প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন বলতে কি বুঝায়?
A
কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব
B
প্রদেশের সকল বিষয়ে কেন্দ্রের নির্দেশ
C
কেন্দ্রে ও প্রদেশের মধ্যে ক্ষমতার বণ্টন
D
শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ
উত্তরের বিবরণ
প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন এমন একটি শাসনব্যবস্থা, যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রাদেশিক বা রাজ্য সরকার—দুই স্তরের সরকারের মধ্যে দায়িত্ব ও ক্ষমতার সুষম বণ্টন থাকে। এর উদ্দেশ্য হলো প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি, স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং জাতীয় ঐক্য রক্ষা করা।
প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের মূল বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
-
ক্ষমতার বণ্টন: রাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী কেন্দ্র ও প্রদেশের মধ্যে ক্ষমতা ভাগ করা হয়। যেমন—প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্রনীতি ও মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ থাকে কেন্দ্রের হাতে; অন্যদিকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ইত্যাদি স্থানীয় বিষয়ে প্রদেশের হাতে থাকে।
-
স্বাধীন সিদ্ধান্তের অধিকার: প্রদেশগুলোর নিজস্ব আইন প্রণয়ন, বাজেট তৈরি এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা থাকে, তবে এগুলো কেন্দ্রীয় সংবিধান বা নীতির বিরোধী হতে পারে না।
-
কেন্দ্রের তত্ত্বাবধান: প্রাদেশিক সরকারের কার্যক্রম কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশনা বা তত্ত্বাবধানে চলে, যাতে জাতীয় ঐক্য বজায় থাকে এবং সাংবিধানিক সীমা অতিক্রম না করে।
-
অর্থনৈতিক সম্পর্ক: প্রদেশগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে বাজেট অনুদান বা আর্থিক সহায়তা পায়। একইভাবে তারা কেন্দ্রকে বার্ষিক রাজস্ব বা কর প্রদান করে।
-
উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব:
-
স্থানীয় সমস্যার দ্রুত সমাধান নিশ্চিত করা।
-
প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি করা।
-
জাতীয় ঐক্যের পাশাপাশি আঞ্চলিক উন্নয়ন ঘটানো।
-
জনগণের অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
-
-
উদাহরণ: ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ইত্যাদি দেশে এই ধরনের প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন বা ফেডারেল ব্যবস্থা বিদ্যমান, যেখানে প্রতিটি রাজ্য বা প্রদেশ নিজস্ব সংবিধান অনুযায়ী পরিচালিত হয়।
সারসংক্ষেপে, প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন হলো এমন একটি সাংবিধানিক ব্যবস্থা যেখানে কেন্দ্র ও প্রদেশের মধ্যে ক্ষমতা ভাগ করে দেওয়া হয়, যাতে উভয় স্তরের সরকার নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থেকে দায়িত্ব পালন করতে পারে। এটি প্রশাসনিক ভারসাম্য, আঞ্চলিক উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক শাসনের ভিত্তি তৈরি করে।

0
Updated: 2 days ago
বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে একজন আমেরিকান ঐতিহাসিক মন্তব্য করেছেন; 'বাংলাদেশের রাজনীতি ব্যক্তিত্বকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়, ধারনা বা প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নয়" এই ঐতিহাসিকের নাম কি?
Created: 1 week ago
A
এন্থনি মাসকারেনহাস
B
লরেঞ্চ জিরিং
C
লরেঞ্চ লিফশূলজ্
D
হেনরি কিসিঞ্জার
অধ্যাপক লরেঞ্চ জিরিং মন্তব্য করেছিলেন যে, বাংলাদেশের রাজনীতি ব্যক্তিত্বনির্ভর, ধারণা বা প্রতিষ্ঠাননির্ভর নয়। এই বক্তব্য তিনি তাঁর গ্রন্থ ‘বাংলাদেশ: মুজিব থেকে এরশাদ: একটি বিশ্লেষণধর্মী ইতিহাস’-এ উপস্থাপন করেন। এতে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও নেতৃত্বের চরিত্র বিশ্লেষণ করেছেন।
-
তিনি উল্লেখ করেন, স্বাধীনতার প্রথম বিশ বছরে বাংলাদেশের রাজনীতি মূলত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়ন্ত্রণে ছিল, যারা জনগণের অনুভূতি প্রকাশে সচেষ্ট ছিলেন, কিন্তু প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি বা ধারণাগত কাঠামো তৈরি করতে ব্যর্থ হন।
-
বইটি নিরপেক্ষ ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ হিসেবে রচিত, যেখানে ১৯৪০–১৯৯০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক নেতা, তাঁদের শাসনকাল, সাফল্য-ব্যর্থতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
-
লরেঞ্চ জিরিং আরও “মুজিব, এরশাদ ও হাসিনা: রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের ইতিহাস” নামের গ্রন্থের লেখক।
-
সূত্র: বাংলাদেশ: মুজিব থেকে এরশাদ: একটি বিশ্লেষণধর্মী ইতিহাস, Lawrence Ziring; Link: core.ac.uk, page 124.

