'ক্ষ' এর বিশ্লিষ্ট রুপ-
A
ক + ষ
B
ক + খ
C
ক + ষ + ম
D
হ + ম
উত্তরের বিবরণ
বাংলা বর্ণমালায় ‘ক্ষ’ একটি যুক্তব্যঞ্জন বা যৌগিক বর্ণ। এটি দুটি স্বতন্ত্র ব্যঞ্জনধ্বনির মিলনে গঠিত হয়েছে, যা উচ্চারণে একটিমাত্র ধ্বনির মতো শোনালেও বিশ্লেষণ করলে এর মূল দুটি অংশ স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। নিচে এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো।
‘ক্ষ’ আসলে ‘ক’ ও ‘ষ’ ব্যঞ্জনধ্বনির মিলিত রূপ। এই দুটি ব্যঞ্জন একত্রে যুক্ত হয়ে একটি নতুন বর্ণ তৈরি করেছে, যা বাংলা ভাষায় বিশেষ ধ্বনি প্রকাশ করে। যুক্ত হওয়ার পর এটি স্বতন্ত্রভাবে ব্যবহৃত হয়, যেমন— “ক্ষতি”, “ক্ষুদ্র”, “শিক্ষা”, “রক্ষক” প্রভৃতি শব্দে।
মূল বিষয়গুলো হলো:
• ‘ক্ষ’ গঠিত হয়েছে ‘ক’ ও ‘ষ’ থেকে। এটি বাংলা যুক্তবর্ণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ, যেখানে দুটি ব্যঞ্জন একত্র হয়ে একটি নতুন ধ্বনি প্রকাশ করে।
• ‘ক’ ধ্বনি মুখগহ্বরের পশ্চাৎভাগে উচ্চারিত হয় এবং এটি একপ্রকার অঘোষ ব্যঞ্জন।
• ‘ষ’ ধ্বনি হলো মূর্ধন্য অঘোষ ব্যঞ্জন, যা উচ্চারণের সময় জিহ্বার আগা উপরের তালুতে লাগে।
• যখন ‘ক’ ও ‘ষ’ মিলিত হয়, তখন উচ্চারণে এক ধরনের মিলিত ধ্বনি সৃষ্টি হয়, যা ‘ক্ষ’ নামে পরিচিত। এটি কখনো ‘খ্ষ’ বা ‘ক্ষ’ রূপেও শোনা যায়, কিন্তু লিখিত রূপে সর্বদা ‘ক্ষ’ থাকে।
• বাংলা ভাষার ধ্বনিতত্ত্ব অনুযায়ী এটি একটি যৌগিক ব্যঞ্জনবর্ণ, একে আলাদা কোনো মৌলিক বর্ণ হিসেবে ধরা হয় না।
• অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা যায় যে এটি তিনটি ধ্বনির সমষ্টি (যেমন ক + ষ + ম), কিন্তু তা সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ‘ক্ষ’ = ‘ক’ + ‘ষ’ এই দুটি ধ্বনির মিলনেই এটি গঠিত।
• ব্যাকরণে ‘ক্ষ’-কে অনেক সময় একক ব্যঞ্জন হিসেবে গণ্য করা হয়, কারণ এটি লিখিত ও উচ্চারিত অবস্থায় একধরনের নতুন ধ্বনির রূপ নিয়েছে, যা পৃথকভাবে ‘ক’ বা ‘ষ’ এর সঙ্গে সম্পূর্ণ মিল নয়।
• বাংলা ভাষায় যুক্তব্যঞ্জনের এই রূপ ভাষার ধ্বনিগত সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং শব্দের গঠনকে বৈচিত্র্যময় করে তোলে।
সুতরাং স্পষ্টভাবে বলা যায়, ‘ক্ষ’ এর বিশ্লিষ্ট রূপ হলো ‘ক + ষ’, যা যুক্ত হয়ে বাংলা ভাষায় একটি নতুন ধ্বনি তৈরি করে এবং লেখায় একটিমাত্র অক্ষরের মতো ব্যবহৃত হয়।
0
Updated: 4 days ago