'চর্যাপদ' কোন ধর্মাবলম্বীদের সাহিত্য ?
A
সনাতন হিন্দু
B
সহজিয়া বৌদ্ধ
C
জৈন
D
হরিজ
উত্তরের বিবরণ
চর্যাপদ হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্ম, যা সহজিয়া বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বারা রচিত হয়েছিল। এটি মূলত বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম কবিতা হিসেবে পরিচিত এবং বৌদ্ধ ধর্মের একটি বিশেষ শাখা সহজিয়া বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীদের দ্বারা রচিত হয়েছিল। সহজিয়া বৌদ্ধরা মূলত সাধারণ মানুষের মধ্যে বৌদ্ধধর্মের সহজ ও সরল ভাবনা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কবিতা ও গানে তাদের ধর্মীয় দর্শন প্রকাশ করতেন।
এটি বাংলা ভাষায় রচিত প্রাচীন বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলোর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। সহজিয়া বৌদ্ধদের মধ্যে মনের সাধনা এবং ভাববাদী ধর্মীয় দর্শন প্রচলিত ছিল। তারা দৈনন্দিন জীবন ও মানুষের আধ্যাত্মিক পথের মধ্যে সাদৃশ্য দেখানোর চেষ্টা করতেন, যাতে মানুষ সহজভাবে এবং শুদ্ধভাবে ধর্মের বাণী গ্রহণ করতে পারে।
চর্যাপদের বৈশিষ্ট্য:
-
সহজিয়া বৌদ্ধ দৃষ্টিকোণ: চর্যাপদে বৌদ্ধধর্মের সহজ, সরল এবং আধ্যাত্মিক ভাবনা ফুটে ওঠে। এখানে জীবন ও ধর্মের মধ্যে একতা প্রতিষ্ঠা করা হয়।
-
ভাষার ধরন: চর্যাপদে ব্যবহৃত ভাষা ছিল সাধারণ মানুষের বোধগম্য, যা সহজিয়া বৌদ্ধদের উদ্দেশ্যকে আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরে।
-
ধর্মীয় বিষয়বস্তু: এই কাব্যগ্রন্থে বৌদ্ধ দর্শন, সাধনা ও আধ্যাত্মিকতা নিয়ে গভীর আলোচনা পাওয়া যায়। এখানে একটি মরমী উপস্থাপনা রয়েছে যা সহজ জীবনযাপন এবং মনের পরিশুদ্ধি নিয়ে আলোচনা করে।
সহজিয়া বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্য:
সহজিয়া বৌদ্ধরা তাদের ধর্মীয় দর্শনকে মানুষের জীবনের অংশ হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন, যেখানে আধ্যাত্মিকতা এবং দৈনন্দিন জীবন একে অপরকে পরিপূরক। তারা কঠিন বৌদ্ধ দর্শনকে সহজ ভাষায় এবং সরলভাবে প্রকাশ করতে চাইতেন, যাতে সাধারণ মানুষ তা গ্রহণ করতে পারে। তাদের লক্ষ্য ছিল মানবতার উন্নতি এবং আধ্যাত্মিক মুক্তি লাভ।
সংক্ষেপে বলা যায়: চর্যাপদ হচ্ছে সহজিয়া বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সাহিত্য, যা বাংলা সাহিত্য ও বৌদ্ধ ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে চিহ্নিত। এটি সাধারণ মানুষের কাছে ধর্মীয় ভাবনাকে সহজ এবং বোধগম্য করে উপস্থাপন করেছিল।
0
Updated: 4 days ago