দ্রৌপদী যুধিষ্ঠিরকে কোন ধরণের বাক্য প্রয়োগের মাধ্যমে ক্রোধে জাগিয়ে তুলতে চেয়েছিলেন?
A
ভৎসনামূলক
B
বিরহাত্বক
C
বিরুদ্ধাত্মক
D
শান্তনাসূচক
উত্তরের বিবরণ
মহাভারতের বর্ণনা অনুযায়ী, দ্রৌপদী যুধিষ্ঠিরের অতিরিক্ত ধর্মনিষ্ঠ ও ধীর স্বভাব দেখে তাঁকে কঠোরভাবে তিরস্কার করেন, যাতে তাঁর মধ্যে প্রতিশোধস্পৃহা জাগে।
-
যুধিষ্ঠিরের স্বভাব: তিনি ছিলেন ধর্মনিষ্ঠ, সহিষ্ণু ও শান্তপ্রকৃতির রাজা, যিনি অন্যায় সহ্য করতেন ধর্মরক্ষার নামে।
-
দ্রৌপদীর বক্তব্য: তিনি ক্রোধভরে বলেন — “ধর্ম, ধর্ম বলে তুমি সব সহ্য করছ, অথচ অন্যায় হচ্ছে তোমার চোখের সামনে।”
-
বাক্যের প্রকৃতি: এই উক্তিগুলো তিরস্কারমূলক ও ক্রোধোদ্দীপক, যা যুধিষ্ঠিরের নীরবতা ভাঙাতে চেয়েছিল।
-
ধারার ধরন: এসব বাক্য ব্যঙ্গাত্মক বা বিরহজনিত নয়, বরং ভর্ৎসনা ও প্ররোচনামূলক, তাই এটি ভৎসনামূলক ধারা।

0
Updated: 1 day ago
"রাজা বিজয়তে" - এই বাক্যে কোন পদবিধান কার্যকর হয়েছে?
Created: 1 day ago
A
আত্মনেপদবিধান
B
পরস্মৈপদ বিধান
C
কৃদন্তপদ
D
সমাসনিষ্পন্নপদ
“রাজা বিজয়তে” বাক্যটি এমন এক ক্রিয়ার উদাহরণ যেখানে ক্রিয়ার ফল নিজ ক্রেতার ওপরেই বর্তায়। এজন্য এটি আত্মনেপদ বিধান অনুসারে গঠিত।
মূল তথ্যসমূহ:
-
সঠিক উত্তর: ক) আত্মনেপদ বিধান।
-
মূল ধাতু: √জি (জয় করা)।
-
দুটি রূপ:
-
পরস্মৈপদী রূপ: জয়তি — অর্থ অন্যকে জয় করে।
-
আত্মনেপদী রূপ: বিজয়তে — অর্থ নিজে জয়ী হয় / জয়লাভ করে।
-
-
অর্থগত পার্থক্য:
-
জয়তি-তে ক্রিয়ার ফল অন্যের ওপর বর্তায়।
-
বিজয়তে-তে ক্রিয়ার ফল নিজের মধ্যেই ফিরে আসে।
-
-
উদাহরণ:
-
অর্জুনঃ জয়তি — “অর্জুন অন্যকে জয় করে।”
-
রাজা বিজয়তে — “রাজা নিজে জয়লাভ করেন।”
-
-
ব্যাকরণিক সূত্র (পাণিনী): “স্বার্থে আত্মনেপদম্” — অর্থাৎ যখন ক্রিয়ার ফল নিজের ওপর পড়ে, তখন আত্মনেপদ ব্যবহৃত হয়।
-
ধাতুপাঠ অনুসারে: “বিপরাভ্যাঞ্জেঃ” — অর্থাৎ বি বা পরা উপসর্গযুক্ত √জি ধাতু আত্মনেপদ হয়।
-
ফলত: বি + জি → বিজয়তে, যা আত্মনেপদী রূপ নির্দেশ করে।

0
Updated: 1 day ago
সংস্কৃত সাহিত্যের আদিযুগ কোনটি?
Created: 1 day ago
A
উপনিষদ যুগ
B
মধ্যযুগ
C
বৈদিক যুগ
D
কাব্য যুগ
সংস্কৃত সাহিত্যের আদিযুগ হিসেবে বৈদিক যুগ সর্বজনস্বীকৃত, কারণ এই সময়েই সংস্কৃত ভাষার প্রাচীনতম রূপে রচিত হয়েছে চারটি বেদ। এই যুগ সংস্কৃত সাহিত্য ও ভারতীয় আধ্যাত্মিক চিন্তার ভিত্তি স্থাপন করেছে।
১. প্রধান গ্রন্থসমূহ: এই যুগে রচিত চারটি বেদ হলো—ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ, সামবেদ ও অথর্ববেদ।
২. সাহিত্যের প্রকৃতি: বৈদিক সাহিত্যে মূলত প্রার্থনা, স্তোত্র, যজ্ঞসংক্রান্ত মন্ত্র, দেবতাদের উদ্দেশ্যে নিবেদন ও দার্শনিক চিন্তাধারা প্রকাশ পেয়েছে।
৩. ভাষার বৈশিষ্ট্য: এই সময়ের সংস্কৃত ভাষা ছিল প্রাকৃত ও প্রাচীন রূপের, যা পরে শাস্ত্রীয় সংস্কৃতের ভিত্তি হয়ে ওঠে।
৪. চিন্তাধারার গভীরতা: বেদে কেবল ধর্মীয় প্রার্থনাই নয়, বরং প্রকৃতি, নৈতিকতা, সৃষ্টিতত্ত্ব ও মানবজীবনের দার্শনিক ব্যাখ্যাও পাওয়া যায়।
৫. ঐতিহাসিক গুরুত্ব: বৈদিক যুগের সাহিত্য পরবর্তীকালে উপনিষদ, মহাকাব্য, নাটক ও কাব্যসাহিত্য–এর বিকাশের ভিত্তি তৈরি করেছে, যা সংস্কৃত সাহিত্যের পরবর্তী যুগগুলোর মূল প্রেরণা।

