যুক্তফ্রন্ট কবে গঠিত হয়?
A
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি
B
১৯৫৩ সালের ০৪ ডিসেম্বর
C
১৯৫৪ সালের ১০ মার্চ
D
১৯৫৫ সালের ১৬ জুন
উত্তরের বিবরণ
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পূর্ব বাংলার জনগণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বঞ্চনার শিকার হতে থাকে। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ আন্দোলনের প্রয়োজন দেখা দিলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মিলিত হয়ে গঠন করে যুক্তফ্রন্ট।
এটি ছিল জনগণের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে একটি ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম, যা পরবর্তীকালে পূর্ব বাংলার রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
তথ্যগুলো নিম্নরূপ—
-
১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর তারিখে যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
-
পরে ১৯৫৩ সালের ০৪ ডিসেম্বর, এই জোট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
-
যুক্তফ্রন্টে প্রধান দলগুলো ছিল —
-
আওয়ামী মুসলিম লীগ, নেতৃত্বে ছিলেন মাওলানা ভাসানী।
-
কৃষক শ্রমিক পার্টি, প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শের-ই-বাংলা এ. কে. ফজলুল হক।
-
পাকিস্তান গণতন্ত্রী দল।
-
পাকিস্তান খিলাফত দল।
-
-
যুক্তফ্রন্টের মূল উদ্দেশ্য ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক নীতি বন্ধ করে পূর্ব বাংলার জনগণের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।
-
এ জোটের মাধ্যমে তারা তৎকালীন মুসলিম লীগ সরকারের একচেটিয়া আধিপত্যের বিরোধিতা করে জনগণের স্বার্থ রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়।
-
যুক্তফ্রন্ট গঠনের ফলে পূর্ব বাংলার রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয় এবং জনগণের মধ্যে আত্মপরিচয় ও গণতান্ত্রিক চেতনা জাগ্রত হয়।
-
পরবর্তীতে যুক্তফ্রন্ট ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে বিপুল বিজয় লাভ করে, যা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শাসনের বিরুদ্ধে এক ঐতিহাসিক গণরায় হিসেবে বিবেচিত হয়।
-
এই জোটের নির্বাচনী ইশতেহারটি “একদফা—চৌদ্দদফা” নামে পরিচিত, যেখানে শিক্ষা, কৃষি, শ্রমিক অধিকার ও ভাষা আন্দোলনের দাবিগুলো গুরুত্ব পায়।
-
যুক্তফ্রন্টের সফলতা দেখিয়েছিল যে পূর্ব বাংলার জনগণ নিজেদের অধিকারের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে।
-
যদিও পরে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপে এই জোট ভেঙে যায়, তবুও এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সুতরাং, পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে ১৯৫৩ সালের ০৪ ডিসেম্বর যুক্তফ্রন্ট গঠনের দিনটি একটি স্মরণীয় তারিখ, যা জনগণের গণতান্ত্রিক ঐক্যের প্রতীক হয়ে আছে।
0
Updated: 1 week ago
মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান ও বীরত্বের জন্যে কতজনকে বীরত্বসূচক খেতাব বা উপাধি প্রদান করা হয়?
Created: 2 months ago
A
৬৭৫ জন
B
৬৭৬ জন
C
৬৭৭ জন
D
৬৭৮ জন
মুক্তিযুদ্ধের খেতাব
-
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান ও বীরত্বের জন্য ১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকার মোট ৬৭৬ জনকে চারটি বীরত্বসূচক খেতাব প্রদান করে।
বীরত্বসূচক খেতাবসমূহ:
-
বীরশ্রেষ্ঠ – সর্বোচ্চ খেতাব, প্রাপ্ত: ৭ জন
-
বীরউত্তম – দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খেতাব, প্রাপ্ত: ৬৮ জন
-
বীরবিক্রম – তৃতীয় সর্বোচ্চ খেতাব, প্রাপ্ত: ১৭৫ জন
-
বীরপ্রতীক – চতুর্থ সর্বোচ্চ খেতাব, প্রাপ্ত: ৪২৬ জন
-
সাম্প্রতিক পরিবর্তন: ৬ জুন ২০২১ তারিখে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বঙ্গবন্ধু হত্যার চার আসামের মুক্তিযুদ্ধে প্রদত্ত খেতাব বাতিল করে।
তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 2 months ago
১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট কতটি আসনে জয়লাভ করেছিল?
Created: 1 week ago
A
২১৯
B
২২১
C
২২৩
D
২২৫
১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ছিল পূর্ব বাংলার রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক মোড় ঘোরানো অধ্যায়। এই জোটটি গঠিত হয়েছিল তৎকালীন শাসক দলের বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে একত্রিত করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে। এর মূল লক্ষ্য ছিল প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন অর্জন ও জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।
যুক্তফ্রন্ট ছিল বিরোধী দলগুলোর একটি নির্বাচনী জোট, যা ১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কাউন্সিল সভায় গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়।
-
১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে তারা ৩০৯টি আসনের মধ্যে ২২৩টি আসনে জয়লাভ করে।
-
যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী প্রতীক ছিল নৌকা।
-
জোটটি ২১ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে, যার প্রণয়নে আবুল মনসুর আহমেদ মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।
-
নির্বাচনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন।
-
যুক্তফ্রন্টের নেতৃত্বে সরকার গঠনের দায়িত্ব পান শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক, যিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
-
৩ এপ্রিল ১৯৫৪ সালে পূর্ব বাংলার গভর্নর যুক্তফ্রন্টকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানান।
-
নির্বাচিত ২২৩ জন সদস্যের মধ্যে ১৩০ জন ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি।
এই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের স্বপ্ন, আশা ও স্বাধীনচেতা রাজনৈতিক চেতনার প্রতিফলন ঘটেছিল, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ভিত্তি শক্তিশালী করে।
0
Updated: 1 week ago
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে 'হেমায়েত বাহিনী' কোন অঞ্চলে যুদ্ধ করে?
Created: 2 months ago
A
টাঙ্গাইল
B
মাগুরা
C
পাবনা
D
বরিশাল
আঞ্চলিক বাহিনী (মুক্তিযুদ্ধের সময়)
সেক্টর এলাকার বাইরে আঞ্চলিক পর্যায়ে গঠিত গুরুত্বপূর্ণ মুক্তিবাহিনী ও গেরিলা দলসমূহ:
| বাহিনীর নাম | স্থান/অঞ্চল |
|---|---|
| কাদেরিয়া বাহিনী | টাঙ্গাইল |
| আফসার ব্যাটালিয়ন | ভালুকা, ময়মনসিংহ |
| বাতেন বাহিনী | টাঙ্গাইল |
| হেমায়েত বাহিনী | গোপালগঞ্জ, বরিশাল |
| হালিম বাহিনী | মানিকগঞ্জ |
| আকবর বাহিনী | মাগুরা |
| লতিফ মীর্জা বাহিনী | সিরাজগঞ্জ, পাবনা |
| জিয়া বাহিনী | সুন্দরবন |
| ঢাকার গেরিলা দল (‘ক্র্যাক প্লাটুন’) | ঢাকা শহর |
-
ঢাকার গেরিলা দল প্রধানত শহরের বড় বড় স্থাপনা, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ব্যাংক ও টেলিভিশন ভবনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটাত।
তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়, অষ্টম শ্রেণি
0
Updated: 2 months ago