পঞ্চতন্ত্র কে রচনা করেন?
A
মাঘ
B
ভাস
C
বিষ্ণুশর্মা
D
রাজশেখর বসু
উত্তরের বিবরণ
‘পঞ্চতন্ত্র’ (Panchatantra) প্রাচীন ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নীতিগ্রন্থ, যার রচয়িতা হলেন আচার্য বিষ্ণুশর্মা (Viṣṇuśarma)। এটি নীতিকথা বা উপকথার মাধ্যমে মানবজীবনের বাস্তব শিক্ষা, বুদ্ধি ও রাজনীতি ব্যাখ্যা করে।
-
বিষ্ণুশর্মা ছিলেন একজন জ্ঞানী ও অভিজ্ঞ ব্রাহ্মণ, যিনি নীতি ও রাজনীতির শিক্ষক হিসেবে পরিচিত।
-
কিংবদন্তি অনুসারে, রাজা অমরশক্তির তিন অজ্ঞ ও মূর্খ পুত্রকে শিক্ষিত ও বুদ্ধিমান করে তোলার জন্যই বিষ্ণুশর্মা এই গ্রন্থ রচনা করেন।
-
তিনি শিক্ষা প্রদানের মাধ্যম হিসেবে গল্প, উপকথা ও প্রাণী চরিত্র ব্যবহার করেন, যাতে শিক্ষাগুলি সহজে মনে রাখা যায়।
-
‘পঞ্চতন্ত্র’ মূলত পাঁচটি তন্ত্র বা বিভাগে বিভক্ত— প্রতিটি অংশে জীবনের নির্দিষ্ট নীতি বা কৌশল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
-
গ্রন্থটির মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজনীতি, প্রজ্ঞা, কূটনীতি, নৈতিকতা ও বাস্তবজীবনের জ্ঞান প্রদান।
-
এটি কেবল সংস্কৃত সাহিত্যেই নয়, বিশ্বের নানা ভাষায় অনূদিত হয়ে মানবজীবনের এক সর্বজনীন শিক্ষাগ্রন্থে পরিণত হয়েছে।
অতএব, ‘পঞ্চতন্ত্র’-এর রচয়িতা বিষ্ণুশর্মা, যিনি গল্পের মাধ্যমে জীবনের গভীর নীতিবোধ ও বাস্তব শিক্ষা উপস্থাপন করেছেন।

0
Updated: 1 day ago
শ্রীমদ্ভগবতগীতার কোন অধ্যায়কে গীতার সার অধ্যায় বলে কর্ণনা করা হয়েছে?
Created: 1 day ago
A
সাংখ্যযোগকে
B
পুরুষোত্তমযোগকে
C
ভক্তি যোগকে
D
বিজ্ঞানযোগকে
শ্রীমদ্ভগবদগীতার দ্বিতীয় অধ্যায় “সাংখ্যযোগ” গীতার মূল দর্শনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত। এটি ৭২টি শ্লোক নিয়ে গঠিত এবং গীতার সারাংশ হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ এখানেই কৃষ্ণ প্রথমবার অর্জুনকে জীবনের, কর্মের ও জ্ঞানের প্রকৃত অর্থ শিক্ষা দেন। প্রথম অধ্যায় “অর্জুন বিষাদযোগ” কেবল প্রেক্ষাপট তৈরি করলেও দ্বিতীয় অধ্যায় থেকেই শুরু হয় গীতার উপদেশধারা।
১. আত্মার অমরত্ব ও তত্ত্বজ্ঞান
-
কৃষ্ণ অর্জুনকে বলেন — “ন জায়তে মৃয়তে বা কদাচিন্ নায়ং ভূত্বা ভবিতা वा ন ভূয়ঃ।” (গীতা ২.২০)
-
এর অর্থ, আত্মা চিরন্তন ও অবিনশ্বর, সে জন্ম নেয় না, মরে না।
-
এই ধারণা গীতার মূল তত্ত্ব— আত্মার অমরত্ব ও চেতনার অখণ্ডতা।
২. কর্মের প্রয়োজন ও কর্তব্যবোধ
-
কৃষ্ণ বলেন — “কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন।” (গীতা ২.৪৭)
-
এখানে বলা হয়েছে, মানুষের কর্তব্য হলো কর্ম করা, কিন্তু ফলের প্রতি আসক্তি ত্যাগ করা উচিত।
-
এই শ্লোক কর্মযোগের ভিত্তি, যেখানে নিঃস্বার্থ কর্মের গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে।
৩. স্থিতপ্রজ্ঞ যোগের শিক্ষা
-
এই অধ্যায়ে “স্থিতপ্রজ্ঞ” মানুষের আদর্শ উপস্থাপন করা হয়েছে।
-
যিনি আনন্দ–দুঃখে সমবৃত্ত, আকাঙ্ক্ষামুক্ত ও স্থিরচিত্ত, তিনিই প্রকৃত জ্ঞানী।
-
এটি আধ্যাত্মিক জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য— সমত্ব ও সংযমের অবস্থান।
৪. পরবর্তী অধ্যায়গুলোর ভিত্তি
-
গীতার পরবর্তী অধ্যায়গুলো যেমন জ্ঞানযোগ, কর্মযোগ, ভক্তিযোগ—সবই দ্বিতীয় অধ্যায়ের শিক্ষার বিস্তার।
-
আচার্যদের মতে, “দ্বিতীয় অধ্যায় গীতার মূলসূত্র, বাকিগুলো তার বিশ্লেষণ।”
৫. আচার্য ও পণ্ডিতদের মতামত
-
আদি শঙ্করাচার্য: “দ্বিতীয় অধ্যায়েই সমগ্র গীতার তত্ত্ব নিহিত।”
-
বাল গঙ্গাধর তিলক: “সাংখ্যযোগ অধ্যায় গীতার মর্মকথা প্রকাশ করেছে।”
-
স্বামী বিবেকানন্দ: “দ্বিতীয় অধ্যায় গীতার সারাংশ—এখানে আত্মা, কর্ম ও সমত্বের শিক্ষা একত্রে মেলে।”
সব মিলিয়ে, শ্রীমদ্ভগবদগীতার দ্বিতীয় অধ্যায় ‘সাংখ্যযোগ’-কেই গীতার সার অধ্যায় বলা হয়, কারণ এতে আত্মা, কর্ম, জ্ঞান ও সমত্ব—এই চারটি মৌলিক তত্ত্ব সংক্ষেপে প্রকাশ পেয়েছে, যা গীতার সমগ্র দর্শনের ভিত্তি।
সঠিক উত্তর: ক) সাংখ্যযোগকে — গীতার সার অধ্যায় বলে কর্ণনা করা হয়েছে।

