প্রধান পুরাণ মোট কতটি?
A
১২ খানা
B
১৮ খানা
C
৮১ খানা
D
২৪ খানা
উত্তরের বিবরণ
হিন্দু ধর্মে ১৮টি প্রধান পুরাণ প্রচলিত, যা ধর্ম, ইতিহাস, নীতি, দর্শন ও সংস্কৃতির এক অমূল্য ভাণ্ডার হিসেবে গণ্য। এই পুরাণসমূহে দেবতা, সৃষ্টি, নৈতিকতা ও মানবজীবনের বিভিন্ন দিক বিশদভাবে আলোচিত হয়েছে। এগুলো সাধারণত তিন শ্রেণিতে বিভক্ত।
-
সৈব পুরাণ: ভগবান শিবকে কেন্দ্র করে রচিত, যেখানে শিবতত্ত্ব, তপস্যা, যোগ ও ভক্তির গুরুত্ব বর্ণিত হয়েছে।
-
প্রধান সৈব পুরাণ: শিব পুরাণ, লিঙ্গ পুরাণ, স্কন্দ পুরাণ, বায়ু পুরাণ, মার্কণ্ডেয় পুরাণ, ব্রহ্মাণ্ড পুরাণ ইত্যাদি।
-
-
বৈষ্ণব পুরাণ: ভগবান বিষ্ণু ও তাঁর অবতারদের উপাসনার ওপর ভিত্তি করে।
-
প্রধান বৈষ্ণব পুরাণ: বিষ্ণু পুরাণ, ভাগবত পুরাণ, নারদ পুরাণ, গরুড় পুরাণ, পদ্ম পুরাণ, বরাহ পুরাণ ইত্যাদি।
-
-
শাক্ত পুরাণ: দেবী শক্তি বা আদ্যাশক্তির উপাসনার সঙ্গে সম্পর্কিত, যেখানে শক্তিতত্ত্ব, সৃষ্টি ও প্রলয়ের ধারণা আলোচিত।
-
প্রধান শাক্ত পুরাণ: দেবী ভাগবত পুরাণ, কালিকা পুরাণ, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ, শাণ্ডিল্য পুরাণ, শিব পুরাণ ইত্যাদি।
-
এই ১৮টি পুরাণ হিন্দু ধর্মের ধর্মনীতি, আচার, পৌরাণিক ইতিহাস, জ্যোতিষ, সৃষ্টিতত্ত্ব ও দর্শন—সব ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা ও জ্ঞান প্রদান করে, যা আজও ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক জীবন্ত উৎস হিসেবে বিদ্যমান।

0
Updated: 1 day ago
পুরাণ সাহিত্যে কতটি লক্ষণের উল্লেখ আছে?
Created: 1 day ago
A
৭ টি
B
৬ টি
C
৫ টি
D
৪ টি
পুরাণের প্রকৃত স্বরূপ বোঝাতে প্রাচীন পণ্ডিতরা এর নির্দিষ্ট লক্ষণ নির্ধারণ করেছেন, যেগুলোকে সম্মিলিতভাবে “পঞ্চলক্ষণ” বলা হয়। গরুড় পুরাণ ও নরদ পুরাণসহ অন্যান্য পুরাণেও এই পাঁচটি বিষয়ের উল্লেখ পাওয়া যায়, যা পুরাণকে অন্য সাহিত্যধারা থেকে পৃথক করেছে।
১. সর্গ – ব্রহ্মার দ্বারা বিশ্বসৃষ্টির বর্ণনা, অর্থাৎ মহাবিশ্বের আদিরূপ সৃষ্টিকাহিনী।
২. প্রতিসর্গ – প্রলয়ের পর মহাবিশ্বের পুনঃসৃষ্টি, যা সৃষ্টির চক্রবৃত্ত ধারণাকে প্রকাশ করে।
৩. বংশ – দেবতা, ঋষি ও রাজাদের বংশাবলি, যা ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার বোঝায়।
৪. মন্বন্তর – প্রতিটি মনুর শাসনকাল ও সেই সময়কার গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি, যা যুগ বা পর্বভিত্তিক ইতিহাস তুলে ধরে।
৫. বংশানুচরিত – রাজবংশের বীর, পুণ্যবান ও খ্যাতনামা পুরুষদের কর্মজীবনের বিবরণ, যা নৈতিকতা ও আদর্শের দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপিত।
এই পাঁচটি লক্ষণের উপস্থিতিই পুরাণকে পূর্ণতা দেয় এবং ধর্ম, ইতিহাস ও দর্শনের সমন্বয়ে এক অনন্য সাহিত্যরূপ সৃষ্টি করে।