0
Updated: 1 week ago
আলেপ্পো শহরটি কোন দেশে অবস্থিত?
Created: 10 hours ago
A
ইরান
B
ইরাক
C
জর্ডান
D
সিরিয়া
আলেপ্পো হলো উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার একটি ঐতিহাসিক ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর, যা দীর্ঘকাল ধরে মধ্যপ্রাচ্যের বাণিজ্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতির কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এটি সিরিয়ার বৃহত্তম শহরগুলোর একটি এবং তুর্কি সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ মাইল (প্রায় ৪৮ কিলোমিটার) দূরে অবস্থিত।
আলেপ্পোর ইতিহাস ও গুরুত্ব:
-
আলেপ্পো খ্রিস্টপূর্ব যুগ থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ নগরী। খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ থেকে ৪র্থ শতাব্দী পর্যন্ত এটি ছিল পারস্যের আচেমেনীয় রাজবংশের নিয়ন্ত্রণে।
-
পরবর্তীতে, খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতাব্দীতে রোমান সাম্রাজ্য আলেপ্পো দখল করে নেয় এবং শহরটি বাণিজ্য ও সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে সমৃদ্ধ হয়।
-
৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে, আলেপ্পো আরবদের দ্বারা জয়লাভ করে এবং এর প্রাচীন নাম হালাব পুনরায় ব্যবহৃত হয়।
-
মধ্যযুগে এটি সিল্ক রোডের অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে, যা ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্যিক সংযোগ স্থাপন করেছিল।
-
আলেপ্পো তার ঐতিহাসিক স্থাপনা, দুর্গ, মসজিদ ও বাজারগুলোর জন্য বিখ্যাত।
-
১৯৮৬ সালে শহরের পুরোনো অংশকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হয়, কারণ এটি ইসলামী ও রোমান স্থাপত্যের অনন্য সমন্বয় বহন করে।
সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট:
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ (২০১১–বর্তমান) চলাকালে আলেপ্পো শহরটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক সময়ের প্রাণবন্ত এই শহর এখনো পুনর্গঠনের পথে রয়েছে, তবে এর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
সিরিয়া সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য:
-
অবস্থান: পশ্চিম এশিয়ায়, ভূমধ্যসাগরের পূর্ব তীরে, আরব উপদ্বীপের উত্তরে।
-
স্বাধীনতা লাভ: ১৯৪৬ সালে, ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে।
-
রাজধানী: দামেস্ক (Damascus)।
-
বিখ্যাত শহর: আলেপ্পো, ইদলিব, পালমিরা।
-
মুদ্রা: সিরীয় পাউন্ড (Syrian Pound)।
সব মিলিয়ে, আলেপ্পো কেবল সিরিয়ার নয়, বরং সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যের একটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, যার অতীত সভ্যতা, স্থাপত্য ও বাণিজ্য ইতিহাস আজও মানবসমাজের ঐতিহ্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে।

0
Updated: 10 hours ago
বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট জেলা কোনটি?
Created: 6 days ago
A
নাটোর
B
নারায়ণগঞ্জ
C
নরসিংদী
D
বগুরা
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে বৈচিত্র্যময়। প্রতিটি জেলার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা দেশকে ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ করেছে।
-
আয়তনে সবচেয়ে ছোট জেলা – নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের শিল্পনগরী হিসেবে পরিচিত। এর আয়তন ৬৮৩.১৪ বর্গকিলোমিটার (২৬৩.৭৬ বর্গমাইল)। এটি “প্রাচ্যের ডান্ডি” নামে বিখ্যাত, কারণ এখানে সোনালী আশঁ বা পাট শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল। রাজধানীর খুব কাছাকাছি হওয়ায় এটি অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জেলা। -
আয়তনে বড় জেলা – রাঙামাটি:
রাঙামাটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জেলা, যার আয়তন প্রায় ৬,১১৬.১৩ বর্গকিলোমিটার। এটি পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে অবস্থিত এবং পাহাড়, হ্রদ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। কাপ্তাই হ্রদ ও জাতীয় উদ্যান রাঙামাটির প্রধান আকর্ষণ। -
জনসংখ্যায় সবচেয়ে বড় জেলা – ঢাকা:
ঢাকা জেলা দেশের সবচেয়ে জনবহুল জেলা, কারণ এটি রাজধানী ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র। এখানকার জনসংখ্যার ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি এবং দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে এর গুরুত্ব অপরিসীম। -
জনসংখ্যায় সবচেয়ে ছোট জেলা – বান্দরবান:
পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি জেলা বান্দরবান জনসংখ্যায় সবচেয়ে কম। এখানে বেশিরভাগ মানুষ পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাহাড়, জলপ্রপাত ও পর্যটন কেন্দ্রের জন্য বান্দরবান বিশেষভাবে পরিচিত।

0
Updated: 6 days ago