ইনসুলিন কি?
A
এক ধরনের কৃত্রিম অঙ্গ
B
এক ধরনের প্রোটিন
C
এক ধরনের এনজাইম
D
এক ধরনের হরমোন
উত্তরের বিবরণ
ইনসুলিন হলো একটি হরমোন, যা মানবদেহে প্যানক্রিয়াসের বেটা কোষ থেকে সৃষ্ট হয়। এটি দেহে রক্তের গ্লুকোজ বা চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইনসুলিন শরীরকে খাদ্য থেকে প্রাপ্ত গ্লুকোজকে কোষে গ্রহণ ও স্টোর করতে সাহায্য করে, যাতে রক্তে অতিরিক্ত চিনি জমা না হয়। তাই সঠিক উত্তর হলো (ঘ) এক ধরনের হরমোন।
বিস্তারিত ব্যাখ্যা:
ইনসুলিনের উৎস ও গঠন:
-
উৎপন্ন হয় প্যানক্রিয়াসের ল্যাংগারহান্স আইল্যান্ডের বেটা কোষ থেকে।
-
এটি একটি প্রোটিন হরমোন, তবে এখানে মূল বিষয় হলো এর কার্যক্রম, যা হরমোনের মাধ্যমে হয়।
ইনসুলিনের কাজ:
-
রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ: খাবারের পর রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে গেলে, ইনসুলিন তা কোষে প্রবেশ করিয়ে শক্তি হিসেবে ব্যবহার বা গ্লাইকোজেন আকারে সংরক্ষণ করে।
-
শরীরের বিভিন্ন কোষে শক্তি সরবরাহ: মস্তিষ্ক, পেশি ও লিভারের কোষে গ্লুকোজ সরবরাহের জন্য ইনসুলিন অপরিহার্য।
-
ডায়াবেটিসের সঙ্গে সম্পর্ক: ইনসুলিনের অভাব বা কার্যকারিতা কমলে রক্তে অতিরিক্ত চিনি জমে, যা ডায়াবেটিস মেলাইটাস সৃষ্টি করতে পারে।
অন্য বিকল্পগুলো বিশ্লেষণ:
-
(ক) এক ধরনের কৃত্রিম অঙ্গ: ইনসুলিন কোনো কৃত্রিম অঙ্গ নয়।
-
(খ) এক ধরনের প্রোটিন: যদিও গঠন হিসেবে এটি প্রোটিন, মূল শ্রেণিবিন্যাস হলো হরমোন, তাই এটি সঠিক শ্রেণি নয়।
-
(গ) এক ধরনের এনজাইম: ইনসুলিন কোনো এনজাইম নয়, এটি কোনো রসায়নিক প্রতিক্রিয়া catalyze করে না, বরং সিগন্যাল বা সংকেত হিসেবে কাজ করে।
উপসংহার:
ইনসুলিন হলো এক ধরনের হরমোন, যা রক্তের চিনি নিয়ন্ত্রণ ও শক্তি সরবরাহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক উত্তর হলো (ঘ) এক ধরনের হরমোন।
0
Updated: 5 days ago
স্যাটেলাইট কোন বলের কারণে ঘুরতে থাকে?
Created: 10 hours ago
A
অভিকর্ষজ ত্বরণ
B
মাধ্যাকর্ষণ বল
C
আপেক্ষিক বল
D
সমান্তরাল বল
স্যাটেলাইট বা উপগ্রহ পৃথিবীর চারপাশে ঘুরে থাকে একটি নির্দিষ্ট বলের প্রভাবে। এই বল হলো মাধ্যাকর্ষণ বল, যা পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে সবকিছুকে আকর্ষণ করে। স্যাটেলাইটকে কক্ষপথে রাখার জন্য এই বল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো।
• মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাব: পৃথিবী প্রতিটি বস্তুর উপর আকর্ষণ বল প্রয়োগ করে, যাকে মাধ্যাকর্ষণ বল বলে। স্যাটেলাইট পৃথিবীর চারপাশে ঘুরতে পারে কারণ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি তাকে নিজের দিকে টেনে রাখে।
• কেন্দ্রমুখী বল হিসেবে ভূমিকা: স্যাটেলাইট চলার সময় এই মাধ্যাকর্ষণ বলই কেন্দ্রমুখী বল হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ, স্যাটেলাইট কক্ষপথ থেকে ছিটকে না পড়ে বরং নির্দিষ্ট পথে ঘুরতে থাকে।
• বেগ ও বলের ভারসাম্য: স্যাটেলাইটের ঘূর্ণন বেগ ও মাধ্যাকর্ষণ বলের মধ্যে একটি ভারসাম্য থাকে। এই ভারসাম্যের কারণে স্যাটেলাইট স্থিতিশীল কক্ষপথে থেকে যায়। যদি গতি খুব কম হয়, তবে এটি পৃথিবীতে পড়ে যাবে; আবার গতি বেশি হলে কক্ষপথ ছেড়ে মহাকাশে ছিটকে পড়বে।
