বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ডিজাইনার কে?
A
শিবনারায়ন দাশ
B
কামরুল হাসান
C
কায়কোবাদ
D
জয়নুল আবেদিন
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা আমাদের স্বাধীনতা, গৌরব ও জাতীয় পরিচয়ের প্রতীক। এটি কেবল একটি কাপড় নয়, বরং একটি জাতির আত্মত্যাগ, ইতিহাস ও স্বপ্নের প্রতিফলন। জাতীয় পতাকার বর্তমান রূপটি ডিজাইন করেছেন প্রখ্যাত শিল্পী কামরুল হাসান, যিনি এর নকশাকে আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী উপস্থাপন করেছিলেন। জাতীয় পতাকার গঠন ও অর্থের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে দেওয়া হলো—
-
ডিজাইনার: বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার চূড়ান্ত রূপটি ডিজাইন করেন কামরুল হাসান।
-
প্রাথমিক রূপ: প্রথমে পতাকাটি ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় উত্তোলিত হয়। সেই পতাকায় একটি সবুজ পটভূমির উপর লাল বৃত্তের মধ্যে বাংলাদেশের মানচিত্র ছিল।
-
প্রাথমিক ডিজাইনার: প্রথম পতাকাটি ডিজাইন করেছিলেন শিবনারায়ন দাশ, যার সহায়তায় আবদুল হান্নান, শিবলাল দাশ, এবং অন্যান্য ছাত্রনেতারা অংশগ্রহণ করেছিলেন।
-
পরিমার্জন প্রক্রিয়া: ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার সিদ্ধান্ত নেন পতাকাটিকে একটি আন্তর্জাতিক মানে রূপ দিতে হবে। তখন পটুয়া কামরুল হাসানকে মানচিত্র বাদ দিয়ে পতাকার রঙ, মাপ, অনুপাত ও অর্থ নির্ধারণের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
-
সরকারি অনুমোদন: কামরুল হাসানের ডিজাইনকৃত বর্তমান পতাকাটি ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি সরকারিভাবে গৃহীত হয়।
-
পতাকার গঠন:
-
পটভূমি: সবুজ আয়তক্ষেত্র — বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, উর্বর ভূমি ও তারুণ্যের প্রতীক।
-
লাল বৃত্ত: উদীয়মান সূর্য এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারীদের রক্তের প্রতীক।
-
অনুপাত: পতাকার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত ১০:৬। লাল বৃত্তের ব্যাস পতাকার দৈর্ঘ্যের এক-পঞ্চমাংশ।
-
-
অর্থ ও প্রতীকী মানে:
-
সবুজ রং জাতির জীবনীশক্তি, সমৃদ্ধি ও শান্তির আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে।
-
লাল রং আমাদের স্বাধীনতার জন্য রক্তদানকারী বীর শহীদদের স্মৃতি ও দেশের নতুন সূর্যের প্রতীক।
-
পতাকার এই দুই রঙ একসঙ্গে মিলিত হয়ে প্রকাশ করে বাংলাদেশের আশা, সংগ্রাম ও স্বাধীনতার চেতনা।
-
-
উত্তোলনের নিয়ম:
জাতীয় দিবসগুলোতে যেমন স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস ইত্যাদিতে সরকারি, আধা-সরকারি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পতাকা উত্তোলন করা হয়। পতাকা সবসময় পরিষ্কার, সমানুপাতিক এবং সম্মানের সঙ্গে ব্যবহৃত হতে হবে। -
আইনগত স্বীকৃতি:
জাতীয় পতাকা ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে “জাতীয় পতাকা সংক্রান্ত বিধিমালা, ১৯৭২”-এ। এতে পতাকার মাপ, রঙের মান, উত্তোলন পদ্ধতি ও নিষিদ্ধ ব্যবহার সম্পর্কিত নিয়ম নির্ধারিত আছে।
সংক্ষেপে, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা কেবল একটি জাতীয় প্রতীক নয়, এটি আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসের গর্বিত স্মারক। শিল্পী কামরুল হাসান তাঁর সৃজনশীল দক্ষতা ও দেশপ্রেম দিয়ে এই পতাকাকে এমন এক পরিচয়ে রূপ দিয়েছেন, যা আজ বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা ও স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে উড়ছে।
0
Updated: 6 days ago
কোন তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা সরকারিভাবে গৃহীত হয়?
