কার্য-কারন প্রভাব দেখা যায় মনোবিজ্ঞানের কোন্ পদ্ধতি অনুশীলনের মাধ্যমে

A

পর্যবেক্ষন 

B

পরীক্ষণ

C

কেইস-স্টাডি

D

জরিপ

উত্তরের বিবরণ

img

মনোবিজ্ঞানে কার্যকারণ সম্পর্ক বলতে বোঝায় কোনো নির্দিষ্ট কারণ (Cause) কীভাবে কোনো নির্দিষ্ট ফলাফলের (Effect) সৃষ্টি করে। এই সম্পর্ক নির্ধারণ করা হয় পরীক্ষণ পদ্ধতির (Experimental Method) মাধ্যমে, যা মনোবিজ্ঞানের অন্যতম বৈজ্ঞানিক গবেষণার কৌশল। পরীক্ষণের মাধ্যমে গবেষক একটি নির্দিষ্ট কারণ নিয়ন্ত্রণ করে বা পরিবর্তন ঘটিয়ে দেখে সেই পরিবর্তন মানুষের আচরণ, চিন্তা বা প্রতিক্রিয়ার ওপর কী প্রভাব ফেলে। ফলে কার্যকারণ সম্পর্ক স্পষ্টভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হয়।

  • পরীক্ষণ পদ্ধতিতে গবেষক প্রথমে একটি অনুমান বা হাইপোথিসিস (Hypothesis) তৈরি করেন, যেখানে তিনি সম্ভাব্য কারণ ও ফলাফলের সম্পর্ক পূর্বানুমান করেন।

  • এরপর তিনি স্বাধীন চলক (Independent Variable) অর্থাৎ কারণকে পরিবর্তন বা নিয়ন্ত্রণ করেন এবং তার ফলে পরনির্ভর চলক (Dependent Variable) অর্থাৎ ফলাফলের কী পরিবর্তন হচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করেন।

  • এই প্রক্রিয়ায় গবেষক নির্ধারণ করতে পারেন যে, একটি নির্দিষ্ট পরিবর্তন অন্য একটি আচরণ বা মানসিক অবস্থার পরিবর্তনের জন্য কতটা দায়ী

  • উদাহরণস্বরূপ, যদি গবেষক ঘুমের পরিমাণ পরিবর্তন করে শেখার ক্ষমতার ওপর প্রভাব পরীক্ষা করেন, তাহলে ঘুমের পরিমাণ হবে স্বাধীন চলক এবং শেখার ক্ষমতা হবে পরনির্ভর চলক।

  • এইভাবে পরীক্ষণের মাধ্যমে দেখা যায়, কোনো কারণ সরাসরি কোনো প্রভাব সৃষ্টি করছে কিনা, নাকি অন্য কোনো উপাদান এর সঙ্গে যুক্ত।

  • পরীক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহারে গবেষক পরিবেশ ও শর্তাবলি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন, যার ফলে ফলাফল নির্ভরযোগ্য ও বৈজ্ঞানিক হয়।

  • কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ধারণের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ দল (Control Group)পরীক্ষণ দল (Experimental Group) ব্যবহৃত হয়, যাতে দুটি গোষ্ঠীর ফলাফলের পার্থক্য থেকেই কারণ-প্রভাবের সম্পর্ক নিরূপণ করা যায়।

  • পরীক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমে গবেষক নিশ্চিত হতে পারেন যে, কোনো মানসিক প্রক্রিয়া বা আচরণ আসলে কোন কারণের কারণে উদ্ভূত হচ্ছে

  • এটি মনোবিজ্ঞানের অন্যান্য পদ্ধতি যেমন পর্যবেক্ষণ বা সাক্ষাৎকারের তুলনায় বেশি নির্ভুল ও প্রমাণনির্ভর (Empirical)

  • এই পদ্ধতি শুধু কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ধারণই নয়, বরং মনোবিজ্ঞানের তত্ত্ব যাচাই, আচরণ ব্যাখ্যা এবং পূর্বাভাস প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

  • কার্যকারণ বিশ্লেষণ মনোবিজ্ঞানকে একটি বৈজ্ঞানিক শাস্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে, কারণ এটি পরীক্ষণ, পরিমাপ ও পুনরাবৃত্ত ফলাফলের উপর নির্ভর করে।

  • পরীক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমে মনোবিজ্ঞানীরা শিক্ষণ, স্মৃতি, আবেগ, প্রেরণা, ব্যক্তিত্ব ও সামাজিক আচরণের কার্যকারণভিত্তিক ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম হয়েছেন।

  • এই প্রক্রিয়ায় কারণ ও ফলাফলের মধ্যে সম্পর্ক কেবল অনুমান নয়, বরং পরিসংখ্যান ও পর্যবেক্ষণভিত্তিক প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত হয়, যা বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের মূল ভিত্তি।

  • সব মিলিয়ে বলা যায়, মনোবিজ্ঞানের পরীক্ষণ পদ্ধতি হলো এমন এক বৈজ্ঞানিক উপায়, যার মাধ্যমে মানব আচরণের পেছনের প্রকৃত কারণ এবং তার প্রভাবকে নির্ভুলভাবে শনাক্ত করা যায়

Unfavorite

0

Updated: 2 days ago

Related MCQ

 শিক্ষণের কোন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীর নির্ভুল প্রতিক্রিয়াই পুরস্কার প্রাপ্তিতে সাহায্য করে?

Created: 2 days ago

A

সবিশেষ সাপেক্ষিকরন

B

করণ শিক্ষণ

C

প্রচ্ছন্ন শিক্ষণ

D

জ্ঞানীয় শিক্ষণ

Unfavorite

0

Updated: 2 days ago

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD