পুরাণ সাহিত্যে কতটি লক্ষণের উল্লেখ আছে?
A
৭ টি
B
৬ টি
C
৫ টি
D
৪ টি
উত্তরের বিবরণ
পুরাণের প্রকৃত স্বরূপ বোঝাতে প্রাচীন পণ্ডিতরা এর নির্দিষ্ট লক্ষণ নির্ধারণ করেছেন, যেগুলোকে সম্মিলিতভাবে “পঞ্চলক্ষণ” বলা হয়। গরুড় পুরাণ ও নরদ পুরাণসহ অন্যান্য পুরাণেও এই পাঁচটি বিষয়ের উল্লেখ পাওয়া যায়, যা পুরাণকে অন্য সাহিত্যধারা থেকে পৃথক করেছে।
১. সর্গ – ব্রহ্মার দ্বারা বিশ্বসৃষ্টির বর্ণনা, অর্থাৎ মহাবিশ্বের আদিরূপ সৃষ্টিকাহিনী।
২. প্রতিসর্গ – প্রলয়ের পর মহাবিশ্বের পুনঃসৃষ্টি, যা সৃষ্টির চক্রবৃত্ত ধারণাকে প্রকাশ করে।
৩. বংশ – দেবতা, ঋষি ও রাজাদের বংশাবলি, যা ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার বোঝায়।
৪. মন্বন্তর – প্রতিটি মনুর শাসনকাল ও সেই সময়কার গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি, যা যুগ বা পর্বভিত্তিক ইতিহাস তুলে ধরে।
৫. বংশানুচরিত – রাজবংশের বীর, পুণ্যবান ও খ্যাতনামা পুরুষদের কর্মজীবনের বিবরণ, যা নৈতিকতা ও আদর্শের দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপিত।
এই পাঁচটি লক্ষণের উপস্থিতিই পুরাণকে পূর্ণতা দেয় এবং ধর্ম, ইতিহাস ও দর্শনের সমন্বয়ে এক অনন্য সাহিত্যরূপ সৃষ্টি করে।

0
Updated: 23 hours ago
গদ্যসাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন কোন বেদে পাওয়া যায়?
Created: 1 day ago
A
ঋগ্বেদে
B
যজুর্বেদে
C
সামবেদে
D
ধনুর্বেদে
ঋগ্বেদ হল চার বেদের মধ্যে প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে প্রামাণ্য ধর্মগ্রন্থ, যা প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য ও সংস্কৃতির ভিত্তি স্থাপন করেছে। এতে দেবতা, প্রকৃতি ও মানবজীবনের প্রতি ভক্তি ও দার্শনিক চিন্তার প্রকাশ ঘটেছে।
মূল তথ্যসমূহ:
-
পরিচয়: ঋগ্বেদ হলো প্রাচীনতম বেদ, যা সংস্কৃত ভাষায় রচিত।
-
বিন্যাস: এটি গদ্য ও ছন্দবদ্ধ স্তোত্র দ্বারা গঠিত।
-
বিষয়বস্তু: মূলত দেবতা ও প্রকৃতির প্রতি স্তোত্র, প্রার্থনা ও ভক্তিগীতি সংবলিত।
-
ধর্মীয় গুরুত্ব: এতে অগ্নি, ইন্দ্র, বরুণ, মিত্র, সূর্য প্রভৃতি দেবতাদের উদ্দেশ্যে স্তোত্র রয়েছে।
-
সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্য: ঋগ্বেদে ভক্তিমূলক, দার্শনিক ও সামাজিক চিন্তা প্রকাশ পেয়েছে।
-
গদ্যসাহিত্যের প্রাচীন নিদর্শন: এটি ভারতীয় গদ্য ও সাহিত্যিক রচনার সূচনা হিসেবে গণ্য, কারণ এর ভাব, রূপ ও ভাষা পরবর্তীকালের উপনিষদ ও দর্শনগ্রন্থের ভিত্তি স্থাপন করেছে।

0
Updated: 1 day ago
কোনটি সঠিক?
Created: 1 day ago
A
উৎ+ছাস=উচ্ছাস
B
উৎ+ শ্বাস-উচ্ছ্বাস
C
উৎ+শাস=উৎশাস
D
উছ+শাস=উচ্ছ্বাস
“উৎ” এবং “শ্বাস” — এই দুটি শব্দ যুক্ত হয়ে গঠিত হয় “উচ্ছ্বাস”, যা প্রবল আনন্দ, উল্লাস বা আবেগের প্রকাশ বোঝায়। শব্দটি সংস্কৃত ব্যুৎপত্তিগত নিয়মে গঠিত এবং মানসিক উৎফুল্লতার স্বাভাবিক প্রকাশকে নির্দেশ করে।
মূল তথ্যসমূহ:
-
শব্দগঠন: “উৎ + শ্বাস = উচ্ছ্বাস”।
-
“উৎ” এর অর্থ: উর্ধ্বে, উপরে উঠা, বা প্রকাশ পাওয়া।
-
“শ্বাস” এর অর্থ: নিশ্বাস, প্রাণপ্রবাহ, বা ভিতরের উদ্দীপনা।
-
সমাসফল শব্দ: মিলিত হয়ে বোঝায় আবেগ, আনন্দ বা প্রাণোচ্ছলতার প্রকাশ।
-
অর্থ: আনন্দ, উল্লাস, উচ্ছল ভাব বা আবেগের উত্থান।
-
ব্যবহার: “উচ্ছ্বাসে ভরে উঠল মন”, “তার কণ্ঠে আনন্দের উচ্ছ্বাস” — এ ধরনের বাক্যে ব্যবহৃত হয়।
-
অন্য বিকল্পগুলো: গঠন ও অর্থের নিয়ম অনুসারে সঠিক শব্দসংযোগ তৈরি করে না, তাই সেগুলো ভুল।

