ধাতব কার্বোনেটের সাথে এসিডের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন হয়-
A
লবণ
B
পানি
C
কার্বন ডাইঅক্সাইড
D
সবগুলো
উত্তরের বিবরণ
ধাতু এবং এসিডের পারস্পরিক বিক্রিয়া রসায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যা লবণ, পানি এবং কখনো গ্যাস উৎপন্নের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। এই বিক্রিয়াগুলো থেকে এসিডের ধর্ম, ধাতুর সক্রিয়তা ও রাসায়নিক আচরণ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। ধাতু, ধাতব অক্সাইড, ধাতব কার্বোনেট ও ধাতব হাইড্রোক্সাইড—সবগুলো এসিডের সঙ্গে নির্দিষ্ট নিয়মে বিক্রিয়া করে ভিন্ন ভিন্ন পণ্য উৎপন্ন করে।
সক্রিয় ধাতুর সাথে এসিডের বিক্রিয়া:
এসিডের অণুতে প্রতিস্থাপনযোগ্য হাইড্রোজেন থাকে, যা সক্রিয় ধাতুর সঙ্গে বিক্রিয়া করে ধাতব আয়ন দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। এই বিক্রিয়ায় লবণ ও হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়। উদাহরণস্বরূপ,
Zn + 2HCl → ZnCl₂ + H₂
এখানে দেখা যায়, জিঙ্ক (Zn) এসিডের হাইড্রোজেনকে প্রতিস্থাপন করে জিঙ্ক ক্লোরাইড তৈরি করছে এবং হাইড্রোজেন গ্যাস নির্গত হচ্ছে।
ধাতব কার্বোনেট ও হাইড্রোজেন কার্বোনেটের সাথে এসিডের বিক্রিয়া:
এসিড ধাতব কার্বোনেট (M₂CO₃) বা ধাতব হাইড্রোজেন কার্বোনেট (MHCO₃)-এর সাথে বিক্রিয়া করে লবণ, পানি ও কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO₂) উৎপন্ন করে। যেমন—
Na₂CO₃(s) + 2HCl(aq) → 2NaCl(aq) + H₂O(l) + CO₂(g)
NaHCO₃(s) + HCl(aq) → NaCl(aq) + H₂O(l) + CO₂(g)
এই বিক্রিয়ায় দেখা যায়, এসিডের উপস্থিতিতে ধাতব কার্বোনেট থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হয়, যা বুদবুদের আকারে দেখা যায়।
ধাতুর অক্সাইডের সাথে এসিডের বিক্রিয়া:
ধাতব অক্সাইড সাধারণত ক্ষার ধর্মী হয়। এসিডের সঙ্গে এই অক্সাইড বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে। এই বিক্রিয়া এক ধরনের নিরপেক্ষীকরণ বিক্রিয়া। যেমন—
CuO + 2HCl → CuCl₂ + H₂O
এখানে কপার অক্সাইড ও হাইড্রোক্লোরিক এসিড বিক্রিয়া করে কপার ক্লোরাইড ও পানি তৈরি করছে।
ধাতুর হাইড্রোক্সাইডের সাথে এসিডের বিক্রিয়া:
ধাতব হাইড্রোক্সাইডও ক্ষারধর্মী হওয়ায় এসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি তৈরি করে। উদাহরণস্বরূপ—
NaOH + HCl → NaCl + H₂O
এটি একটি নিরপেক্ষীকরণ বিক্রিয়া, যেখানে এসিড ও ক্ষার পরস্পরকে নিরপেক্ষ করে।
সক্রিয়তার ক্রম ও বিক্রিয়ার প্রকৃতি:
ধাতুগুলো এসিডের সঙ্গে ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া করে, যা তাদের সক্রিয়তার সিরিজ (Reactivity Series) অনুসারে নির্ধারিত হয়। তড়িৎ ধনাত্মক ধাতুগুলো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সহজে জারিত (oxidized) হয়ে ধনাত্মক আয়নে পরিণত হয়, যেমন সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম বা জিঙ্ক। আবার তড়িৎ ঋণাত্মক বা নিষ্ক্রিয় মৌল যেমন সোনা বা প্লাটিনাম এসিডের সঙ্গে সহজে প্রতিক্রিয়া করে না।
সবশেষে বলা যায়, ধাতব কার্বোনেটের সাথে এসিডের বিক্রিয়ায় লবণ, পানি ও কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয়, যা একটি পরিচিত রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া এবং এটি ধাতুর সক্রিয়তা ও এসিডের ধর্ম বুঝতে সহায়ক।
0
Updated: 1 week ago
কোন পদার্থের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই আধান এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে প্রবাহিত হতে পারে?
