শ্রীমদ্ভগবদগীতা মহাভারতের কোন পর্বের অন্তর্গত?
A
শান্তিপর্ব
B
দ্রোন পর্ব
C
স্ত্রীপর্ব
D
ভীষ্মপর্ব
উত্তরের বিবরণ
শ্রীমদ্ভগবদগীতা মহাভারতের ভীষ্মপর্ব-এর অন্তর্গত, যা মহাকাব্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত। এতে যুদ্ধক্ষেত্রে অর্জুনের মানসিক দ্বন্দ্ব ও শ্রীকৃষ্ণের উপদেশের মাধ্যমে মানবজীবনের ধর্ম, কর্ম ও জ্ঞানের দার্শনিক তাৎপর্য প্রকাশ পেয়েছে।
১. অবস্থান: মহাভারতের মোট ১৮টি পর্বের মধ্যে গীতা অবস্থিত ভীষ্মপর্বের ২৫তম থেকে ৪২তম অধ্যায় পর্যন্ত। মোট অধ্যায়সংখ্যা ১৮।
২. প্রেক্ষাপট: কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সূচনালগ্নে অর্জুন যখন আত্মীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে মানসিকভাবে অক্ষম হন, তখন শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে জ্ঞান, ভক্তি ও কর্মযোগের মর্ম বোঝান।
৩. বিষয়বস্তু:
-
কর্মযোগ: কর্মে আসক্তিহীন থেকে কর্তব্য সম্পাদনের শিক্ষা।
-
জ্ঞানযোগ: আত্মা ও পরমাত্মার জ্ঞানের ব্যাখ্যা।
-
ভক্তিযোগ: ঈশ্বরপ্রেম ও আত্মসমর্পণের মাধ্যমে মুক্তিলাভ।
৪. ধর্মীয় গুরুত্ব: এই পর্বেই শ্রীকৃষ্ণ জীবনের সর্বোচ্চ সত্য—কর্ম, জ্ঞান ও ভক্তির সমন্বিত পথ—প্রকাশ করেছেন, যা পরবর্তীতে “শ্রীমদ্ভগবদগীতা” নামে স্বতন্ত্র গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
৫. উপসংহার: অতএব, ভীষ্মপর্ব-ই সেই অধ্যায় যেখানে গীতার আদি সংলাপ সংঘটিত হয়, এবং এখানেই মানবজীবনের চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা হিসেবে গীতার দর্শন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

0
Updated: 1 day ago
'নান্দী' কি?
Created: 1 day ago
A
নাটকের প্রারম্ভে উচ্চারিত মঙ্গলসূচক শ্লোক
B
দেব বন্দনা
C
গীতবাদ্যাদি ক্রিয়া
D
নাটকের সমাপ্তি
প্রাচীন ভারতীয় নাট্যশাস্ত্রে “নান্দী” হলো নাটকের সূচনায় উচ্চারিত এক মঙ্গলসূচক শ্লোক, যা নাটকের শুভারম্ভের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। এটি সাধারণত দেবতা, গুরু বা দর্শকদের প্রতি সম্ভাষণ ও আশীর্বাদসূচক প্রার্থনা হিসেবে পাঠ করা হয়।
-
উদ্দেশ্য: নাটকের শুরুতে দেবতাদের কৃপা প্রার্থনা এবং মঞ্চাভিনয়ের সাফল্যের জন্য শুভাশিস প্রার্থনা করা।
-
রূপ ও বিষয়: নান্দী শ্লোক সাধারণত ছন্দোবদ্ধ ও অলঙ্কারপূর্ণ, যেখানে ঈশ্বর বা দেবতার গুণগান করা হয়।
-
অর্থবোধ: এতে নাটকের মূল ভাব বা থিমের ইঙ্গিতও অনেক সময় নিহিত থাকে।
-
নাট্যিক তাৎপর্য: নান্দী কেবল মঙ্গল কামনা নয়; এটি নাটকের আধ্যাত্মিক ও নান্দনিক প্রস্তাবনা হিসেবেও কাজ করে, যা নাটকের আবহ ও গাম্ভীর্য রচনা করে।
-
পরম্পরা: ভারতীয় নাট্যশাস্ত্রকার ভারত মুনি তাঁর “নাট্যশাস্ত্র”-এ নান্দীর গুরুত্ব উল্লেখ করেছেন, যা পরবর্তীকালে প্রায় সব সংস্কৃত নাট্যকার— যেমন ভাস, কালিদাস, শূদ্রক, ভট্টনারায়ণ প্রমুখ— অনুসরণ করেছেন।
অতএব, নান্দী নাটকের সূচনায় ব্যবহৃত এমন একটি মঙ্গলসূচক শ্লোক, যা নাটকের আধ্যাত্মিক সূচনা ও সৌন্দর্যের ভিত্তি রচনা করে।