0
Updated: 1 day ago
শ্রীমদ্ভগবতগীতার কোন অধ্যায়কে গীতার সার অধ্যায় বলে কর্ণনা করা হয়েছে?
Created: 1 day ago
A
সাংখ্যযোগকে
B
পুরুষোত্তমযোগকে
C
ভক্তি যোগকে
D
বিজ্ঞানযোগকে
শ্রীমদ্ভগবদগীতার দ্বিতীয় অধ্যায় “সাংখ্যযোগ” গীতার মূল দর্শনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত। এটি ৭২টি শ্লোক নিয়ে গঠিত এবং গীতার সারাংশ হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ এখানেই কৃষ্ণ প্রথমবার অর্জুনকে জীবনের, কর্মের ও জ্ঞানের প্রকৃত অর্থ শিক্ষা দেন। প্রথম অধ্যায় “অর্জুন বিষাদযোগ” কেবল প্রেক্ষাপট তৈরি করলেও দ্বিতীয় অধ্যায় থেকেই শুরু হয় গীতার উপদেশধারা।
১. আত্মার অমরত্ব ও তত্ত্বজ্ঞান
-
কৃষ্ণ অর্জুনকে বলেন — “ন জায়তে মৃয়তে বা কদাচিন্ নায়ং ভূত্বা ভবিতা वा ন ভূয়ঃ।” (গীতা ২.২০)
-
এর অর্থ, আত্মা চিরন্তন ও অবিনশ্বর, সে জন্ম নেয় না, মরে না।
-
এই ধারণা গীতার মূল তত্ত্ব— আত্মার অমরত্ব ও চেতনার অখণ্ডতা।
২. কর্মের প্রয়োজন ও কর্তব্যবোধ
-
কৃষ্ণ বলেন — “কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন।” (গীতা ২.৪৭)
-
এখানে বলা হয়েছে, মানুষের কর্তব্য হলো কর্ম করা, কিন্তু ফলের প্রতি আসক্তি ত্যাগ করা উচিত।
-
এই শ্লোক কর্মযোগের ভিত্তি, যেখানে নিঃস্বার্থ কর্মের গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে।
৩. স্থিতপ্রজ্ঞ যোগের শিক্ষা
-
এই অধ্যায়ে “স্থিতপ্রজ্ঞ” মানুষের আদর্শ উপস্থাপন করা হয়েছে।
-
যিনি আনন্দ–দুঃখে সমবৃত্ত, আকাঙ্ক্ষামুক্ত ও স্থিরচিত্ত, তিনিই প্রকৃত জ্ঞানী।
-
এটি আধ্যাত্মিক জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য— সমত্ব ও সংযমের অবস্থান।
৪. পরবর্তী অধ্যায়গুলোর ভিত্তি
-
গীতার পরবর্তী অধ্যায়গুলো যেমন জ্ঞানযোগ, কর্মযোগ, ভক্তিযোগ—সবই দ্বিতীয় অধ্যায়ের শিক্ষার বিস্তার।
-
আচার্যদের মতে, “দ্বিতীয় অধ্যায় গীতার মূলসূত্র, বাকিগুলো তার বিশ্লেষণ।”
৫. আচার্য ও পণ্ডিতদের মতামত
-
আদি শঙ্করাচার্য: “দ্বিতীয় অধ্যায়েই সমগ্র গীতার তত্ত্ব নিহিত।”
-
বাল গঙ্গাধর তিলক: “সাংখ্যযোগ অধ্যায় গীতার মর্মকথা প্রকাশ করেছে।”
-
স্বামী বিবেকানন্দ: “দ্বিতীয় অধ্যায় গীতার সারাংশ—এখানে আত্মা, কর্ম ও সমত্বের শিক্ষা একত্রে মেলে।”
সব মিলিয়ে, শ্রীমদ্ভগবদগীতার দ্বিতীয় অধ্যায় ‘সাংখ্যযোগ’-কেই গীতার সার অধ্যায় বলা হয়, কারণ এতে আত্মা, কর্ম, জ্ঞান ও সমত্ব—এই চারটি মৌলিক তত্ত্ব সংক্ষেপে প্রকাশ পেয়েছে, যা গীতার সমগ্র দর্শনের ভিত্তি।
সঠিক উত্তর: ক) সাংখ্যযোগকে — গীতার সার অধ্যায় বলে কর্ণনা করা হয়েছে।

0
Updated: 1 day ago