জেমস্ ওয়েব টেলিস্কোপ কোন ধরনের রেডিয়েশন ব্যবহার করে?
A
Ultra-violet
B
Infrared
C
Visible
D
X-ray
উত্তরের বিবরণ
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ আধুনিক বিজ্ঞানের এক অনন্য অর্জন, যা মহাবিশ্বের অজানা রহস্য উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এটি এমন এক শক্তিশালী দূরবীক্ষণ যন্ত্র, যা ইনফ্রারেড রেডিয়েশন বা অবলোহিত বিকিরণ ব্যবহার করে মহাকাশের দূরবর্তী বস্তুর ছবি সংগ্রহ করে। এই প্রযুক্তি দৃশ্যমান আলোর বাইরে থাকা এমন অনেক বস্তু পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম, যা সাধারণ টেলিস্কোপে দেখা সম্ভব নয়।
-
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও বৃহত্তম দূরবীক্ষণ যন্ত্রগুলোর একটি। এটি মহাবিশ্বের প্রাচীনতম ছায়াপথ, নক্ষত্র ও গ্রহের গঠন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে।
-
নাসা, ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ESA) এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি (CSA)-এর যৌথ উদ্যোগে এই আন্তর্জাতিক মহাকাশ অভিযান প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়।
-
টেলিস্কোপটি ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয় এবং বর্তমানে এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১৬ লাখ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
-
এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো মহাবিশ্বের উৎপত্তি, গ্যালাক্সি গঠন, নক্ষত্রের বিকাশ এবং সম্ভাব্য জীবনধারী গ্রহ সম্পর্কে আরও নির্ভুল তথ্য সংগ্রহ করা।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের সাফল্য ও পর্যবেক্ষণ:
-
২০২২ সালের ১২ই জুলাই প্রকাশিত হয় এর প্রথম পূর্ণাঙ্গ রঙিন ছবি, যা মানবজাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বিস্তারিত অবলোহিত চিত্র হিসেবে স্বীকৃত।
-
এই ছবিতে এমন ছায়াপথ দেখা যায়, যেখান থেকে পৃথিবীতে আলো পৌঁছাতে বিলিয়ন বছর সময় লাগে।
-
টেলিস্কোপটি সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতির অসাধারণ কিছু ছবিও তুলেছে, যেখানে দেখা যায় বৃহস্পতির অরোরা বা বর্ণচ্ছটা, দানবীয় ঝড়, উপগ্রহ ও বলয়।
-
এটি মহাকাশের বিখ্যাত ক্যারিনা নেবুলা নামক নক্ষত্রপুঞ্জ ও নিহারীকারও ছবি ধারণ করেছে। ক্যারিনা নেবুলা মহাকাশের অন্যতম উজ্জ্বল ও বিশাল নিহারীকা, যা পৃথিবী থেকে প্রায় ৭,৬০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত।
ইনফ্রারেড প্রযুক্তির গুরুত্ব:
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এর ইনফ্রারেড বিকিরণ ব্যবহারের ক্ষমতা, যা তাকে ধূলিকণা বা গ্যাসে আচ্ছাদিত অঞ্চলের মধ্যেও নক্ষত্র জন্মের প্রক্রিয়া দেখতে সক্ষম করে। ইনফ্রারেড তরঙ্গ দৃশ্যমান আলোর তুলনায় দীর্ঘতর হওয়ায়, এটি মহাবিশ্বের গভীরে লুকিয়ে থাকা প্রাচীন গ্যালাক্সিগুলোর ছবি ধারণ করতে পারে।
সব মিলিয়ে, জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ মানব সভ্যতার অন্যতম বৈজ্ঞানিক বিস্ময়, যা মহাবিশ্বের জন্ম থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া পরিবর্তনগুলো বোঝার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
0
Updated: 1 week ago
কোন স্পেস টেলিস্কোপ ২০২১ সালে হাবল টেলিস্কোপের স্থলাভিষিক্ত হয়?
Created: 1 month ago
A
জেমস ওয়েব
B
পাথ ফাইন্ডার
C
স্পিটজার
D
জন কেপলার
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপকে (James Webb Space Telescope – JWST) আধুনিক যুগের সবচেয়ে উন্নত মহাকাশ গবেষণা যন্ত্র হিসেবে ধরা হয়। এটি ২০২১ সালে মহাকাশে পাঠানো হয় এবং বিখ্যাত হাবল স্পেস টেলিস্কোপের উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচিত হয়।
এর মাধ্যমে মহাজাগতিক রহস্য উন্মোচন, দূরবর্তী গ্যালাক্সি অনুসন্ধান, এক্সোপ্ল্যানেট চিহ্নিতকরণ এবং ব্ল্যাকহোল পর্যবেক্ষণের মতো গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা চলছে।
-
মহাকাশে পাঠানো সবচেয়ে বড় টেলিস্কোপ হলো জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST)।
-
এটি শুধু মহাজাগতিক রহস্য নয়, বরং মহাবিশ্বের প্রান্তে কী আছে তা নিয়েও আশ্চর্যজনক ছবি প্রকাশ করেছে।
-
২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বর দক্ষিণ আমেরিকার ফ্রেঞ্চ গায়ানা থেকে ইউরোপিয়ান Ariane রকেটে করে মহাকাশে পাঠানো হয়।
-
পাঠানোর পর থেকে গত তিন বছর ধরে এটি দূরবর্তী গ্রহের বায়ুমণ্ডল বিশ্লেষণসহ মহাজাগতিক রহস্য অনুসন্ধানে ব্যবহৃত হচ্ছে।
-
টেলিস্কোপটি প্রায় ৩০ বছর ধরে তৈরি করা হয়েছে এবং এতে খরচ হয়েছে প্রায় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
-
বিপুল অর্থ খরচ হলেও মাত্র তিন বছরের মধ্যেই এটি মহাজাগতিক তথ্য সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছে।
-
জেমস ওয়েবের মাধ্যমে আবিষ্কৃত একটি গ্যালাক্সি পৃথিবী থেকে প্রায় ১৩.৪ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে।
-
২০২৩ সালে এটি প্রথম এক্সোপ্ল্যানেট (exoplanet) আবিষ্কার করে, যার নাম LHS 475b, এবং এটি পৃথিবীর মতো দেখতে।
-
জেমস ওয়েব বেশ কয়েকটি ব্ল্যাকহোল-ও আবিষ্কার করেছে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, ভবিষ্যতে এই টেলিস্কোপ থেকে আরও অনেক বিস্ময়কর আবিষ্কার পাওয়া যাবে।
0
Updated: 1 month ago