গীতা এর কোন অধ্যায়ে সর্বাধিক শ্লোক রয়েছে?
A
প্রথম অধ্যায়
B
দ্বিতীয় অধ্যায়
C
দ্বাদশ অধ্যায়
D
অষ্টাদশ অধ্যায়
উত্তরের বিবরণ
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা মোট ১৮টি অধ্যায় নিয়ে গঠিত, যেখানে প্রতিটি অধ্যায় আলাদা যোগ বা দর্শনব্যাখ্যায় নিবেদিত। এর মধ্যে অষ্টাদশ অধ্যায়, অর্থাৎ “মোক্ষসংন্যাস যোগ”, সবচেয়ে দীর্ঘ এবং এতে ৭৮টি শ্লোক রয়েছে।
-
অষ্টাদশ অধ্যায়ে ভগবান কৃষ্ণ অর্জুনকে সংন্যাস, কর্ম, ভক্তি ও মোক্ষের দর্শন বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন।
-
এখানে মানবজীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য— মোক্ষ বা মুক্তি, এবং তা অর্জনের উপায়— কর্মযোগ, জ্ঞানযোগ ও ভক্তিযোগের সমন্বয় আকারে উপস্থাপিত হয়েছে।
-
অধ্যায়টি গীতার উপসংহারমূলক অংশ, যেখানে সমগ্র শিক্ষার সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়েছে।
-
বিষয়বস্তু বিস্তৃত ও দার্শনিকভাবে গভীর হওয়ায়, এ অধ্যায়ের শ্লোকসংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
তুলনামূলকভাবে কয়েকটি অধ্যায়ের শ্লোক সংখ্যা:
-
প্রথম অধ্যায়: ৪৭টি — যুদ্ধের সূচনা ও অর্জুনের মানসিক দ্বন্দ্ব
-
দ্বিতীয় অধ্যায়: ৭০টি — আত্মা, কর্ম ও জীবনের মৌলিক তত্ত্ব
-
দ্বাদশ অধ্যায়: ২০টি — ভক্তিযোগের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা
-
অষ্টাদশ অধ্যায়: ৭৮টি — সংন্যাস, ভক্তি ও মোক্ষের সর্বাধিক বিশদ আলোচনা
অতএব, গীতার মধ্যে অষ্টাদশ অধ্যায়েই সর্বাধিক শ্লোক রয়েছে, যা গীতার সমাপনী ও সর্বাধিক দার্শনিক অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত।

0
Updated: 1 day ago
'মেঘদূতম্' কাব্যের পূর্বমেঘে কি বিষয়ের বর্ণনা করা হয়েছে?
Created: 1 day ago
A
অলকাপুরীর
B
মেঘের যাত্রাপথের
C
যক্ষপত্নীর বিরহদশা
D
যক্ষপত্নীর সাথে মিলনের
কালিদাসের ‘মেঘদূত’ কাব্যটি একটি শ্রেষ্ঠ কাব্যিক কল্পনাপ্রসূত রচনা, যা দুই ভাগে বিভক্ত— পূর্বমেঘ (Purvamegha) ও উত্তরমেঘ (Uttaramegha)। এই দুই অংশে কবি অনুভূতি ও প্রকৃতিবর্ণনার এক অপূর্ব সমন্বয় ঘটিয়েছেন।
-
পূর্বমেঘে কবি নির্বাসিত যক্ষের পক্ষ থেকে মেঘকে দূতের মতো যাত্রার নির্দেশ দেন।
-
এখানে মূলত মেঘের যাত্রাপথের বর্ণনা — অর্থাৎ পর্বত, নদী, বন, গ্রাম, নগর, প্রাসাদ ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের ক্রমবিন্যাস — অত্যন্ত কাব্যিকভাবে উপস্থাপিত।
-
কবি যেন মেঘের জন্য এক মানচিত্র এঁকেছেন, যাতে সে সঠিক পথে যক্ষিণীর কাছে পৌঁছাতে পারে।
-
এই অংশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ভূগোল ও শিল্পকল্পনা একত্রে মিলিত হয়েছে।
-
অন্যদিকে, উত্তরমেঘে যক্ষের প্রিয়ার স্মৃতি, বেদনা ও অন্তরঙ্গ ভাব প্রধান বিষয় হয়ে ওঠে।
-
ফলে বলা যায়, ‘পূর্বমেঘ’-এর মুখ্য বিষয় হলো মেঘের যাত্রাপথের বর্ণনা, আর ‘উত্তরমেঘ’-এর মূল ভাব প্রেম ও বিরহের আবেগ।
এইভাবে, কালিদাস প্রকৃতি ও প্রেমের সংলগ্নতার মাধ্যমে ‘মেঘদূত’-কে এক অনন্য রোমান্টিক ও দার্শনিক উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন।

