রোম পৃথিবীর অন্যতম ঐতিহাসিক ও ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর, যাকে প্রায়ই “চিরশান্তির শহর” বা “Eternal City” বলা হয়। প্রাচীন যুগ থেকেই রোম ছিল সভ্যতা, রাজনীতি, ধর্ম ও শিল্পকলার কেন্দ্রবিন্দু। এর ঐতিহাসিক ঐতিহ্য, স্থাপত্যশৈলী ও ধর্মীয় গুরুত্বের জন্য এই উপাধি এখনো অটুট রয়েছে।
রোমকে চিরশান্তির শহর বলা হয় কারণ এটি হাজার বছর ধরে সভ্যতার আলো ছড়াচ্ছে এবং অজস্র বিপর্যয়ের মধ্য দিয়েও তার মহিমা হারায়নি। নিচে এই নামের পেছনের কারণগুলো ব্যাখ্যা করা হলো—
• ঐতিহাসিক ঐতিহ্য: রোম ছিল প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী, যা ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে শাসন করেছিল। এর ইতিহাস প্রায় তিন হাজার বছরের পুরোনো, যা এখনো বিভিন্ন স্থাপত্য ও নিদর্শনে জীবন্ত।
• ধর্মীয় কেন্দ্র: রোমে অবস্থিত ভ্যাটিকান সিটি, যা ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মের কেন্দ্র। বিশ্বের কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মানুষ এই শহরকে পবিত্র স্থান হিসেবে সম্মান করে, যার ফলে এটি আধ্যাত্মিক শান্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে।
• শিল্প ও স্থাপত্যের শহর: রোমে রয়েছে কলসিয়াম, প্যানথিয়ন, সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা, ত্রেভি ফাউন্টেনসহ অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থাপনা। এই শিল্পকর্মগুলো যুগে যুগে শান্তি, সৌন্দর্য ও সভ্যতার বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছে।
• সংস্কৃতির ধারক: প্রাচীন রোম শুধু রাজনীতি নয়, সাহিত্য, দর্শন, আইন, স্থাপত্য ও শিল্পকলায় অসামান্য অবদান রেখেছে। এসব কারণে রোম মানবসভ্যতার স্থায়ী ও চিরন্তন প্রতীক হয়ে আছে।
• “Eternal City” নামের উৎপত্তি: প্রাচীন রোমান কবি ও ইতিহাসবিদরা বিশ্বাস করতেন, রোম কখনো ধ্বংস হবে না—এটি সর্বদা টিকে থাকবে। সেই বিশ্বাস থেকেই “Eternal City” বা “চিরশান্তির শহর” উপাধিটি প্রচলিত হয়।
• পর্যটনের শান্ত পরিবেশ: আধুনিক যুগেও রোম শান্তি ও ইতিহাসের এক চমৎকার মিশ্রণ। ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর গাম্ভীর্য, রাস্তাগুলোর সৌন্দর্য এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য একে প্রশান্তি ও স্থায়িত্বের প্রতীক করেছে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, রোম শুধুমাত্র একটি শহর নয়, এটি মানবসভ্যতার ইতিহাসের এক অমর অধ্যায়। তার অমলিন ঐতিহ্য, আধ্যাত্মিক মর্যাদা ও সাংস্কৃতিক গভীরতার কারণে একে যথার্থই বলা হয় “চিরশান্তির শহর”।