0
Updated: 1 day ago
শ্রীমদ্ভগবতগীতার কোন অধ্যায়কে গীতার সার অধ্যায় বলে কর্ণনা করা হয়েছে?
Created: 1 day ago
A
সাংখ্যযোগকে
B
পুরুষোত্তমযোগকে
C
ভক্তি যোগকে
D
বিজ্ঞানযোগকে
শ্রীমদ্ভগবদগীতার দ্বিতীয় অধ্যায় “সাংখ্যযোগ” গীতার মূল দর্শনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত। এটি ৭২টি শ্লোক নিয়ে গঠিত এবং গীতার সারাংশ হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ এখানেই কৃষ্ণ প্রথমবার অর্জুনকে জীবনের, কর্মের ও জ্ঞানের প্রকৃত অর্থ শিক্ষা দেন। প্রথম অধ্যায় “অর্জুন বিষাদযোগ” কেবল প্রেক্ষাপট তৈরি করলেও দ্বিতীয় অধ্যায় থেকেই শুরু হয় গীতার উপদেশধারা।
১. আত্মার অমরত্ব ও তত্ত্বজ্ঞান
-
কৃষ্ণ অর্জুনকে বলেন — “ন জায়তে মৃয়তে বা কদাচিন্ নায়ং ভূত্বা ভবিতা वा ন ভূয়ঃ।” (গীতা ২.২০)
-
এর অর্থ, আত্মা চিরন্তন ও অবিনশ্বর, সে জন্ম নেয় না, মরে না।
-
এই ধারণা গীতার মূল তত্ত্ব— আত্মার অমরত্ব ও চেতনার অখণ্ডতা।
২. কর্মের প্রয়োজন ও কর্তব্যবোধ
-
কৃষ্ণ বলেন — “কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন।” (গীতা ২.৪৭)
-
এখানে বলা হয়েছে, মানুষের কর্তব্য হলো কর্ম করা, কিন্তু ফলের প্রতি আসক্তি ত্যাগ করা উচিত।
-
এই শ্লোক কর্মযোগের ভিত্তি, যেখানে নিঃস্বার্থ কর্মের গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে।
৩. স্থিতপ্রজ্ঞ যোগের শিক্ষা
-
এই অধ্যায়ে “স্থিতপ্রজ্ঞ” মানুষের আদর্শ উপস্থাপন করা হয়েছে।
-
যিনি আনন্দ–দুঃখে সমবৃত্ত, আকাঙ্ক্ষামুক্ত ও স্থিরচিত্ত, তিনিই প্রকৃত জ্ঞানী।
-
এটি আধ্যাত্মিক জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য— সমত্ব ও সংযমের অবস্থান।
৪. পরবর্তী অধ্যায়গুলোর ভিত্তি
-
গীতার পরবর্তী অধ্যায়গুলো যেমন জ্ঞানযোগ, কর্মযোগ, ভক্তিযোগ—সবই দ্বিতীয় অধ্যায়ের শিক্ষার বিস্তার।
-
আচার্যদের মতে, “দ্বিতীয় অধ্যায় গীতার মূলসূত্র, বাকিগুলো তার বিশ্লেষণ।”
৫. আচার্য ও পণ্ডিতদের মতামত
-
আদি শঙ্করাচার্য: “দ্বিতীয় অধ্যায়েই সমগ্র গীতার তত্ত্ব নিহিত।”
-
বাল গঙ্গাধর তিলক: “সাংখ্যযোগ অধ্যায় গীতার মর্মকথা প্রকাশ করেছে।”
-
স্বামী বিবেকানন্দ: “দ্বিতীয় অধ্যায় গীতার সারাংশ—এখানে আত্মা, কর্ম ও সমত্বের শিক্ষা একত্রে মেলে।”
সব মিলিয়ে, শ্রীমদ্ভগবদগীতার দ্বিতীয় অধ্যায় ‘সাংখ্যযোগ’-কেই গীতার সার অধ্যায় বলা হয়, কারণ এতে আত্মা, কর্ম, জ্ঞান ও সমত্ব—এই চারটি মৌলিক তত্ত্ব সংক্ষেপে প্রকাশ পেয়েছে, যা গীতার সমগ্র দর্শনের ভিত্তি।
সঠিক উত্তর: ক) সাংখ্যযোগকে — গীতার সার অধ্যায় বলে কর্ণনা করা হয়েছে।

0
Updated: 1 day ago