গীতা গ্রন্থে কতজন এর উবাচ আছে?
A
দুইজন
B
তিনজন
C
চারজন
D
ছয়জন
উত্তরের বিবরণ
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় মোট চারজন বক্তা “উবাচ” শব্দসহ বক্তব্য দিয়েছেন। এটি একটি সংলাপধর্মী গ্রন্থ, যেখানে অর্জুন ও কৃষ্ণের মধ্যে আলোচনা হয় এবং সঞ্জয় সেই সংলাপ ধৃতরাষ্ট্রকে বর্ণনা করেন।
-
ধৃতরাষ্ট্র উবাচ: কৌরব রাজা ধৃতরাষ্ট্র যুদ্ধক্ষেত্রের ঘটনা জানতে চান। তিনি মাত্র একবার বলেছেন — “ধৃতরাষ্ট্র উবাচ — ধর্মক্ষেত্রে কুরুক্ষেত্রে সমবেতা যুযুত্সবঃ…” (১.১)।
-
সঞ্জয় উবাচ: তিনি বর্ণনাকারী বা বার্তাবাহক, যিনি ধৃতরাষ্ট্রকে যুদ্ধের সব কথা জানান। যেমন — “সঞ্জয় উবাচ — তং তথা কৃপয়াবিষ্টম্…” (২.১)।
-
অর্জুন উবাচ: তিনি সংশয়গ্রস্ত ও প্রশ্নকারী যোদ্ধা, যিনি কৃষ্ণের কাছে আত্মিক ও নৈতিক প্রশ্ন করেন। যেমন — “অর্জুন উবাচ — স্থিরং মনঃ কৃষ্ণ…” (৬.৩৪), “অর্জুন উবাচ — মোঘং পার্থৈব মে মন্যে…” (১১.১)।
-
শ্রীভগবান উবাচ: ভগবান শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন উপদেশদাতা ও মূল বক্তা, যিনি জ্ঞান, কর্ম, ভক্তি ও যোগের দর্শন ব্যাখ্যা করেন। তাঁর বক্তব্য শুরু — “শ্রীভগবান উবাচ — অশোচ্যানন্বশোচস্ত্বং…” (২.১১) থেকে।
এইভাবে গীতা একটি তিনস্তরীয় সংলাপ — কৃষ্ণ ও অর্জুনের মধ্যে মূল আলোচনা, সঞ্জয়ের মাধ্যমে তার বর্ণনা, এবং ধৃতরাষ্ট্রের শ্রবণ। এর ফলে গীতা শুধু ধর্ম ও নৈতিকতার আলোচনাই নয়, বরং এক গভীর দার্শনিক সংলাপের গ্রন্থ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।

0
Updated: 1 day ago
অভিজ্ঞান শকুন্তলম নাটকে প্রধান ঘটনা ধরা হয় কোনটাকে?
Created: 1 day ago
A
হস্তী বৃত্তান্ত
B
দুর্বাসা মুনির অভিশাপ
C
দুষ্যন্ত-শকুন্তলার মিলন
D
পতিগৃহে যাত্রা
‘অভিজ্ঞান শকুন্তলম’ মহাকবি কালিদাসের এক অমর নাটক, যা দুষ্যন্ত ও শকুন্তলার প্রেমকাহিনিকে কেন্দ্র করে রচিত। নাটকের মূল রহস্য গড়ে উঠেছে দুর্বাসা মুনির অভিশাপকে ঘিরে, যা কাহিনির গতি ও আবেগের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করে।
১. নাটকের পরিচয়: এটি কালিদাসের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ রচনা, যার বিষয়বস্তু মহাভারতের আদিপর্ব থেকে গৃহীত। “অভিজ্ঞান” মানে পরিচয়ের চিহ্ন বা স্মারক, আর “শকুন্তলম” মানে শকুন্তলার কাহিনি। দুইয়ের মিলনে নামের অর্থ দাঁড়ায় “পরিচয়ের মাধ্যমে শকুন্তলার কাহিনি”।
২. মূল ঘটনার কেন্দ্র: শকুন্তলা আশ্রমে বসে রাজা দুষ্যন্তের স্মৃতিতে নিমগ্ন থাকায় দুর্বাসা মুনিকে অভ্যর্থনা জানাতে ভুলে যান। এতে ক্রোধান্ধ মুনি অভিশাপ দেন—“যাকে তুমি মনে করছ, সে তোমাকে চিনবে না।” পরে আশ্রমবাসীদের অনুরোধে তিনি বলেন, কোনো পরিচয়ের চিহ্ন দেখালে অভিশাপের প্রভাব কেটে যাবে। এই অভিশাপের কারণেই রাজা দুষ্যন্ত শকুন্তলাকে ভুলে যান, যা কাহিনির প্রধান সংকট সৃষ্টি করে।
৩. এই ঘটনাই কেন প্রধান:
-
অভিশাপের পূর্বে কাহিনি সুখময় ছিল—প্রেম, বিবাহ ও প্রতিশ্রুতি সবই স্বাভাবিক।
-
অভিশাপের পর থেকেই কাহিনিতে বেদনা, বিচ্ছেদ ও সংকটের সূচনা হয়।
-
রাজা দুষ্যন্তের ভুলে যাওয়া নাটকের মূল দ্বন্দ্ব বা ক্লাইম্যাক্স তৈরি করে।
-
শেষ অঙ্কে অঙ্গুরীয় ফিরে পাওয়ার মাধ্যমে অভিশাপ মুক্তি ও পুনর্মিলন ঘটে।
-
অভিশাপ, অভিজ্ঞান ও স্মরণের ধারাবাহিকতাই নাটকের গঠনকাঠামোর ভিত্তি।
৪. পাঠ্যপ্রমাণ ও রেফারেন্স:
-
অভিজ্ঞান শকুন্তলম, তৃতীয় অঙ্কে উল্লেখ আছে—“দুর্বাসা ঋষির অভিশাপেন রাজা দুষ্যন্তঃ শকুন্তলাং ন প্রজ্ঞাতি।”
-
মহাভারত এর আদিপর্বেও একই ঘটনাবিন্যাস পাওয়া যায়, তবে কালিদাস কাব্যিকভাবে রূপান্তরিত করেছেন।
-
আচার্য কুনালাল দত্ত লিখেছেন—“The curse of sage Durvasa is the pivotal point of the drama; without it, the recognition motif (‘abhijñāna’) would lose its significance.”
৫. উপসংহার: দুর্বাসা মুনির অভিশাপের ফলেই ভুলে যাওয়া, বিভ্রান্তি ও শেষমেশ পুনর্মিলনের পরিণতি তৈরি হয়। তাই এই ঘটনাই নাটকের মূল ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু ও turning point।

