বাংলাদেশের সংবিধান কার্যকর হয়েছে কোন তারিখে?
A
২৬ মার্চ, ১৯৭১
B
১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১
C
৪ নভেম্বর, ১৯৭২
D
১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭২
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশের সংবিধান কার্যকর হওয়ার দিনটি জাতির ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। স্বাধীনতা অর্জনের পর একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের পরিচালনার জন্য প্রয়োজন ছিল একটি সুসংগঠিত আইন কাঠামো। এই প্রয়োজন থেকেই সংবিধান প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং অবশেষে এটি কার্যকর হয় ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭২ সালে। এদিন থেকে বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে নতুনভাবে পথচলা শুরু করে।
সংবিধান কার্যকরের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে দেওয়া হলো:
-
সংবিধান প্রণয়ন কমিটি: ১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল জাতীয় পরিষদ গঠনের পর একটি সংবিধান প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন ড. কামাল হোসেন।
-
সংবিধান প্রণয়ন প্রক্রিয়া: প্রায় আট মাসব্যাপী পর্যালোচনা, বিতর্ক ও সংশোধনের পর ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর সংবিধান জাতীয় পরিষদে গৃহীত হয়।
-
কার্যকর হওয়ার তারিখ: সংবিধান গৃহীত হওয়ার পর এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭২ তারিখে কার্যকর হয়, যা বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সঙ্গে মিল রেখে নির্ধারণ করা হয়।
-
সংবিধানের কাঠামো: এতে মোট ১১টি অংশ, ১৫৩টি অনুচ্ছেদ এবং ৭টি তফসিল রয়েছে। এতে রাষ্ট্রের মৌলিক নীতি, নাগরিক অধিকার, সরকারের কাঠামো ও দায়িত্ব স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
-
মূলনীতি: বাংলাদেশের সংবিধানের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে চারটি মূলনীতির ওপর— জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা।
-
রাষ্ট্রের কাঠামো: সংবিধান অনুসারে বাংলাদেশ একটি একক ও সংসদীয় শাসনব্যবস্থা গ্রহণ করে, যেখানে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে রয়েছেন রাষ্ট্রপতি এবং নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
-
নাগরিক অধিকার: সংবিধানে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার যেমন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সমঅধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।
-
গুরুত্ব: এই সংবিধান বাংলাদেশের স্বাধীন অস্তিত্বকে আন্তর্জাতিক পরিসরে আইনি স্বীকৃতি দেয় এবং জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক শাসনব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করে।
-
পরবর্তীকালে সংশোধনী: স্বাধীনতার পর থেকে সংবিধানে বিভিন্ন সময় গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী আনা হয়েছে, তবে মূল কাঠামো এখনো জনগণের সার্বভৌমত্বের প্রতীক হিসেবেই অটুট রয়েছে।
বাংলাদেশের সংবিধান কার্যকর হওয়ার এই দিনটি শুধু একটি আইনি পদক্ষেপ নয়, বরং এটি ছিল স্বাধীন জাতির আত্মপরিচয়ের পূর্ণ বাস্তবায়ন। ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭২ তারিখে কার্যকর এই সংবিধানই আজও বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় জীবন ও গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হিসেবে বহমান।
0
Updated: 1 week ago
সংবিধানের চেতনার বিপরীতে সামরিক শাসনকে বৈধতা দিতে কোন তফসিলের অপব্যবহার করা হয়?
Created: 1 month ago
A
৪র্থ তফসিল
B
৫ম তফসিল
C
৬ষ্ঠ তফসিল
D
৭ম তফসিল
বাংলাদেশে ৪র্থ তফসিল ও সামরিক শাসন
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, দেশের আইনের কাঠামোতে মোট সাতটি তফসিল রয়েছে। তবে, ইতিহাসে দেখা যায় সামরিক শাসনের সময় চতুর্থ তফসিলকে ভুলভাবে ব্যবহার করে সংবিধানের চেতনার বিপরীতে আইনকে বৈধ করা হয়েছে।
এটি মূলত সাময়িক বা ক্রান্তিকালীন বিধান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল, যা সংবিধানের মূল নীতির সঙ্গে মিল খায়নি।
বাংলাদেশের সংবিধানের সাতটি তফসিল:
-
প্রথম তফসিল: অন্যান্য বিধান সত্ত্বেও কার্যকর আইন।
-
দ্বিতীয় তফসিল: রাষ্ট্রপতি নির্বাচন (বর্তমানে বিলুপ্ত)।
-
তৃতীয় তফসিল: শপথ ও ঘোষণা।
-
চতুর্থ তফসিল: ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধান।
-
পঞ্চম তফসিল: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ।
-
ষষ্ঠ তফসিল: বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত স্বাধীনতার ঘোষণা।
-
সপ্তম তফসিল: মুজিবনগর সরকার জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র।
উৎস: বাংলাদেশের সংবিধান
0
Updated: 1 month ago
কোন অনুচ্ছেদ মূলে বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলি পরিবর্তনযোগ্য নয়?
