'নদী সিকস্তি' কারা?
A
নদী ভাঙ্গনে সর্বস্বান্ত জনগণ
B
নদীর চর জাগলে যারা দখল করতে চায়
C
নদীতে যারা সারা বছর মাছ ধরে
D
নদীর পাড়ে যারা বসবাস করে
উত্তরের বিবরণ
বাংলা ভাষায় ‘নদী সিকস্তি’ শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করা হয় এমন জনগণের বর্ণনার জন্য যারা নদী ভাঙনে সর্বস্বান্ত হয়েছে, অর্থাৎ নদীর ক্ষয় বা ভাঙনের কারণে তাদের বসতভূমি, ফসলি জমি এবং জীবনযাপন হারাতে হয়েছে। এটি কোনো বিশেষ পেশা বা বসবাসের ভিত্তিতে নয়, বরং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে বোঝায়। তাই সঠিক উত্তর হলো (ক) নদী ভাঙ্গনে সর্বস্বান্ত জনগণ।
বিস্তারিত ব্যাখ্যা:
নদী সিকস্তি শব্দের অর্থ:
-
“নদী” → নদী সম্পর্কিত বা নদীর আশেপাশের।
-
“সিকস্তি” → ভুক্তভোগী, ক্ষতিগ্রস্ত বা সর্বস্বান্ত ব্যক্তিদের জন্য ব্যবহৃত।
-
মিলিতভাবে, নদী সিকস্তি অর্থ দাঁড়ায় নদীর ক্ষয় বা ভাঙনের কারণে সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ।
বিষয়বস্তুর বিশ্লেষণ:
-
বাংলাদেশে নদীভাঙন একটি সাধারণ সমস্যা। নদীর বালুচর, বাঁধ, ভাঙা পাড়ের কারণে অনেক মানুষ তাদের জমি ও বসতি হারায়।
-
এই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে স্থানীয় ভাষায় নদী সিকস্তি বলা হয়।
-
তারা শুধু বসতিই হারান না, বরং জীবিকার উৎসও অনেকাংশে লোপ পায়।
অন্য বিকল্পগুলোর ভুল ব্যাখ্যা:
-
(খ) নদীর চর জাগলে যারা দখল করতে চায়: এটি নদীর নতুন জমি বা চর দখলকারীদের বোঝায়, কিন্তু তারা ক্ষতিগ্রস্ত নয়।
-
(গ) নদীতে যারা সারা বছর মাছ ধরে: এটি মৎস্যজীবীদের বর্ণনা, যাদের ‘সিকস্তি’ বা ভাঙনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক নেই।
-
(ঘ) নদীর পাড়ে যারা বসবাস করে: এটি শুধু অবস্থান নির্দেশ করে, তবে তারা সবসময় ক্ষতিগ্রস্ত নাও হতে পারে।
সারসংক্ষেপ:
-
নদী সিকস্তি হলো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ।
-
এটি জীবিকার ক্ষতি, বসতি ধ্বংস ও সম্পদের ক্ষয় নির্দেশ করে।
উপসংহার:
বাংলা ভাষায় নদী সিকস্তি বলতে বোঝায় নদী ভাঙ্গনে সর্বস্বান্ত জনগণ, তাই সঠিক উত্তর হলো (ক) নদী ভাঙ্গনে সর্বস্বান্ত জনগণ।
0
Updated: 5 days ago
'শূন্যপূরাণের' রচয়িতা -
Created: 5 days ago
A
রামাই পণ্ডিত
B
হলায়ূধ মিশ্র
C
কাহ্নপা
D
কুক্কুরীপা
'শূন্যপুরাণ' রামাই পণ্ডিত রচিত একটি বৌদ্ধ ধর্মীয় তত্ত্বগ্রন্থ এবং এটি অন্ধকার যুগের একটি সাহিত্য নিদর্শন। এই গ্রন্থটি মূলত ধর্মপূজাপদ্ধতি সম্পর্কে লিখিত, যেখানে গদ্য ও পদ্য মিশ্রিত একটি চম্পুকাব্য রচিত হয়েছে। 'শূন্যপুরাণ' ৫১টি অধ্যায়ে বিভক্ত, যার প্রথম ৫টি অধ্যায় সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করে। এটি ত্রয়োদশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত রচিত হতে পারে, তবে সঠিক সময়কাল নিয়ে মতভেদ রয়েছে। শূন্যপুরাণ নামহীন অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল, এবং বিশ্বকোষপ্রণেতা নাগেন্দ্রনাথ বসু ১৩১৪ বঙ্গাব্দে 'বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ' থেকে এটি নামকরণ করে প্রকাশ করেন।
