জাপানিজ শব্দ 'সুনামি' এর অর্থ কী?
A
বিশালাকৃতির ঢেউ
B
সামুদ্রিক ঢেউ
C
জলোচ্ছ্বাস
D
পোতাশ্রয়ের ঢেউ
উত্তরের বিবরণ
জাপানি শব্দ ‘সুনামি’ মূলত এমন এক প্রাকৃতিক দুর্যোগকে নির্দেশ করে যা সমুদ্রের তলদেশে ভূমিকম্পের ফলে উৎপন্ন হয়। এই ঢেউগুলো সমুদ্রের গভীর থেকে তীব্র বেগে ছুটে এসে উপকূলীয় অঞ্চলে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করতে পারে। শব্দটির উৎপত্তি ও অর্থ জাপানি ভাষার গভীর শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত, যেখানে এর প্রতিটি অংশ একটি নির্দিষ্ট অর্থ বহন করে যা পুরো ধারণাটিকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।
• সুনামি (Tsunami) শব্দটি জাপানি উৎস থেকে এসেছে। এখানে ‘tsu’ অর্থ বন্দর বা পোতাশ্রয় (harbour) এবং ‘nami’ অর্থ ঢেউ (wave)। এভাবে ‘সুনামি’ শব্দের আক্ষরিক অর্থ দাঁড়ায় ‘পোতাশ্রয়ের ঢেউ’ বা ‘বন্দরের ঢেউ’।
• সুনামির মূল কারণ হলো সমুদ্রতলের ভূমিকম্প। যখন সমুদ্রের তলদেশে প্রবল ভূমিকম্প ঘটে, তখন তা বিপুল পরিমাণ জলরাশি স্থানচ্যুত করে এবং সেই চাপের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠে বিশাল ঢেউ সৃষ্টি হয়।
• এই ঢেউ প্রথমে খোলা সমুদ্রে খুব একটা লক্ষণীয় হয় না, কারণ এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বিশাল হলেও উচ্চতা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। কিন্তু ঢেউগুলো যখন অগভীর উপকূলীয় অঞ্চলে প্রবেশ করে, তখন সাগরের গভীরতা কমে যাওয়ায় জলরাশি উপরে উঠতে থাকে এবং ঢেউগুলো বিশাল আকার ধারণ করে।
• সুনামির উৎপত্তিস্থল সবসময়ই সমুদ্রতল বা মহাসাগরের নিচে, যেখানে টেকটোনিক ফল্ট, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত বা ভূমিধসের কারণে সমুদ্রের তলদেশের আকৃতি হঠাৎ পরিবর্তিত হয়।
• ভূমিকম্পের মাত্রা যত বেশি ও গভীরতার পরিবর্তন যত হঠাৎ ঘটে, সুনামির ঢেউ ততই শক্তিশালী ও ধ্বংসাত্মক হয়।
• সুনামি কেবল ভূমিকম্প থেকেই নয়, কখনও কখনও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত বা সমুদ্রতল ধস থেকেও সৃষ্টি হতে পারে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভূমিকম্পই এর প্রধান কারণ।
• ঐতিহাসিকভাবে দেখা যায়, সুনামির লিপিবদ্ধ প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দে, যা থেকে বোঝা যায় মানুষের ইতিহাসে এটি কোনো নতুন ঘটনা নয়। প্রাচীন সভ্যতাগুলোও এই দুর্যোগের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করেছে।
• আধুনিক কালে, বিজ্ঞানীরা সুনামি শনাক্তের জন্য বিভিন্ন সিসমোগ্রাফ ও ওশান বুয়ি সিস্টেম ব্যবহার করেন, যা সমুদ্রের তলদেশের কম্পন ও জলের স্তরের অস্বাভাবিক পরিবর্তন শনাক্ত করে আগাম সতর্কবার্তা দিতে পারে।
• সুনামির প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক জীবন ও সম্পদের ক্ষতি, কৃষিজমি লবণাক্ত হওয়া, এবং দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশগত পরিবর্তন দেখা দেয়।
• জাপান, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশগুলো সুনামির ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত।
• এই দুর্যোগ মোকাবিলায় বর্তমানে অনেক দেশ প্রারম্ভিক সতর্কতা ব্যবস্থা (Early Warning System) চালু করেছে, যা সুনামির আগমন বুঝে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে সাহায্য করে।
সার্বিকভাবে বলা যায়, ‘সুনামি’ শুধুমাত্র একটি প্রাকৃতিক শব্দ নয়, বরং প্রকৃতির এক ভয়ংকর শক্তির প্রতীক, যা সমুদ্রের গভীর থেকে উঠে এসে মানুষের সভ্যতাকে মুহূর্তের মধ্যে বিপর্যস্ত করতে পারে।
0
Updated: 6 days ago
উন্নয়নশীল দেশে কোন্ ধরনের অভিগমন বেশী দেখা যায়?
