Exclusive Brest feeding বলতে শিশু জন্মের কয়মাস বুঝায়?
A
দুই বছর
B
পাঁচ মাস
C
ছয় মাস
D
নয় মাস
উত্তরের বিবরণ
শিশুর জন্মের পর প্রথম ছয় মাস শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানোকে Exclusive Breastfeeding বলা হয়। এই সময় শিশুর জন্য মায়ের দুধই সর্বোত্তম ও সম্পূর্ণ খাবার হিসেবে বিবেচিত, কারণ এতে শিশুর প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকে যা তার বৃদ্ধি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
Exclusive Breastfeeding-এর মূল অর্থ হলো, শিশুকে জন্মের পর প্রথম ছয় মাস পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানো হবে—এ সময়ে পানি, মধু, দুধ, ফলের রস বা অন্য কোনো খাবার দেওয়া উচিত নয়।
– মায়ের দুধে শিশুর প্রয়োজনীয় প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিবডি থাকে যা শিশুর দেহকে রোগ থেকে রক্ষা করে।
– প্রথম ছয় মাসে শিশুর হজমপ্রক্রিয়া পুরোপুরি পরিপক্ব হয় না, তাই অন্য কোনো খাবার বা তরল পদার্থ দিলে তা শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
– কোলস্ট্রাম বা জন্মের পর প্রথম দুধ শিশুর জন্য বিশেষ উপকারী, কারণ এতে ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয়।
– শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ালে শিশুর ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, অপুষ্টি ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি কমে যায়।
– এই সময় মায়ের দুধ শিশুর ওজন বৃদ্ধি, মস্তিষ্কের বিকাশ এবং মানসিক বন্ধন তৈরিতে সাহায্য করে।
– শিশুর তৃষ্ণা মেটাতে আলাদা করে পানি দেওয়ার প্রয়োজন নেই, কারণ মায়ের দুধেই পর্যাপ্ত পানি থাকে।
– বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং ইউনিসেফের পরামর্শ অনুযায়ী, শিশুর জন্মের পর প্রথম ছয় মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো উচিত এবং ছয় মাস পর থেকে ধীরে ধীরে সম্পূরক খাবার দেওয়া শুরু করা যায়।
– মায়ের দুধ শুধু শিশুর জন্য নয়, মায়ের শরীরের জন্যও উপকারী, কারণ এটি প্রসব-পরবর্তী রক্তপাত কমায়, গর্ভধারণের ব্যবধান বাড়ায় এবং স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে।
সুতরাং, Exclusive Breastfeeding বলতে শিশুকে জন্মের পর থেকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো বোঝায়, যা শিশুর স্বাস্থ্য ও জীবনের ভিত্তি গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
0
Updated: 4 days ago
একজন স্বাভাবিক সুস্থ মহিলার গর্ভকালীন সময়ে গড়ে কত কেজি ওজন বাড়তে পারে?
Created: 5 days ago
A
২০ কেজি
B
১৫ কেজি
C
১২ কেজি
D
৫ কেজি
0
Updated: 5 days ago
পাঁচ বছরের নিচে বাচ্চার সর্বাধিক মৃত্যুর কারণ কোনটি নয়?
Created: 4 days ago
A
ডায়রিয়া
B
নিউমোনিয়া
C
অপুষ্টিজনিত
D
ক্যান্সার
পাঁচ বছরের নিচে শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া এবং অপুষ্টিজনিত সমস্যা সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। তবে ক্যান্সার এই বয়সী শিশুদের মৃত্যুর সাধারণ কারণ নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিশু মৃত্যুর বড় অংশই প্রতিরোধযোগ্য ও চিকিৎসাযোগ্য রোগের কারণে ঘটে।
পাঁচ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুর প্রধান কারণগুলো হলো:
– ডায়রিয়া: এটি শিশু মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। দূষিত পানি, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং স্যানিটেশনের অভাবের ফলে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। শিশুর শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ও লবণ বেরিয়ে যাওয়ায় ডিহাইড্রেশন ঘটে, যা প্রাণঘাতী হতে পারে।
– নিউমোনিয়া: এটি শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক সংক্রামক রোগগুলোর একটি। ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ফাঙ্গাসের সংক্রমণে শ্বাসযন্ত্রে প্রদাহ হয়, ফলে শ্বাসকষ্ট ও অক্সিজেন ঘাটতি দেখা দেয়। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।
– অপুষ্টি: এটি শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়, ফলে তারা সহজেই সংক্রমিত হয়। অপুষ্ট শিশুরা ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার মতো রোগে দ্রুত আক্রান্ত হয় এবং সেরে উঠতে পারে না।
– অপুষ্টির সঙ্গে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া পরস্পর সম্পর্কিত; অপুষ্ট শিশুরা এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হয়, আবার এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুর পুষ্টি আরও নষ্ট হয়।
অন্যদিকে, ক্যান্সার পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ নয়। যদিও কিছু শিশু জন্মগত বা জিনগত কারণে ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে, তবে এর হার খুবই কম এবং এটি শিশু মৃত্যুর সামগ্রিক পরিসংখ্যানে উল্লেখযোগ্য নয়। উন্নত দেশে শিশু ক্যান্সারের চিকিৎসা উন্নত হওয়ায় বেঁচে থাকার হারও অনেক বেশি।
বর্তমান সময়ে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে সচেতনতা, টিকাদান কর্মসূচি, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং পুষ্টি উন্নয়নের মাধ্যমে শিশু মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে।
সুতরাং, ক্যান্সার হলো এমন একটি রোগ যা পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ নয়, যেখানে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও অপুষ্টি এখনো শিশু মৃত্যুর সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণ হিসেবে বিবেচিত।
0
Updated: 4 days ago
গর্ভকালীন প্রসূতিসেবায় প্রথম তিন মাসে (First trimester) মাকে কি দিয়ে থাকি?
