নিচের কোনটি কৃষি-আবহাওয়াজনিত আপদ (Hazard)?
A
ভূমিকম্প
B
ভূমিধস
C
সুনামি
D
খরা
উত্তরের বিবরণ
খরা হলো এমন একটি প্রাকৃতিক অবস্থা যখন কোনো অঞ্চলে দীর্ঘদিন বৃষ্টিহীনতা বা অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে মাটির আর্দ্রতা হারিয়ে শুষ্কতা দেখা দেয়। এতে মাটি চৌচির হয়ে যায়, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যায় এবং জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে।
বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে খরার প্রভাব তুলনামূলকভাবে বেশি, যার ফলে কৃষি, পরিবেশ ও জনজীবনে বহুমাত্রিক সমস্যা দেখা দেয়। খরা একদিকে যেমন খাদ্য উৎপাদনে ঘাটতি ঘটায়, অন্যদিকে এটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ও স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। নিচে খরার বৈশিষ্ট্য, প্রভাব ও সম্পর্কিত বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো।
-
খরার সংজ্ঞা: দীর্ঘ সময় বৃষ্টি না হলে বা বৃষ্টিপাত অপ্রতুল হলে মাটির স্বাভাবিক আর্দ্রতা নষ্ট হয়ে শুষ্ক অবস্থা তৈরি হয়। এ অবস্থায় মাটি ফেটে যায় এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যায়—এটাই খরা নামে পরিচিত।
-
মাটির অবস্থা: খরাগ্রস্ত অঞ্চলে মাটি শক্ত, ফেটে যাওয়া ও জীবাণুহীন হয়ে পড়ে, যার ফলে ফসল উৎপাদনের উপযোগিতা হারায়।
-
ভূগর্ভস্থ পানির সংকট: বৃষ্টিপাত না থাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ধীরে ধীরে নিচে নেমে যায়, ফলে পানির সংকট দেখা দেয়। এটি কৃষিকাজ ও মানুষের পানীয় জলের চাহিদায় সরাসরি প্রভাব ফেলে।
-
ভৌগোলিক প্রভাব: বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, যেমন রাজশাহী, নওগাঁ ও দিনাজপুরে খরার প্রভাব সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয়। এসব অঞ্চলে নদীর পানি প্রবাহ কমে যায় এবং কৃষিজমি অনাবাদী হয়ে পড়ে।
-
কৃষিতে প্রভাব: খরার কারণে ধান, গম, ভুট্টা ও সবজি উৎপাদন মারাত্মকভাবে হ্রাস পায়। সেচের পানির অভাবে কৃষকরা চাষাবাদে ব্যর্থ হন, যার ফলে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়।
-
খাদ্যাভাব: উপকূলীয় ও খরাগ্রস্ত অঞ্চলে ফসল উৎপাদন কমে গেলে খাদ্যপণ্যের অভাব দেখা দেয় এবং বাজারে খাদ্যের দাম বেড়ে যায়।
-
অর্থনৈতিক ক্ষতি: ফসলহানি ও পশুপালনের ক্ষতির কারণে কৃষিনির্ভর জনগোষ্ঠীর আয় কমে যায়, যা জাতীয় অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
-
স্বাস্থ্য ও পরিবেশ: খরায় পানির অভাব ও অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে তীব্র গরম, ত্বকের রোগ, পানিশূন্যতা ও অন্যান্য অসুখ দেখা দেয়। একই সঙ্গে গাছপালা শুকিয়ে গিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়।
-
প্রাকৃতিক পরিবর্তন: শুষ্ক আবহাওয়া ও মাটির আর্দ্রতার ঘাটতি বায়ুমণ্ডলে ধুলাবালির পরিমাণ বাড়ায়, ফলে বাতাসে দূষণ বৃদ্ধি পায় এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দেয়।
-
মানবজীবনে প্রভাব: পানির ঘাটতি ও খাদ্যাভাবের কারণে মানুষ পল্লী অঞ্চল থেকে শহরমুখী হয়, যা নগরায়ণ ও সামাজিক অস্থিতিশীলতার কারণ হতে পারে।
-
দীর্ঘমেয়াদি পরিণতি: খরা বারবার ঘটলে মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়, ভূমিক্ষয় ঘটে এবং কৃষিভিত্তিক অঞ্চলে দারিদ্র্য বৃদ্ধি পায়।
অন্যদিকে, ভূমিকম্প, ভূমিধস ও সুনামি যদিও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, তবে এগুলো কৃষি-আবহাওয়াজনিত আপদ নয়; কারণ এদের উৎপত্তি ও প্রভাব আবহাওয়াগত নয়, বরং ভূতাত্ত্বিক কারণনির্ভর।
0
Updated: 6 days ago
‘Sendai Framework for Disaster Risk Reduction’ কত সালে গৃহীত হয়?