Created: 2 weeks ago
A
শহর-গ্রাম
B
গ্রাম-শহর
C
শহর-শহর
D
গ্রাম-গ্রাম
উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সাধারণত গ্রাম থেকে শহরে অভিগমন বেশি দেখা যায়, যা মূলত অর্থনৈতিক ও সামাজিক কারণের ফলাফল।
-
গ্রামীণ অঞ্চলে কর্মসংস্থানের অভাব মানুষকে শহরমুখী হতে বাধ্য করে।
-
উচ্চশিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও অবকাঠামোগত সুবিধার সীমাবদ্ধতা শহরের প্রতি আকর্ষণ বাড়ায়।
-
শহরে তুলনামূলকভাবে বেশি চাকরির সুযোগ, উন্নত জীবনযাত্রা ও সামাজিক মর্যাদা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় মানুষ সেখানে স্থানান্তরিত হয়।
-
এই প্রক্রিয়াকে গ্রাম-নগর অভিবাসন (Rural-Urban Migration) বলা হয়, যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর নগরায়ণ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
0
Updated: 2 weeks ago
উত্তর গোলার্ধে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের বায়ু প্রবাহিত হয়-
Created: 3 weeks ago
A
ঘড়ির কাটার দিকে
B
ঘড়ির কাটার বিপরীতে
C
সোজা
D
কোনটাই সঠিক নয়
ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি ও বৈশিষ্ট্য আসলে একটি নির্দিষ্ট বায়ুমণ্ডলীয় প্রক্রিয়ার ফল। এটি নিম্নচাপ কেন্দ্রের কারণে গঠিত হয় এবং ক্রমশ শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহে রূপ নেয়। নিচে এর প্রধান দিকগুলো উল্লেখ করা হলো:
-
একটি অঞ্চলে low pressure zone তৈরি হলে সেখান থেকেই centripetal ঘূর্ণায়মান strong air circulation শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।
-
Northern Hemisphere-এ এ বায়ু প্রবাহ ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে (anticlockwise) চলে এবং এর গতি হয় উত্তরাভিমুখী। অপরদিকে Southern Hemisphere-এ এটি দক্ষিণাভিমুখী ও clockwise ঘুরে থাকে।
-
Tropical region-এ সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড়কে বলা হয় গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় (tropical cyclone) এবং গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের বাইরে উৎপন্ন ঘূর্ণিঝড়কে বলা হয় গ্রীষ্মমন্ডল বহির্ভূত ঘূর্ণিঝড় (extra-tropical cyclone)।
0
Updated: 3 weeks ago
উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে ট্রপোমন্ডলে বায়ুর ক্রমহ্রাসমান তাপমাত্রা হল -
Created: 6 days ago
A
৫.৫° সেলসিয়াস/কিলোমিটার
B
৬.৫° সেলসিয়াস/কিলোমিটার
C
৭.৫° সেলসিয়াস/কিলোমিটার
D
৮.৫° সেলসিয়াস/কিলোমিটার
ট্রপোমণ্ডল বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে নিকটবর্তী স্তর, যা পৃথিবীর পৃষ্ঠের সঙ্গে সংযুক্ত এবং জীবজগতের জন্য অপরিহার্য। এই স্তরেই আবহাওয়া ও জলবায়ুর সব পরিবর্তন ঘটে, যেমন—মেঘ, বৃষ্টি, ঝড়, বজ্রপাত ইত্যাদি। উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই স্তরে তাপমাত্রা ক্রমাগত কমে যায়, যার নির্দিষ্ট হারকে বলা হয় স্বাভাবিক তাপ হ্রাস হার। নিচে ট্রপোমণ্ডলের মূল বৈশিষ্ট্যগুলো পর্যায়ক্রমে উপস্থাপন করা হলো।