Created: 3 weeks ago
A
তামা
B
কাচ
C
প্লাস্টিক
D
জার্মেনিয়াম
আধান বা তড়িৎ প্রবাহের ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে পদার্থকে প্রধানত তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়—পরিবাহী, অর্ধপরিবাহী এবং অপরিবাহী। এই পদার্থগুলোর নিজস্ব ভৌত ও বৈদ্যুতিক বৈশিষ্ট্যের জন্যই তারা আধুনিক ইলেকট্রনিক্স এবং তড়িৎ প্রকৌশলে ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা পালন করে।
পরিবাহী পদার্থ (Conductor)
পরিবাহী পদার্থ হলো সেই সকল উপাদান, যার মধ্য দিয়ে আধান বা তড়িৎ খুব সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রবাহিত হতে পারে। এটি মূলত মুক্ত ইলেকট্রনের প্রাচুর্যের কারণে ঘটে।
সংজ্ঞা: যে পদার্থের মধ্য দিয়ে সহজেই বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়।
উদাহরণ: রূপা (সর্বোত্তম পরিবাহী), তামা, লোহা, এবং সকল ধাতব পদার্থ।
মুক্ত ইলেকট্রন: এই পদার্থগুলোতে বিপুল সংখ্যক মুক্ত ইলেকট্রন থাকে, যা তড়িৎ প্রবাহে সাহায্য করে।
তাপমাত্রার প্রভাব: পরিবাহীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে এর তড়িৎ প্রবাহের ক্ষমতা বা পরিবাহিতা হ্রাস পায়, অর্থাৎ রোধ বৃদ্ধি পায়।
অর্ধপরিবাহী পদার্থ (Semiconductor)
অর্ধপরিবাহী পদার্থগুলো হলো পরিবাহী এবং অপরিবাহী পদার্থের বৈশিষ্ট্যের মাঝামাঝি অবস্থানে থাকা বিশেষ উপাদান। আধুনিক ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির (যেমন: কম্পিউটার, মোবাইল) মূল ভিত্তি হলো এই অর্ধপরিবাহী।
সংজ্ঞা: যে পদার্থের তড়িৎ পরিবহণ ক্ষমতা পরিবাহীর চেয়ে অনেক কম, কিন্তু অপরিবাহীর চেয়ে অনেক বেশি।
উদাহরণ: জার্মেনিয়াম (Ge) এবং সিলিকন (Si)।
পরিবাহিতার বৈশিষ্ট্য: এদের তড়িৎ পরিবহন ক্ষমতাকে তাপমাত্রা বা অন্যান্য উপাদানের ডোপিং (Doping) এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
তাপমাত্রার প্রভাব: অর্ধপরিবাহীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে এর তড়িৎ প্রবাহের ক্ষমতা বা পরিবাহিতা বৃদ্ধি পায়, অর্থাৎ রোধ হ্রাস পায়। এটি পরিবাহীর বৈশিষ্ট্যের সম্পূর্ণ বিপরীত।
অপরিবাহী পদার্থ (Insulator)
অপরিবাহী পদার্থকে অনেক সময় অন্তরক বা বিদ্যুৎ অপরিবাহী পদার্থও বলা হয়। এই পদার্থগুলো আধান প্রবাহে প্রায় সম্পূর্ণ বাধা দেয়।
সংজ্ঞা: যে পদার্থের মধ্য দিয়ে আধান বা তড়িৎ কোনোভাবেই প্রবাহিত হতে পারে না।
উদাহরণ: কাচ, কাঠ, প্লাস্টিক, রাবার, এবং প্রায় সকল অধাতব পদার্থ।
মুক্ত ইলেকট্রন: অপরিবাহী পদার্থে তড়িৎ পরিবহণের জন্য কোনো মুক্ত ইলেকট্রন থাকে না, তাই এটি বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে না।
0
Updated: 3 weeks ago