পাঁচ বছরের নিচে বাচ্চার সর্বাধিক মৃত্যুর কারণ কোনটি নয়?
A
ডায়রিয়া
B
নিউমোনিয়া
C
অপুষ্টিজনিত
D
ক্যান্সার
উত্তরের বিবরণ
পাঁচ বছরের নিচে শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া এবং অপুষ্টিজনিত সমস্যা সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। তবে ক্যান্সার এই বয়সী শিশুদের মৃত্যুর সাধারণ কারণ নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিশু মৃত্যুর বড় অংশই প্রতিরোধযোগ্য ও চিকিৎসাযোগ্য রোগের কারণে ঘটে।
পাঁচ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুর প্রধান কারণগুলো হলো:
– ডায়রিয়া: এটি শিশু মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। দূষিত পানি, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং স্যানিটেশনের অভাবের ফলে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। শিশুর শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ও লবণ বেরিয়ে যাওয়ায় ডিহাইড্রেশন ঘটে, যা প্রাণঘাতী হতে পারে।
– নিউমোনিয়া: এটি শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক সংক্রামক রোগগুলোর একটি। ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ফাঙ্গাসের সংক্রমণে শ্বাসযন্ত্রে প্রদাহ হয়, ফলে শ্বাসকষ্ট ও অক্সিজেন ঘাটতি দেখা দেয়। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।
– অপুষ্টি: এটি শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়, ফলে তারা সহজেই সংক্রমিত হয়। অপুষ্ট শিশুরা ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার মতো রোগে দ্রুত আক্রান্ত হয় এবং সেরে উঠতে পারে না।
– অপুষ্টির সঙ্গে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া পরস্পর সম্পর্কিত; অপুষ্ট শিশুরা এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হয়, আবার এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুর পুষ্টি আরও নষ্ট হয়।
অন্যদিকে, ক্যান্সার পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ নয়। যদিও কিছু শিশু জন্মগত বা জিনগত কারণে ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে, তবে এর হার খুবই কম এবং এটি শিশু মৃত্যুর সামগ্রিক পরিসংখ্যানে উল্লেখযোগ্য নয়। উন্নত দেশে শিশু ক্যান্সারের চিকিৎসা উন্নত হওয়ায় বেঁচে থাকার হারও অনেক বেশি।
বর্তমান সময়ে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে সচেতনতা, টিকাদান কর্মসূচি, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং পুষ্টি উন্নয়নের মাধ্যমে শিশু মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে।
সুতরাং, ক্যান্সার হলো এমন একটি রোগ যা পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ নয়, যেখানে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও অপুষ্টি এখনো শিশু মৃত্যুর সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণ হিসেবে বিবেচিত।
0
Updated: 4 days ago
একটি পূর্ণবয়স্ক (Term) নবজাতকের ওজন কত কম হলে LBW বাচ্চা বলা হয়?
Created: 4 days ago
A
৩ কেজি
B
২.৫ কেজি
C
২ কেজি
D
১.৫ কেজি
একটি নবজাতকের জন্মের সময়ের ওজন তার স্বাস্থ্য, বিকাশ এবং ভবিষ্যৎ শারীরিক অবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। সাধারণভাবে একটি পূর্ণবয়স্ক বা Term নবজাতক যদি জন্মের সময় ২.৫ কেজি বা তার কম ওজনের হয়, তখন তাকে Low Birth Weight (LBW) শিশুর শ্রেণিতে ফেলা হয়। এটি শিশুর বৃদ্ধি, পুষ্টি ও মাতৃস্বাস্থ্যের মান বোঝাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে বিবেচিত।
এই বিষয়টি বোঝাতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো
-
Low Birth Weight (LBW) বলতে বোঝায় এমন নবজাতক যার জন্মের সময় ওজন ২৫০০ গ্রাম (২.৫ কেজি)-এর কম। এটি জন্মের সময় শিশুর শরীরে পর্যাপ্ত বৃদ্ধি বা ওজন না হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
-
পূর্ণবয়স্ক বা Term নবজাতক সাধারণত ৩৭ থেকে ৪২ সপ্তাহের মধ্যে জন্ম নেয়। এই সময়ের মধ্যে জন্ম নেওয়া শিশুর স্বাভাবিক ওজন হওয়া উচিত প্রায় ২.৫ থেকে ৩.৫ কেজি।
-
২.৫ কেজির নিচে ওজন হলে শিশুকে LBW ধরা হয়, যদিও সে পূর্ণ মেয়াদে জন্ম নিয়ে থাকে। এ ধরনের শিশুদের অনেক সময় জন্মের আগেই বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, যাকে Intrauterine Growth Restriction (IUGR) বলা হয়।
-