Created: 1 month ago
A
১৯৭২ সালের ১২ এপ্রিল
B
১৯৭২ সালের ১৮ এপ্রিল
C
১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি
D
১৯৭২ সালের ৬ জুন
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে ছাত্রসমাজের নেতৃত্বে সূচিত হয়, যা পরবর্তীতে স্বাধীন রাষ্ট্রের পরিচয় বহন করে। এই পতাকা স্বাধীনতার চেতনা ও আত্মত্যাগের প্রতীক হয়ে ওঠে।
-
১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এদিন কলাভবনের সামনে ছাত্রসমাজকে সঙ্গে নিয়ে পতাকা উত্তোলন করেন তৎকালীন ডাকসুর ভিপি আ স ম আব্দুর রব।
-
এই পতাকা সর্বপ্রথম তৈরি করা হয়েছিল ১৯৭০ সালের ৬ জুন।
-
পতাকা তৈরি করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ১১৬ নম্বর কক্ষে।
-
জাতীয় পতাকা তৈরির কাজে যুক্ত ছিলেন ছাত্রনেতা কাজী আরেফ আহমেদ, শিব নারায়ণ দাসসহ মোট ২২ জন ছাত্রনেতা।
-
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা প্রথমবার বিদেশে উত্তোলন করা হয় ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল, ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে।
-
স্বাধীনতার পর পতাকা থেকে বাংলার মানচিত্র অপসারণ করা হয় এবং এর মাপ ও রঙ নির্ধারণ করে পরিমার্জন করা হয়।
-
সবুজ আয়তক্ষেত্রের মাঝখানে লাল বৃত্তবিশিষ্ট পতাকা ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি সরকারিভাবে গৃহীত হয়, যা আজকের বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।
0
Updated: 1 month ago
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ডিজাইনার কে?
Created: 5 months ago
A
জয়নুল আবেদীন
B
কামরুল হাসান
C
হাশেম খান
D
হামিদুর রহমান
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার চূড়ান্ত নকশাকার ছিলেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী কামরুল হাসান
কামরুল হাসান
-
তিনি একজন খ্যাতনামা চিত্রশিল্পী ছিলেন।
-
তাঁর পুরো নাম ছিল আবু শরাফ মোহাম্মদ কামরুল হাসান।
-
১৯২১ সালের ২ ডিসেম্বর তিনি কলকাতায়, তাঁর পিতার কর্মস্থলে জন্মগ্রহণ করেন।
-
তিনি ১৯৬৯-৭০ সালের স্বাধিকার ও অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং পরবর্তীতে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
-
‘পটুয়া কামরুল হাসান’ নামেই তিনি জনসাধারণের মাঝে বেশি পরিচিত ছিলেন।
-
১৯৬০ সালে তিনি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের নকশাকেন্দ্রে প্রধান নকশাবিদ হিসেবে নিযুক্ত হন।
-
তাঁর চিত্রকর্মে প্রধান উপাদান হিসেবে দেখা যায় – নারী-পুরুষ, বিভিন্ন প্রাণী (বিশেষত গরু ও শৃগাল), সাপ ও প্রকৃতি।
-
চিত্রকলায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি বিভিন্ন সময়ে একাধিক পুরস্কার ও সম্মান লাভ করেন।
-
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে: প্রেসিডেন্ট পুরস্কার (১৯৬৫), কুমিল্লা ফাউন্ডেশন স্বর্ণপদক (১৯৭৭), স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (১৯৭৯), চারুশিল্পী সংসদের সম্মাননা (১৯৮৪), এবং বাংলা একাডেমির ফেলোশিপ (১৯৮৫)।
• শিল্পকর্ম ও অবদান
-
কামরুল হাসান ছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতীক এবং জাতীয় পতাকার নকশাকার।
-