• উদাহরণ: যেমন—বাংলাদেশের যোগাযোগ উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলের কারণেই নির্দিষ্ট কক্ষপথে থেকে কাজ করছে।
• অভিকর্ষজ ত্বরণ নয়: বিকল্প (ক)-এর অভিকর্ষজ ত্বরণ মূলত পৃথিবীর আকর্ষণ বলের কারণে সৃষ্ট ত্বরণ। তবে স্যাটেলাইটের কক্ষপথে অবস্থানের প্রধান কারণ এটি নয়, বরং মাধ্যাকর্ষণ বলই তাকে ধরে রাখে।
• আপেক্ষিক বলের ধারণা: বিকল্প (গ)-এর আপেক্ষিক বল কেবলমাত্র ভিন্ন ফ্রেমে গতি তুলনা করতে ব্যবহৃত হয়, যা স্যাটেলাইটের কক্ষপথে থাকার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
• সমান্তরাল বলের ভুল ধারণা: বিকল্প (ঘ)-এর সমান্তরাল বল দুটি বস্তুর উপর সমদিকীয় বল প্রয়োগের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যা স্যাটেলাইটের ঘূর্ণন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
• বৈজ্ঞানিক ভিত্তি: ইংরেজ বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটন প্রথম প্রমাণ করেছিলেন যে, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলই চাঁদ ও অন্যান্য গ্রহের গতি নিয়ন্ত্রণ করে। তাঁর গতি সূত্র ও সর্বজনীন মহাকর্ষ সূত্র এই ধারণাকে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করে।
• উপসংহার: তাই বলা যায়, স্যাটেলাইটকে কক্ষপথে ধরে রাখার মূল কারণ হলো মাধ্যাকর্ষণ বল। এটি ছাড়া স্যাটেলাইট তার নির্দিষ্ট পথ ধরে ঘুরতে পারত না।
0
Updated: 10 hours ago
সুস্থ দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তি সর্বনিম্ন যে দুরত্ব পর্যন্ত বিনা শ্রান্তিতে স্পষ্ট দেখতে পায়
Created: 4 days ago
A
10 cm
B
15 cm
C
25 cm
D
20 cm
ব্যাখ্যা:
সুস্থ দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তির চোখের অঙ্গন খুবই নিখুঁত এবং তাদের চোখের কোণ থেকে স্পষ্টভাবে কিছু দেখতে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব প্রয়োজন। এটি 'নির্দিষ্ট দৃষ্টি দূরত্ব' বা মিনিমাম ভিজুয়াল দৃষ্টি (Minimum Visual Distance) হিসেবে পরিচিত। একটি সুস্থ দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে, সাধারণত এই নির্দিষ্ট দূরত্ব ২৫ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। অর্থাৎ, সুস্থ চোখের জন্য চোখের কোণ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার দূরত্বে থাকা কোনো বস্তুকে পরিষ্কারভাবে এবং বিনা শ্রান্তিতে দেখা সম্ভব।
এখানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য:
-
মানুষের চোখের অবস্থা ও দৃষ্টির ক্ষমতা একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টির পরিসরে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
-
২৫ সেন্টিমিটার হলো সাধারণত চোখের কাছে কোনও বস্তুর স্পষ্ট দৃষ্টি পেতে যা প্রয়োজনীয় দূরত্ব। এটি ফোকাস পয়েন্ট হিসেবে কাজ করে।
-
এর মানে, একটি সুস্থ দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তির চোখ ২৫ সেন্টিমিটার দূরত্বে থাকা বস্তুকে সর্বোচ্চ স্পষ্টভাবে দেখতে সক্ষম।
-
এই দূরত্বটির মধ্যে চোখের পেশি এবং লেন্স কাজ করতে থাকে, যা স্পষ্ট দৃষ্টি বজায় রাখতে সহায়ক।
যেহেতু এই দূরত্বের কম হলে চোখের পেশি বেশি চাপের মধ্যে পড়ে, এবং বড় হলে দৃষ্টি কম স্পষ্ট হয়ে যায়, তাই ২৫ সেন্টিমিটার আদর্শ দূরত্ব হিসেবে গণ্য হয়।
0
Updated: 4 days ago
কোন অর্গানেলটি পর্দা দ্বারা আবেষ্টিত থাকে না?