জন্মের ওজনের ওপর প্রভাব ফেলে মায়ের পুষ্টিহীনতা, গর্ভাবস্থায় সংক্রমণ, ধূমপান, অল্প বয়সে গর্ভধারণ, উচ্চ রক্তচাপ বা অ্যানিমিয়া ইত্যাদি। এসব কারণে গর্ভে ভ্রূণের সঠিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
-
LBW শিশুদের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে। যেমন, জন্মের পর শ্বাসকষ্ট, সংক্রমণ, রক্তে শর্করার ঘাটতি, তাপমাত্রা ধরে রাখতে সমস্যা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।
-
এই শিশুরা পরবর্তী জীবনে অপুষ্টি, শিক্ষাগত দুর্বলতা বা দীর্ঘমেয়াদি অসুখে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে, যদি যথাযথ যত্ন ও পুষ্টি না দেওয়া হয়।
-
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুসারে, বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৫-২০% নবজাতক Low Birth Weight নিয়ে জন্ম নেয়। উন্নয়নশীল দেশে এই হার আরও বেশি, যা মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নতির প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে।
-
LBW প্রতিরোধের উপায় হিসেবে গর্ভবতী মায়েদের পর্যাপ্ত পুষ্টি, আয়রন-ফোলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকা এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
-
জন্মের পর LBW শিশুর বিশেষ যত্ন প্রয়োজন, যেমন ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার (KMC), বুকের দুধ খাওয়ানো, উষ্ণ পরিবেশে রাখা এবং নিয়মিত ওজন পর্যবেক্ষণ।
-
একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, ওজনের পাশাপাশি শিশুর গর্ভকালীন বয়সও গুরুত্বপূর্ণ। কিছু প্রি-টার্ম শিশু (৩৭ সপ্তাহের আগে জন্ম) ওজন কম হওয়ার কারণে LBW হতে পারে, আবার কিছু টার্ম শিশুও গর্ভে যথাযথ বৃদ্ধি না পেলে LBW হতে পারে।
সুতরাং, একটি পূর্ণবয়স্ক (Term) নবজাতকের ওজন ২.৫ কেজির কম হলে তাকে Low Birth Weight (LBW) হিসেবে গণ্য করা হয়, যা নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও যত্নের মান নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ সূচক।
0
Updated: 4 days ago
নেগেটিভ রক্তের মাকে প্রথম শিশু জন্ম দেবার পর কোন ইনজেকশন দেয়া হয়?
Created: 4 days ago
A
Tetanus
B
MMR
C
Anti D immunoglobulin
D
Oxytocin
সঠিক উত্তর হলো গ) Anti D immunoglobulin।
নেগেটিভ রক্তের মায়ের ক্ষেত্রে যদি প্রথম শিশু জন্ম নেয় এবং শিশুর রক্তগোষ্ঠী পজিটিভ হয়, তাহলে মায়ের Anti D immunoglobulin ইনজেকশন দেওয়ার প্রয়োজন হয়। এটি গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এবং পরবর্তী গর্ভধারণের ক্ষেত্রে গর্ভপাত বা মৃত সন্তান জন্মগ্রহণের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
এই ইনজেকশনের গুরুত্ব:
-
Anti D immunoglobulin ইনজেকশন একটি প্লাজমা থেকে তৈরি অ্যান্টিবডি যা রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ মায়ের শরীরে Rh+ (পজিটিভ) শিশু জন্ম নেওয়ার পর দেওয়া হয়।
-
এই ইনজেকশনটি মা এবং শিশুর রক্তের মধ্যে Rh incompatibility থেকে উদ্ভূত সমস্যা, যেমন hemolytic disease of the newborn (HDN), প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
-
প্রথম শিশুর জন্মের পর যদি ইনজেকশন না দেওয়া হয়, তাহলে পরবর্তী গর্ভধারণে, মা যদি আবার Rh+ শিশু জন্ম দেন, তখন তার শরীর অ্যান্টিবডি তৈরি করে এবং এটি শিশুর রক্তকণিকা ধ্বংস করতে পারে, যা শিশুর জীবনসংকট তৈরি করতে পারে।
-
এই ইনজেকশন সাধারণত ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেওয়া উচিত, যাতে এটি মা এবং শিশুর মধ্যে রক্তের প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়।
অন্য বিকল্পগুলো:
-
ক) Tetanus: Tetanus toxoid ইনজেকশন সাধারণত গর্ভবতী মায়েদের জন্য দেওয়া হয়, তবে এটি Anti D immunoglobulin এর মতো Rh incompatibility সমস্যার প্রতিকার করে না।
-
খ) MMR: এটি মিজেলস, মাম্পস ও রুবেলা প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয় এবং গর্ভাবস্থায় সাধারণত এটি দেওয়া হয় না।
-
ঘ) Oxytocin: এটি প্রসবের সময় শ্রম বা শিশুর জন্ম প্রক্রিয়াকে দ্রুত করার জন্য ব্যবহৃত হয়, তবে এটি Anti D immunoglobulin এর পরিবর্তে ব্যবহার হয় না।
অতএব, Anti D immunoglobulin ইনজেকশনই নেগেটিভ রক্তের মাকে প্রথম শিশু জন্ম দেওয়ার পর দেওয়া হয়।
0
Updated: 4 days ago
গর্ভকালীন সময়ে কোন টিকা দিতে হয়?