Created: 1 month ago
A
অনুচ্ছেদ ৭
B
অনুচ্ছেদ ৮
C
অনুচ্ছেদ ৭(ক)
D
অনুচ্ছেদ ৭(খ)
অনুচ্ছেদ ৭(খ) অনুযায়ী, বাংলাদেশের সংবিধানের কিছু মৌলিক বিধানাবলী পরিবর্তনযোগ্য নয়। এই ধারার মাধ্যমে সংবিধানের মূল কাঠামো ও প্রস্তাবিত নীতিগুলো সুরক্ষিত রাখা হয়েছে, যা সংবিধান সংশোধনের সাধারণ ক্ষমতার বাইরে।
-
অনুচ্ছেদ ৭(খ) সংবিধানের প্রস্তাবনা, প্রথম ভাগের সকল অনুচ্ছেদ, দ্বিতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ, নবম-ক ভাগে বর্ণিত অনুচ্ছেদসমূহের বিধানাবলী, তৃতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ এবং একাদশ ভাগের ১৫০ অনুচ্ছেদসহ সংবিধানের অন্যান্য মৌলিক কাঠামো সংক্রান্ত অনুচ্ছেদসমূহের সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন, রহিতকরণ বা অন্য কোনোভাবে সংশোধন করা যাবে না।
মূল অনুচ্ছেদসমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ:
-
অনুচ্ছেদ ১ - প্রজাতন্ত্র।
-
অনুচ্ছেদ ২ - প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানা।
-
অনুচ্ছেদ ৩ - রাষ্ট্রভাষা।
-
অনুচ্ছেদ ৪ - জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক।
-
অনুচ্ছেদ ৫(১) - প্রজাতন্ত্রের রাজধানী ঢাকা।
-
অনুচ্ছেদ ৫(২) - রাজধানীর সীমানা আইনের দ্বারা নির্ধারিত হবে।
-
অনুচ্ছেদ ৬ - নাগরিকত্ব।
-
অনুচ্ছেদ ৭ - সংবিধানের প্রাধান্য।
-
অনুচ্ছেদ ৭ক - সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ, ইত্যাদি অপরাধ।
-
অনুচ্ছেদ ৭খ - সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলী সংশোধন অযোগ্য।
-
অনুচ্ছেদ ৮ - রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি।
-
অনুচ্ছেদ ৯ - জাতীয়তাবাদ।
-
অনুচ্ছেদ ১০ - সমাজতন্ত্র ও শোষণমুক্তি।
0
Updated: 1 month ago
বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির একমাত্র নারী সদস্য কে ছিলেন?
Created: 3 weeks ago
A
সাজেদা চৌধুরী
B
নুরজাহান মোর্শেদ
C
রাফিয়া আক্তার ডলি
D
রাজিয়া বানু
বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া ও সদস্যঃ
→ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটি ১১ এপ্রিল, ১৯৭২ সালে গঠিত হয়েছিল।
→ কমিটিতে মোট ৩৪ জন সদস্য ছিলেন।
→ আওয়ামী লীগ থেকে ছাড়া একমাত্র সদস্য ছিলেন ন্যাপের সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
→ কমিটির প্রধান বা সভাপতি ছিলেন ড. কামাল হোসেন।
→ সংবিধান রচনা কমিটির একমাত্র মহিলা সদস্য ছিলেন বেগম রাজিয়া বানু, যিনি নারী নেতৃত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ।
→ ১৯৭২ সালের ১১ অক্টোবর কমিটি সংবিধানের চূড়ান্ত খসড়া প্রণয়ন করেন।
→ চূড়ান্ত খসড়া ড. কামাল হোসেন, কমিটির সভাপতি এবং দেশের তখনকার আইনমন্ত্রী, ১২ অক্টোবর গণপরিষদে পেশ করেন।
→ গণপরিষদ ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর খসড়াটি গ্রহণ করে এবং ১৬ ডিসেম্বর থেকে এটি কার্যকর হয়।
এই প্রক্রিয়ায় দেখা যায় যে বেগম রাজিয়া বানুর অংশগ্রহণ নারীর রাজনৈতিক নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
0
Updated: 3 weeks ago