'সংশপ্তক' উপন্যাসের রচয়িতা-
A
মুনীর চৌধুরী
B
রশীদ করিম
C
শওকত ওসমান
D
শহীদুল্লাহ কায়সার
উত্তরের বিবরণ
‘সংশপ্তক’ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় উপন্যাস, যা যুদ্ধ, প্রেম, সংগ্রাম ও সমাজজীবনের বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে। এই উপন্যাসটির রচয়িতা শহীদুল্লাহ কায়সার, যিনি ছিলেন বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী। তাঁর লেখায় সমাজের দ্বন্দ্ব, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মানবজীবনের গভীর বাস্তবতা সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
উপন্যাসটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থির সময়কে প্রেক্ষাপট হিসেবে ধারণ করেছে। এতে সমাজের নানা শ্রেণির মানুষের জীবন, তাদের আশা-নিরাশা, প্রেম-ঘৃণা ও সংগ্রামের ছবি স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।
– ‘সংশপ্তক’ শব্দটির অর্থ হলো “যারা শপথ নিয়ে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়”। এই নামের মধ্যেই উপন্যাসটির মূল ভাব প্রকাশ পেয়েছে—সংগ্রাম ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞার প্রতীক হিসেবে।
– শহীদুল্লাহ কায়সার এই উপন্যাসে মানবজীবনের টানাপোড়েন ও সামাজিক বৈষম্যের চিত্র বাস্তবভাবে তুলে ধরেছেন।
– উপন্যাসের চরিত্রগুলো যেমনঃ তিস্তা, রমেন, হাবুল, রমেনের মা—সবাই জীবন্ত ও বাস্তব জীবনের প্রতিনিধিত্ব করে।
– এতে গ্রামীণ সমাজ, রাজনৈতিক চেতনা, প্রেম ও বিপ্লবের সংঘাত মিলেমিশে এক গভীর মানবিক গল্প তৈরি করেছে।
– ‘সংশপ্তক’ ধারাবাহিক আকারে প্রকাশিত হয়ে পাঠকমহলে বিপুল সাড়া ফেলে এবং পরবর্তীতে এটি টেলিভিশন নাটক হিসেবেও নির্মিত হয়, যা জনপ্রিয়তার নতুন মাত্রা পায়।
– শহীদুল্লাহ কায়সার তাঁর সাহিত্যকর্মে বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রেখেছেন, যা পাঠককে সমাজের অন্তর্গত সত্য উপলব্ধি করতে সাহায্য করে।
– তাঁর রচনায় ভাষা ছিল সহজ, সাবলীল ও জীবনের কাছাকাছি, ফলে পাঠক গল্পের সাথে সহজেই একাত্ম হতে পারে।
– ‘সংশপ্তক’-এর মাধ্যমে তিনি কেবল একটি গল্প বলেননি, বরং একটি জাতির সংগ্রামী ইতিহাস ও মানবিক চেতনাকে তুলে ধরেছেন।
সার্বিকভাবে বলা যায়, শহীদুল্লাহ কায়সারের ‘সংশপ্তক’ শুধু একটি উপন্যাস নয়, এটি সমাজ ও ইতিহাসের জীবন্ত দলিল। তাঁর সাহিত্য সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করেছে।
0
Updated: 4 days ago
ভাষা আন্দোলনভিত্তিক উপন্যাস 'আর্তনাদ' রচনা করেন কে?
Created: 1 month ago
A
শওকত আলী
B
সেলিনা হোসেন
C
শওকত ওসমান
D
আলাউদ্দিন আল আজাদ
ভাষা আন্দোলনভিত্তিক উপন্যাস 'আর্তনাদ' রচনা করেন শওকত ওসমান। এটি ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত হয়।
শওকত ওসমান:
-
তিনি একজন কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক।
-
জন্মগ্রহণ করেন ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি, পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সবলসিংহপুর গ্রামে।
-
প্রকৃত নাম শেখ আজিজুর রহমান, সাহিত্যিক নাম শওকত ওসমান।
-
তাঁর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উল্লেখযোগ্য উপন্যাস: 'জাহান্নাম হইতে বিদায়'।
শওকত ওসমান রচিত অন্যান্য উপন্যাস:
-
ক্রীতদাসের হাসি
-
রাজা উপাখ্যান
-
দুই সৈনিক
-
নেকড়ে অরণ্য
-
জলাঙ্গী
-
বনি আদম
-
জননী
-
চৌরসন্ধি
0
Updated: 1 month ago
'পদ্মানদীর মাঝী' উপন্যাসে অংকিত হয়েছে-
Created: 4 days ago
A
কৃষক জীবন
B
ধীবর জীবন
C
বৈশ্য জীবন
D
নারীর জীবন
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘পদ্মানদীর মাঝী’ বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য বাস্তবধর্মী উপন্যাস। এতে মানুষের সংগ্রাম, দারিদ্র্য ও জীবনের কঠিন বাস্তবতার চিত্র অত্যন্ত নিখুঁতভাবে ফুটে উঠেছে। লেখক নদী ও নদীঘেঁষা মানুষের জীবনকে কেন্দ্র করে সমাজের এক বিশেষ শ্রেণির কথা তুলে ধরেছেন, যারা প্রতিদিন জীবনধারণের জন্য প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে।
উপন্যাসটির মূল উপজীব্য হলো ধীবর বা মাঝি সমাজের জীবনচিত্র। তাদের জীবনের সুখ-দুঃখ, ভালোবাসা, হতাশা ও সংগ্রামই এখানে প্রধান বিষয়।
-
উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র কুবের মাঝি—একজন দরিদ্র জেলে, যার জীবনের নিত্য লড়াইই এই কাহিনির মূল স্রোত। নদী, মাছ ধরা, নৌকা, ঝড়-বৃষ্টি—এসবই তার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
-
লেখক পদ্মানদীকে কেবল একটি প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে দেখাননি; বরং নদী এখানে মানুষের জীবনের প্রতীক হয়ে উঠেছে—যেমন নদীর অনিশ্চিত স্রোত, তেমনি মাঝিদের জীবনের অনিশ্চয়তা।
-
এই উপন্যাসে সমাজের নিচুতলার মানুষের অর্থনৈতিক বঞ্চনা, শ্রেণি-বৈষম্য ও জীবনের নির্মম বাস্তবতা গভীরভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
-
চরিত্রগুলো যেমন কুবের, কপিলা, হোসেন মিয়া—তারা প্রত্যেকেই তাদের সামাজিক অবস্থান ও জীবনের সংগ্রামের মাধ্যমে ধীবর জীবনের বাস্তব রূপ ফুটিয়ে তুলেছে।
-
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কোনো রোমান্টিক দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করেননি; বরং তিনি বাস্তবতার কঠোরতা ও মানবিক বোধের গভীর সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন।
-
উপন্যাসটি পাঠকের সামনে এমন এক সমাজের দরজা খুলে দেয়, যেখানে মানুষ নদীর সঙ্গে বেঁচে থাকে, নদীর মধ্যেই হারিয়ে যায়—এ যেন মানুষ ও প্রকৃতির সহাবস্থানের এক চিরন্তন কাব্য।
সব মিলিয়ে, ‘পদ্মানদীর মাঝী’ কোনো সাধারণ গল্প নয়; এটি এক ধীবর সমাজের জীবন্ত দলিল, যেখানে দারিদ্র্য, শ্রম, ভালোবাসা ও জীবনের সংগ্রাম একসূত্রে গাঁথা হয়েছে।
0
Updated: 4 days ago