গমের মোজাইক ভাইরাস কীভাবে ছড়ায়?
A
ইদুঁরের মাধ্যমে
B
মাইটের মাধ্যমে
C
বাতাসের মাধ্যমে
D
পাখির মাধ্যমে
উত্তরের বিবরণ
গমের মোজাইক ভাইরাস একটি সংক্রামক উদ্ভিদ ভাইরাস যা গম ফসলের উৎপাদনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এটি সাধারণত মাইট নামক অতি ক্ষুদ্র পোকাদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যারা ভাইরাসযুক্ত গাছ থেকে রস শোষণ করে এবং পরে সুস্থ গাছে স্থানান্তরিত হয়ে সেই ভাইরাস সংক্রমণ ঘটায়।
এই ভাইরাসের কারণে গমের পাতা দাগযুক্ত, মোজাইক আকৃতির ও হলুদাভ হয়ে যায়, যার ফলে গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং ফলন কমে যায়। কৃষকেরা সাধারণত জৈব ও রাসায়নিক পদ্ধতির মাধ্যমে মাইট দমন ও ভাইরাস প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
গমের মোজাইক ভাইরাস সম্পর্কিত মূল তথ্যসমূহ:
-
এটি একটি সংক্রামক উদ্ভিদ ভাইরাস, যা মূলত গমের পাতা ও কাণ্ডে আক্রমণ করে।
-
ভাইরাসটি মাইট নামের ক্ষুদ্র পোকা দ্বারা ছড়ায়, যারা আক্রান্ত গাছের রস শোষণ করে এবং পরবর্তীতে সুস্থ গাছে স্থানান্তরিত হয়ে ভাইরাসটি ছড়িয়ে দেয়।
-
সংক্রমিত গাছগুলোতে পাতার রঙ পরিবর্তন, মোজাইক দাগ, এবং দুর্বল বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়।
-
ভাইরাসটি শস্যের উৎপাদনশীলতা হ্রাস করে, ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়।
-
এটি সাধারণত উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
মাইটের বৈশিষ্ট্য:
-
মাইট হলো অতি ক্ষুদ্র কীটজাত প্রাণী, যাদের চোখে দেখা প্রায় অসম্ভব এবং দেখতে অনেকটা ধুলোর মতো।
-
এরা উদ্ভিদের পাতা ও কাণ্ড থেকে রস শোষণ করে, যা গাছের কোষ নষ্ট করে এবং ভাইরাস ছড়াতে সাহায্য করে।
-
মাইটের সরু দেহ এবং দ্রুত চলাচলের ক্ষমতার কারণে তারা গাছের পাতার নিচে বা ফাঁকফোকরে সহজেই লুকিয়ে থাকে।
-
এরা সাধারণত উষ্ণ ও শুষ্ক পরিবেশে বেশি সক্রিয় থাকে, ফলে সেই সময়ে সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
মাইট প্রতিরোধ ও ভাইরাস দমন পদ্ধতি:
-
জৈব পর্যবেক্ষণ: গাছের নিয়মিত পরিদর্শন ও প্রাথমিক পর্যায়ে মাইট শনাক্তকরণ ভাইরাস ছড়ানো প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
-
কীটনাশক ব্যবহার: অনুমোদিত কীটনাশক নির্দিষ্ট সময়ে প্রয়োগ করলে মাইটের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
-
ভাইরাস প্রতিরোধী জাতের ব্যবহার: গমের এমন জাত চাষ করা উচিত যেগুলো স্বাভাবিকভাবেই ভাইরাস প্রতিরোধী।
-
বীজতলা ও মাটির যত্ন: আগাম বীজতলা প্রতিস্থাপন, সঠিক চাষাবাদ এবং মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় মনোযোগ দিলে সংক্রমণ অনেকাংশে কমানো যায়।
-
সংক্রমিত গাছ ধ্বংস: আক্রান্ত গাছগুলো দ্রুত উপড়ে ফেলে জ্বালিয়ে দেওয়া উচিত, যাতে ভাইরাস ছড়াতে না পারে।
-
ফসল ঘুরিয়ে চাষ: একটানা একই জমিতে গম চাষ না করে ফসল পরিবর্তন করলে ভাইরাসের জীবনচক্র ভাঙা যায়।
এভাবে যথাযথ জৈব ও রাসায়নিক ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যকর চাষপদ্ধতি এবং মাইট নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে গমের মোজাইক ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এটি শুধু গমের ফলন রক্ষা করে না, বরং কৃষির স্থায়িত্ব ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাও বজায় রাখে।