0
Updated: 1 day ago
"ব্রহ্মসত্য জগৎ মিথ্যা" এই শিক্ষা কোন দর্শনে উল্লেখ আছে?
Created: 1 day ago
A
জৈন দর্শনে
B
ভারতীয় দর্শনে
C
বৌদ্ধদর্শনে
D
চার্বাক দর্শনে
এই উক্তিটি আদি শংকরাচার্যের অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের কেন্দ্রীয় তত্ত্ব, যা উপনিষদসমূহের মূল ভাবকে সংক্ষেপে প্রকাশ করে। এতে বলা হয়েছে, ব্রহ্মই একমাত্র চিরন্তন সত্য, জগৎ পরিবর্তনশীল ও মায়াময়, আর জীবাত্মা ও পরমাত্মা মূলত অভিন্ন।
-
ব্রহ্ম সত্য: ব্রহ্ম মানে সর্বব্যাপী, চিরন্তন ও অপরিবর্তনশীল চৈতন্য। এটি কখনও পরিবর্তিত হয় না এবং সর্বত্র বিরাজমান।
-
জগৎ মিথ্যা: “মিথ্যা” অর্থ এখানে অস্তিত্বহীন নয়, বরং অস্থায়ী বা পরিবর্তনশীল। জগৎ মায়ার দ্বারা আচ্ছাদিত, তাই এটি পরম সত্য নয়।
-
জীবো ব্রহ্মৈব নাপরঃ: ব্যক্তি আত্মা ও পরমাত্মা একই — তাদের মধ্যে কোনো প্রকৃত ভেদ নেই। এটাই অদ্বৈত (দ্বৈত নয়) ভাবের মূল।
-
উপনিষদীয় সূত্র: বৃহদারণ্যক উপনিষদে “অহম্ ব্রহ্মাস্মি” (আমি ব্রহ্ম), ছান্দোগ্যে “তত্ত্বমসি” (তুই সেই ব্রহ্ম), ও মাণ্ডূক্যে জগৎকে মায়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
-
শংকরভাষ্য ব্যাখ্যা: “যা পরিবর্তনশীল, তা মিথ্যা; যা অপরিবর্তনশীল, তা সত্য — সেই সত্য ব্রহ্ম।”
-
অন্যান্য দর্শনের পার্থক্য:
-
চার্বাক: শুধু ইহজগৎ সত্য, ব্রহ্ম বা পরলোক অস্বীকার।
-
বৌদ্ধ: অনিত্যতা ও অনাত্মবাদে বিশ্বাস, ব্রহ্মধারণা অনুপস্থিত।
-
জৈন: বহু বাস্তবতার স্বীকৃতি, আংশিকভাবে ভিন্ন।
-
অদ্বৈত বেদান্ত: ব্রহ্ম একমাত্র সত্য — এখানেই উক্তিটির উৎপত্তি।
-
-
উপসংহার: এই তত্ত্ব মুক্তির ধারণা ব্যাখ্যা করে — যখন মানুষ আত্মা ও ব্রহ্মের ঐক্য উপলব্ধি করে, তখনই সে পরম জ্ঞান ও মুক্তি লাভ করে।

0
Updated: 1 day ago
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার দশম অধ্যায়ের নাম কি?
Created: 1 day ago
A
জ্ঞানযোগ
B
বিভূতিযোগ
C
অভ্যাসযোগ
D
সাংখ্যযোগ
ভগবদ্গীতার দশম অধ্যায় “বিভূতিযোগ” নামে পরিচিত, যেখানে শ্রীকৃষ্ণ তাঁর মহিমা, ঐশ্বর্য ও সর্বব্যাপী শক্তির প্রকাশ ব্যাখ্যা করেছেন। এই অধ্যায় ঈশ্বরের সর্বত্র বিরাজমান রূপের দার্শনিক ব্যাখ্যা ও ভক্তির গভীর তাৎপর্য তুলে ধরে।
১. অধ্যায়ের মূল বিষয়: শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে জানান যে, জগতে যে কোনো মহানতা, শক্তি, জ্ঞান, সৌন্দর্য বা গুণ—সবই তাঁরই এক অংশ বা “বিভূতি”।
২. বিভূতির অর্থ: “বিভূতি” বলতে বোঝায় ঈশ্বরের দিব্য প্রকাশ বা ঐশ্বর্যময় রূপ, যা সৃষ্টির প্রতিটি ক্ষেত্রে বিরাজমান।
৩. দার্শনিক তাৎপর্য: এখানে শ্রীকৃষ্ণ জগতের সবকিছুতেই নিজের অস্তিত্ব নির্দেশ করে বোঝাতে চান যে, ঈশ্বর সর্বব্যাপী এবং সর্বশক্তিমান।
৪. অধ্যায়ের উদ্দেশ্য: ভক্তদের মনে ঈশ্বরের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস জাগানো, যাতে তারা প্রতিটি সৃষ্টিতে ঈশ্বরের রূপ উপলব্ধি করতে শেখে।
৫. মূল ভাবার্থ: এই অধ্যায় মানুষকে শেখায় যে ঈশ্বর কেবল এক স্থানে নন, বরং সমস্ত মহত্ত্ব, সৌন্দর্য ও শক্তির মধ্যেই প্রকাশমান। তাই ভক্তি ও উপলব্ধির মাধ্যমে তাঁর ঐশ্বর্যকে জানা সম্ভব।

0
Updated: 1 day ago