0
Updated: 1 day ago
উপনিষদের প্রধান বিষয়বস্তু কি?
Created: 1 day ago
A
জ্যোতিষ
B
আত্মতত্ত্ব
C
ব্রহ্মবিদ্যা
D
যজ্ঞবিদ্যা
উপনিষদ হলো প্রাচীন ভারতীয় দার্শনিক ও আধ্যাত্মিক গ্রন্থসমূহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যার মূল উদ্দেশ্য আত্মা ও ব্রহ্মের সম্পর্ক উদ্ঘাটন এবং আত্মজ্ঞান অর্জনের পথ নির্দেশ করা। এগুলো বেদের অন্তিম অংশ হিসেবে ‘বেদান্ত’ নামেও পরিচিত।
-
উপনিষদে আত্মা (ব্যক্তিগত সত্তা) ও ব্রহ্ম (সর্বজনীন সত্তা)-এর ঐক্য নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে।
-
এর মূল লক্ষ্য মোক্ষ বা মুক্তি, যা আত্ম-জ্ঞান ও ব্রহ্মজ্ঞান দ্বারা লাভ করা সম্ভব বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
-
এতে ধ্যান, তপস্যা, মনঃসংযম ও জ্ঞানের মাধ্যমে সত্য অনুধাবনের পথ নির্দেশ করা হয়েছে।
-
উপনিষদগুলোর ভাষা মূলত রূপক, সংলাপ ও দার্শনিক বিশ্লেষণমূলক, যা চিন্তাশীল পাঠককে আত্মবিশ্লেষণে উদ্বুদ্ধ করে।
-
যদিও জ্যোতিষ বা যজ্ঞবিদ্যার মতো বিষয় আংশিকভাবে উল্লেখিত, তবে মূল কেন্দ্রবিন্দু আত্মতত্ত্ব বা আত্মদর্শন।
-
এ কারণে উপনিষদকে ভারতীয় দর্শনের ভিত্তি এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানের শ্রেষ্ঠ উৎস হিসেবে গণ্য করা হয়।

0
Updated: 1 day ago
পঞ্চমবেদ বলা হয় কাকে?
Created: 1 day ago
A
ঋকবেদকে
B
শ্রীচণ্ডীকে
C
মহাভারতকে
D
উপনিষদকে
মহাভারতকে প্রায়ই ‘পঞ্চম বেদ’ বলা হয়, কারণ এটি কেবল একটি মহাকাব্য নয়, বরং মানবজীবনের ধর্ম, নীতি ও সমাজব্যবস্থার দিকনির্দেশও প্রদান করে। চার বেদের পর এটিকে আধ্যাত্মিক ও নৈতিক শিক্ষার উৎস হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
-
মহাভারত প্রাচীন ভারতের এক বিশাল মহাকাব্য, যা ব্যাসদেব রচনা করেন।
-
এতে ধর্ম, নীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি ও মানবজীবনের আচরণবিধি বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে।
-
চারটি বেদ (ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ, সামবেদ, অথর্ববেদ) পরবর্তীকালে এটি আধ্যাত্মিক জ্ঞানের সম্পূরক হিসেবে স্বীকৃত হয়।
-
মহাভারতের মাধ্যমে কর্ম, জ্ঞান ও ভক্তির সমন্বয় ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
-
এতে ‘গীতা’-র মতো অনন্য দর্শনমূলক অংশ রয়েছে, যা নৈতিক ও দার্শনিক শিক্ষা প্রদান করে।
-
এ কারণে প্রাচীন ভারতীয় ঐতিহ্যে এটি ‘পঞ্চম বেদ’ নামে পরিচিতি পেয়েছে।

0
Updated: 1 day ago