0
Updated: 2 days ago
প্যাপিলোমা ভাইরাসের E6 ও E7 জিন কী কাজ করে?
Created: 1 month ago
A
রক্তচাপ কমায়
B
অ্যান্টিবডি তৈরি করে
C
কোষ বিভাজন নিয়ন্ত্রণ করে
D
নিয়ন্ত্রক প্রোটিনকে নিষ্ক্রিয় করে
অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন:
-
টিউমার ও ক্যান্সার হলো অস্বাভাবিক কোষ বিভাজনের ফল।
-
মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় একটি থেকে দুটি, দুটি থেকে চারটি এভাবে কোষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তবে এই প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রিত থাকে।
-
কোনো কারণে এই নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়ে গেলে অস্বাভাবিকভাবে কোষ বিভাজন চলতে থাকে। এর ফলে টিউমার সৃষ্টি হয় এবং প্রাণঘাতী টিউমারকে ক্যান্সার বলা হয়।
-
ক্যান্সার কোষ এই নিয়ন্ত্রণহীন অস্বাভাবিক কোষ বিভাজনের ফল।
-
গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন ধরনের রোগজীবাণু, রাসায়নিক পদার্থ কিংবা তেজস্ক্রিয়তা ক্যান্সার কোষ সৃষ্টিতে সহায়তা করে।
-
সহস্রাধিক জিন ক্যান্সার কোষ তৈরিতে সহায়ক হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
-
উদাহরণ: হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের E6 এবং E7 নামের দুটি জিন এমন কিছু প্রোটিন সৃষ্টি করে, যা কোষ বিভাজন নিয়ন্ত্রক প্রোটিন অণুগুলোর কাজ বন্ধ বা স্থানচ্যুত করে। এর ফলে কোষ বিভাজনের নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়ে যায় এবং সৃষ্টি হয় জরায়ুমুখের টিউমার।
-
-
অনেক সময় এ দুটি জিন পোষক কোষের জিনের সাথে একীভূত হয়ে যায় এবং কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণকারী প্রোটিনের কাজ বন্ধ করে দেয়, ফলে সৃষ্টি হয় ক্যান্সার কোষ বা ক্যান্সার।
-
বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার রয়েছে এবং সবই কমবেশি মারাত্মক।
-
যেমন: লিভার, ফুসফুস, মস্তিষ্ক, স্তন, ত্বক, কোলন এবং জরায়ু। অর্থাৎ দেহের প্রায় সকল অঙ্গেই ক্যান্সার হতে পারে।
-
উৎস: জীববিজ্ঞান, নবম-দশম শ্রেণি।

0
Updated: 1 month ago
HIV ভাইরাস মূলত কোন কোষ ধ্বংস করে?
Created: 1 month ago
A
প্লেটলেট
B
নিউরন
C
লোহিত রক্ত কণিকা
D
T4 লিম্ফোসাইট ও ম্যাক্রোফেজ
AIDS = Acquired Immune Deficiency Syndrome
অর্থাৎ বিশেষ কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়াকে এইডস বলে।
HIV (Human Immune Deficiency Virus) নামক ভাইরাস দ্বারা এ রোগ হয়।
HIV ভাইরাস আক্রমণ করলে শ্বেত রক্তকণিকার ম্যাক্রোফেজ ও T4 লিম্ফোসাইট ধ্বংস হয়।
ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়।
বর্তমানে বিশ্বে AIDS একটি মারাত্মক ও ভয়াবহ রোগ।
উৎপত্তি
ধারণা করা হয়, HIV ভাইরাস মূলত বানরের দেহে ছিল।
আফ্রিকায় বানর থেকে মানুষে স্থানান্তরিত হয় এবং পরে আমেরিকা, ইউরোপসহ সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
আফ্রিকায় HIV সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি।
AIDS এর বিস্তার
HIV ভাইরাস বিভিন্ন উপায়ে একজন সুস্থ মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে:
নারী-পুরুষের অস্বাভাবিক ও অসামাজিক যৌন আচরণ।
সংক্রমিত সিরিঞ্জ ব্যবহার।
সংক্রমিত রক্ত গ্রহণ।
সংক্রমিত মায়ের গর্ভে জন্ম নেওয়া শিশু।
সেলুনে একই ব্লেড বা ক্ষুর বিভিন্ন জনে ব্যবহার।
দন্ত চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসায় অসতর্কতা।
উৎস: প্রাণিবিজ্ঞান, এইচএসসি প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

0
Updated: 1 month ago