মঙ্গলকাব্যের কবি নন কে?
A
কানাহরি দত্ত
B
মানিক দত্ত
C
ভারতচন্দ্র
D
দাশু রায়
উত্তরের বিবরণ
দাশরথি রায় ও তাঁর সাহিত্য
-
দাশরথি রায় (১৮০৬–১৮৫৭) একজন স্বভাবকবি এবং পাঁচালিকার (গীতিকাব্যকার)।
-
তিনি সাধারণত ‘দাশু রায়’ নামেও পরিচিত।
-
তাঁর পাঁচালিকাব্যে শুধু ধর্ম ও ভক্তির কথা ছিল না, তিনি তাতে ছন্দের ঝংকার, অনুপ্রাস, হাস্যরস, গান ও সুর মিশিয়ে এক আকর্ষণীয় রূপ দিয়েছিলেন।
-
তাঁর এই বিশেষ ধরনের পাঁচালিই পরিচিত ‘দাশুরায়ের পাঁচালি’ নামে।
-
তাঁর গানগুলো সাধারণত সুরে রচিত এবং টপ্পা ঘরানার গানেও এর প্রভাব আছে।
-
এই ধারার পূর্বসূরি কবিদের মধ্যে গঙ্গানারায়ণ নস্কর অন্যতম।
তাই, দাশরথি রায় ছিলেন পাঁচালিকবি, তিনি মঙ্গলকাব্যের কবি নন।
মঙ্গলকাব্য
-
মঙ্গলকাব্য হল এক ধরনের ধর্মভিত্তিক কাব্য, যেখানে দেব-দেবীর গুণগান করা হয়।
-
মানুষের বিশ্বাস, এই কাব্য পাঠ করলে নিজে ও সমাজের মঙ্গল সাধিত হয়।
-
এই কাব্যের রচনার সময়কাল ১৫শ থেকে ১৮শ শতকের শেষ পর্যন্ত।
-
মঙ্গলকাব্যের মূল দেবতারা হলেন:
✅ মনসা
✅ চণ্ডী
✅ ধর্মঠাকুর -
একটি পূর্ণাঙ্গ মঙ্গলকাব্যে থাকে ৫টি অংশ:
-
বন্দনা
-
আত্মপরিচয়
-
দেবখণ্ড
-
মর্ত্যখণ্ড
-
শ্রুতিফল
-
বাংলা সাহিত্যে প্রায় ৬২ জন মঙ্গলকাব্য রচয়িতা পাওয়া যায়।
তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নামগুলো হল:
➡️ কানাহারি দত্ত
➡️ মানিক দত্ত
➡️ ভারতচন্দ্র
➡️ দ্বিজমাধব
➡️ ঘনরাম চক্রবর্তী
মঙ্গলকাব্যের দুই ধারা
খাঁটি বা লৌকিক মঙ্গলকাব্য
এই ধারায় লোকজ বিশ্বাস ও দেবতার মাহাত্ম্য গুরুত্ব পায়।
উদাহরণ:
-
মনসামঙ্গল
-
চণ্ডীমঙ্গল
-
ধর্মমঙ্গল
-
কালিকামঙ্গল (বিদ্যাসুন্দর)
অন্যান্য: শিবমঙ্গল, ষষ্ঠীমঙ্গল, সূর্যমঙ্গল, শীতলামঙ্গল, রায়মঙ্গল ইত্যাদি।
পৌরাণিক মঙ্গলকাব্য
এগুলো পুরাণ নির্ভর এবং দেব-দেবীর গল্প ঘিরে তৈরি।
উদাহরণ:
-
অন্নদামঙ্গল
-
গৌরীমঙ্গল
-
দুর্গামঙ্গল
-
চণ্ডিকামঙ্গল
-
গঙ্গামঙ্গল
-
ভবানীমঙ্গল
-
কমলামঙ্গল ইত্যাদি।
দাশু রায় বা দাশরথি রায় মঙ্গলকাব্যের কবি ছিলেন না। তিনি পাঁচালি ধারার জনপ্রিয় কবি, যাঁর লেখায় ছিল রস, ছন্দ ও সুরের অপূর্ব মেলবন্ধন।
আর মঙ্গলকাব্য হল ধর্মীয় কাব্যরূপে দেবদেবীর মাহাত্ম্য বর্ণনা করে সমাজের মঙ্গল কামনা করার এক সাহিত্যধারা।
0
Updated: 3 months ago
কবি গানের প্রথম কবি কে?
