অনুপাত হলো এমন একটি গাণিতিক সম্পর্ক, যার মাধ্যমে দুইটি সমজাতীয় রাশির তুলনা করা হয়। এটি বোঝায়—একটি রাশি অন্যটির কত অংশ বা কতগুণ।
অনুপাত সাধারণত ভগ্নাংশ আকারে প্রকাশ করা হয় এবং এর কোন একক থাকে না, কারণ এটি কেবল তুলনামূলক সম্পর্ক প্রকাশ করে। নিচে অনুপাত সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো—
সংজ্ঞা: দুইটি সমজাতীয় রাশির একটি অপরটির তুলনায় কত অংশ বা কতগুণ তা ভগ্নাংশ আকারে প্রকাশ করলে তাকে অনুপাত বলে।
রূপ: অনুপাতকে ভগ্নাংশ আকারে বা “:” চিহ্ন ব্যবহার করে প্রকাশ করা যায়। যেমন— ৩:৫ বা ³⁄₅। উদাহরণ: যদি একটি শ্রেণিতে ১৫ জন ছেলে এবং ১০ জন মেয়ে থাকে, তবে ছেলেমেয়ের অনুপাত হবে ১৫:১০ বা সরলীকৃত আকারে ৩:২।
সমজাতীয় রাশি: অনুপাত কেবল তখনই নির্ণয় করা যায় যখন দুটি রাশি একই প্রকৃতির হয়, যেমন দৈর্ঘ্যের সঙ্গে দৈর্ঘ্য, ওজনের সঙ্গে ওজন। দৈর্ঘ্য ও সময়ের অনুপাত নির্ণয় করা যায় না।
অনুপাতের একক: যেহেতু এটি তুলনামূলক সম্পর্ক প্রকাশ করে, তাই অনুপাতের কোন একক থাকে না। যেমন ৩ মিটার ও ৬ মিটার দৈর্ঘ্যের অনুপাত ১:২, এখানে ‘মিটার’ এককটি বাতিল হয়ে যায়।
অনুপাতের মান: অনুপাতের মান হলো প্রথম রাশি ও দ্বিতীয় রাশির ভাগফল। যেমন ৪:৮ এর মান = ৪ ÷ ৮ = ½।
সমান অনুপাত: দুটি অনুপাতের মান সমান হলে তাদের সমান অনুপাত বা সমানুপাত বলা হয়। যেমন ২:৪ = ৩:৬।
গুরুত্ব: দৈনন্দিন জীবনে অনুপাত ব্যবহৃত হয় খাদ্য প্রস্তুতিতে, মানচিত্র অঙ্কনে, স্থাপত্য নির্মাণে, অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে ইত্যাদিতে। এটি তুলনামূলক হিসাব সহজ করে তোলে।
গণিতে প্রয়োগ: অনুপাত বীজগণিত, জ্যামিতি ও পরিসংখ্যানে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। যেমন গতি নির্ণয় (দূরত্ব ও সময়ের অনুপাত), স্কেল অঙ্কন ইত্যাদি।
অনুপাত হলো তুলনামূলক একটি গাণিতিক রাশি, যা ভগ্নাংশের মাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং যার কোন একক থাকে না। এটি সংখ্যা, পরিমাণ বা পরিমাপের মধ্যে সম্পর্ক বোঝাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।