স্বরসঙ্গতি

সংজ্ঞা:

• একটি স্বরধ্বনির প্রভাবে শব্দে অন্য স্বরের পরিবর্তন ঘটলে তাকে স্বরসঙ্গতি বলা হয়।

• উদাহরণ: দেশি → দিশি, বিলাতি → বিলিতি, মুলা → মুলো।

প্রকারভেদ:

1. প্রগত স্বরসঙ্গতি:

   • আদিস্বর অনুযায়ী অন্ত্যস্বর পরিবর্তিত হলে।

   • উদাহরণ: মুলা → মুলো, শিকা → শিকে, তুলা → তুলো।

2. পরাগত স্বরসঙ্গতি:

   • অন্ত্যস্বরের কারণে আদ্যস্বর পরিবর্তিত হলে।

   • উদাহরণ: আখো → আখুয়া → এখো, দেশি → দিশি।

3. মধ্যগত স্বরসঙ্গতি:

   • আদ্যস্বর ও অন্ত্যস্বর অনুযায়ী মধ্যস্বর পরিবর্তিত হলে।

   • উদাহরণ: বিলাতি → বিলিতি, জিলাপি → জিলিপি।

4. অন্যোন্য স্বরসঙ্গতি:

   • আদ্য ও অন্ত্য দুই স্বরই পরস্পর প্রভাবিত হলে।

   • উদাহরণ: মোজা → মুজো।

চলিত বাংলায় স্বরসঙ্গতি:

• গিলা → গেলা, মিলামিশা → মেলামেশা, মিঠা → মিঠে, ইচ্ছা → ইচ্ছে।

• বিশেষ ক্ষেত্রে:

  • পূর্বস্বর উ-কার হলে পরবর্তী স্বর ও-কার হয়: মুড়া → মুড়ো, চুলা → চুলো।

  • বিশেষ নিয়মে: উড়ুনি → উড়নি, এখনি → এখুনি।

উৎস: বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, নবম–দশম শ্রেণি (২০১৯ সংস্করণ)

দ্বিস্বরধ্বনি হলো সেই ধ্বনি যা পূর্ণ স্বরধ্বনি ও অর্ধস্বরধ্বনি একত্রে উচ্চারিত হয়ে গঠিত হয়।

উদাহরণ:

• লাউ শব্দে [আ] পূর্ণ স্বরধ্বনি এবং [উ্‌] অর্ধস্বরধ্বনি মিলেই [আউ্‌] দ্বিস্বরধ্বনি তৈরি হয়েছে।

দ্বিস্বরধ্বনির কিছু উদাহরণ:

• [আই্‌]: তাই, নাই

• [এই্‌]: সেই, নেই

• [আও্‌]: যাও, দাও

• [আএ্‌]: খায়, যায়

বাংলা বর্ণমালায় দুটি দ্বিস্বরধ্বনির জন্য আলাদা বর্ণ নির্ধারিত আছে:

• ঐ: এর মধ্যে দুটি ধ্বনি আছে — একটি পূর্ণ স্বরধ্বনি [ও] এবং একটি অর্ধস্বরধ্বনি [ই]

• ঔ: এর মধ্যে দুটি ধ্বনি আছে — একটি পূর্ণ স্বরধ্বনি [ও] এবং একটি অর্ধস্বরধ্বনি [উ্‌]

যেসব ধ্বনি উচ্চারণ করতে হলে জিভের ডগা উপরের পাটির দাঁতের গোড়ার (দন্তমূলের) সঙ্গে লাগে, সেগুলোকে দন্তমূলীয় ধ্বনি বলে।

উদাহরণ: ন, র, ল, স

উৎস: বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি, নবম-দশম শ্রেণি (২০২১-সংস্করণ)