Created: 2 months ago
A
গোঁজলা পুট [গুই]
B
হরু ঠাকুর
C
ভবানী ঘোষ
D
নিতাই বৈরাগী
গোঁজলা গুঁই
-
গোঁজলা গুঁই ছিলেন ১৮শ শতকের একজন প্রখ্যাত কবিওয়ালা।
-
আঠারো শতকে বাংলায় এক ধরনের সঙ্গীতধর্মী সাহিত্য তৈরি হয়েছিল, যা কবিগান নামে পরিচিত। তখন ‘কবিওয়ালা’ নামের পেশাদার গায়করা এসব গান পরিবেশন করতেন। সাধারণ মানুষ থেকে অভিজাত শ্রেণি—সবারই এই গান শোনার আনন্দ হতো। গোঁজলা গুঁইকে কবিগানের প্রথম গুরু হিসেবে ধরা হয়।
-
তিনি পেশাদার কবিদল তৈরি করে ধনিকদের বাড়িতে অর্থের বিনিময়ে গান গাইতেন।
-
গোঁজলা গুঁই টপ্পা রীতিতে গান রচনা করতেন। উদাহরণ:
-
‘এসো এসো চাঁদ বদনি / এ রসে নিরস করো না ধনি’
-
‘প্রাণ, তোরে হেরিয়ে দুখো দূরে গেলো মোর’
এই গানগুলো নায়ক-নায়িকার কথার আকারে লেখা হয়েছিল, যা টপ্পার বৈশিষ্ট্য বহন করে।
-
-
তাঁর শিষ্যরা—লালু, নন্দলাল, কেষ্টা মুচি, রঘুনাথ দাস ও রামজী—কবিগানে নতুন মাত্রা যোগ করে এই ধারাকে আরও প্রসারিত ও জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন।
উৎস: বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 2 months ago
রূপসী বাংলার কবি-
Created: 5 months ago
A
জসীমউদদীন
B
জীবনানন্দ দাশ
C
কালিদাস রায়
D
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯–১৯৫৪) ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি কবি ও শিক্ষাবিদ। তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার একজন পথিকৃত এবং স্বতন্ত্র কাব্যভাষার স্রষ্টা হিসেবে পরিচিত।
জন্ম ও পারিবারিক পটভূমি
-
জন্ম: ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৯, বরিশাল, ব্রিটিশ ভারত।
-
আদি নিবাস: বিক্রমপুরের গাওপাড়া গ্রাম।
-
পিতা: সত্যানন্দ দাশ – স্কুলশিক্ষক ও সমাজসেবক।
-
মাতা: কুসুমকুমারী দাশ – একজন কবি।
উপাধি ও পরিচিতি
জীবনানন্দ দাশ তাঁর নিঃসঙ্গতা, প্রকৃতিপ্রেম এবং বিমূর্ত ভাবধারার জন্য পরিচিত ছিলেন। তাঁর কিছু পরিচিত উপাধি হলো:
-
ধুসরতার কবি
-
তিমির হননের কবি
-
রূপসী বাংলার কবি
-
নির্জনতার কবি
প্রধান রচনাসমূহ
কাব্যগ্রন্থ:
-
ঝরা পালক (প্রথম কাব্যগ্রন্থ)
-
ধূসর পাণ্ডুলিপি
-
বনলতা সেন
-
মহাপৃথিবী
-
সাতটি তারার তিমির
-
রূপসী বাংলা
-
বেলা অবেলা কালবেলা
উপন্যাস:
-
মাল্যবান
-
সুতীর্থ
প্রবন্ধ:
-
কবিতার কথা
তথ্যসূত্র: বাংলাপিডিয়া; বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর।
0
Updated: 5 months ago
বাংলা সাহিত্যের প্রথম ও নিজস্ব কাহিনীকাব্য হিসেবে কোনটি পরিচিত?
Created: 1 month ago
A
গীতাঞ্জলি
B
বৈষ্ণব পদাবলি
C
মঙ্গলকাব্য
D
চর্যাপদ
মঙ্গলকাব্য মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের একটি বিশেষ ধারা, যা দেবমাহাত্ম্যমূলক সমাজচিত্রভিত্তিক কাহিনীর মাধ্যমে গঠিত। এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম ও নিজস্ব কাহিনীকাব্য হিসেবে পরিচিত। বিশ্বাস করা হতো যে, এই কাব্য পাঠ বা শ্রবণ করলে সকল প্রকার অকল্যাণ দূর হয় এবং সর্ববিধ মঙ্গল লাভ হয়। সেই ধারণা থেকেই এ কাব্যের নামকরণ হয়েছে মঙ্গলকাব্য।
মঙ্গলকাব্যের প্রধান দেবতারা হলেন—
-
মনসা
-
চণ্ডী
-
ধর্মঠাকুর
এদের মধ্যে বিশেষভাবে মনসা ও চণ্ডী দেবীর প্রাধান্য বেশি। এই দেবতাদের কেন্দ্র করে মঙ্গলকাব্যের তিনটি প্রধান ধারা গড়ে উঠেছে—
-
মনসামঙ্গল
-
চণ্ডীমঙ্গল
-
ধর্মমঙ্গল
উৎস:
0
Updated: 1 month ago