অভিজ্ঞান শকুন্তলম নাটকে প্রধান ঘটনা ধরা হয় কোনটাকে?
A
হস্তী বৃত্তান্ত
B
দুর্বাসা মুনির অভিশাপ
C
দুষ্যন্ত-শকুন্তলার মিলন
D
পতিগৃহে যাত্রা
উত্তরের বিবরণ
‘অভিজ্ঞান শকুন্তলম’ মহাকবি কালিদাসের এক অমর নাটক, যা দুষ্যন্ত ও শকুন্তলার প্রেমকাহিনিকে কেন্দ্র করে রচিত। নাটকের মূল রহস্য গড়ে উঠেছে দুর্বাসা মুনির অভিশাপকে ঘিরে, যা কাহিনির গতি ও আবেগের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করে।
১. নাটকের পরিচয়: এটি কালিদাসের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ রচনা, যার বিষয়বস্তু মহাভারতের আদিপর্ব থেকে গৃহীত। “অভিজ্ঞান” মানে পরিচয়ের চিহ্ন বা স্মারক, আর “শকুন্তলম” মানে শকুন্তলার কাহিনি। দুইয়ের মিলনে নামের অর্থ দাঁড়ায় “পরিচয়ের মাধ্যমে শকুন্তলার কাহিনি”।
২. মূল ঘটনার কেন্দ্র: শকুন্তলা আশ্রমে বসে রাজা দুষ্যন্তের স্মৃতিতে নিমগ্ন থাকায় দুর্বাসা মুনিকে অভ্যর্থনা জানাতে ভুলে যান। এতে ক্রোধান্ধ মুনি অভিশাপ দেন—“যাকে তুমি মনে করছ, সে তোমাকে চিনবে না।” পরে আশ্রমবাসীদের অনুরোধে তিনি বলেন, কোনো পরিচয়ের চিহ্ন দেখালে অভিশাপের প্রভাব কেটে যাবে। এই অভিশাপের কারণেই রাজা দুষ্যন্ত শকুন্তলাকে ভুলে যান, যা কাহিনির প্রধান সংকট সৃষ্টি করে।
৩. এই ঘটনাই কেন প্রধান:
-
অভিশাপের পূর্বে কাহিনি সুখময় ছিল—প্রেম, বিবাহ ও প্রতিশ্রুতি সবই স্বাভাবিক।
-
অভিশাপের পর থেকেই কাহিনিতে বেদনা, বিচ্ছেদ ও সংকটের সূচনা হয়।
-
রাজা দুষ্যন্তের ভুলে যাওয়া নাটকের মূল দ্বন্দ্ব বা ক্লাইম্যাক্স তৈরি করে।
-
শেষ অঙ্কে অঙ্গুরীয় ফিরে পাওয়ার মাধ্যমে অভিশাপ মুক্তি ও পুনর্মিলন ঘটে।
-
অভিশাপ, অভিজ্ঞান ও স্মরণের ধারাবাহিকতাই নাটকের গঠনকাঠামোর ভিত্তি।
৪. পাঠ্যপ্রমাণ ও রেফারেন্স:
-
অভিজ্ঞান শকুন্তলম, তৃতীয় অঙ্কে উল্লেখ আছে—“দুর্বাসা ঋষির অভিশাপেন রাজা দুষ্যন্তঃ শকুন্তলাং ন প্রজ্ঞাতি।”
-
মহাভারত এর আদিপর্বেও একই ঘটনাবিন্যাস পাওয়া যায়, তবে কালিদাস কাব্যিকভাবে রূপান্তরিত করেছেন।
-
আচার্য কুনালাল দত্ত লিখেছেন—“The curse of sage Durvasa is the pivotal point of the drama; without it, the recognition motif (‘abhijñāna’) would lose its significance.”
৫. উপসংহার: দুর্বাসা মুনির অভিশাপের ফলেই ভুলে যাওয়া, বিভ্রান্তি ও শেষমেশ পুনর্মিলনের পরিণতি তৈরি হয়। তাই এই ঘটনাই নাটকের মূল ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু ও turning point।

0
Updated: 1 day ago
রাজা নিজ দেশে পূজা পান- এর সংস্কৃত কি?
Created: 23 hours ago
A
রাজা স্বদেশে পূজা আপ্নাতি
B
স্বদেশে পূজ্যতে রাজা
C
নিজ দেশে রাজা পূজ্যতে
D
রাজা স্বদেশে অর্চতে
এই নীতিবাক্যটি একটি প্রাচীন সংস্কৃত সূত্র, যা সমাজে ব্যক্তির মর্যাদা ও স্বীকৃতি বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এখানে ভাষাগতভাবে এবং অর্থগতভাবে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য করা যায়—
-
“রাজা” শব্দটি হলো কর্তা, অর্থাৎ যে ক্রিয়াটি সম্পন্ন করে।
-
“স্বদেশে” শব্দটি অধিকরণ কারক, যার অর্থ নিজ দেশে বা নিজের ভূখণ্ডে।
-
“পূজ্যতে” হলো কর্মবাচ্য ক্রিয়া, যার অর্থ সম্মানিত হন বা পূজা পান।
-
পুরো বাক্যের অর্থ দাঁড়ায়— “রাজা নিজ দেশে পূজিত হন” বা “নিজ দেশে রাজা সম্মানিত হন”।
-
এই নীতিটি বোঝায় যে, ব্যক্তি তার নিজের দেশ, সমাজ বা পরিবেশেই সর্বাধিক মর্যাদা ও সম্মান পায়, অপরিচিত স্থানে নয়।
-
এটি মানুষের আত্মমর্যাদা, সামাজিক স্বীকৃতি এবং দেশপ্রেমের ধারণা তুলে ধরে।

