'কল্লোল' পতিকার সম্পাদক-
A
বুদ্ধদেব বসু
B
জীবনানন্দ দাশ
C
প্রেমেন্দ্র মিত্র
D
দীনেশ রঞ্জন দাশ
উত্তরের বিবরণ
‘কল্লোল’ ছিল বাংলা সাহিত্যের আধুনিকতার অগ্রদূত একটি সাহিত্য পত্রিকা, যা নতুন প্রজন্মের লেখকদের মুক্ত চিন্তা ও সাহিত্যিক বিপ্লবের পথ তৈরি করেছিল। এই পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন দীনেশ রঞ্জন দাশ, যিনি সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মী হিসেবে বিশিষ্ট ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ‘কল্লোল’ শুধু একটি সাহিত্যপত্রিকা নয়, বরং বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক নতুন যুগের সূচনা করেছিল।
‘কল্লোল’ পত্রিকার গুরুত্ব বোঝাতে কিছু মূল তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো—
-
‘কল্লোল’ পত্রিকার সূচনা হয়েছিল ১৯২৩ সালে কলকাতা থেকে। এটি ছিল একদল তরুণ সাহিত্যিকের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত একটি সাহিত্য আন্দোলনের কেন্দ্র।
-
এই পত্রিকার মাধ্যমে বাংলায় আধুনিকতাবাদী সাহিত্যধারা আত্মপ্রকাশ করে। প্রচলিত রোমান্টিকতা ও নীতিবাদী ভাবধারার বিপরীতে এটি ব্যক্তিমানস, বাস্তবতা ও সামাজিক সংকটকে সাহিত্যে তুলে ধরেছিল।
-
দীনেশ রঞ্জন দাশ, পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে, সাহিত্য জগতে তরুণ লেখকদের স্বাধীনভাবে ভাবতে ও লিখতে উৎসাহ দিয়েছিলেন। তাঁর সম্পাদনা নীতিতে সাহিত্যের নতুন দিক—নান্দনিকতা, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য ও মুক্তচিন্তার প্রকাশ পেয়েছিল।
-
‘কল্লোল’ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বাংলা সাহিত্যের বহু বিখ্যাত লেখক যেমন—বুদ্ধদেব বসু, জীবনানন্দ দাশ, প্রেমেন্দ্র মিত্র, অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত প্রমুখ। যদিও এঁরা সবাই পত্রিকার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন, তবে সম্পাদক ছিলেন দীনেশ রঞ্জন দাশ।
-
এই পত্রিকার মাধ্যমে প্রকাশিত লেখাগুলোতে তৎকালীন সমাজ, নারীজীবন, শহুরে বাস্তবতা ও ব্যক্তিগত অনুভূতির নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উঠে আসে, যা পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
-
‘কল্লোল’ আন্দোলন বাংলা সাহিত্যে এমন এক প্রভাব সৃষ্টি করে, যার ফলে পরবর্তীকালে বাংলা কবিতা ও গল্পে আধুনিকতা ও বাস্তবচেতনা গভীরভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
-
দীনেশ রঞ্জন দাশ শুধু সম্পাদক হিসেবেই নয়, বরং সাহিত্য আন্দোলনের একজন দিকনির্দেশক হিসেবেও বিবেচিত হন। তাঁর নেতৃত্বেই ‘কল্লোল’ পত্রিকা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে ওঠে।
অতএব বলা যায়, ‘কল্লোল’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন দীনেশ রঞ্জন দাশ, যিনি তরুণ সাহিত্যিকদের সৃজনশীলতার পথ খুলে দিয়ে বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণের সূচনা করেছিলেন।
0
Updated: 4 days ago