Created: 1 week ago
A
রাইবোসোম
B
ক্লোরোপ্লাস্ট
C
মাইটোকন্ড্রিয়া
D
পারোক্সিসোম
রাইবোসোম এমন একটি কোষীয় অঙ্গাণু যা প্রোটিন সংশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, কিন্তু এটি কোনো পর্দা বা ঝিল্লি দ্বারা আবৃত নয়। এ কারণে প্রদত্ত অঙ্গাণুগুলির মধ্যে শুধুমাত্র রাইবোসোমই ঝিল্লিবিহীন।
অন্যদিকে ক্লোরোপ্লাস্ট, মাইটোকন্ড্রিয়া এবং পারঅক্সিসোম সবই এক বা একাধিক স্তরের ঝিল্লি দ্বারা বেষ্টিত। নিচে প্রতিটি অঙ্গাণুর গঠন ও বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হলো।
রাইবোসোম
-
সাইটোপ্লাজমে মুক্তভাবে বা অন্তঃপ্লাজমিক জালিকার গায়ে যুক্ত অবস্থায় থাকে এবং এখানেই প্রোটিন সংশ্লেষণ ঘটে।
-
এটি ক্ষুদ্র, প্রায় গোলাকার ও ঝিল্লিবিহীন কণা।
-
একাধিক রাইবোসোম মুক্তোর মালার মতো যুক্ত হলে তাকে পলিরাইবোসোম বা পলিসোম বলা হয়।
-
আদিকোষ ও প্রকৃতকোষ উভয় প্রকার কোষেই রাইবোসোম থাকে, তাই একে সর্বজনীন অঙ্গাণু বলা হয়।
-
প্রোটিন গঠনের জন্য রাইবোসোমে rRNA ও প্রোটিন যৌগ থাকে, যা কোষের প্রোটিন উৎপাদনের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।
ক্লোরোপ্লাস্ট
-
এটি উদ্ভিদ কোষে বিদ্যমান সবুজ বর্ণের প্লাস্টিড, যা আলোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
-
ক্লোরোফিল-a, ক্লোরোফিল-b, ক্যারোটিন ও জ্যান্থোফিল দ্বারা গঠিত হওয়ায় এটি সবুজ বর্ণ ধারণ করে।
-
১৮৮৩ সালে বিজ্ঞানী শিম্পার উদ্ভিদ কোষে প্রথম এ অঙ্গাণুটি আবিষ্কার করেন।
-
ক্লোরোপ্লাস্ট একটি দুই স্তরবিশিষ্ট আংশিক অনুপ্রবেশ্য মেমব্রেন দ্বারা আবৃত।
-
এর মেমব্রেনে ফসফোলিপিডের পরিবর্তে গ্লাইকোসিল গ্লিসারাইড থাকে, যা একে অন্যান্য ঝিল্লি থেকে আলাদা করে।
-
এটি তিনটি মেমব্রেনে তৈরি এবং তিনটি প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট অঙ্গাণু, যার অভ্যন্তরে গ্রানা ও স্ট্রোমা থাকে।
মাইটোকন্ড্রিয়া
-
প্রকৃত জীবকোষের শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র, যা কোষের “পাওয়ার হাউস” নামে পরিচিত।
-
এটি দ্বিস্তরবিশিষ্ট আবরণী ঝিল্লি দ্বারা ঘেরা এবং এর ভেতরে ক্রেবস্ চক্র, ফ্যাটি অ্যাসিড চক্র ও ইলেকট্রন পরিবহন প্রক্রিয়া সংঘটিত হয়।
-
শক্তি উৎপাদনের মাধ্যমে মাইটোকন্ড্রিয়া কোষের জৈবনিক কাজ সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ATP (Adenosine Triphosphate) সরবরাহ করে।
-
এটি মূলত কোষের শ্বসন অঙ্গাণু, যেখানে গ্লুকোজ অক্সিডেশনের মাধ্যমে শক্তি উৎপন্ন হয়।
• পারঅক্সিসোম:
-
প্রায় সব কোষেই বিদ্যমান ক্ষুদ্র, এক আবরণী বিশিষ্ট দানাদার অঙ্গাণু।
-
সাধারণত প্রাণীর কিডনি ও লিভার কোষে এর উপস্থিতি বেশি দেখা যায়।
-
এটি অমসৃণ অন্তঃপ্লাজমিক জালিকার বহিঃপ্রসারণ থেকে গঠিত হয়।
-
এর অভ্যন্তরে ক্যাটালেজ (catalase) নামক এনজাইম থাকে, যা হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ভেঙে পানি ও অক্সিজেনে পরিণত করে।
-
১৯৬৭ সালে বেলজিয়ামের সাইটোলজিস্ট ক্রিশ্চিয়ান দ্য ডুভ এই অঙ্গাণুটি আবিষ্কার করেন।
-
পারঅক্সিসোমকে কখনও কখনও মাইক্রোসোম নামেও ডাকা হয়।
সবশেষে বলা যায়, ক্লোরোপ্লাস্ট, মাইটোকন্ড্রিয়া ও পারঅক্সিসোম সকলেই ঝিল্লিবেষ্টিত অঙ্গাণু হলেও রাইবোসোম কোনো ঝিল্লি দ্বারা আবৃত নয়, যা একে অন্যদের থেকে পৃথক করে।
0
Updated: 1 week ago