংলা সাহিত্য বই।
0
Updated: 3 months ago
‘মন্দির’ গল্পের জন্য শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কোন পুরস্কার পান?
Created: 1 month ago
A
সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার
B
আনন্দ পুরস্কার
C
কুন্তলীন সাহিত্য পুরস্কার
D
রবীন্দ্র পুরস্কার
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
-
জন্ম: ১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৭৬, দেবানন্দপুর, হুগলি জেলা।
-
প্রথম প্রকাশিত গল্প: মন্দির (১৯০৩), যার জন্য তিনি কুন্তলীন সাহিত্য পুরষ্কার লাভ করেন।
-
প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস: বড়দিদি (১৯০৭, ভারতী পত্রিকা)।
-
রাজনৈতিক উপন্যাস: পথের দাবী (১৯২৬), যা ব্রিটিশ সরকার বাজেয়াপ্ত করেছিল।
বিখ্যাত উপন্যাসসমূহ:
-
দেনা-পাওনা
-
বড়দিদি
-
বিরাজবৌ
-
পণ্ডিতমশাই
-
পরিণীতা
-
চন্দ্রনাথ
-
দেবদাস
-
চরিত্রহীন
-
গৃহদাহ
-
পথের দাবী
-
শেষ প্রশ্ন
-
শেষের পরিচয়
উৎস:
0
Updated: 1 month ago