'শূন্যপুরাণ' গ্রন্থের মধ্যে ‘নিরঞ্জনের রুষ্মা’ নামে একটি অংশ রয়েছে, যেখানে মুসলিম পীর-গাজী কর্তৃক ব্রাহ্মণদের অত্যাচারের হাত থেকে বৌদ্ধদের রক্ষা করার বিবরণ দেয়া হয়েছে। ভাষাগত বৈশিষ্ট্যের কারণে কিছু পণ্ডিত এই অংশকে পরবর্তীকালের রচনা বলে মনে করেন এবং তাঁদের মতে, এটি হিন্দু-মুসলিম ধর্মসমন্বয়ের চেতনা থেকে সৃষ্টি হয়েছে।
তবে 'শূন্যপুরাণ' ছাড়া আরও কিছু লেখকও উল্লেখযোগ্য, যেমন হলায়ূধ মিশ্র, কাহ্নপা এবং কুক্কুরীপা। হলায়ূধ মিশ্র ছিলেন রাজা লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি এবং তিনি 'সেক শুভোদয়া' নামক একটি চম্পূকাব্য রচনা করেন, যা খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে রচিত হয়েছিল। কাহ্নপা, যিনি চর্যাপদের সর্বাধিক পদরচয়িতা, সহজিয়া তান্ত্রিক বৌদ্ধযোগী ছিলেন এবং তাঁর ১৩টি পদ রচনা করেন। কুক্কুরীপা, যিনি চর্যাপদের মহিলা কবি হিসেবে পরিচিত, তিনটি পদ রচনা করেন, তবে ৪৮নং পদটি খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এই তথ্যগুলো বাংলা সাহিত্য এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় তত্ত্বের মূল্যবান অংশ হিসেবে বিবেচিত।
0
Updated: 5 days ago
মেঘনা নদীর দক্ষ মাঝি কে?
Created: 1 day ago
A
করিম উদ্দিন
B
হাবিব মিয়া
C
মতলব মিয়া
D
ছফা মিয়া
বাংলা সাহিত্যজগতে মেঘনা নদীকে কেন্দ্র করে বহু গল্প ও উপন্যাস রচিত হয়েছে, যার মধ্যে “মেঘনা নদীর মাঝি” প্রসিদ্ধ একটি গল্প। এই গল্পে নদীর মাঝি চরিত্রের মাধ্যমে লেখক গ্রামীণ জীবনের বাস্তব চিত্র, নদী নির্ভর মানুষের সংগ্রাম এবং নৌচালনার দক্ষতা সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। এই কাহিনিতে মতলব মিয়া হচ্ছেন মেঘনা নদীর সবচেয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ মাঝি।
নিচে বিষয়টি স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হলো—
-
মতলব মিয়ার পরিচয়: তিনি পেশায় একজন মাঝি, যিনি মেঘনা নদীতে নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁর নৌকা চালানোর দক্ষতা, নদীর গতিপথ বোঝার ক্ষমতা এবং ঝড়-জল মোকাবিলার সাহস তাকে অন্য মাঝিদের মধ্যে আলাদা করে তুলেছে।
-
দক্ষতার পরিচয়: মতলব মিয়া মেঘনা নদীর প্রতিটি বাঁক, স্রোত, ভাটির ঢেউ, এমনকি কুয়াশার মধ্যে নৌকা চালানোর পথ পর্যন্ত জানেন। তিনি জানেন কখন পাল তোলা নিরাপদ, কখন নৌকা থামানো উচিত, আর কোথায় নদীর স্রোত বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
-
নদী ও জীবনের সম্পর্ক: তাঁর জীবনে নদী কেবল জীবিকার উৎস নয়, এটি তাঁর জীবনের সঙ্গীও বটে। নদীর প্রতিটি ঢেউ যেন তাঁর সঙ্গে কথা বলে, যা তাঁর আত্মার সঙ্গে মিশে আছে।
-