তাঁর বিখ্যাত চিত্রকর্ম ‘তিন কন্যা’ ও ‘নাইওর’ অবলম্বনে যুগোস্লাভ সরকার (১৯৮৫) এবং বাংলাদেশ সরকার (১৯৮৬) ডাকটিকিট প্রকাশ করে।
-
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিখ্যাত “বলাকা” লোগোও তাঁর নকশা করা।
-
তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্মের মধ্যে রয়েছে – ‘রায়বেশে নৃত্য’, ‘এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে’, এবং ‘দেশ আজ বিশ্ববেহায়ার খপ্পরে’।
• অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য
-
দুর্ভিক্ষচিত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য খ্যাতি অর্জন করেন আরেক বিখ্যাত চিত্রশিল্পী জয়নুল আবেদীন।
-
বাংলাদেশের সংবিধান গ্রন্থের অলংকরণ ও সজ্জার মূল তত্ত্বাবধানে ছিলেন জয়নুল আবেদীন, আর অঙ্গসজ্জার কাজ করেন হাশেম খান।
-
বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ হামিদুর রহমান (১৯৪৫–১৯৭১) ছিলেন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সিপাহি, যিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন।
তথ্যসূত্র
i) বাংলাপিডিয়া
ii) বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা : নবম-দশম শ্রেণি
iii) বণিক বার্তা, ২১ ডিসেম্বর ২০২২
0
Updated: 5 months ago
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার দৈর্ঘ্য-প্রস্থের অনুপাত কোনটি?
Created: 2 months ago
A
৮ : ৫
B
১০ : ৬
C
১১ : ৮
D
১১ : ৭
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা
-
নকশা ও রং: বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার প্রধান রং গাঢ় সবুজ এবং সবুজের মাঝখানে একটি লাল বৃত্ত। পতাকার আকার অনুপাত ১০:৬ (৫:৩)। লাল বৃত্তের ব্যাসার্ধ পতাকার মোট দৈর্ঘ্যের এক-পঞ্চমাংশ। প্রথমে পতাকার কেন্দ্রস্থলে বাংলাদেশের মানচিত্রও ছিল। এই চূড়ান্ত রূপ সরকারিভাবে গৃহীত হয় ১৭ জানুয়ারি ১৯৭২।
-
ঐতিহাসিক সূত্রপাত:
-
১৯৭১ সালের ২ মার্চ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারা বটতলায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা প্রথম উত্তোলন করেন।
-
এই পতাকার আদলে মুজিবনগর সরকার জাতীয় পতাকার নকশা নির্ধারণ করে।
-
বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার ছিলেন শিবনারায়ণ দাস, যিনি ছাত্রনেতা ছিলেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকার নকশা স্বাভাবিক হাতেখড়ি দিয়ে করেছেন।
-
১৯৭০ সালের ৬ জুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের ১১৬ নং কক্ষে রাত ১১টার পর তিনি পুরো পতাকার নকশা সম্পন্ন করেন।
-
চূড়ান্ত নকশা সম্পন্ন করেন কামরুল হাসান।
-
-
উদ্বোধন ও উত্তোলন:
-
২৩ মার্চ ১৯৭১, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের বাসভবনে পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করেন। একই দিনে সারাদেশে পতাকা উত্তোলিত হয়।
-
বিদেশে প্রথম উত্তোলন হয় কলকাতায় পাকিস্তানের ডেপুটি হাইকমিশনারের কার্যালয়ে।
-
-
আইনি ভিত্তি ও দিবস:
-
বাংলাদেশের সংবিধানের ৪ নং অনুচ্ছেদে জাতীয় পতাকার কথা বলা হয়েছে।
-
প্রতিটি বছর ২ মার্চ উদযাপিত হয় জাতীয় পতাকা দিবস।
-
উৎসঃস্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস
0
Updated: 2 months ago