বাংলাদেশ কত সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে?
A
১৯৭২
B
১৯৭৩
C
১৯৭৪
D
১৯৭৫
উত্তরের বিবরণ
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা বা ILO (International Labour Organization) হলো একটি বৈশ্বিক সংস্থা যা শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা, কর্মপরিবেশের মানোন্নয়ন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে। এটি শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীর কল্যাণে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নির্ধারণ করে এবং বিভিন্ন দেশের শ্রমনীতি ও শ্রম আইন উন্নত করতে সহযোগিতা প্রদান করে।
-
ILO প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৯ সালে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী ভার্সাই চুক্তির ফলশ্রুতিতে। এর প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা এবং শ্রমক্ষেত্রে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করা।
-
১৯৪৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর ILO জাতিসংঘের প্রথম বিশেষায়িত সংস্থা (Specialized Agency) হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
-
সংস্থার সদরদপ্তর অবস্থিত সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে, যেখানে এর মূল কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
-
বর্তমানে ILO-এর সদস্যদেশের সংখ্যা ১৮৭টি, যা প্রায় বিশ্বের প্রায় সব দেশের প্রতিনিধিত্ব করে।
বাংলাদেশ ও ILO:
বাংলাদেশ স্বাধীনতার পরপরই আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়। ১৯৭২ সালের ২২ জুন বাংলাদেশ ILO-এর সদস্যপদ লাভ করে, যা আন্তর্জাতিক শ্রম অঙ্গনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের এক গুরুত্বপূর্ণ সূচনা। সদস্যপদ অর্জনের পর বাংলাদেশ শ্রমনীতি প্রণয়ন, শ্রমিক অধিকার সুরক্ষা, এবং ন্যায্য মজুরি নিশ্চিতে ILO-এর সহযোগিতায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
ILO-এর নেতৃত্ব ও স্বীকৃতি:
ILO-এর বর্তমান ১১তম মহাপরিচালক হলেন গিলবার্ট এফ. হাউংবো, যিনি অক্টোবর ২০২২ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সংস্থাটি বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অবদানের জন্য ১৯৬৯ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করে।
সব মিলিয়ে, ILO শুধু একটি শ্রম বিষয়ক সংস্থা নয়, বরং এটি বিশ্বব্যাপী “ন্যায়সঙ্গত শ্রমনীতি ও মানবিক কর্মপরিবেশ প্রতিষ্ঠার প্রতীক” হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশসহ সদস্য দেশগুলো শ্রমিকদের উন্নয়ন ও সুরক্ষায় ILO-এর সহযোগিতার মাধ্যমে টেকসই ও ন্যায্য কর্মপরিবেশ গড়ে তুলতে কাজ করছে।
0
Updated: 1 week ago