সংগ্রামী চরিত্র: মতলব মিয়া সমাজের সাধারণ এক মানুষ, কিন্তু নিজের পেশায় তিনি নিবেদিতপ্রাণ। নদীতে ঝড় উঠলেও তিনি ভয় পান না। জীবনের প্রতিকূলতাকে জয় করাই তার দৈনন্দিন বাস্তবতা।
-
নৈতিক গুণাবলি: দক্ষতার পাশাপাশি তিনি সৎ, সাহসী ও পরিশ্রমী। অন্য মাঝিরা যখন নদীর ভয়াবহ স্রোত দেখে পিছিয়ে যায়, তখন মতলব মিয়া দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে নৌকার হাল ধরে রাখেন।
-
প্রতীকী অর্থে: সাহিত্যিকভাবে মতলব মিয়া বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের প্রতীক, যারা পরিশ্রম, অধ্যবসায় এবং সাহসের মাধ্যমে জীবনের অনিশ্চয়তাকে জয় করে।
-
গল্পের শিক্ষা: এই চরিত্র আমাদের শেখায় যে দক্ষতা ও সাহস একসাথে থাকলে মানুষ যেকোনো বাধা অতিক্রম করতে পারে। মতলব মিয়া তার জীবনের কঠিন মুহূর্তগুলোতেও ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাস হারাননি।
সবশেষে বলা যায়, মতলব মিয়া কেবল মেঘনা নদীর দক্ষ মাঝি নন, তিনি নদীজীবনের প্রতীকও বটে। তাঁর মাধ্যমে লেখক দেখিয়েছেন, প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকা মানুষের আসল শক্তি নিহিত থাকে পরিশ্রম, অভিজ্ঞতা ও সাহসের মধ্যে।
0
Updated: 1 day ago
“আমি কি ডরাই সখি ভিখারী রাঘবে?” রাঘবে শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি-
Created: 5 days ago
A
কর্মে ২য়া
B
করণে ৭মী
C
অপাদানে ৫মী
D
অপাদানে ৭মী
বাক্যটি হলো — “আমি কি ডরাই সখি ভিখারী রাঘবে?”। এখানে আমাদের কাজ হলো ‘রাঘবে’ শব্দটি কোন কারকে (case) এবং কোন বিভক্তিতে (vibhakti) ব্যবহার হয়েছে তা নির্ণয় করা। সঠিক উত্তর হলো (ঘ) অপাদানে ৭মী।
বিস্তারিত ব্যাখ্যা:
১. অপাদান কার ও ৭মী বিভক্তি:
-
অপাদান কার (Ablative case) হলো এমন কার যা কোনো ব্যক্তি বা বস্তু থেকে বিচ্যুতি বা উৎস নির্দেশ করে।
-
বাংলা ব্যাকরণে অপাদানকে সাধারণত ‘থেকে’, ‘দ্বারা’, ‘এর দ্বারা’ ইত্যাদি দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
-
৭মী বিভক্তি হলো ঐ শব্দের বিকৃত রূপ যা অপাদান কার নির্দেশ করে।
২. ‘রাঘবে’ বিশ্লেষণ:
-
শব্দটি হলো রাঘব + এ
-
এখানে ‘এ’ যোগ হয়েছে কোনো বস্তু বা ব্যক্তির মাধ্যমে বা দ্বারা নির্দেশ করার জন্য।
-
অর্থাৎ, ‘ভিখারী’ (ভিক্ষুক) রাঘবের মাধ্যমে বা রাঘব থেকে কিছু প্রাপ্ত হচ্ছে বোঝাচ্ছে।
-
তাই এটি অপাদানে ৭মী বিভক্তি।
৩. অন্যান্য বিকল্পের ভুল ব্যাখ্যা:
-
(ক) কর্মে ২য়া: কোনো ক্রিয়ার সরাসরি পদ বোঝায়, যেমন: রাম খেলো → ‘খেলো’ কর্মে।
-
(খ) করণে ৭মী: কোনো কাজের উপকরণ নির্দেশ করে, যেমন: লাঠি দিয়ে মারল → ‘লাঠি’ করণে।
-
(গ) অপাদানে ৫মী: ৫মী অপাদান ব্যবহৃত হয় কিছু নির্দিষ্ট অবস্থা বা মাধ্যমের ক্ষেত্রে, কিন্তু এখানে ৭মী প্রযোজ্য।
সারসংক্ষেপ:
-
বাক্যে ‘রাঘবে’ হলো কোন মাধ্যমে বা কার দ্বারা কিছু কার্য সম্পাদন হচ্ছে তা নির্দেশ করছে।
-
অতএব, এটি অপাদানে ৭মী বিভক্তি।
উপসংহার:
‘রাঘবে’ শব্দটি অপাদানে ৭মী বিভক্তিতে ব্যবহৃত হয়েছে, তাই সঠিক উত্তর হলো (ঘ) অপাদানে ৭মী।
0
Updated: 5 days ago