0
Updated: 23 hours ago
বৈদিক যুগে সমাজের ভিত্তি কি ছিল?
Created: 1 day ago
A
রাষ্ট্র
B
সম্প্রদায়
C
ঘরবাড়ি
D
পরিবার
বৈদিক যুগে সমাজের মূল ভিত্তি ছিল “পরিবার”, যা সামাজিক সংগঠনের প্রথম ও প্রধান স্তর হিসেবে বিবেচিত। তখন রাষ্ট্র বা সংগঠিত শাসনব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে গঠিত হয়নি, ফলে পারিবারিক কাঠামোই সমাজজীবনের কেন্দ্র ছিল।
মূল তথ্যসমূহ:
-
সঠিক উত্তর: ঘ) পরিবার।
-
সমাজব্যবস্থার প্রকৃতি: বৈদিক যুগে সমাজ রাষ্ট্রনির্ভর না হয়ে পরিবারনির্ভর ছিল।
-
পরিবারের পরিচয়: পরিবারকে বলা হতো “গৃহ”, যা পিতা বা গৃহস্বামী পরিচালনা করতেন।
-
পরিবারপ্রধানের পদ: পরিবারের কর্তা ছিলেন “গৃহপতি”, যিনি ছিলেন পরিবারের ধর্মীয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি।
-
পরিবারের ভূমিকা:
-
ধর্মীয় কার্যাবলি যেমন যজ্ঞ, পূজা ইত্যাদি গৃহেই সম্পন্ন হতো।
-
শিক্ষা ও অর্থনৈতিক জীবনের কেন্দ্র ছিল গৃহ।
-
সমাজজীবনের প্রতিটি দিকেই পরিবার ছিল মৌলিক একক ও প্রধান আশ্রয়স্থল।
-
-
সারসংক্ষেপ: বৈদিক সমাজে পরিবারই ছিল সভ্যতার প্রাথমিক ও কার্যকর ভিত্তি, যা পরবর্তীকালে রাষ্ট্রব্যবস্থার বিকাশে ভিত্তি স্থাপন করে।

0
Updated: 1 day ago
"ব্রহ্মসত্য জগৎ মিথ্যা" এই শিক্ষা কোন দর্শনে উল্লেখ আছে?
Created: 1 day ago
A
জৈন দর্শনে
B
ভারতীয় দর্শনে
C
বৌদ্ধদর্শনে
D
চার্বাক দর্শনে
এই উক্তিটি আদি শংকরাচার্যের অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের কেন্দ্রীয় তত্ত্ব, যা উপনিষদসমূহের মূল ভাবকে সংক্ষেপে প্রকাশ করে। এতে বলা হয়েছে, ব্রহ্মই একমাত্র চিরন্তন সত্য, জগৎ পরিবর্তনশীল ও মায়াময়, আর জীবাত্মা ও পরমাত্মা মূলত অভিন্ন।
-
ব্রহ্ম সত্য: ব্রহ্ম মানে সর্বব্যাপী, চিরন্তন ও অপরিবর্তনশীল চৈতন্য। এটি কখনও পরিবর্তিত হয় না এবং সর্বত্র বিরাজমান।
-
জগৎ মিথ্যা: “মিথ্যা” অর্থ এখানে অস্তিত্বহীন নয়, বরং অস্থায়ী বা পরিবর্তনশীল। জগৎ মায়ার দ্বারা আচ্ছাদিত, তাই এটি পরম সত্য নয়।
-
জীবো ব্রহ্মৈব নাপরঃ: ব্যক্তি আত্মা ও পরমাত্মা একই — তাদের মধ্যে কোনো প্রকৃত ভেদ নেই। এটাই অদ্বৈত (দ্বৈত নয়) ভাবের মূল।
-
উপনিষদীয় সূত্র: বৃহদারণ্যক উপনিষদে “অহম্ ব্রহ্মাস্মি” (আমি ব্রহ্ম), ছান্দোগ্যে “তত্ত্বমসি” (তুই সেই ব্রহ্ম), ও মাণ্ডূক্যে জগৎকে মায়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
-
শংকরভাষ্য ব্যাখ্যা: “যা পরিবর্তনশীল, তা মিথ্যা; যা অপরিবর্তনশীল, তা সত্য — সেই সত্য ব্রহ্ম।”
-
অন্যান্য দর্শনের পার্থক্য:
-
চার্বাক: শুধু ইহজগৎ সত্য, ব্রহ্ম বা পরলোক অস্বীকার।
-
বৌদ্ধ: অনিত্যতা ও অনাত্মবাদে বিশ্বাস, ব্রহ্মধারণা অনুপস্থিত।
-
জৈন: বহু বাস্তবতার স্বীকৃতি, আংশিকভাবে ভিন্ন।
-
অদ্বৈত বেদান্ত: ব্রহ্ম একমাত্র সত্য — এখানেই উক্তিটির উৎপত্তি।
-
-
উপসংহার: এই তত্ত্ব মুক্তির ধারণা ব্যাখ্যা করে — যখন মানুষ আত্মা ও ব্রহ্মের ঐক্য উপলব্ধি করে, তখনই সে পরম জ্ঞান ও মুক্তি লাভ করে।

0
Updated: 1 day ago