শামসুর রাহমান এর প্রথম কাব্যগ্রন্থ-
A
প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে
B
নিজ বাসভূমে
C
সোনালী কাবিন
D
লোক-লোকান্তর
উত্তরের বিবরণ
শামসুর রাহমান ছিলেন আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি। তাঁর কবিতায় স্বাধীনতা, মানবতা, প্রেম, বিদ্রোহ ও সমাজ বাস্তবতা এক অনন্যভাবে প্রকাশ পেয়েছে। তাঁর সাহিত্যজীবনের সূচনা হয়েছিল কবিতার মাধ্যমেই, আর সেই যাত্রার প্রথম মাইলফলক ছিল তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ “প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে”।
এই কাব্যগ্রন্থকে ঘিরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিম্নরূপ
-
প্রকাশকাল: “প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে” প্রকাশিত হয় ১৯৬০ সালে। এটি শামসুর রাহমানের সাহিত্যজীবনে এক যুগান্তকারী সূচনা ঘটায়।
-
বিষয়বস্তু: এই গ্রন্থে কবি মানুষের অন্তর্জগত, জীবন-মৃত্যু, প্রেম-বিরহ ও অস্তিত্বের গভীর অনুভূতিগুলো প্রকাশ করেছেন। কবিতাগুলোতে একদিকে রয়েছে রোমান্টিকতা, অন্যদিকে তীব্র বাস্তববোধ ও সমাজচেতনা।
-
ভাষা ও শৈলী: কবি এই গ্রন্থে আধুনিক বাংলা কবিতার নতুন ভাষা সৃষ্টি করেন। তাঁর ভাষা সহজ, কিন্তু ভাবের গভীরতা অত্যন্ত প্রখর। উপমা, প্রতীক ও চিত্রকল্পের ব্যবহার ছিল অত্যন্ত পরিশীলিত।
-
কবির দৃষ্টিভঙ্গি: এখানে তিনি জীবনের ভেতরের দ্বন্দ্ব, সময়ের অস্থিরতা ও মানুষের অন্তর্গত যন্ত্রণা তুলে ধরেছেন। বিশেষ করে মৃত্যু ও পুনর্জন্মের প্রতীকী রূপে কবি নতুন চিন্তার দিগন্ত উন্মোচন করেন।
-
গুরুত্ব: এই কাব্যগ্রন্থ বাংলা কবিতায় আধুনিকতার দ্বার উন্মোচন করে। এর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্য একটি নতুন ধারা লাভ করে, যা পরবর্তীতে কবি জীবনানন্দ দাসের পরবর্তী সময়ের আধুনিক কবিতার ধারাকে আরও শক্তিশালী করে।
-
প্রতিক্রিয়া: প্রকাশের পর গ্রন্থটি সাহিত্য মহলে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। সমালোচকরা একে আধুনিক বাংলা কবিতার এক মাইলফলক হিসেবে আখ্যা দেন।
-
পরবর্তী প্রভাব: এই কাব্যগ্রন্থের সাফল্যই শামসুর রাহমানকে বাংলা কবিতার মূলধারায় প্রতিষ্ঠিত করে। পরবর্তীতে তিনি “রৌদ্র করোটিতে”, “সোনালী কাবিন”, “বন্দী শিবির থেকে” প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থে আরও গভীর রাজনৈতিক ও মানবতাবাদী চেতনা প্রকাশ করেন।
সংক্ষেপে বলা যায়, “প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে” শুধু শামসুর রাহমানের প্রথম কাব্যগ্রন্থ নয়, এটি বাংলা কবিতায় এক নবযুগের সূচনা। এর মাধ্যমে কবি মানবজীবনের গভীর অনুভূতি ও বাস্তবতার প্রতি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপহার দেন, যা আজও পাঠকের মনে গভীরভাবে দাগ কেটে আছে।
0
Updated: 4 days ago
'নিরালোকে দিব্যরথ' কাব্যগ্রন্থটি কার লেখা ?
Created: 4 days ago
A
সিকান্দার আবু জাফর
B
আল মাহমুদ
C
শামসুর রহমান
D
সৈয়দ শামসুল হক
‘নিরালোকে দিব্যরথ’ বাংলা আধুনিক কবিতার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাব্যগ্রন্থ। এটি বিখ্যাত কবি শামসুর রহমানের লেখা। তাঁর কবিতায় মানবতাবাদ, স্বাধীনতা, প্রেম, সমাজচেতনা ও জাতীয় চেতনার এক অসাধারণ প্রকাশ দেখা যায়। ‘নিরালোকে দিব্যরথ’ কাব্যগ্রন্থেও সেই গভীর চিন্তা ও জীবনবোধ প্রতিফলিত হয়েছে।
এই কাব্যগ্রন্থে কবি মানুষের আত্মার জাগরণ, জীবনের আলোক-অন্ধকারের দ্বন্দ্ব ও সত্য-সৌন্দর্যের অনুসন্ধানকে তুলে ধরেছেন। নিচে কাব্যগ্রন্থটির মূল বৈশিষ্ট্যগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
-
লেখক পরিচিতি: শামসুর রহমান বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আধুনিক কবি। তিনি বাংলা কবিতায় নতুন ধারা এনেছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ, শহুরে জীবন, মানবপ্রেম এবং ব্যক্তিস্বাধীনতার বিষয় তাঁর কবিতায় বারবার উঠে এসেছে।
-
প্রকাশকাল ও প্রেক্ষাপট: ‘নিরালোকে দিব্যরথ’ প্রকাশিত হয় বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে, যখন সমাজে নানা রাজনৈতিক ও মানসিক টানাপোড়েন চলছিল। কবি সেই সময়ের বাস্তবতা ও মানবজীবনের অন্তর্লোককে তাঁর কবিতায় প্রকাশ করেছেন।
-
কবিতার ধারা ও ভাব: এই কাব্যগ্রন্থে কবির অস্তিত্বচেতনা ও আত্মজিজ্ঞাসা গভীরভাবে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি জীবনের আলো-অন্ধকার, দুঃখ-আনন্দ ও বিশ্বাস-সন্দেহের সংঘাতকে কাব্যের ভাষায় রূপ দিয়েছেন।
-
ভাষা ও শৈলী: শামসুর রহমানের ভাষা সহজ, প্রাঞ্জল ও আধুনিক। তিনি কাব্যে এমন ছন্দ ও চিত্রকল্প ব্যবহার করেছেন যা পাঠককে গভীর চিন্তার ভেতর নিয়ে যায়।
-
বিষয়বস্তুর বৈচিত্র্য: ‘নিরালোকে দিব্যরথ’-এ প্রেম, মানবতা, স্বাধীনতা, মৃত্যুচেতনা ও জীবনদর্শন মিলেমিশে এক অনন্য কাব্যিক রূপ পেয়েছে।
-
প্রভাব ও গুরুত্ব: এই গ্রন্থ বাংলা সাহিত্যে এক নতুন কাব্যভাষা প্রতিষ্ঠা করে। শামসুর রহমানের কবিতার মাধ্যমে আধুনিক নগরজীবন ও মানুষের মানসিক দ্বন্দ্ব প্রথমবারের মতো গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়।
সর্বোপরি, ‘নিরালোকে দিব্যরথ’ শামসুর রহমানের এক সৃষ্টিশীল ও চিন্তাশীল কাব্যগ্রন্থ, যা বাংলা আধুনিক কবিতাকে নতুন দিশা দিয়েছে এবং কবির সাহিত্যিক ব্যক্তিত্বকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।
0
Updated: 4 days ago