0
Updated: 1 day ago
নিচের কোন দুটি কালিদাসের রচিত?
Created: 1 day ago
A
মালবিকাগ্নিমিত্র ও পঞ্চতন্ত্র
B
সৌন্দরনন্দ ও বজ্রসূচী
C
কর্ণভার ও বালচরিত
D
অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ ও মেঘদূতম্
কালিদাস ছিলেন প্রাচীন ভারতের এক অমর প্রতিভা, যিনি সংস্কৃত ভাষায় কাব্য ও নাটকের মাধ্যমে বিশ্বসাহিত্যে অমরত্ব লাভ করেছেন। তাঁর রচনাগুলো প্রাচীন ভারতীয় জীবন, প্রকৃতি, প্রেম ও আধ্যাত্মিক ভাবনা দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত।
১. অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ – এটি একটি বিখ্যাত নাটক, যেখানে রাজা দুষ্যন্ত ও শকুন্তলার প্রেমকাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। এতে মানব-প্রেম, বেদনা ও পুনর্মিলনের অপূর্ব সমন্বয় দেখা যায়।
২. মেঘদূত – এটি একটি খণ্ডকাব্য, যেখানে নির্বাসিত এক যক্ষ তার প্রিয়ার কাছে বার্তা পাঠানোর জন্য মেঘকে দূত হিসেবে কল্পনা করে। প্রকৃতি ও প্রেমের অনুপম বর্ণনা এই কাব্যের মূল সৌন্দর্য।
৩. রঘুবংশম্ – একটি মহাকাব্য, যেখানে রঘুবংশের রাজাদের বংশধারা ও তাঁদের বীরত্বের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।
৪. কুমারসম্ভবম্ – আরেকটি মহাকাব্য, যা পার্বতী ও শিবের বিবাহ এবং তাঁদের পুত্র কার্তিকেয়ের জন্মকথা নিয়ে রচিত।
৫. তাঁর রচনায় প্রকৃতি, প্রেম, ধর্ম ও নন্দনতত্ত্বের সুষমা প্রকাশ পেয়েছে, যা তাঁকে ভারতীয় সাহিত্যজগতের শ্রেষ্ঠ কবিদের অন্যতম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

0
Updated: 1 day ago
শ্রীমদ্ভগবতগীতার কোন অধ্যায়কে গীতার সার অধ্যায় বলে কর্ণনা করা হয়েছে?
Created: 1 day ago
A
সাংখ্যযোগকে
B
পুরুষোত্তমযোগকে
C
ভক্তি যোগকে
D
বিজ্ঞানযোগকে
শ্রীমদ্ভগবদগীতার দ্বিতীয় অধ্যায় “সাংখ্যযোগ” গীতার মূল দর্শনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত। এটি ৭২টি শ্লোক নিয়ে গঠিত এবং গীতার সারাংশ হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ এখানেই কৃষ্ণ প্রথমবার অর্জুনকে জীবনের, কর্মের ও জ্ঞানের প্রকৃত অর্থ শিক্ষা দেন। প্রথম অধ্যায় “অর্জুন বিষাদযোগ” কেবল প্রেক্ষাপট তৈরি করলেও দ্বিতীয় অধ্যায় থেকেই শুরু হয় গীতার উপদেশধারা।
১. আত্মার অমরত্ব ও তত্ত্বজ্ঞান
-
কৃষ্ণ অর্জুনকে বলেন — “ন জায়তে মৃয়তে বা কদাচিন্ নায়ং ভূত্বা ভবিতা वा ন ভূয়ঃ।” (গীতা ২.২০)
-
এর অর্থ, আত্মা চিরন্তন ও অবিনশ্বর, সে জন্ম নেয় না, মরে না।
-
এই ধারণা গীতার মূল তত্ত্ব— আত্মার অমরত্ব ও চেতনার অখণ্ডতা।
২. কর্মের প্রয়োজন ও কর্তব্যবোধ
-
কৃষ্ণ বলেন — “কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন।” (গীতা ২.৪৭)
-
এখানে বলা হয়েছে, মানুষের কর্তব্য হলো কর্ম করা, কিন্তু ফলের প্রতি আসক্তি ত্যাগ করা উচিত।
-
এই শ্লোক কর্মযোগের ভিত্তি, যেখানে নিঃস্বার্থ কর্মের গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে।
৩. স্থিতপ্রজ্ঞ যোগের শিক্ষা
-
এই অধ্যায়ে “স্থিতপ্রজ্ঞ” মানুষের আদর্শ উপস্থাপন করা হয়েছে।
-
যিনি আনন্দ–দুঃখে সমবৃত্ত, আকাঙ্ক্ষামুক্ত ও স্থিরচিত্ত, তিনিই প্রকৃত জ্ঞানী।
-
এটি আধ্যাত্মিক জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য— সমত্ব ও সংযমের অবস্থান।
৪. পরবর্তী অধ্যায়গুলোর ভিত্তি
-
গীতার পরবর্তী অধ্যায়গুলো যেমন জ্ঞানযোগ, কর্মযোগ, ভক্তিযোগ—সবই দ্বিতীয় অধ্যায়ের শিক্ষার বিস্তার।
-
আচার্যদের মতে, “দ্বিতীয় অধ্যায় গীতার মূলসূত্র, বাকিগুলো তার বিশ্লেষণ।”
৫. আচার্য ও পণ্ডিতদের মতামত
-
আদি শঙ্করাচার্য: “দ্বিতীয় অধ্যায়েই সমগ্র গীতার তত্ত্ব নিহিত।”
-
বাল গঙ্গাধর তিলক: “সাংখ্যযোগ অধ্যায় গীতার মর্মকথা প্রকাশ করেছে।”
-
স্বামী বিবেকানন্দ: “দ্বিতীয় অধ্যায় গীতার সারাংশ—এখানে আত্মা, কর্ম ও সমত্বের শিক্ষা একত্রে মেলে।”
সব মিলিয়ে, শ্রীমদ্ভগবদগীতার দ্বিতীয় অধ্যায় ‘সাংখ্যযোগ’-কেই গীতার সার অধ্যায় বলা হয়, কারণ এতে আত্মা, কর্ম, জ্ঞান ও সমত্ব—এই চারটি মৌলিক তত্ত্ব সংক্ষেপে প্রকাশ পেয়েছে, যা গীতার সমগ্র দর্শনের ভিত্তি।
সঠিক উত্তর: ক) সাংখ্যযোগকে — গীতার সার অধ্যায় বলে কর্ণনা করা হয়েছে।

0
Updated: 1 day ago