Created: 4 weeks ago
A
২০১২ সালে
B
২০১৩ সালে
C
২০১৫ সালে
D
২০১৭ সালে
Sendai Framework for Disaster Risk Reduction একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ যা দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে টেকসই ব্যবস্থাপনা এবং বিনিয়োগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছে। এটি ১৪ থেকে ১৮ মার্চ ২০১৫ তারিখে জাপানের সেন্দাই শহরে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের তৃতীয় দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস সম্মেলনের শেষদিন অনুমোদিত হয়। এই ফ্রেমওয়ার্কে ২০৩০ সালের মধ্যে অর্জনের জন্য সাতটি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে এবং দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার চারটি অগ্রাধিকারের রূপরেখা স্থির করা হয়েছে।
-
দুর্যোগে মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী।
-
আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা ২০৩০ সালের মধ্যে।
-
দুর্যোগের অর্থনৈতিক ক্ষতি হ্রাস করা ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) সাথে সরাসরি সম্পর্কিত।
-
গুরুতর অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস এবং মৌলিক পরিষেবার ব্যাঘাত কমানো, যেমন স্বাস্থ্য ও শিক্ষা।
-
জাতীয় ও স্থানীয় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কৌশলসহ দেশের সংখ্যা বৃদ্ধি করা ২০২০ সালের মধ্যে।
-
উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য পর্যাপ্ত এবং টেকসই আন্তর্জাতিক সহায়তা বৃদ্ধি করা, যাতে ফ্রেমওয়ার্ক কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হয়।
-
বহু-বিপদ প্রারম্ভিক সতর্কতা ব্যবস্থা ও দুর্যোগ ঝুঁকির তথ্য ও মূল্যায়নের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি করা ২০৩০ সালের মধ্যে।
0
Updated: 4 weeks ago
‘Nor' wester’ কোন দুর্যোগকে নির্দেশ করে?
Created: 1 month ago
A
সুনামি
B
ভূমিকম্প
C
অনাবৃষ্টি
D
কালবৈশাখী ঝড়
কালবৈশাখী ঝড় বাংলাদেশের প্রাকৃতিক আবহাওয়ার একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য, যা মূলত বজ্রঝড়ের ধরন। এটি দেশের কৃষি, জনজীবন এবং স্থানীয় আবহাওয়ার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। কালবৈশাখী সাধারণত এপ্রিল-মে (বৈশাখ) মাসে উত্তরের দিক থেকে প্রবাহিত হয়।
-
কালবৈশাখী একটি ধরনের বজ্রঝড়, যা সচরাচর উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়।
-
স্থানীয়ভাবে কোনো এলাকার ভূ-পৃষ্ঠ অত্যধিক উত্তপ্ত হলে বায়ুমন্ডল অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে এবং ঝড়ের জন্ম হয়।
-
এই অস্থিরতার ফলে কিউমুলাস মেঘ উল্লম্বভাবে বৃদ্ধি পেয়ে কিউমুলোনিম্বাস মেঘ গঠন করে এবং বজ্রঝঞ্ঝার সৃষ্টি হয়।
-
সাধারণ বর্ষণের সঙ্গে পার্থক্য হলো, কালবৈশাখীর সঙ্গে সবসময় বজ্রপাত ও বিদ্যুৎ চমকা যুক্ত থাকে।
-
ঝড়ের গতি সাধারণত প্রতি ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৮০ কিলোমিটার, অনেক সময় ঘণ্টায় ১২৮ কিলোমিটারেরও বেশি হয়ে যায়।
-
কালবৈশাখীকে বায়ুপুঞ্জ বজ্রঝড় (air mass thunderstorm) বা পরিচলনগত বজ্রঝড় (convective thunderstorm) হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়।
অতিরিক্ত তথ্য হিসেবে বলা যায়, কালবৈশাখী ঝড় সরাসরি কৃষি এবং স্থানীয় জীবজগতে ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে, যেমন পাকা ফসল নষ্ট হওয়া, বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং ছাদ-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া। এছাড়া এটি দেশের গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়ার একটি স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য, যা বাতাস ও জলীয় বাষ্পের প্রবাহের সঙ্গে সম্পর্কিত। আধুনিক আবহাওয়ার পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থায়, কালবৈশাখীর আগাম সতর্কতা দেওয়ার মাধ্যমে মানুষের জীবন ও সম্পদের ক্ষতি কমানো সম্ভব।
0
Updated: 1 month ago
বাংলাদেশে সিডর কখন আঘাত হানে?
Created: 3 weeks ago
A
১৫ নভেম্বর ২০০৭
B
১৬ নভেম্বর ২০০৭
C
১৭ নভেম্বর ২০০৭
D
১৮ নভেম্বর ২০০৭
ঘূর্ণিঝড় সিডর (Sidr) বাংলাদেশের ইতিহাসে এক ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে স্মরণীয়। এটি বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়গুলোর একটি ছিল এবং ২০০৭ সালে আঘাত হেনে ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়।
-
সিডর ছিল বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়গুলোর একটি।
-
এটি ২০০৭ সালের ১৫ই নভেম্বর বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে আঘাত হানে।
-
উৎপত্তি হয় বঙ্গোপসাগরের কেন্দ্রীয় অঞ্চল থেকে এবং ধীরে ধীরে বিশাল শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে।
-
এ সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ২৬০ কিমি, যা Saffir-Simpson scale অনুযায়ী Category 5 cyclone হিসেবে গণ্য।
-
ঘূর্ণিঝড় ও সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের কারণে প্রায় দশ সহস্রাধিক মানুষ প্রাণ হারায়।
-
শুধু বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল নয়, ভারতের চেন্নাই, তামিলনাড়ু এবং অন্যান্য কিছু রাজ্যও সিডরের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
0
Updated: 3 weeks ago