সম্প্রতি কোন দেশে হিন্দু বিয়ে বিল পাস হয়?
A
ভারত
B
নেপাল
C
ভুটান
D
পাকিস্তান
উত্তরের বিবরণ
হিন্দু সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করে পাকিস্তান সরকার সম্প্রতি হিন্দু বিবাহ বিল পাস করেছে, যা দেশটির সংখ্যালঘু হিন্দু জনগোষ্ঠীর জন্য একটি ঐতিহাসিক অর্জন। এই বিলের মাধ্যমে পাকিস্তানের হিন্দু নাগরিকরা এখন আইনগতভাবে বিবাহ নিবন্ধন, বিবাহ বিচ্ছেদ এবং পুনর্বিবাহের অধিকার লাভ করেছেন। এটি দেশটিতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পারিবারিক অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই আইনটি সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে দেওয়া হলো—
-
হিন্দু বিবাহ বিলের উদ্দেশ্য ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ ও পারিবারিক বিষয়গুলোকে আইনগত কাঠামোর আওতায় আনা। এতদিন পাকিস্তানে হিন্দুদের বিবাহ সম্পর্কিত কোনো স্বীকৃত আইনি ব্যবস্থা ছিল না, যার ফলে নানান সামাজিক ও প্রশাসনিক জটিলতা দেখা দিত।
-
এই বিলের আওতায় হিন্দু দম্পতিদের বিবাহ নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর ফলে তারা সরকারি নথিতে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন, যা আগে ছিল না।
-
বিবাহ নিবন্ধনের মাধ্যমে নারী হিন্দুদের অধিকার আরও সুরক্ষিত হয়েছে। আগে কোনো বৈবাহিক নথি না থাকায় অনেক নারী আইনি সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হতেন। এখন তারা বিবাহ বিচ্ছেদ, ভরণপোষণ ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত দাবি তুলতে পারবেন।
-
বিলটি অনুমোদনের আগে পাকিস্তানের সংসদে একাধিকবার আলোচনায় আসে এবং সিন্ধ প্রদেশে প্রথমে এ আইনটি কার্যকর হয়, কারণ সেখানে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় হিন্দু জনসংখ্যা বাস করে। পরবর্তীতে এটি সারাদেশে প্রযোজ্য করা হয়।
-
বিলটি সংখ্যালঘু অধিকারের স্বীকৃতি হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশংসা পেয়েছে। বিশেষ করে জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো একে পাকিস্তানের ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
-
এই আইনে বিবাহের সর্বনিম্ন বয়স নির্ধারণ, বিবাহের নিবন্ধন প্রক্রিয়া, বিবাহ বিচ্ছেদের শর্ত এবং পুনর্বিবাহের অনুমতি সম্পর্কিত বিধানও যুক্ত করা হয়েছে, যা হিন্দু ধর্মীয় প্রথার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে তৈরি করা হয়েছে।
-
বিলটি পাসের মাধ্যমে পাকিস্তান সরকার সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছে। এটি দেশের বহুত্ববাদী মূল্যবোধ ও মানবাধিকারের প্রতি অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
সব মিলিয়ে, হিন্দু বিবাহ বিল পাকিস্তানে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য একটি নতুন আইনি ও সামাজিক স্বীকৃতি এনেছে, যা তাদের পারিবারিক জীবনে নিরাপত্তা, সম্মান এবং সমানাধিকার প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে।
0
Updated: 1 week ago