কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যে কোন বিষয়টি সমধিক ফুটে উঠেছে?
A
অর্থগৌরবম্
B
কাব্যালংকার
C
শাসনপ্রণালী
D
সিংহাসনলাভ
উত্তরের বিবরণ
ভারবি ছিলেন প্রাচীন ভারতের এক অসাধারণ সংস্কৃত কবি, যার রচিত “কিরাতার্জুনীয়ম্” মহাকাব্য সংস্কৃত সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। এটি মহাভারতের বনপর্ব অবলম্বনে রচিত, যেখানে অর্জুনের তপস্যা ও শিবের কিরাতরূপে আবির্ভাবের কাহিনি বর্ণিত হয়েছে।
-
কাব্যটি মোট ১৮ সর্গে বিভক্ত, প্রতিটি সর্গে ভাব, ভাষা ও কৌশলের গভীর মেলবন্ধন রয়েছে।
-
ভারবির কাব্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো অর্থগৌরব (অর্থের গাম্ভীর্য)— তাঁর প্রতিটি শ্লোক চিন্তার গভীরতা ও তত্ত্বগভীর ভাবনায় পরিপূর্ণ।
-
দণ্ডী তাঁর ‘কাব্যাদর্শ’ (১.৬৩) গ্রন্থে বলেছেন — “ভারভিঃ অর্থগৌরবে”, অর্থাৎ ভারবি অর্থের গৌরবে শ্রেষ্ঠ।
-
তাঁর ভাষা সংযত ও মিতবাক, কিন্তু প্রতিটি শব্দ অর্থবহ ও চিন্তাসঞ্জাত।
-
ভারবির কাব্যে অলঙ্কার আছে, কিন্তু সেটি মূল নয়; বরং অর্থের দৃঢ়তা, তত্ত্বগভীরতা ও ভাবগাম্ভীর্যই মুখ্য বৈশিষ্ট্য।
-
সমালোচক বিশ্বনাথ কবিরাজ বলেছেন — “ভারবির কাব্যে অর্থগাম্ভীর্য সর্বোচ্চ।”
-
আনন্দবর্ধন তাঁর ‘ধ্বন্যালোক’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে ভারবির কাব্যে অর্থের শক্তি (ধ্বনি)-ই মুখ্য।
-
একটি বিখ্যাত উক্তি — “দুর্বোধ্যা হি পাণ্ডিতানামপি বাণী ভারবেরিভ।”, অর্থাৎ ভারবির ভাষা এত গভীর যে পণ্ডিতদের কাছেও তা দুর্বোধ্য মনে হয়।
-
এইসব মন্তব্য প্রমাণ করে যে ভারবির কাব্যশক্তির মূল নিহিত তাঁর অর্থগৌরবে, যেখানে চিন্তার গাম্ভীর্য ও ভাষার নিপুণতা একত্রে কাব্যকে দার্শনিক উচ্চতায় উন্নীত করেছে।
চূড়ান্তভাবে বলা যায় — “কিরাতার্জুনীয়ম্” মহাকাব্যে অর্থগৌরবম্ সর্বাধিক প্রকাশিত, কারণ ভারবির কাব্যে গভীর ভাব, তত্ত্বগাম্ভীর্য ও নিখুঁত অর্থনৈপুণ্যই তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের চিহ্ন।

0
Updated: 1 day ago
শ্রীমদ্ভগবদগীতা মহাভারতের কোন পর্বের অন্তর্গত?
Created: 1 day ago
A
শান্তিপর্ব
B
দ্রোন পর্ব
C
স্ত্রীপর্ব
D
ভীষ্মপর্ব
শ্রীমদ্ভগবদগীতা মহাভারতের ভীষ্মপর্ব-এর অন্তর্গত, যা মহাকাব্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত। এতে যুদ্ধক্ষেত্রে অর্জুনের মানসিক দ্বন্দ্ব ও শ্রীকৃষ্ণের উপদেশের মাধ্যমে মানবজীবনের ধর্ম, কর্ম ও জ্ঞানের দার্শনিক তাৎপর্য প্রকাশ পেয়েছে।
১. অবস্থান: মহাভারতের মোট ১৮টি পর্বের মধ্যে গীতা অবস্থিত ভীষ্মপর্বের ২৫তম থেকে ৪২তম অধ্যায় পর্যন্ত। মোট অধ্যায়সংখ্যা ১৮।
২. প্রেক্ষাপট: কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সূচনালগ্নে অর্জুন যখন আত্মীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে মানসিকভাবে অক্ষম হন, তখন শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে জ্ঞান, ভক্তি ও কর্মযোগের মর্ম বোঝান।
৩. বিষয়বস্তু:
-
কর্মযোগ: কর্মে আসক্তিহীন থেকে কর্তব্য সম্পাদনের শিক্ষা।
-
জ্ঞানযোগ: আত্মা ও পরমাত্মার জ্ঞানের ব্যাখ্যা।
-
ভক্তিযোগ: ঈশ্বরপ্রেম ও আত্মসমর্পণের মাধ্যমে মুক্তিলাভ।
৪. ধর্মীয় গুরুত্ব: এই পর্বেই শ্রীকৃষ্ণ জীবনের সর্বোচ্চ সত্য—কর্ম, জ্ঞান ও ভক্তির সমন্বিত পথ—প্রকাশ করেছেন, যা পরবর্তীতে “শ্রীমদ্ভগবদগীতা” নামে স্বতন্ত্র গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
৫. উপসংহার: অতএব, ভীষ্মপর্ব-ই সেই অধ্যায় যেখানে গীতার আদি সংলাপ সংঘটিত হয়, এবং এখানেই মানবজীবনের চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা হিসেবে গীতার দর্শন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