Created: 4 days ago
A
টিটেনাস
B
MMR
C
হেপাটাইটিস বি
D
রুবেলা
গর্ভকালীন সময়ে মায়ের এবং শিশুর সুস্থতা বজায় রাখতে কিছু নির্দিষ্ট টিকা দেওয়া হয়। এসব টিকা গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন সংক্রমণ ও জটিলতা প্রতিরোধে সাহায্য করে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিকাগুলোর মধ্যে টিটেনাস (Tetanus) টিকা রয়েছে, যা গর্ভাবস্থায় দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তাই সঠিক উত্তর হলো ক) টিটেনাস।
এখন বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:
-
টিটেনাস (Tetanus): গর্ভকালীন সময়ে টিটেনাস টিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি টিটেনাস নামক জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধ করে, যা গর্ভাবস্থায় মায়ের জন্য খুবই বিপজ্জনক হতে পারে। টিটেনাস এক ধরনের ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ যা সাধারণত ক্ষতস্থানে সংক্রমণ ঘটায়, এবং এটি গর্ভকালীন সময়ে প্রি-টিটেনাস বা টিটেনাস টক্সয়েড ইনফেকশন (Tetanus Toxoid) রোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
-
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বিশেষভাবে টিটেনাস টক্সইড (TT) টিকা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়, যা সাধারণত প্রথম ট্রাইমিস্টারে এবং দ্বিতীয় ট্রাইমিস্টারে দেওয়া হয়।
-
MMR (Measles, Mumps, Rubella): গর্ভাবস্থায় এই টিকা অন্তত না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, কারণ রুবেলা (Rubella) বিশেষত গর্ভাবস্থায় প্রথম ত্রৈমাসিক সময়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে, যা গর্ভস্থ শিশুর বিভিন্ন জন্মগত ত্রুটির কারণ হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় রুবেলা টিকা প্রদান করা হয় না, কিন্তু গর্ভধারণের পূর্বে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
-
হেপাটাইটিস বি (Hepatitis B): গর্ভবতী মহিলাদের জন্য হেপাটাইটিস বি টিকার প্রয়োজন সাধারণত গর্ভধারণের আগে হয়, যদি তারা হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। তবে গর্ভাবস্থায় এই টিকা প্রয়োজনীয় নয়, কারণ এটি শিশুর প্রতি কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে না, তবে সাধারণত গর্ভধারণের সময় এটির প্রয়োগ তেমন দেখা যায় না।
-
রুবেলা (Rubella): গর্ভকালীন সময়ে রুবেলা টিকা বিরত থাকা উচিত। এটি গর্ভাবস্থায় আক্রান্ত হলে শিশুর উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে, যেমন জন্মগত ত্রুটি বা গর্ভপাত হতে পারে। রুবেলা টিকা সাধারণত গর্ভধারণের পূর্বে দেওয়া হয়।
সবশেষে, বলা যায়, গর্ভকালীন সময়ে টিটেনাস টিকা (Tetanus) দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি সাধারণত গর্ভাবস্থার প্রথম ও দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে দেওয়া হয়।
0
Updated: 4 days ago