-
অবস্থান ও গুরুত্ব: ট্রপোমণ্ডল হলো বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন স্তর, যা পৃথিবীর পৃষ্ঠের ঠিক সংলগ্ন অবস্থায় থাকে। ভূ-পৃষ্ঠ সংলগ্ন হওয়ার কারণে এ স্তরটি প্রাণী ও উদ্ভিদের অস্তিত্বের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
-
গভীরতা বা বিস্তার: এই স্তরের গভীরতা স্থানভেদে ভিন্ন। মেরু অঞ্চলে এর উচ্চতা প্রায় ৮ কিলোমিটার, আর নিরক্ষীয় অঞ্চলে তা ১৬ থেকে ১৯ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। গড়ে এর গভীরতা প্রায় ১৫ কিলোমিটার ধরা হয়।
-
আবহাওয়া ও বায়ুপ্রবাহ: ট্রপোমণ্ডলে জলীয়বাষ্প ও ধূলিকণা অশান্ত বায়ুর সঙ্গে মিশে বিভিন্ন আবহাওয়াজনিত ঘটনা সৃষ্টি করে। এই স্তরেই মেঘ, ঝড়, বৃষ্টি ও বজ্রবিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। ফলে পৃথিবীর সমস্ত আবহাওয়া পরিবর্তন এই স্তরেই ঘটে।
-
তাপমাত্রা হ্রাসের হার: উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে তাপমাত্রা ক্রমাগত কমতে থাকে, এবং এই হ্রাসের হার প্রতি কিলোমিটারে গড়ে ৬.৫° সেলসিয়াস। এই মানকে বলা হয় স্বাভাবিক তাপ হ্রাস হার (Normal Lapse Rate বা Environmental Lapse Rate)। অর্থাৎ, যদি আমরা উপরের দিকে প্রতি কিলোমিটার উঠি, তবে তাপমাত্রা প্রায় ৬.৫° সেলসিয়াস করে কমে যায়।
-
বায়ুর ঘনত্ব: ট্রপোমণ্ডলে বায়ুর ঘনত্ব সর্বাধিক। এই ঘনত্বের কারণেই বায়ুপ্রবাহ ও জলীয়বাষ্পের কার্যকলাপ এখানে বেশি থাকে।
-
আবহাওয়া ও জলবায়ুর কেন্দ্র: আবহাওয়া ও জলবায়ুর সমস্ত পরিবর্তন এই স্তরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। ফলে এটি পৃথিবীর জলবায়ুর মূল নিয়ন্ত্রক স্তর হিসেবে কাজ করে।
-
নামকরণ: এই স্তরকে অনেক সময় ক্ষুদ্রমণ্ডল নামেও উল্লেখ করা হয়, কারণ এটি বায়ুমণ্ডলের অন্যান্য স্তরের তুলনায় তুলনামূলকভাবে ছোট ও সক্রিয়।
-
শেষ সীমা বা সীমানা: ট্রপোমণ্ডলের উপরের সীমাকে ট্রপোবিরতি (Tropopause) বলা হয়। এটি ট্রপোমণ্ডল ও তার উপরের স্তর স্তরোমণ্ডল (Stratosphere)-এর মধ্যবর্তী বিভাজক অঞ্চল হিসেবে কাজ করে।
-
তাপমাত্রা পরিবর্তনের ভূমিকা: তাপমাত্রা হ্রাসের এই প্রক্রিয়া পৃথিবীর বায়ুচাপ, বায়ুপ্রবাহ ও মেঘগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি প্রাকৃতিকভাবে তাপের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং জলবায়ুর স্থিতিশীলতা বজায় রাখে।
সর্বোপরি, ট্রপোমণ্ডল হলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে প্রাণবন্ত ও গতিশীল অংশ, যেখানে প্রতিনিয়ত তাপমাত্রা, বায়ুচাপ ও আর্দ্রতার পরিবর্তনের ফলে নানা আবহাওয়াগত ঘটনা ঘটে। তাই এটি পৃথিবীর জীবনধারার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর।
0
Updated: 6 days ago