মনোবিজ্ঞানের জনক কে?
A
সিগমুন্ড ফ্রয়েড
B
উইলহেম উন্ড
C
জন বি. ওয়াটসন
D
ইভান পাভলভ
উত্তরের বিবরণ
মনোবিজ্ঞান হলো মানুষের আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়ার বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন। এই বিদ্যা আগে দর্শনের অন্তর্গত ছিল, কিন্তু উইলহেম উন্ড প্রথম এটি স্বাধীন ও বৈজ্ঞানিক শাস্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। এজন্যই তাকে আধুনিক মনোবিজ্ঞানের জনক বলা হয়। উইলহেম উন্ডের অবদান মনোবিজ্ঞানের ইতিহাসে এক নতুন যুগের সূচনা ঘটায়। নিচে তাঁর কাজ ও গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো—
-
প্রথম মনোবিজ্ঞান ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা: ১৮৭৯ সালে জার্মানির লীপজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে উইলহেম উন্ড বিশ্বের প্রথম মনোবিজ্ঞান ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করেন। এখান থেকেই মনোবিজ্ঞানকে একটি পরীক্ষামূলক বিজ্ঞান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
-
গবেষণার ভিত্তি: তিনি মানুষের অনুভূতি, চিন্তা ও প্রতিক্রিয়ার উপর বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান। তাঁর গবেষণায় মূলত সংবেদন, অনুধাবন ও প্রতিক্রিয়ার গতি বিশ্লেষণ করা হয়।
-
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার: উন্ড বিশ্বাস করতেন, মনোবিজ্ঞানকে দর্শন থেকে আলাদা করে প্রমাণভিত্তিক পরীক্ষার মাধ্যমে গড়ে তোলা উচিত। এজন্য তিনি পরীক্ষামূলক মনোবিজ্ঞানের (Experimental Psychology) সূচনা করেন।
-
বই ও তত্ত্ব: তাঁর রচিত “Principles of Physiological Psychology” গ্রন্থে মনোবিজ্ঞানের মূল ধারণা ও পরীক্ষামূলক পদ্ধতির ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।
-
শিক্ষার্থী ও প্রভাব: উন্ডের ছাত্ররা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়ে মনোবিজ্ঞানের শিক্ষা ও গবেষণা বিস্তার করেন। তাঁদের মাধ্যমে আমেরিকা, ইউরোপসহ অন্যান্য দেশে আধুনিক মনোবিজ্ঞানের ভিত্তি মজবুত হয়।
-
প্রধান অবদান:
-
মনোবিজ্ঞানকে স্বাধীন বিজ্ঞান হিসেবে প্রতিষ্ঠা।
-
মনের কার্যপ্রণালী বুঝতে পরীক্ষার ব্যবহার।
-
পরবর্তী মনোবিজ্ঞানী যেমন ফ্রয়েড, ওয়াটসন, জেমস প্রমুখের উপর প্রভাব বিস্তার।
-
-
মনোবিজ্ঞানের বিকাশে তাৎপর্য: উইলহেম উন্ডের গবেষণা পদ্ধতি মনোবিজ্ঞানকে কল্পনা বা তত্ত্বনির্ভর ক্ষেত্র থেকে প্রমাণনির্ভর বিজ্ঞানে রূপ দেয়। তাঁর কাজের ফলে আজকের মনোবিজ্ঞান নানা শাখায় যেমন—জৈব মনোবিজ্ঞান, শিক্ষামূলক মনোবিজ্ঞান, সামাজিক মনোবিজ্ঞান ইত্যাদিতে বিস্তার লাভ করেছে।
সারসংক্ষেপে, উইলহেম উন্ডই প্রথম ব্যক্তি যিনি মানুষের মনের কার্যপ্রণালীকে বৈজ্ঞানিকভাবে বিশ্লেষণের উদ্যোগ নেন। তাঁর পরীক্ষামূলক দৃষ্টিভঙ্গি ও গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা মনোবিজ্ঞানের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে আছে, এজন্যই তিনি যথার্থভাবে ‘মনোবিজ্ঞানের জনক’ হিসেবে পরিচিত।
0
Updated: 1 week ago