Created: 4 days ago
A
ফলিক এসিড
B
ক্যালসিয়াম
C
আয়োডিন
D
মেগনেশিয়াম
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস বা ফার্স্ট ট্রাইমেস্টার হলো ভ্রূণের গঠন ও বিকাশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময় মায়ের শরীরে নানা হরমোনগত পরিবর্তন ঘটে এবং শিশুর প্রধান অঙ্গগুলোর বিকাশ শুরু হয়। তাই এই পর্যায়ে প্রয়োজন হয় বিশেষ পুষ্টি উপাদান, যা মা ও ভ্রূণ উভয়ের সুস্থতার জন্য অপরিহার্য।
-
ফলিক এসিড গর্ভধারণের প্রাথমিক পর্যায়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভিটামিন, যা ভিটামিন বি–গ্রুপের অন্তর্গত। এটি ভ্রূণের স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক বিকাশে সাহায্য করে এবং জন্মগত ত্রুটি, বিশেষ করে নিউরাল টিউব ডিফেক্ট (NTD) প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
-
সাধারণত গর্ভধারণের আগে থেকেই নারীদের ফলিক এসিড খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, কারণ গর্ভাবস্থার প্রথম কয়েক সপ্তাহে শিশুর মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ড গঠিত হয়। এই সময় যথেষ্ট ফলিক এসিড না পেলে শিশুর মস্তিষ্ক বা স্পাইনাল কর্ডে স্থায়ী ত্রুটি দেখা দিতে পারে।
-
এই ভিটামিন রক্তের লোহিত কণিকা (RBC) তৈরিতেও সাহায্য করে, যা মা ও শিশুর অক্সিজেন সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয়। ফলিক এসিডের ঘাটতি থাকলে অ্যানিমিয়া দেখা দিতে পারে, যা গর্ভাবস্থায় জটিলতা বাড়ায়।
-
প্রতিদিন সাধারণত ৪০০ মাইক্রোগ্রাম (mcg) ফলিক এসিড গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়, তবে যেসব নারীর আগে নিউরাল টিউব ডিফেক্টযুক্ত শিশু হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে—যা চিকিৎসকের পরামর্শে নির্ধারিত হয়।
-
ফলিক এসিড শুধু ট্যাবলেটের মাধ্যমে নয়, খাদ্য থেকেও পাওয়া যায়। যেমন—সবুজ পাতা জাতীয় শাকসবজি, কমলা, ডাল, মটরশুঁটি, ব্রোকলি, অ্যাভোকাডো ও গোটা শস্যজাত খাবারে এটি বিদ্যমান।
-
এই পুষ্টি উপাদান মায়ের কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে, ফলে ভ্রূণের বৃদ্ধি সুষ্ঠুভাবে ঘটে।
-
ফলিক এসিড গ্রহণের ফলে গর্ভপাত, অকাল প্রসব বা শিশুর কম ওজনের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
-
কিছু নারী ফলিক এসিড শোষণে সমস্যা অনুভব করতে পারেন; যেমন—যাদের মেগালোব্লাস্টিক অ্যানিমিয়া, ম্যালঅ্যাবসোর্পশন সিন্ড্রোম, বা দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ সেবনের ইতিহাস আছে, তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দিতে হয়।
-
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে ফলিক এসিড ছাড়াও পরবর্তীতে ক্যালসিয়াম ও আয়রন দেওয়া শুরু হয়, তবে ফার্স্ট ট্রাইমেস্টারে শুধুমাত্র ফলিক এসিডকেই সবচেয়ে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
-
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত ফলিক এসিড গ্রহণ করা উচিত নয়, কারণ অতিরিক্ত ডোজ শরীরের অন্যান্য ভিটামিন বি–গ্রুপের ভারসাম্যে প্রভাব ফেলতে পারে।
সবদিক বিবেচনায় দেখা যায়, গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে ফলিক এসিড মায়ের ও শিশুর সুস্থতার ভিত্তি স্থাপন করে। এটি শুধু এক ধরনের ভিটামিন নয়, বরং একটি অপরিহার্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, যা নবজাতকের সুস্থ জন্ম নিশ্চিত করে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
0
Updated: 4 days ago