0
Updated: 1 day ago
শকুন্তলা নাটকে শকুন্ত শব্দের অর্থ কি?
Created: 1 day ago
A
পাখি
B
শৃগাল
C
শকুনপাখি
D
কুন্তল
কালিদাসের ‘অভিজ্ঞান শকুন্তল’ নাটকে “শকুন্ত” শব্দটি এসেছে সংস্কৃত “Śakunta” থেকে, যার অর্থ পাখি। এই নামের মাধ্যমে চরিত্রের জন্ম ও পরিবেশের সঙ্গে এক সুন্দর প্রতীকী সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে।
-
“শকুন্তলা” শব্দের আক্ষরিক অর্থ — “যিনি শকুন্ত (পাখি) দ্বারা লালিত”।
-
জন্মের পর শকুন্ত মুনি ও বনের পাখিরা তাঁকে আশ্রয় ও স্নেহ দিয়ে লালন করেছিলেন।
-
তাই নাটকের নায়িকার নাম হয়েছে “শকুন্তলা”, অর্থাৎ পাখিদের স্নেহে বেড়ে ওঠা এক কন্যা।
-
নাটকীয় দৃষ্টিতে, নামটি প্রকৃতি, মমতা ও নির্জনতার প্রতীক— বনজীবনের কোমলতার সঙ্গে চরিত্রের মানসিক জগতকে যুক্ত করে।
-
ভুল বিকল্পসমূহের ব্যাখ্যা:
-
গ) কুন্তল শব্দটি চুল বা কেশের অর্থে ব্যবহৃত হয়, শকুন্তলার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
-
খ) শৃগাল (শিয়াল) বা ঘ) শকুনপাখি শব্দের ধ্বনিগত মিল থাকলেও “শকুন্ত” শব্দের প্রকৃত অর্থ পাখি, যা সম্পূর্ণ ভিন্ন তাৎপর্য বহন করে।
-

0
Updated: 1 day ago
যুধিষ্ঠির মহারাজ দুর্যোধনের রাজ্যশাসন অবস্থা জানার জন্য কাকে প্রেরণ করেছিলেন?
Created: 1 day ago
A
অর্জুনকে
B
শিবকে
C
বনেচরকে
D
ভীমকে
মহাভারতের উদ্যোগ পর্বে যুদ্ধের পূর্বে যুধিষ্ঠির দুর্যোধনের রাজ্যনীতি ও প্রশাসনিক অবস্থা জানার জন্য তাঁর এক বিশ্বস্ত গুপ্তচর বনেচরকে হস্তিনাপুরে পাঠান। এই ঘটনার মাধ্যমে যুধিষ্ঠিরের শান্তিপ্রিয় স্বভাব ও কূটনৈতিক দূরদর্শিতা প্রকাশ পায়।
-
যুধিষ্ঠিরের উদ্দেশ্য ছিল দুর্যোধনের রাজনৈতিক মানসিকতা ও রাজ্যের অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত সংবাদ সংগ্রহ করা।
-
বনেচর ছিলেন যুধিষ্ঠিরের একজন বিশ্বস্ত গুপ্তচর ও দূত, যিনি রাজদরবারে প্রবেশ করে পরিস্থিতির সঠিক খবর নিয়ে ফিরে আসেন।
-
এই ঘটনা বর্ণিত হয়েছে মহাভারত, উদ্যোগ পর্বে (Mahabharata, Udyoga Parva), যেখানে যুদ্ধের পূর্ববর্তী কূটনৈতিক আলোচনাগুলি বিশদভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।
-
যুধিষ্ঠির শুরুতে যুদ্ধ চাননি; তিনি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজতে চেয়েছিলেন। তাই প্রথমে তিনি বনেচরকে তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব দেন।
-
এই ঘটনা প্রমাণ করে, যুধিষ্ঠির শুধু ধর্মপরায়ণ নন, বরং রাজনৈতিক বিচক্ষণতা ও কূটনৈতিক প্রজ্ঞাতেও তিনি সমানভাবে দক্ষ ছিলেন।

0
Updated: 1 day ago