0
Updated: 1 day ago
গীতা এর কোন অধ্যায়ে সর্বাধিক শ্লোক রয়েছে?
Created: 1 day ago
A
প্রথম অধ্যায়
B
দ্বিতীয় অধ্যায়
C
দ্বাদশ অধ্যায়
D
অষ্টাদশ অধ্যায়
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা মোট ১৮টি অধ্যায় নিয়ে গঠিত, যেখানে প্রতিটি অধ্যায় আলাদা যোগ বা দর্শনব্যাখ্যায় নিবেদিত। এর মধ্যে অষ্টাদশ অধ্যায়, অর্থাৎ “মোক্ষসংন্যাস যোগ”, সবচেয়ে দীর্ঘ এবং এতে ৭৮টি শ্লোক রয়েছে।
-
অষ্টাদশ অধ্যায়ে ভগবান কৃষ্ণ অর্জুনকে সংন্যাস, কর্ম, ভক্তি ও মোক্ষের দর্শন বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন।
-
এখানে মানবজীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য— মোক্ষ বা মুক্তি, এবং তা অর্জনের উপায়— কর্মযোগ, জ্ঞানযোগ ও ভক্তিযোগের সমন্বয় আকারে উপস্থাপিত হয়েছে।
-
অধ্যায়টি গীতার উপসংহারমূলক অংশ, যেখানে সমগ্র শিক্ষার সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়েছে।
-
বিষয়বস্তু বিস্তৃত ও দার্শনিকভাবে গভীর হওয়ায়, এ অধ্যায়ের শ্লোকসংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
তুলনামূলকভাবে কয়েকটি অধ্যায়ের শ্লোক সংখ্যা:
-
প্রথম অধ্যায়: ৪৭টি — যুদ্ধের সূচনা ও অর্জুনের মানসিক দ্বন্দ্ব
-
দ্বিতীয় অধ্যায়: ৭০টি — আত্মা, কর্ম ও জীবনের মৌলিক তত্ত্ব
-
দ্বাদশ অধ্যায়: ২০টি — ভক্তিযোগের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা
-
অষ্টাদশ অধ্যায়: ৭৮টি — সংন্যাস, ভক্তি ও মোক্ষের সর্বাধিক বিশদ আলোচনা
অতএব, গীতার মধ্যে অষ্টাদশ অধ্যায়েই সর্বাধিক শ্লোক রয়েছে, যা গীতার সমাপনী ও সর্বাধিক দার্শনিক অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত।

0
Updated: 1 day ago
শ্রীভাগবতম্ এর কোন স্কন্ধে রাসলীলা বর্ণিত হয়েছে?
Created: 1 day ago
A
দ্বাদশ
B
দশম
C
নবম
D
একাদশ
শ্রীমদ্ভাগবতের দশম স্কন্ধ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের লীলাকাহিনির জন্য সর্বাধিক প্রসিদ্ধ। এই স্কন্ধে তাঁর জন্ম, শৈশবকাল, বৃন্দাবনের অলৌকিক ঘটনা এবং গোপীদের সঙ্গে ঐশ্বরিক রাসলীলা বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে।
মূল তথ্যসমূহ:
-
সঠিক উত্তর: খ) দশম স্কন্ধ।
-
বিষয়বস্তু: শ্রীকৃষ্ণের জন্ম, বাল্যলীলা, বৃন্দাবনের অলৌকিক কাহিনি এবং বিশেষত গোপীগণের সঙ্গে রাসলীলা।
-
রাসলীলার অবস্থান: দশম স্কন্ধের ২৯তম থেকে ৩৩তম অধ্যায় পর্যন্ত রাসলীলার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়।
-
ঘটনার সারাংশ: শ্রীকৃষ্ণের বাঁশির সুরে আকৃষ্ট হয়ে গোপীরা রাত্রিতে তাঁর সঙ্গে মিলিত হন, যা মানব-ঈশ্বর সম্পর্কের অতীন্দ্রিয় প্রেম ও ভক্তির প্রতীক।
-
লীলার দার্শনিক তাৎপর্য:
-
ভক্তির পরম রূপ প্রকাশ করা।
-
আত্মসমর্পণ ও ঈশ্বরপ্রেমের মহিমা তুলে ধরা।
-
গোপীদের প্রেমের মাধ্যমে জীবাত্মা ও পরমাত্মার মিলনের প্রতীকী অর্থ প্রকাশ।
-
-
সাহিত্যিক মূল্য: এই অংশের কাব্যমাধুর্য, ভাবগাম্ভীর্য ও আধ্যাত্মিক গভীরতা শ্রীমদ্ভাগবতের সৌন্দর্য ও জনপ্রিয়তার মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত।

0
Updated: 1 day ago