ইন্টারনেট জগতে hyper-linked document গুলোর কালেকশানকে কী বলে?

HTML

WWW

DWS

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (World Wide Web - WWW)

বিসিএস

উত্তরের বিবরণ

WWW (World Wide Web) হলো ইন্টারনেটের এমন একটি অংশ, যেখানে hyper-linked document বা ওয়েব পৃষ্ঠাসমূহ একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত থেকে তথ্য বিনিময় করে। এটি একটি বিশাল তথ্যভাণ্ডার, যেখানে পাঠ্য, ছবি, ভিডিও, অডিও, গ্রাফিক্সসহ নানা ধরনের ডেটা হাইপারলিংকের মাধ্যমে পরস্পর যুক্ত থাকে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই পৃষ্ঠাগুলোতে প্রবেশ করা যায় এবং এগুলো ওয়েব ব্রাউজারের সাহায্যে দেখা সম্ভব হয়।

WWW-এর উৎপত্তি ও ইতিহাস:

WWW-এর পূর্ণরূপ হলো World Wide Web।
এটি মূলত একটি হাইপারটেক্সট-ভিত্তিক ডিস্ট্রিবিউটেড ইনফরমেশন সিস্টেম, যা ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন সার্ভারের মাধ্যমে সংযুক্ত তথ্য পেতে সাহায্য করে।
WWW উদ্ভাবন করেন স্যার টিম বার্নার্স-লি (Tim Berners-Lee), যিনি “WWW-এর জনক” নামে পরিচিত।
তিনি ১৯৮৯ সালে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত ইউরোপিয়ান পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র (CERN – The European Center for Nuclear Research)-এ কাজ করার সময় এই ধারণাটি তৈরি করেন।
WWW-এর মূল লক্ষ্য ছিল গবেষকদের মধ্যে দ্রুত ও সহজভাবে তথ্য বিনিময়ের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা।
১৯৯৩ সাল নাগাদ এর ব্যাপক প্রচলন শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে এটি ইন্টারনেট ব্যবহারের মূল মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

WWW-এর কার্যপ্রণালী ও বৈশিষ্ট্য:

WWW হলো একটি বৃহৎ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা, যা অসংখ্য ওয়েব সার্ভার ও ক্লায়েন্ট কম্পিউটারকে সংযুক্ত করে রাখে।
প্রতিটি ওয়েব পৃষ্ঠা HyperText Markup Language (HTML)-এ তৈরি হয় এবং এর মধ্যে থাকা হাইপারলিংক ব্যবহার করে একটি পৃষ্ঠা থেকে আরেকটিতে সহজে প্রবেশ করা যায়।
ওয়েব সার্ভারে সংরক্ষিত এই ডকুমেন্টগুলোতে প্রবেশ করতে ব্যবহৃত হয় ওয়েব ব্রাউজার (যেমন Google Chrome, Safari, Firefox, Edge)।
ওয়েব পৃষ্ঠা শনাক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হয় Uniform Resource Locator (URL), যা প্রতিটি ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট ঠিকানা নির্দেশ করে।
WWW হলো ইন্টারনেটের ওপর ভিত্তি করে তৈরি একটি সেবা, তবে ইন্টারনেট ও ওয়েব এক নয়। ইন্টারনেট হলো বৈশ্বিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক, আর WWW হলো তার ওপর নির্মিত তথ্য পরিবেশন ব্যবস্থা।

WWW-এর গুরুত্ব:

এটি পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে তথ্য প্রাপ্তিকে সহজ করেছে।
শিক্ষা, গবেষণা, ব্যবসা, বিনোদনসহ প্রতিটি খাতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে WWW অপরিহার্য ভূমিকা রাখছে।
এর মাধ্যমে অনলাইন যোগাযোগ, ই-লার্নিং, ই-কমার্স, ও ক্লাউড সেবা সম্ভব হয়েছে।

সব মিলিয়ে, WWW হলো ইন্টারনেটের প্রাণকেন্দ্র, যা হাইপারলিংকযুক্ত তথ্যের বিশাল সংগ্রহশালা হিসেবে মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রকে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর করে তুলেছে।

১. মৌলিক কম্পিউটার শিক্ষা, বিবিএ প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। ২. WWW Foundation। ৩. University of Washington। ৪. TechTarget।