কোন দুটি প্লেটের সংযোগস্থল বরাবর মাউন্ট এভারেস্ট অবস্থিত?
A
ইন্ডিয়ান ও ইউরেশিয়ান
B
ইন্ডিয়ান ও বার্মিজ
C
ইন্ডিয়ান ও আফ্রিকান
D
বার্মিজ ও ইউরেশিয়ান
উত্তরের বিবরণ
মাউন্ট এভারেস্ট পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ভূতাত্ত্বিক বিস্ময়ের এক অনন্য নিদর্শন। এটি হিমালয় পর্বতমালার মধ্যভাগে অবস্থিত এবং মূলত ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলেই এর সৃষ্টি। লক্ষ লক্ষ বছর আগে এই দুটি প্লেটের ধাক্কায় ভূমি উপরে উঠে গিয়ে ধীরে ধীরে গঠন করে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত—মাউন্ট এভারেস্ট। এর অবস্থান, উচ্চতা ও ইতিহাস একে শুধু ভূগোলের নয়, মানব অভিযানের ইতিহাসেও এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে পরিণত করেছে।
মাউন্ট এভারেস্ট পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত, যার উচ্চতা ৮,৮৪৮.৮৬ মিটার (২৯,০৩২ ফুট)।
-
এটি দক্ষিণ এশিয়ার গ্রেট হিমালয় পর্বতমালায় অবস্থিত, যা চীন ও নেপালের সীমান্তে বিস্তৃত।
-
এই পর্বত মূলত তিব্বত ও নেপালের সীমান্তে অবস্থিত অঞ্চলে গঠিত হয়েছে।
-
এর সৃষ্টি হয়েছিল ইন্ডিয়ান প্লেট ও ইউরেশিয়ান প্লেটের সংঘর্ষের ফলে, যা কোটি বছর আগে ঘটেছিল এবং সেই সংঘর্ষের ভূতাত্ত্বিক চাপে ভূত্বক উঁচু হয়ে যায়।
-
এটি হিমালয়ের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এবং সেখান থেকেই সমগ্র অঞ্চলের অনেক বিখ্যাত শৃঙ্গের উৎপত্তি।
-
মাউন্ট এভারেস্টের শীর্ষে বাতাসের গতি প্রবল এবং তাপমাত্রা অতি নিম্ন, যা একে আরোহণের জন্য অত্যন্ত কঠিন ও বিপজ্জনক করে তুলেছে।
বাংলাদেশি অভিযাত্রীদের এভারেস্ট জয়ঃ
-
এখন পর্যন্ত পাঁচজন বাংলাদেশি পর্বতারোহী সফলভাবে মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছেছেন।
-
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে মুসা ইব্রাহিম ২৩ মে ২০১০ সালে এই কৃতিত্ব অর্জন করেন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় যোগ করে।
-
নারীদের মধ্যে প্রথম এভারেস্টজয়ী নিশাত মজুমদার, যিনি বাংলাদেশের নারী সমাজের জন্য এক অনুপ্রেরণার প্রতীক।
-
অন্যান্য বাংলাদেশি এভারেস্টজয়ীরা হলেন এম এ মুহিত, ওয়াসফিয়া নাজরীন, এবং মো. খালেদ হোসাইন।
-
তাঁদের প্রত্যেকের অভিযাত্রা বাংলাদেশের পতাকাকে বিশ্বের সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছে দিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে দেশের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে।
অতিরিক্ত প্রাসঙ্গিক তথ্যঃ
-
এভারেস্টের নামকরণ করা হয়েছে স্যার জর্জ এভারেস্টের নামে, যিনি ব্রিটিশ সার্ভেয়ার জেনারেল ছিলেন।
-
নেপালি ভাষায় একে “সাগরমাথা” এবং তিব্বতি ভাষায় বলা হয় “চোমোলুংমা”, যার অর্থ যথাক্রমে “আকাশের দেবী” ও “বিশ্বের মা”।
-
প্রতি বছর শত শত পর্বতারোহী এভারেস্ট জয় করার চেষ্টা করেন, তবে প্রচণ্ড ঠান্ডা, কম অক্সিজেন এবং তীব্র ঝুঁকির কারণে অনেকেই ব্যর্থ হন বা প্রাণ হারান।
-
এভারেস্ট শুধু একটি পর্বত নয়, এটি মানব সহনশীলতা, সাহস ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
0
Updated: 6 days ago