0
Updated: 1 day ago
রামায়ণের অধ্যায়গুলোর নাম কি?
Created: 1 day ago
A
পরিচ্ছেদ
B
পর্ব
C
অধ্যায়
D
কান্ড
রামায়ণ মহাকাব্যটি মহর্ষি বাল্মীকী রচিত, যেখানে শ্রীরামের জীবন ও কর্মধারা সাতটি প্রধান ভাগে বিভক্ত, যেগুলোকে “কাণ্ড” বলা হয়। এই “কাণ্ড” শব্দের অর্থ বৃহৎ অধ্যায় বা পর্ব, যা কাহিনির ধারাবাহিক ও সংগঠিত কাঠামো নির্দেশ করে।
-
বালকাণ্ড: রামের জন্ম, শৈশব ও বিশ্বামিত্রের সঙ্গে যাত্রা।
-
অযোধ্যাকাণ্ড: রামের রাজ্যাভিষেকের প্রস্তুতি, কৈকেয়ীর দাবিতে বনবাস।
-
অরণ্যকাণ্ড: রামের বনবাস, সীতাহরণ ও রাবণের আবির্ভাব।
-
কিষ্কিন্ধাকাণ্ড: হনুমান, বালি ও সুগ্রীবের কাহিনি, রামের মিত্রতা স্থাপন।
-
সন্দরকাণ্ড: হনুমানের লঙ্কাগমন, সীতার সন্ধান ও তাঁর ভক্তির প্রকাশ।
-
যুদ্ধকাণ্ড: লঙ্কাযুদ্ধ, রাবণের বধ ও সীতার পুনরুদ্ধার।
-
উত্তরকাণ্ড: অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তন, রামের রাজ্যশাসন ও চূড়ান্ত পরিণতি।
সুতরাং, রামায়ণের প্রতিটি অংশকে “কাণ্ড” বলা হয়, যা কাব্যের সম্পূর্ণ জীবনগাথাকে সাতটি প্রধান অধ্যায়ে বিন্যস্ত করেছে।

0
Updated: 1 day ago
'অভিজ্ঞানশকুন্তলম্' নাটকটি কত অঙ্কে রচিত?
Created: 1 day ago
A
৭টি
B
৬টি
C
৫টি
D
৪টি
সংস্কৃত সাহিত্যজগতে “অভিজ্ঞানশকুন্তলম্” হলো মহাকবি কালিদাস রচিত এক অনন্য নাট্যকাব্য, যা ভারতীয় নাট্যসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃত। এই নাটকটি সপ্ত অঙ্কে (৭ অঙ্কে) বিভক্ত এবং প্রতিটি অঙ্কে কাহিনির ধাপে ধাপে বিকাশ ঘটেছে, যেখানে প্রেম, বেদনা ও পুনর্মিলনের মিশ্রণ এক গভীর আবেগ সৃষ্টি করেছে।
১. প্রথম অঙ্ক: শকুন্তলার শৈশব ও তপোবনে তার নির্জন জীবনচিত্র।
২. দ্বিতীয় অঙ্ক: রাজা দুষ্যন্ত ও শকুন্তলার প্রথম সাক্ষাৎ ও প্রেমজাগরণ।
৩. তৃতীয় অঙ্ক: দুষ্যন্তের রাজ্যে প্রত্যাবর্তন ও বিচ্ছেদের সূচনা।
৪. চতুর্থ অঙ্ক: শকুন্তলার অভিশাপপ্রাপ্তি ও দুষ্যন্তের রাজমুদ্রা হারানো।
৫. পঞ্চম অঙ্ক: শকুন্তলার দুঃখ, অনুতাপ ও দিব্য আশীর্বাদের প্রতীক্ষা।
৬. ষষ্ঠ অঙ্ক: রাজপ্রাসাদে পুনর্মিলনের পূর্বাভাস এবং সত্য উন্মোচন।
৭. সপ্তম অঙ্ক: দুষ্যন্ত ও শকুন্তলার পুনর্মিলন এবং নাটকের সমাপ্তি।
নাটকটি তার রূপক, সংলাপ ও আবেগপ্রবণ বর্ণনা-এর জন্য বিশ্বসাহিত্যে অমর হয়ে আছে। এর অঙ্কবিন্যাস ও নাট্যগঠন ভারতীয় নাট্যরীতির একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
সঠিক উত্তর: ক) ৭টি

0
Updated: 1 day ago